ASSAM SEBA/SMEBA CLASS 10 BENGALI QUESTIONS & ANSWERS
সেবা দশম শ্রেনী বাংলা প্রশ্ন এবং উত্তর
পাঠ : বলাই
রবীন্দ্রনাথ
ঠাকুর
ASSAM SEBA/SMEBA CLASS 10 BENGALI QUESTIONS & ANSWERS
বলাই
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
লেখক পরিচিতি :
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন একজন অগ্রণী বাঙালি
কবি, ঔপন্যাসিক, সংগীতস্রষ্টা, নাট্যকার, চিত্রকর, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক, অভিনেতা, কণ্ঠশিল্পী
ও দার্শনিক। তাঁকে বাংলা ভাষার
সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক মনে করা হয়।[৩] রবীন্দ্রনাথকে গুরুদেব, কবিগুরু ও বিশ্বকবি অভিধায় ভূষিত করা হয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ৭ই – মে, ১৮৬১ সালে কলকাতার জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে
জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর পিতা ছিলেন
ব্রাহ্ম ধর্মগুরু দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং মাতা ছিলেন সারদাসুন্দরী দেবী। রবীন্দ্রনাথের কাব্যসাহিত্যের বৈশিষ্ট্য ভাবগভীরতা, গীতিধর্মিতা চিত্ররূপময়তা, অধ্যাত্মচেতনা, ঐতিহ্যপ্রীতি, প্রকৃতিপ্রেম, মানবপ্রেম, স্বদেশপ্রেম, বিশ্বপ্রেম, রোম্যান্টিক সৌন্দর্যচেতনা, ভাব, ভাষা, ছন্দ ও আঙ্গিকের বৈচিত্র্য, বাস্তবচেতনা ও প্রগতিচেতনা। ১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদের জন্য তিনি সাহিত্যে নোবেল
পুরস্কার লাভ করেন। তাঁর রচিত আমার সোনার
বাংলা ও জনগণমন-অধিনায়ক জয় হে গানদুটি যথাক্রমে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ ও
ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের জাতীয় সংগীত।জীবনের শেষ চার বছর ছিল তাঁর ধারাবাহিক
শারীরিক অসুস্থতার সময়। এই সময়পর্বে রচিত রবীন্দ্রনাথের কবিতাগুলি ছিল
মৃত্যুচেতনাকে কেন্দ্র করে সৃজিত কিছু অবিস্মরণীয় পংক্তিমালা। দীর্ঘ রোগভোগের পর ১৯৪১ সালের ৭ই আগস্ট জোড়াসাঁকোর
বাসভবনেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা সাহিত্যে প্রথম
সার্থক ছোট গল্প রচনা করেন। তার পুর্বে কয়েকজন লেখক কিছু কিছু আখ্যান রচনা করলেও
সেগুলি ছোট গল্প হয়নি। ছোট গল্পের প্রধান শর্ত হল; তা আকারে ছোট হতে হবে এবং তার মধ্যে একটি কাহিনী থাকবে।
জীবনের খণ্ড রূপায়ণই হল ছোট গল্প। এইসব শর্ত পূরণ করে রবীন্দ্রনাথ বাংলায় যে
প্রথম ছোট গল্প লেখেন তার নাম ‘ভিখারিণী’।
কবি রবীন্দ্রনাথের জন্ম হয় ১২৬৮ বঙ্গাব্দের
২৫ বৈশাখ ইংরেজি ১৮৬১ খ্রিঃ ৭মে কলকাতার জোড়াসাঁকোর বিখ্যাত ঠাকুর পরিবারে। তার
পিতা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং মাতা সারদাদেবী। শৈশব থেকেই গতানুগতিক
জীবনধারা রবীন্দ্রনাথের পছন্দ ছিল না। বিদ্যালয়ের পরিবেশে তিনি হাফিয়ে উঠেছিলেন।
ফলে স্কুলে কিছুকাল পড়াশুনা করলেও বাড়িতেই সবরকম অনুশীলনের ব্যবস্থা করা হয়।
তারপর অভিভাবকদের ইচ্ছায় বিলেতে গিয়ে ব্যারিস্টারি পড়েন। মাত্র তেইশ বছর বয়সে
মৃণালিনী দেবীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। ঠাকুর পরিবারের বিশাল জমিদারি ছিল পূর্ববঙ্গে। পদ্মাতীরে
