প্রতিনিধি (কবিতা) সেবা দশম শ্রেনী বাংলা প্রশ্ন এবং উত্তর SEBA/SMEBA CLASS 10 BENGALI QUESTIONS & ANSWERS

SEBA/SMEBA CLASS 10 BENGALI

QUESTIONS & ANSWERS

 

সেবা দশম শ্রেনী বাংলা প্রশ্ন এবং উত্তর

পাঠ : প্রতিনিধি (কবিতা)


 

 

কবি - বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

 

পাঠ প্রতিনিধি

 

শব্দার্থ

দৈন্য-দীনতা, লেশ-কিছুমাত্র, হেরিলা-দেখিলা, দুর্গভালে-দুর্গশীর্ষে, তৃষ্ণা-তেষ্টা, পিপাসা, লিপি-পত্র, চিঠি, চরাচর-পৃথিবী, পান্থ-পথিক, লেখনী-কলম, সমাপন-সমাধান, স্নান-অবগাহন, দ্বারে দ্বারে-দরজায় দরজায়, নৃপে,নৃপতিকে-রাজাকে, দ্বিপ্রহর-দুপুরবেলা, অতুল-অগাধ, প্রচুর। ক্ষান্ত-শেষ, প্রসাদ-অনুগ্রহ, প্রতিনিধি-প্রেরিত দূত, পুনর্বার-পুনরায়, উদাসীন-অনাসক্ত, বিধি-নিয়ম, উত্তরীয়-উড়নি, ললাট-কপাল, বেণু-বাঁশী, ধেনু-গাভী, পুরবী-রাগিণী, পতাকা-নিশান, দিনু-দিলাম, পুরবাসী-নগরবাসী, ঐশ্বর্য-সম্পদ, ব্রত-নিষ্ঠা, দাসত্ব-পরাধীনতা, পাদপদ্ম-চরণ কমল, সমাপন-শেষ, বাসনা-ইচ্ছা

 

SEBA/SMEBA CLASS 10 BENGALI QUESTIONS & ANSWERS

পাঠ : প্রতিনিধি (কবিতা) সেবা দশম শ্রেনী বাংলা প্রশ্ন এবং উত্তর

 

অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর

 

Q.1 রবীন্দ্রনাথ কত খ্রিস্টাব্দে নোবেল পুরস্কার পান?

Ans:- ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে।

Q.2 রবীন্দ্রনাথ তার কোন গ্রন্থের জন্য নোবেল পুরস্কার পান?

Ans:- তার লিখিত ইংরেজী গ্রন্থগীতাঞ্জলির জন্য।

Q.3 রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রথম প্রকাশিত কবিতার নাম কী?

Ans:- হিন্দুমেলার উপহার।

Q.4 শিবাজি কে?

Ans:- মারাঠা জাতির জাতীয় বীর বা রাজা

Q.5 প্রতিনিধি কবিতায় কবি কে?

Ans:- বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

Q.6 শিবাজি কখন তার গুরুকে দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করতে দেখেছেন?

Ans:- কোনো একদিন সকালবেলা।

Q.7 কোথা থেকে শিবাজি তার গুরুকে ভিক্ষা করতে দেখেছেন?

Ans:- সেতারার দুর্গশীর্ষ থেকে।

Q.8 শিবাজি বালাজির হাতে কী লিখে দিয়েছিলেন?

Ans:- একখানি পত্র।

Q.9 গুরু শিবাজিকে, ঝুলি কাঁধে তুলে দিলেন কেন?

Ans:- নগরের দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করার জন্য।

Q.10 শিবাজি তার গুরুকে চিঠিতে কী দান করেছিলেন?

Ans:- নিজ রাজ্য ও রাজধানী।

Q.11 শিষ্য গুরুর প্রসাদ কখন গ্রহণ করেছিলেন?

Ans:- দিনের শেষে।

Q.12 গুরু শিষ্যকে কী দিয়ে তার পতাকা নির্মাণ করে নিতে বলেছেন?

Ans:- বৈরাগীর উত্তরীয় দিয়ে।

Q.13 কবির কোন্ কাব্যগ্রন্থ হতে পাঠ্য কবিতাটি গৃহীত হয়েছে?

Ans:- কবির কথা ও কাহিনীকাব্যগ্রন্থ হতে।

Q.14 প্রতিনিধি কবিতায় কাকে রাজ্যেশ্বর বলা হয়েছে?

Ans:- মারাঠা অধিপতি শিবাজিকে।

Q.15 শিবাজি কার হাতে পত্র দিয়েছিলেন?

Ans:- বালাজির হাতে।

Q.16 শিবাজি কাকে রাজ্য ও রাজধানী দান করেছিলেন ?

Ans:- তার গুরু সর্বত্যাগী সাধক রামদাসকে।

Q.17 শিবাজি কার সঙ্গে ভিক্ষা করতে বেরিয়েছিলেন?

Ans:- তার গুরু রমদাসের সঙ্গে।

Q.18 শিবাজি কার পাদুকী দুটি সিংহাসনে স্থাপন করে রাজ্য পরিচালনা করতেন?

Ans:- গুরু রামদাসের।

Q.19 শিবাজির গেরুয়া পতাকা কী নামে খ্যাত?

Ans:- ভগোয়া ঝাণ্ডা।

Q.20 প্রতিনিধিকবিতার বিষয়বস্তু রবীন্দ্রনাথ কোথা থেকে আহরণ করেছেন?

Ans:- অ্যাকওয়ার্থ রচিত মারাঠা গাঁথা থেকে।

 

SEBA/SMEBA CLASS 10 BENGALI QUESTIONS & ANSWERS

পাঠ : প্রতিনিধি (কবিতা) সেবা দশম শ্রেনী বাংলা প্রশ্ন এবং উত্তর

 

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর

 

Q.1 গুরুপদে শিষ্য শিবাজি তার রাজ্য ও রাজধানী কী উদ্দেশ্যে দান করেছিলেন?

Ans:- গুরুদেবকে নগরের দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করতে দেখে শিবাজির ধারণা হলেছিল যে কী দান করলে গুরুদেব তৃপ্ত হবেন তাই গুরুদেবকে তৃপ্ত করার উদ্দেশ্যেই শিবাজি তার নিজ রাজ্য ও রাজধানী দান করেছিলেন।

 

Q.2 ভিক্ষা শেষ করে গুরু রামদাস ও তার শিষ্য শিবাজি কী করেছিলেন?

Ans:- ভিক্ষা শেষ করে নগরের এক প্রান্তে গিয়ে গুরু ও শিষ্য সন্ধ্যাস্নান সেরে নদী তীরে বসেন। ভিক্ষান্ন রন্ধন করে গুরু কিছু খেলেন এবং শিষ্যকে কিছু প্রসাদ দিলেন।

 

Q.3 শিষ্য শিবাজিকে গুরু রামদাস কীভাবে পরীক্ষা করতে চেয়েছেন?

Ans:- গুরু রামদাস শিবাজির কাঁধে ভিক্ষার ঝুলি দিয়ে ভিক্ষা করতে সঙ্গে নিয়ে যান। তিনি পরীক্ষা করতে চেয়েছেন শিবাজির মধ্যে অহংবােধ আছে কিনা। কারণ প্রকৃত সন্ন্যাসী রাজা হবেন সর্বত্যাগী। তিনি রাজা হয়েও হবেন রাজ্যহীন। গুরু রামদাস শিবাজিকে এই শিক্ষা দেবার জন্যই তাকে ভিক্ষা করতে সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন।

 

Q.4 প্রকৃত রাজার আসল ধর্ম কী?

Ans:- প্রকৃত রাজার আসল ধর্ম হল প্রজাদের হিত সাধন করা। তিনি রাজা হয়েও হবেন রিক্ত, ঐশ্বর্যহীন ও সর্বত্যাগী। প্রকৃত রাজার মধ্যে এই গুণগুলাে থাকলে তিনি হবেন রাজর্ষি একজন প্রকৃত রাজা রাজধর্ম পালন করেন প্রজাদের হিত সাধন করে। তাই তিনি রাজ্যেশ্বর হয়েও সর্বত্যাগী ভিক্ষুকের প্রতিনিধি।

Q.5 রাজর্ষি হওয়ার যোগ্যতা কারা পেতে পারেন?

Ans:- ভারতীয় পুরাতন সংস্কৃতির বিশ্বাস অনুসারে আদর্শবান রাজা হবেন ভিক্ষুকের প্রতিনিধি। তাই রিক্ত, ঐশ্বর্যহীন, সর্বত্যাগী ও প্রজাহিতৈষী রাজারাই রাজর্ষি হওয়ার যোগ্যতা কারা পেতে পারেন।

 

Q.6 রাজাকে ঈশ্বরের প্রতিনিধি বলা হয় কেন?

Ans:- প্রজাদের কল্যাণ সাধনের উদ্দেশ্যে ঈশ্বর রাজাকে সৃষ্টি করেন। কারণ, ঈশ্বর-সৃষ্ট প্রজাদের প্রতিপালন করা রাজার মূল ধর্ম। তাই রাজার রাজত্ব প্রজাদের সুশাসনের জন্য, উৎপীড়নের জন্য নয়। প্রজার মঙ্গলই রাজার একমাত্র উদ্দেশ্য হওয়া উচিত। এই জন্য রাজাকে ঈশ্বরের প্রতিনিধি বলা হয়।

 

Q.7 রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত চারটি কাব্যগ্রন্থের নাম লেখো।

Ans:- রবীননাথ ঠাকুর রচিত চারটি কাব্যগ্রন্থ হল - সোনার তরী, বলাকা, খেয়া এবং গীতাঞ্জলি

 

Q.8 গুরু শিষ্যকে গুরুর নামে রাজ্যভার গ্রহণ করতে বললেন কেন?

Ans:- প্রকৃত রাজা ঈশ্বরের প্রতিনিধি। রাজার নিজস্ব কোন কিছুই নেই। প্রজার কল্যাণ সাধনই বাজার প্রধান কর্তব্য। তাই আদর্শবান রাজার অহংবোধ থাকা উচিত নয়। শিবাজি তার গুরু রামদাসকে রাজ্য ও রাজধানী দান করেছিলেন। গুরু তাকে পরীক্ষা করার পর, তার মধ্যে যাতে অহংবোেধ না জন্মে তার জন্য রাজ্য ও রাজধানী পুনরায় তাকে ফিরিয়ে দিয়ে গুরুর নামে রাজ্য পরিচালনা করতে আদেশ দেন।

 

Q.9 প্রকৃত রাজধর্ম কী তা বুঝিয়ে লেখো।

Ans:- ভারতীয় পুরাতন সংস্কৃতি অনুসারে একজন আদর্শবান রাজা ভিক্ষুকের প্রতিনিধি। আদর্শবান রাজা রাজ্যেশ্বর হয়েও থাকবেন রিক্ত, ঐশ্বর্যহীন ও সর্বত্যাগী সন্ন্যাসী! তাকে হতে হবে প্রজার কল্যাণকারী। তাঁর প্রকৃত রাজধর্ম হবে প্রজার হিত সাধন করা। কারণ রাজার রাজত্ব প্রজাদের সুশাসনের জন্য, তাদের উৎপীড়ন করার জন্য নয়। রাজা ঈশ্বরের প্রতিনিধি। তাই রাজাকে হতে হবে রাজর্ষি।

 

Q.10 গুরু রামদাস শিবাজিকে রাজ্য ফেরত দিয়ে কী আদেশ করেছিলেন?

Ans:- গুরু রামদাস শিবাজিকে রাজ্য ও রাজধানী ফেরত দিয়ে গুরুর নামে গুরুর হয়ে রাজ্য পরিচালনা করার আদেশ দিয়েছিলেন। রাজা শিবাজি রাজ্য নিয়েও যেন থাকেন সর্বত্যাগী রাজ্যহীনের মতো তিনি যেন প্রকৃত রাজধর্ম পালন করেন অর্থাৎ প্রজার মঙ্গল সাধনে ব্রতী হন।

 

Q.11 গুরু রামদাসের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

Ans:- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত প্রতিনিধি কবিতায় গুরু রামদাসের পরিচয় পাওয়া যায়। গুরু রামদাস মারাঠা জাতির জাতীয় বীর ছএপতি শিবাজির গুরুদেব ছিলেন! তার আদর্শনিষ্ট জীবন, ত্যাগ ও সাধনা গভীরভাবে অনুপ্রাণিত করেছিল তার শিষ্য শিবাজিকে। গুরু রামদাস ছিলেন গেরুয়াধারী সর্বত্যাগী সাধক। তিনি তার শিষ্য শিবাজিকে প্রকৃত রাজধর্ম যে কী তা শিখিয়েছেন। ভারতীয় সংস্কৃতির প্রাচীন বিশ্বাস হল আদর্শবান রাজাই হবেন ভিক্ষুকের প্রতিনিধি। রিক্ত, ঐশ্বর্যহীন, সর্বত্যাগী, সাধক রাজাই রাজর্ষি হওয়ার যোগ্য গুরু রামদাস রাজা শিবাজিকে এই পাঠই শিখিয়েছেঈশ্বরের প্রতিনিধি হিসেবে শাসন করাই হল আদর্শবান রাজার প্রধান কর্তব্য। গুরুর পাদুকা দুটি সিংহাসনে রেখে শিবাজি রাজ্য শাসন করতেন।

 