শিলাইদহ গ্রামে ছিল জমিদারির দপ্তর। ১৮২৩ খ্রিষ্টাব্দে জমিদারি দেখার ভার নিয়ে
রবীন্দ্রনাথকে যেতে হল শিলাইদহে। এই প্রথম তিনি পূর্ববঙ্গের নদী, খােলা আকাশ ও সহজ সরল মানুষকে খুব কাছ থেকে দেখলেন। মুক্ত
প্রকৃতিও সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখ
আশাআকঙক্ষার পরিচয় পেলেন। তাঁর মনের মধ্যে নব নব ভাবের উদয় হওয়ায় তিনি সৃষ্টির
প্রেরণায় পাগল হলেন। এই সময় তিনি একদিকে তার জীবনের শ্রেষ্ঠ ফসল - ‘সোনার তরী’, ‘চিত্রা’, ‘চৈতালি’ প্রভৃতি রচনা করলেন, অন্যদিকে সৃষ্টি করলেন অপূর্ব ছোট গল্পসমূহ- ‘ছুটি’, ‘অতিথি’, ‘দেনাপাওনা’, ‘গুপ্তধন', 'রবিবার’, ‘পোষ্টমাষ্টার, ‘খোকাবাবুর প্রত্যাবর্তন’, ‘কাবুলিওয়ালা’, ‘মেঘ ও রৌদ্র’, 'সমাপ্তি’ প্রভৃতি।
তিনি শত্যধিক ছোট গল্প রচনা করেছেন বিচিত্র বিষয় নিয়ে। কখনও তার গল্পের বিষয় হল
পল্লির সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা, কখনও তার গল্পে স্থান পেয়েছে অপ্রাকৃত অলৌকিক কাহিনী, কখনও তিনি প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের নিবিড় যোগসূত্র
১৯০১ খ্রি: বোলপুরের রাঙামাটি তাকে হাতছানি দিয়ে ডাকে। প্রকৃতির
আনন্দধারায় উক্ত অঞ্চলে প্রাচীন তপোবনকেন্দ্রিক শিক্ষার ধাচে তিনি গড়ে তুললেন ‘বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়’। বিশ্বের প্রতিটি জাতি, ধর্ম, বর্ণ
ও ভাষার মিলনকেন্দ্র রূপে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের আত্মপ্রকাশ। এর মধ্যে ১৯১৩ খ্রিঃ তার ‘গীতাঞ্জলি’র অনুবাদ পেল বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্য
পুরস্কার ‘নোবেল প্রাইজ’। কবি হলেন বিশ্বকবি।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় রবীন্দ্রনাথকে প্রদান
করল ‘ডক্টর’ উপাধি। ইংরেজ সরকার তাকে 'নাইট’ উপাধিতে ভূষিত করল। যদিও ১৯১৯ খ্রি: পাঞ্জাবের জালিয়ানওয়ালাবাগের নির্মম হত্যা কাণ্ডের
প্রতিবাদে তিনি এই উপাধি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। সাহিত্য কর্মে নিবেদিত প্রাণ এই
মনীষী যশ ও শ্রদ্ধার বিপুল অর্ঘ্য লাভ করে পরাধীন ভারতবকে সম্মানের আসনে
প্রতিষ্ঠিত করেন। অবশেষে ১৯৪১ খ্রিঃ ৭ আগষ্ট (বঙ্গাব্দ ২২ শ্রাবণ। ১৩৪৮) আশি বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথ ইহজগৎ ত্যাগ করেন।
উৎস ও পরিচয় :
‘বলাই’ গল্পটি রবীন্দ্রনাথের শান্তিনিকেতনে বর্ষামঙ্গল উৎসব
উপলক্ষ্যে রচিত হয়। তিনি নিজ কণ্ঠে সেটি পাঠ করেন। ১৯২৮ সালের প্রবাসী পত্রিকায়
এটি প্রকাশিত হয়। মাতৃহীন বলাই ছোটোবেলা থেকেই গাছপালার প্রতি কেউ অত্যাচার করলে
তার ভীষণ কষ্ট হয়। একটি শিমূল গাছের চারাকে সে পরম মমতায় বড়ো করে তোলে। একদিন বলাই তার বাবার কাছে বিলেত চলে যায়। সেখান থেকে সে
কাকিমার কাছে শিমূল গাছটির ফটোগ্রাফ চেয়ে পাঠায়। কিন্তু তার কাকা গাছটি আগেই
কেটে ফেলেছিলেন। কাকিমা একথা শুনে ভীষণ কষ্ট পান।
সেবা দশম শ্রেনী বাংলা প্রশ্ন এবং উত্তর পাঠ : বলাই
শব্দার্থ :
পরিচ্ছেদ - অধ্যায়। উপসংহার - সমাপ্তি। কথা - উক্তি। লোকালয় - জনবসতি অঞ্চল। প্রচ্ছন্ন - গুপ্ত, লুকায়িত।
খেয়াড় - গরু, মহিষ ইত্যাদি পশু আটকাবার জায়গা। অহি-নকল - সাপ
ও নেউল। রাগিণী – সঙ্গীতে, সমন্বিত রুপ। কোমলগান্ধার - সংগীতের সাতটি স্বরের মধ্যে কোমল গান্ধার হল কোমল পা।