SEBA/SMEBA CLASS 10 BENGALI QUESTIONS & ANSWERS

পাঠ : প্রতিনিধি (কবিতা) সেবা দশম শ্রেনী বাংলা প্রশ্ন এবং উত্তর

 

দীর্ঘ প্রশ্নোত্তর

 

Q.1 রাজা শিবাজির উপর গুরু রামদাসের প্রভাব কতটুকু পড়েছিল তা আলোচনা করো

Ans:- রাজা শিবাজির উপর গেরুয়াধারী সর্বত্যাগী সাধক গুরু রামদাসের গভীর প্রভাব পড়েছিল। গুরুর আদর্শনিষ্ঠ জীবন, ত্যাগ ও সাধনা শিবাজিকে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত করছিল। তিনি শিষ্য শিবাজিকে প্রকৃত রাজধর্মের পাঠ দিয়েছিলেন। ভারতীয় সংস্কৃতির প্রাচীন বিশ্বাস অনুসারে আদর্শবান রাজার কী গুণ থাকা প্রয়োজন তা তিনি গুরু রামদাসের কাছ থেকেই শিখেছেন। রাজা যে ঈশ্বরের প্রতিনিধি সেই জ্ঞান তিনি গুরুদেবের কাছেই পেয়েছেন। গুরু রামদাস তাঁকে রাজর্ষি হওয়ার পাঠ শিখিয়েছেন। রাজা শিবাজির উপর গুরু রামদাসের অপরিসীম প্রভাব পড়েছিল বলেই শিবাজি একজন আদর্শবান রাজা হতে পেরেছিলেন।

 

Q.2 ভারতের পুরাতন সংস্কৃতি অনুসারে ভারতীয় রাজধর্মের স্বরূপ আলোচনা করো

Ans:- ভারতীয় সংস্কৃতির পুরাতন বিশ্বাস অনুসারে একজন আদর্শবান রাজা হবেন ভিক্ষুকের প্রতিনিধি। প্রকৃত রাজধর্ম অনুসারে আদর্শবান রাজা হবেন সর্বত্যাগী, ঋষিতুল্য ব্যক্তির মতোতিনি রাজা হয়েও থাকবেন রিক্ত, ঐশ্বর্যহীন ও সর্বত্যাগী সন্ন্যাসীর মতো। তার প্রধান কর্তব্য হবে ঈশ্বরের প্রতিনিধি হিসাবে প্রজাদের কল্যাণ সাধন করা। আর্শবান রাজা হবেন ন্যায়বিধানকারী ও সুশাসক যার একমাত্র উদ্দেশ্য হবে প্রজাদের মঙ্গল সাধন করা। রাজা রাজ্যের অধীশ্বর হয়েও নিজ ভোগবিলাস ও কামনা-বাসনা থেকে মুক্ত থাকবেন! প্রজাদের সুরক্ষার জন্য তাকে প্রকৃত বীর যোদ্ধা হতে হবে। তিনি রাজা হয়েও রাজ্যহীনের মতো সাধনাপূর্ণ জীবনযাপন করবেন।

 

Q.3 গুরু রামদাসের গানের বিশেষত্ব উল্লেখ করো

Ans:- রামদাস ছিলেন মারাঠা জাতির জাতীয় বীর শিবাজির গুরুদেবতিনি একজন গেরুয়াধারী সর্বত্যাগী সন্ন্যাসী ছিলেন। তাই তার মনে কোন কামনা বাসনা ছিল না। তিনি গান গেয়ে নগরের দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করে জীবন যাপন করতেন। তিনি একতারা নিয়ে গান করতেন। জগতের জাগতিক জীবনের ছবি তিনি তার গানের মাধ্যমে মানুষের কাছে তুলে ধরতেন। তিনি তাঁর গানের মাধ্যমে ঈশ্বরের মহিমার কথা প্রকাশ করতেন! সর্বশক্তিমান ঈশ্বর যে আমাদের কর্মধারাকে নিয়ন্ত্রণ করেন, তা তার গানের মাধ্যমে তিনি প্রকাশ করতেন। তিনি তার গানের মাধ্যমে মানুষকে জীবনের আসল সত্য উপলব্ধি করাতেন। জগতের নাথ শংকর সকলকে দিয়েছেন ঘর, কেবল তাকেই করছেন পথের পথিক। এই পথে কোন বন্ধন নেই, আছে কেবল মুক্তির স্বাদ। মা অন্নপূর্ণা বিশ্বের অন্নের ভার নিয়েছেন, তাই পৃথিবীর সবাই সুখে দিন অতিবাহিত করছেন। কিন্তু তাকে তিনি ভিখারি করেছেন। ঈশ্বরের করুণা পাওয়ার ভিক্ষা। এই ভিখারির ভিক্ষাপাত্র ঈশ্বরের করুণার দ্বারা পূর্ণ। ঐশ্বর্যশালী হলে মানুষ ঈশ্বরকে ভুলে যায়। তাই তিনি সেই ভিক্ষারী হয়েছেন যার ভিক্ষাপাত্র ঈশ্বরের করুণার দ্বারা পরিপূর্ণ। ঈশ্বরের করুণায় তার অনুচর হয়ে থাকা সম্ভব।

Q.4 সপ্রসঙ্গ ব্যাখ্যা করো - "এ কেবল দিনে রাত্রে জল ঢেলে ফুটপাত্রে

….. বৃথা চেষ্টা তৃষ্ণা মিটাবারে।"

Ans:- আলোচ্য উদ্ধৃতিটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত প্রতিনিধিকবিতা থেকে গৃহিত। উদ্ধৃত অংশে কবি রাজা শিবাজির গুরুর প্রতি আপ্তবাক্যের অবতারণা করেছেন।

আলোচ্য কবিতায় মারাঠা অধিপতি ছত্রপতি শিবাজি একদিন তার গুরু রামদাসকে নগরের দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করতে দেখে ভাবলেন যে যিনি রাজার কুলগুরু, রাজ্য যার পদানত, তার কেন ভিক্ষাবৃত্তি? তবে কী তারও বাসনার শেষ নেই? কিন্তু এভাবে ভিক্ষা করে গুরুদেব কীভাবে তার বাসনা পূর্ণ করবেন? তার এইভাবে ভিক্ষা করা তো দিনে রাত্রে ফুটপাত্রে জল ঢালার মতোএইভাবে ফুটা পাত্রে জল ঢেলে তা পূর্ণ করা যায় না। আর ওই জলে তৃষ্ণাও মিটবে না। গুরুজীর দৈন্যতা ওই ফুটপাত্রের মতোই, তাতে মুঠির ভিক্ষা দিয়ে কীভাবে তার দৈন্য দশা ঘুচবে? রাজা শিবাজি তার গুরু রামদাসের দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করার পরিপ্রেক্ষিতে এ রকম ভেবেছিলেন।

 

SEBA/SMEBA CLASS 10 BENGALI QUESTIONS & ANSWERS

পাঠ : প্রতিনিধি (কবিতা) সেবা দশম শ্রেনী বাংলা প্রশ্ন এবং উত্তর

 

Q.5 সপ্রসঙ্গ ব্যাখ্যা করো

 অন্নপূর্ণা মা আমার......লয়েছে বিশ্বের ভার,

সুখে আছে সর্ব চরাচর।

Ans:- আলোচ্য উদ্ধৃতিটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত প্রতিনিধি কবিতা থেকে গৃহীত। কবি এখানে শিবাজির গুরু রামদাসের গানের একটি অংশ ব্যক্ত করেছেন।

মারাঠা অধিপতি ছত্রপতি শিবাজির গুরুদেব রামদাস একজন সর্বত্যাগী সাধক। তিনি নগরের দ্বারে দ্বারে একতারা নিয়ে গান করে ভিক্ষা করে ফেরেন। তার গানের একটি অংশ এখানে উদ্ধৃত করা হয়েছে। এই বিশ্বের প্রতিপালনের জন্য যে অন্নের প্রয়োজন হয় তার ভার নিয়েছেন অন্নের দেবী মাতা অন্নপূর্ণা। তারই কৃপায় পৃথিবীতে মানুষ তার দেওয়া অন্ন খেয়ে সুখ-স্বাচ্ছন্দে জীবনধারণ করছে। উদ্ধতাংশের মাধ্যমে কবি এই কথাই বোঝজাতে চেয়েছেন

 

Q.6 মারাঠা অধিপতি শিবাজির সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

Ans:- মহারাষ্ট্রের মারাঠা জাতির জাতীয় বীর শিবাজি। তিনি ছিলেন এক আদর্শবান দেশভক্ত রাজা। তার পিতার নাম শাহজি এবং মাতার নাম ছিল জীজাবাঈ। জীজাবাঈ একজন সতী এবং বীরাঙ্গনা মহিলা ছিলেন। শিবাজি নিজের বাহুবল, সাহস, বীর্য ও কৌশল দ্বারা মহারাষ্ট্রে একটি বিশাল হিন্দুরাজ্য স্থাপন করেছিলেন। শিবাজি ছিলেন মা ভবানী দেবীর ভক্ত। সে সময় দিল্লীর সুলতান ছিলেন ঔরংগজেব। তিনি অত্যন্ত কৌশল সন্ধির ভান করে একবার শিবাজিক দিলীতে আমন্ত্রণ করেন। শিবাজি দিল্লীতে যাওয়ার পর ঔরংগজেব তাকে গৃহবন্দী করে রাখেন। অনেক দিন পর শিবাজি কৌশলে রােগমুক্তির ভান করে তার প্রিয়জনদের ফলমূল বিতরণ করার সময় ঝুড়িতে করে বন্দী দশা থেকে পালিয়ে যান। পরে তার সংগে ঔরংগজেবের অনেকবার যুদ্ধ হয়। শিবাজি মহারাষ্ট্রের রায়গড়ে রাজদরবার স্থাপন করে ছত্রপতি নাম ধারণ করে সিংহাসনে বসেন। শিবাজির গুরুর নাম ছিল রামদাস গুরু রামদাসের উপদেশে তিনি রাজ্য শাসন করতেন বৈরাগী গুরু রামদাসের উত্তৰীৰ গেরুয়া রঙের। তাই শিবাজির পতাকার রঙ ছিল গেরুয়া। গেরুয়া ত্যাগের প্রতীক। আনুমানিক ১৬২৭ সালের এপ্রিল মাসে শিবাজির জন্ম হয় এবং ১৬৮০ সালের ৩ মে তিনি মারা যান

 

Q.7  সপ্রসঙ্গ ব্যাখ্যা করো । তোমারি দাসত্বে প্রাণ। অনিন্দে করিব দান

শিবাজি কহিলা নমি তারে।

Ans:- আলোচ্য উদ্ধৃতিটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত প্রতিনিধি কবিতা থেকে গৃহীত। আলোচ্য উদ্ধৃতাংশে গুরু রামদাসের প্রতি শিবাজির প্রগাঢ় ভক্তি প্রকাশিত হয়েছে। শিবাজি গুরু রামদাসকে মনে প্রাণে ভক্তি শ্রদ্ধা করতেন। তিনি গুরুদেবকে তার রাজ্য ও রাজধানী দান করায় গুরুদেব তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে তাকে রাজ্য দেবার পর শিবাজি কী করবেন, তার অন্য কী গুণ আছে ? এর উত্তরে শিবাজি গুরু রামদাসকে প্রণাম করে বলেছিলেন যে তিনি গুরুর দাসত্বে আনন্দে প্রাণ দান করতে প্রস্তুত আছেন। আলোচ্য অংশে এভাবেই শিবাজি তার গুরুর প্রতি প্রগাঢ় ভক্তি প্রকাশ করেছেন।

 

Q.8  ব্যাখ্যা করো । হে ভবেশ, হে শংকর সবারে দিয়েছ ঘর,

আমারে দিয়েছ শুধু পথ।"

Ans:- আলোচ্য উদ্ধৃতাংশটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতিনিধি' নামক কবিতা থেকে গৃহীত। এখানে কবি শিবাজির গুরু রামদাসের ঈশ্বরের জয়গানের কথা ব্যক্ত করেছেন।

মারাঠা অধিপতি শিবাজির গুরুদেব রামদাস একজন সর্বত্যাগী সাধক ছিলেন। তিনি নগরের দ্বারে দ্বারে ভিক্ষে করে বেড়ান। তার মনে কোন কামনা বাসনা নেই। তিনি গান গেয়ে গেয়ে ভিক্ষে করে বেড়ানাের সময় উক্ত গানের উদ্ধৃতিটি করেছেন। তিনি গানের মাধ্যমে জীনের আসল সত্য মানুষকে উপলব্ধি করাতেন। তিনি গানের মাধ্যমে বলছেন, ঈশ্বর সকলকে ঘর দিয়েছেন; কেবল তাঁকেই করেছেন পথিক। এর অন্তর্নিহিত অর্থ হল এ পথ সে পথ যে পথে নেই কোন বন্ধন, আছে কেবল মুক্তির অনাবিল স্বাদ। আলোচ্য উদ্ধতাংশে সর্বত্যাগী সন্ন্যাসী রামদাস শিবশংকর অর্থাৎ ঈশ্বরের মহিমার জয়গান করেছেন।

 

SEBA/SMEBA CLASS 10 BENGALI QUESTIONS & ANSWERS

পাঠ : প্রতিনিধি (কবিতা) সেবা দশম শ্রেনী বাংলা প্রশ্ন এবং উত্তর

 

Q.9  ব্যাখ্যা করো - বৈরাগীর উত্তরীয়। পতাকা করিয়া নিয়ে।

কহিলেন গুরু রামদাস।

Ans:- আলোচ্য উদ্ধৃতাংশটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত প্রতিনিধি কবিতা থেকে গৃহীত। এখানে কবি ভারতীয় পুরাতন রাজধর্মের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত তুলে ধরেছেন।

শিবাজীর গুরু রামদাস একজন বৈরাগী। পৃথিবীর কোন কিছুতেই তার আসক্তি নেই। তিনি শিষ্য শিবাজীকে পরখ করে দেখলেন। শিবাজীর গুরু রামদাসের আদর্শে অনুপ্রাণীত রামদাস শিবাজীকে ঈশ্বরের প্রতিনিধিরূপে রাজ্যশাসন করতে অনুপ্রাণীত করেন। তার রাজ্যের প্রতীকটাও যাতে ত্যাগের প্রতীক হয়, তার লক্ষ্যে তিনি শিবাজিকে গেরুয়া পতাকা হিসেবে চিহিত করতে বলেন। বৈরাগীর উত্তরীয় গেরুয়া। গেরুয়া ত্যাগের প্রতীক। প্রকৃত রাজা হবেন সর্বত্যাগী সন্ন্যাসী এবং যার প্রধান লক্ষ্য হবে প্রজার কল্যাণ সাধন করা।

 

Q.10  প্রতিনিধি' কবিতা অবলম্বনে প্রকৃত রাজধর্ম কী আলোচনা করো।

Ans:- প্রাচীন ভারতের সংস্কৃতি অনুসারে একজন আদর্শবান রাজা হবেন ভিক্ষুকের প্রতিনিধি। রাজধর্ম অনুসারে রাজাকে হতে হবে ঋষিতুল্য ব্যক্তি। তার জীবন প্রজার মঙ্গলার্থে উৎসর্গ করতে হবে। প্রকৃত রাজধর্ম অনুসারে রাজাকে হতে হবে প্রজাহিতৈষী; প্রজার কল্যাণ সাধনই হবে তার প্রধান ব্রত। তিনি হবেন ন্যায়বিধানকারী সুশাসক। তিনি হবেন ঈশ্বরের প্রতিনিধি। তাঁকে নিজ ভোগ, বিলাস, কামনা-বাসনা থেকে মুক্ত থাকতে হবে। রাজার প্রকৃত রাজধর্ম হল ঈশ্বরের প্রতিনিধি হিসেবে সন্ন্যাসীর মতো জীবন যাপন করে প্রজাদের কল্যাণ সাধন করা।

 

SEBA/SMEBA CLASS 10 BENGALI QUESTIONS & ANSWERS

পাঠ : প্রতিনিধি (কবিতা) সেবা দশম শ্রেনী বাংলা প্রশ্ন এবং উত্তর

 

Q.11  প্রতিনিধি কবিতার সারাংশ লেখো

Ans:- সারাংশ :

প্রতিনিধি কবিতাটি কবির কথা ও কাহিনী কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত। মারাঠা জাতির জাতীয় বীর ছত্রপতি শিবাজি ও তার গুরু সাধক রামদাসের আদর্শনিষ্ট জীবন, ত্যাগ ও সাধনার গভীরতাকে উপাদান হিসাবে গ্রহণ করে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কাহিনিমূলক এই কবিতাটি রচনা করেছেন।

একদিন সকালবেলা মারাঠা অধিপতি ছত্রপতি শিবাজি সেতারার দূর্গশীর্ষ হতে দেখতে পান যে তার গুরু সর্বত্যাগী সন্ন্যাসী রামদাস নগরের দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করে ফিরছেন। রাজার মনে হল, তার গুরুকে কতখানি দিলে তার মনোবাসনা পূর্ণ হবে। এই ভেবে তিনি বালাজির হাতে একটি পত্র লিখে দিয়ে সেই পত্র গুরু রামদাসকে পাঠিয়ে দেন। সর্বত্যাগী গুরু পথ দিয়ে চলেছেন গান গেয়ে গেয়ে। তিনি তো ভিখারি, তাই তার মনে নেই কোনো কামনা বাসনা। গুরু রামদাস তার গান শেষ করে মধ্যাহ্ন স্নান সেরে যখন দুর্গদ্বারে এসে উপস্থিত হন, তখন বালাজি প্রণাম করে রাজার পাঠানো পত্রটি তার চরণে অর্পণ করেন। গুরু কৌতুহল ভরে পত্রটি পাঠ করে বুঝলেন যে তার শিষ্য শিবাজি তার নিজ রাজ্য ও রাজধানী গুরুপদ দান করেছেন। পরদিন গুরু রামদাস তার শিষ্য শিবাজির কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করেন যে, তিনি তার সর্বস্ব দান করে দিয়েছেন কেন? তার কী গুণ আছে? তিনি কী করতে পারবেন? উত্তরে শিবাজি জানান যে তিনি গুরুর দাসত্বে তার প্রাণ আনন্দে দান করবেন। তখন গুরু রামদাস তার ভিক্ষার ঝুলি শিষ্য শিবাজির কাধে তোলে দিয়ে ভিক্ষা করতে নিয়ে গেলেন। রাজাকে ভিখিরির বেশে দেখে নগরবাসী কম্পমান হস্তে লজ্জা ভরে রাজাকে ভিক্ষে দেয় অবশেষে দিনের শেষে নগরের এক প্রান্তে দিবসান্তে নদীর তীরে তারা অবস্থান করেন গুরু রামদাস রন্ধন করে সারাদিনের ক্ষুদার্থ শিবাজীকে অন্ন প্রসাদ দান করেন শিষ্য শিবাজী গুরুকে আরোও কঠিন পরীক্ষা দিতে প্রস্তুত আছেন বলে জানালেন গুরু রামদাস শিষ্যের ত্যাগে অত্যন্ত হৃদয় প্রীত হয়ে পুনরায় তাকে রাজ্যভার অর্পণ করে গুরুর নামে গুরুর হয়ে রাজ্য শাসন করতে বললেন রাজার রাজত্ব প্রজাদের সুশাসনের জন্য তাদেরকে উৎপীড়ন করার জন্য নয়  এ রাজ্য ও রাজা তার নয়, তিনি ভগবানের প্রতিনিধি মাত্র প্রজার মঙ্গল সাধনই তার একমাত্র উদ্দেশ্য হওয়া উচিত

Q.12  প্রতিনিধি' কবিতার নামকরণের সার্থকতা বিচার করো

Ans:- নামকরণ :

নামকরণের মাধ্যমে কবিতার অন্তর্নিহিত অর্থ পরিস্ফুট হয়

প্রতিনিধি কবিতাটি কবির কথা ও কাহিনী কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত। মারাঠা জাতির জাতীয় বীর ছত্রপতি শিবাজি ও তার গুরু সাধক রামদাসের আদর্শনিষ্ট জীবন, ত্যাগ ও সাধনার কাহিনি বর্ণিত হয়েছে

শিবাজী দেখতে পান যে তার গুরু রামদাস নগরের ঘরে ঘরে ভিক্ষা করে ফিরছেন তা দেখে শিবাজী ভাবেন তার মত রাজ্যেশ্বর শিষ্য হওয়া সত্ত্বেও তার ওপর আর কি বাসনা অতৃপ্ত থাকতে পারে যে তিনি নগরের ঘরে ঘরে ভিক্ষে করে ফিরছেন তাই শিবাজী রাজ্য ও রাজধানী গুরুকে দান করে তাকে তৃপ্ত করতে চেয়েছিলেন শিবাজীর নিকট হতে রাজ্য ও রাজধানী পেয়ে গুরু রামদাস তাকে সন্ন্যাসব্রত পালনে উৎসাহ প্রদান করেন কারণ রাজা সর্বত্যাগী না হলে তিনি প্রজাদের কল্যাণকারী হতে পারবেন না তাইতো গুরু রামদাস তার ভিক্ষার ঝুলি শিবাজীর কাঁধে তুলে দিয়ে ভিক্ষা করতে নিজেও গিয়েছিলেন পরে তিনি শিবাজীকে তার রাজ্য ফিরিয়ে দিয়ে গুরুর নামে গুরুর হয়ে রাজ্য শাসন করতে বলেন গুরুর আদেশ মেনে শিবাজী সর্বত্যাগী হয়ে রাজ্যশাসনে মনোযোগ দেন আদর্শ রাজা ঈশ্বরের প্রতিনিধি তিনি প্রজার সর্বাঙ্গীন মঙ্গল সাধনে সংকল্পবদ্ধ হন প্রাচীন ভারতের সংস্কৃতি অনুসারে একজন আদর্শবান রাজা ভিক্ষুকের প্রতিনিধি তাই আলোচ্য কবিতাটির নামকরণ যথার্থ সার্থক হয়েছে

 

Q.13  প্রতিনিধিকবিতার কবির পরিচয় দাও।

Ans:- কবি পরিচিতি:

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভারতীয় সাহিতের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট প্রতিভাসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৮৬১ সালের ৭ মে কলকাতার তোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মহর্ষি দেবেন্দনাথ ঠাকুর এবং মাতার নাম সারদা দেবী। তিনি ছিলেন পিতামাতার চতুর্দশ সন্তান। তিনি অসামান্য সাহিত্য প্রতিভার অধিকারী ছিলেন। রবীন্দ্রনাথ একাধারে কবি, সাহিত্যিক, নাট্যকার, ঔপন্যাসিক এবং শিল্পী ছিলেন। সাহিত্যের সকল বিভাগকেই তিনি সমৃদ্ধ করেছেন। কবির প্রথম প্রকাশিত কবিতা হল হিন্দুমেলার উপহারতাঁর প্রথম প্রবন্ধ ভুবনমোহিনী প্রতিভা, প্রথম উপন্যাস করুণাএবং প্রথম ছোটগল্প ভিখারিণী ইংরেজি কাব্যগ্রন্থ গীতাঞ্জলি র জন্য তিনি ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে নোবেল পুরস্কারে সম্মানিত হন। ১৯০১ সালে রবীন্দ্রনাথ বোলপুরের শান্তিনিকেতনে আশ্রম বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯১৮ সালে এই বিদ্যালয় বিশ্বভারতী বিদ্যালয়ে উন্নীত হয়। তার রচিত কাব্যগ্রন্থের মধ্যে গীতাঞ্জলি’, ‘সোনার তরী’, ‘কল্পনা, ‘বলাকা’, ‘পূরবী', ‘শিশু, ‘কথা ও কাহিনী বিশেষভাবে প্রসিদ্ধ। তিনি পৃথিবীর প্রায় সব দেশই ভ্রমণ করেছিলেন। তিনি বিপুল সংখ্যক গ্রন্থ রচনা করেন। ১৯৪১ সালের ৭ আগষ্টে ভারতীয় সাহিত্যের এই সর্বশ্রেষ্ঠ প্রতিভার দেহাবসান ঘটে।

 

Q.14  তাৎপর্য লেখো - ওহে ত্রিভুবনপতি, বুঝি না তােমার মতি

কিছুই অভাব তব নাহি।'

Ans:- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত প্রতিনিধি কবিতায় বর্ণিত শিবাজির গুরুদেব রামদাস একজন নিষ্ঠাবান ত্যাগী সন্যাসী। তিনি একতারা নিয়ে গান করে নগরের ঘরে ঘরে ভিক্ষা করে ফেরেন। তিনির একতারা টিতে গান ধরেছে আর আনন্দে তার দু'চোখ বেয়ে অশ্রু ঝরছে। গুরু রামদাস ঈশ্বরের মহিমা প্রচার করে বলছেন যে ঈশ্বরের করুণা তিনি বুঝে উঠতে পারছেন না। সবিই ঈশ্বরের দান । তবুও ঈশ্বর মানুষের অন্তরের সবকিছু পাওয়ার ইচ্ছায় ব্যস্ত। গুরু রামদাস বুঝতে পারছেন, ঈশ্বরের প্রতি মন, প্রাণ উজাড় করা ভক্তিই ঈশ্বরের একান্ত প্রিয়।

 

Q.15 তাৎপর্য লেখো? “গুরু কহে, তবে শোন করিলি কঠিন পণ।

অনুরূপ নিতে হবে ভার।'

Ans:- আলোচ্য উদ্ধৃতাংশটি শিষ্য শিবাজির প্রতি তার গুরু রামদাসের উক্তি।

শিবাজি তার গুরু রামদাসকে নিজ রাজ্য ও রাজধানী দান করার পর ভিখারির বেশ গুরুর সাথে নগরের দোরে দোরে ভিক্ষা করেন। ভিক্ষা করা শেষ হলে দিবসান্তে নগরের এক প্রান্তে নদী তীরে ভিক্ষান্ন রান্না করে কিছু গুরুদেব গ্রহণ করলেন এবং কিছু শিষ্যকে প্রসাদ দিলেন। শিষ্য শিবাজি প্রসাদ গ্রহণ করে তৃপ্ত হয়ে গুরুদেবকে হেসে বললেন, তিনি আরও কঠিন পরীক্ষা দিতে প্রস্তুত আছেন। গুরু তখন অত্যন্ত প্রীত হয়ে আলোচ্য উক্তিটির অবতারণা করেছেন। তিনি বললেন যে শিবাজি যেমন কঠিন পণ করেছে অনুরূপ ভাবে তাকে বড়ো ভারও গ্রহণ করতে হবে। এই বড়ো ভার হল গুরুর নামে গুরুর হয়ে রাজ্য পরিচালনা করা অর্থাৎ রাজর্ষির মতাে রাজ্য পরিচালনা করা।

 

Q.16  তাৎপর্য লেখো : অতুল ঐশ্বর্যে রত, তার ভিখারির ব্রত|

এ যে দেখি জলে ভাসে শিলা!

Ans:- আলোচ্য উদ্ধৃতাংশটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত প্রতিনিধি কবিতা হতে গৃহীত। আলোচ্য অংশে ভিখারির বেশে শিবাজির নগরের দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করা নগরবাসীদের কাছে এক বিস্ময় এবং অবিশ্বাস্য ঘটনা। জলে শিলা ভাসার মতো অনুরূপ ঘটনা। কারণ রাজা শিবাজি অতুল ঐশ্বর্যের অধিকারী। তাই তার ভিখারির ব্রত নগরবাসীদের কাছে অবিশ্বাস্য ঘটনা। প্রকৃত অর্থে রাজা তো ঈশ্বরের প্রতিনিধি। এই সত্য গুরু রামদাস শিষ্য শিবাজিকে উপলব্ধি করা নোর জন্য ভিখারির ব্রত পালন করান।

Q.17  এ যে দেখি জলে ভাসে শিলা’ - পংক্তিটি কোন কবিতার অন্তর্গত? কবি কে? প্রসঙ্গ ব্যাখ্যা করো

Ans:- পংক্তিটি কথা ও কাহিনীকাব্যগ্রন্থের প্রতিনিধিকবিতার অন্তর্গত।

কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

একদিন প্রভাতকারে শিবাজি দুর্গশীর্ষ হতে দেখতে পান যে তার গুরু রামদাস নগরের ঘরের দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করছেন। এই দৃশ্য প্রত্যক্ষ করে রাজা ভাবলেন যে ত্যাগী সন্ন্যাসী রামদাস তার গুরুপদে আসীন হওয়া সত্বেও তার এমন কী অভাব থাকতে পারে, যার জন্য তিনি ঘরের দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করে বেড়াচ্ছেন। গুরু রামদাসের মনোবাসনা জানার জন্য শিবাজি তখন একটি পত্র লিখে বালাজির হাতে দিয়ে গুরুর কাছে পাঠিয়ে দিলেন। গুরু রামদাস মধ্যাহ্ন স্নান সেরে যখন দৃর্গদ্বারে এলেন, তখন বালাজি গুরুকে প্রণাম করে রাজার পত্রটি তার পায়ের কাছে রাখেন। গুরু কৌতুহল ভরে পত্রটি পাঠ করে বুঝলেন যে শিষ্য শিবাজি তার রাজ্য ও রাজধানী গুরুপদে দান করেছেন। পরদিন গুরু রামদাস শিবাজির কাছে এসে তাকে সন্ন্যাস ব্রতে অনুপ্রাণিত করেন এবং তার ভিক্ষার ঝুলি শিষ্যের কাঁধে তুলে দিয়ে তাকে ভিক্ষা করতে নিয়ে গেলেন। শিবাজিকে ভিখিরির বেশে দেখে নগরবাসী বিস্মিত হল। রাজার ভিক্ষাপাত্র হাতে দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করে বেড়ানো তাদের নিকট একটি অবিশ্বাস্য ঘটনা। জলে পাথর ভাসাটা যেমন অবিশ্বাস্য মনে হয়, ঠিক তেমনি রাজাকে ভিক্ষে করে বেড়ানো দেখাটাও একটি অবিশ্বাস্য ব্যাপার।

 

Q.18  রাজ্য লয়ে রবে রাজ্যহীন' - উক্তিটির মর্মার্থ ব্যাখ্যা করো।

Ans:- মারাঠা অধিপতি ছত্রপতি শিবাজির গুরুদেব রামদাস একজন সর্বত্যাগী সাধক। একদা শিষ্য শিবাজি গুরু রামদাসের বাসনার পরিমাণ পরীক্ষার্থে তার রাজ্য ও রাজধানী নিবেদন করে পত্র দ্বারা গুরুদেবকে দান করে বালাজির মাধ্যমে গুরুকে প্রেরণ কৱেন। গুরু রামদাস শিষ্যের ত্যাগে অত্যন্ত প্রীত হয়ে পুনরায় তাকে রাজ্যভার অর্পণ করে গুরুর নামে গুরুর হয়ে রাজ্য শাসন করতে বললেন। কারণ এ রাজ্য তার নয়, তিনি ঈশ্বরের প্রতিনিধি মাত্র। গুরুর আদেশে শিষ্য শিবাজি পুনরায় শাসনে প্রবৃত্ত হন। তিনি রাজ্যভার পেলেও রাজ্যহীনের মত। ঈশ্বরের প্রতিনিধিস্বরূপ ভিক্ষুকের মত রিক্ত, সর্বত্যাগী, ঐশ্বর্যহীন সাধকের ন্যায় প্রকৃত রাজধর্মে ব্ৰতী হলেন। তিনি ঋষির মত প্রজাপালন করতে লাগলেন।

 

SEBA/SMEBA CLASS 10 BENGALI QUESTIONS & ANSWERS

পাঠ : প্রতিনিধি (কবিতা) সেবা দশম শ্রেনী বাংলা প্রশ্ন এবং উত্তর

 

পাঠ অনুসরণে

 

Q.1  শূন্যস্থান পূরণ করো 

) ___ রাজার সাজে _____, _____ মাঝে 

কে তুমি _____ কর বাস

Ans:- আমারে রাজার সাজে বসায়ে সংসার মাঝে।

কে তুমি আড়ালে কর বাস।

) _____ উত্তরীয় _____ করিয়া নিয়ো 

কহিলেন গুরু _____  

Ans:- বৈরাগীর উত্তরীয় পতাকা করিয়া নিয়ো 

কহিলেন গুরু রামদাস।

) অবশেষে _____ নগরের এক _____

নদীকূলে _____ সারি

Ans:- অবশেষে দিবসান্তে নগরের এক প্রান্তে

নদী কুলে সন্ধ্যাস্নান সারি

) দুর্গে _____ বাজে ক্ষান্ত দিয়া _____

বিশ্রাম _____পুরবাসী

Ans:- দুর্গে দ্বিপ্রহর বাজে, ক্ষান্ত দিয়া কর্মকাজে

বিশ্রাম করিছে পুরবাসী।

) _____ মা আমার লয়েছে _____ ভার,

সুখে আছে সর্ব _____

Ans:- অন্নপূর্ণা মা আমার লয়েছে বিশ্বের ভার

সুখে আছে সর্ব চরাচর।

) কেবল _____ জল ঢেলে _____ 

বৃথা চেষ্টা _____ মিটাবারে

Ans:- এ কেবল দিনে রাত্রে জল ঢেলে ফুটপাত্রে

বৃথা চেষ্টা তৃষ্ণা মিটাবারে।

) তোমারি _____ প্রাণ _____  করিব দান’ 

_____ কহিলা নমি তারে

Ans:- তোমারি দাসত্বে প্রাণ আনন্দে করিব দান

শিবাজি কহিলা নমি তারে।

 

SEBA/SMEBA CLASS 10 BENGALI QUESTIONS & ANSWERS

পাঠ : প্রতিনিধি (কবিতা) সেবা দশম শ্রেনী বাংলা প্রশ্ন এবং উত্তর

 

পাঠনির্ভর ব্যাকরণ

 

Q.1  (ক) বাক্য রচনা করো :

[মিটাবারে, চরাচর, দ্বারে দ্বারে, সমাপন, দাসত্ব, থরথর, প্রতিনিধি, পুরবাসী]

Ans:-

মিটাবারে - ফুটপাত্রে জল ঢালা বৃথা চেষ্টা পাত্রের তৃষ্ণা মিটাবারে।

চরাচর- এই চরাচর মাঝে ঈশ্বর বিরাজমান।

দ্বারে দ্বারে - গুরু রামদাস নগরের দ্বারে দ্বারে গান গেয়ে ভিক্ষা করে ফেরেন।

সমাপন- শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সকল প্রকার যুদ্ধেরই সমাপন দরকার।

দাসত্ব - অপরের দাসত্ব করে জীবন অতিবাহিত করা উচিত নয়।

থরথর- প্ৰচন্ড ভূমিকম্পে সমস্ত এলাকা থরথর করে কেপে উঠেছিল।

প্রতিনিধি - আদর্শবান রাজা ঈশ্বরের প্রতিনিধি।

পুরবাসী- পুরবাসীগণ কম্পিত হাতে রাজা শিবাজিকে ভিক্ষা দিল।

 

Q.1  (খ) পদ পরিবর্তন করো।

অধনা - আধুনিক।   অগ্নি - আগ্নেয়।      ঘাত - আহত।

অন্তর - আন্তরিক।   দেব - দৈব।      তপ্ত - তাপ।

উল্লাস - উল্লাসিত।   মন - মানসিক     সন্ধ্যা - সান্ধ্য!

তরুণ - তারুণ্য।   উচিত - ঔচিত্য।   ভ্রম - ভ্রান্তি।

শীত - শৈত।      মহত্ব - মহত।     এক - একই।

উদার - উদারতা!   সংযম - সংযমী।    মোহ - মোহিত।

নৈশ - নিশি।

 

Q.2  প্রশ্ন উক্তি কত প্রকার ও কী কী?

Ans:- উক্তি দুই প্রকার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ উক্তি।

 

Q.3  উক্তি পরিবর্তন করো।

ক) প্রত্যক্ষ উক্তি -- অনিল বললো, “আমি প্রধানমন্ত্রীকে দেখেছি।

Ans:- পরোক্ষ উক্তিঅনিল বললো যে সে প্রধানমন্ত্রীকে দেখেছে।

খ) প্রত্যক্ষ উক্তিরাম বলল, “আমি আজ যাব না।

Ans:- পরোক্ষ উক্তি- রাম জানাল যে সে আজ যাবে না।?

) প্রত্যক্ষ উক্তি - শিক্ষক মহাশয় আমাকে বলেছেন, “তোমার বাড়ির ঠিকানাটা কী?”

Ans:- পরোক্ষ উক্তি- শিক্ষক মহাশয় আমার বাড়ির ঠিকানা জিজ্ঞেস করলেন।

ঘ) প্রত্যক্ষ উক্তিহরি বললো, আমি কালিদাসের নাম শুনেছি।

Ans:- পরোক্ষ উক্তিহরি বললো যে সে কালিদাসের নাম শুনেছে।

নিজে করো

১) বাবা আমাকে বললেন, “এখন আমাকে বিরক্ত করিস না।

Ans:- পরোক্ষ উক্তি- বাবা আমাকে বললেন যে আমি যেন তাকে বিরক্ত না করি

২) অনিতা মাকে বলল, “আমারা কোথায় যাচ্ছি মা।

Ans:- পরোক্ষ উক্তি- অনিতা মাকে জিজ্ঞেস করে জানতে চাইলো যে তারা কোথায় আছে

৩) রানি রিন্টুকে বলল, “তুই কোথায় যাচ্ছিস ?”

Ans:- পরোক্ষ উক্তি- রানী রিন্টু কে জিজ্ঞেস করলো যে সে কোথায় যাচ্ছে

৪) ভদ্রলোকটি বললেন, “ওগো সাধু আমি টাকা-পয়সা চাই না।

Ans:- পরোক্ষ উক্তি- ভদ্রলোকটি সাধুকে বললেন যে তিনি টাকাপয়সা চান না

 

Q.4  প্রবাদ-প্রবচন কাকে বলে উদাহরণ দাও।

Ans:- প্রবাদ-প্রবচন বাংলা চলিত ভাষার অন্যতম সম্পদ। কোনো শিক্ষিত-সমাজ তথা পণ্ডিতগণ এগুলো রচনা করেননি। এগুলো সাধারণ সহজ-সরলমনা জনসাধারণের রচনা।

যেমন

অতিভক্তি চোরের লক্ষণ অত্যধিক বিনয় বা ভক্তি সন্দেহের সৃষ্টি করে।

অল্পবিদ্যা ভয়ঙ্করীস্বল্পমাত্রায় জ্ঞান বিপজ্জনক।

গায়ে মানে না আপনি মোড়লঅনধিকার চর্চা, অবাঞ্ছিত।

মিছা কথা আর সিঁচা জল কতক্ষণ রয়মিথ্যা কথা ধরা পড়বেই।

নিজে করো।

নানা মুনির নানা মত- বিভিন্ন জ্ঞানীর বিভিন্ন মত

সবুরে মেওয়া ফলে- অপেক্ষা করলে ভালো ফল পাওয়া যায়

সস্তার তিন অবস্থা- অল্প দামের জিনিসের গুণমান ভালো হয়না 

ভূগের মা গঙ্গা পায় না- অত্যন্ত ভাগাভাগিতে ঠাঁই হয় না

মোল্লার দৌড় মসজিদ পর্যন্ত- যার ক্ষমতা সীমাবদ্ধ

দশচক্রে ভানি ভুত- নানাজনের চক্রান্তে অসম্ভবও সম্ভব হয়

 

SEBA/SMEBA CLASS 10 BENGALI QUESTIONS & ANSWERS

পাঠ : প্রতিনিধি (কবিতা) সেবা দশম শ্রেনী বাংলা প্রশ্ন এবং উত্তর

 

DOWNLOAD PDF

 

*************************


Post a Comment

0 Comments