পঞ্চম সংগীতের পাঁচটি স্বরের মধ্যে পঞ্চম হল পা। মধ্যম মা, এটি চতুর্থ স্বর। স্তম্ভিত- স্তম্ভের
ন্যায় নিশ্চল। নিবিড় - ঘন। বোল - বউল। অব্যক্ত - যা বলা হয় না। সংগীত - গান। পুষ্পিত - ফুল ফোটা অবস্থায়। অন্তর প্রকৃতি - হৃদয়ের বৈশিষ্ট। বিস্তৃত হয়ে - ছড়িয়ে পড়ে। কোটরে - গাছের ভিতরকার গর্তে। ব্যাগমা – বাঙ্গামি, রূপকথার পক্ষীদম্পতি। সর্বদা - সবসময়। অন্তণ -
চাদর। স্থির - নিশ্চল। পুঞ্জ - সমষ্টি। সুড়সুড়ি - কাতুকুতু। শিখড় - চুড়া। গা ছমছম করে - ভয়ভয় করে। নিস্তব্ধ - নীরব। ভাবেভোলা - কল্পনায় বিভোর। অঙ্কুর - সদ্যজাত চারা। কোকড়ানো - বাকানো। ঔৎসুক্য - কৌতুহল।
বয়স্যভার - বন্ধুর ভাব। আকুপাকু - অস্থিরতা। বাজে - বেদনাবোধ
হয়। চির অসমাপ্ত - যা কোনোদিন শেষ হয় ন| ফস করে -
হঠাৎ। সংকোচ - দ্বিধা। ঘাসিয়াড় - যে ঘাস কাটে। নিড়নি - ঘাসের গোড়া উপড়ে পরিষ্কার করার যন্ত্র। নিড়িয়ে ফেলা হয়
- উপড়ে ফেলা হয়। নালিশ - অভিযোগ। নামহারা - অফাতনামা। কণ্টকারি - কাটা জাতীয় গুল্ম। সাফ - পরিষ্কার।
পঙ্কন্তর - কাদারস্থর। ভাবী - ভবিষ্যত। অন্তহীন - যার শেষ নেই। অগ্রগামী - সবার আগে চলমান! চির পথিক - যে
চিরকাল ধরে পথে চলমান। রৌদ্রে-বাদলে
- রোদে ও বৃষ্টিতে। ধরণী - পৃথিবী। বিশ্বপ্রাণ - সমগ্র জগতের সকল প্রাণবস্ত। মূক - বোবা। ধাত্রী - ধারণকারিণী। দ্যুলোক - আকাশ, স্বর্গ।
দোহন - সংগ্রহকরা। নিরবিচ্ছিন্ন - অবিরাম। অহর্নিশি - দিবারাত্রি। খোয়াদোওয়া - পাথর বাঁধানো। প্রলাপ - অসংলগ্ন
কথা। ক্রমাগত - অনবরত। ব্যগ্র - উৎসুক। পাল্লা - এটেওটা।
পত্ৰসমৃদ্ধি - পাতার প্রাচুর্য। নির্বোধ - বোকা। মালি - বাগানের পরিচর্যাকারী। মাতৃহীন - মা হারা। ঠাওরেছিল - ভেবে
চিন্তে স্থির করেছিল। নির্লজ্জ - লজ্জাহীন। বারণ - নিষেধ। আঁতকে ওঠা - চমকে ওঠা।
নিঃসন্তান - সন্তানহীন। বিলাতিকায়দা - সাহেবি রীতি। অসংগত - অশোভন, বেমানান। লক্ষ্মীছাড়া - হতভাগা। প্রশ্রয় দেওয়া - আশকারা
দেওয়া। প্রতিরূপ - সদৃশ এমন। দোসর - অন্তরঙ্গ বন্ধু। ফটোগ্রাফ - আলোকচিত্র।
প্রতিরূপ - একই রূপ।
সেবা দশম শ্রেনী বাংলা প্রশ্ন এবং উত্তর পাঠ : বলাই
বহুনির্বাচনী
প্রশ্নোত্তর
১. ‘বলাই’ গল্পের
লেখক কে?
ক.
রবীন্দ্রনাথ বাগ্চী খ. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
গ. রবি শংকর মৈত্র
ঘ. এ. কে. শেরাম
২. রবি ঠাকুর কত খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন?
ক. ১৮৬০ খ. ১৮৬১
গ. ১৮৬২ ঘ. ১৮৬৩
৩. বলাই চরিত্রের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনের কোন
যাত্রাটির মিল পাওয়া যায়?
ক. স্বদেশ যাত্রা
খ. বিদেশ যাত্রা
গ. বৃক্ষমেলা যাত্রা
ঘ. সিমলা যাত্রা
৪. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?
ক. কলকাতায়
খ. সিমলায়
গ. দার্জিলিং
ঘ. মুম্বাই
৫. বাংলা কত বঙ্গাব্দে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মৃত্যুবরণ করেন?
ক. ১৩৪৮
খ. ১৩৪৯ গ. ১৩৫০ ঘ. ১৩৫১
৬. বাংলা কত বঙ্গাব্দে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জন্মগ্রহণ করেন?
ক. ১২৬৮
খ. ১২৬৯ গ. ১২৭০ ঘ. ১২৭১
৭. বলাই লেখকের সম্পর্কে কী হয়?
ক. ভাইপো
খ. ভাগ্নে গ. বোন ঝি ঘ. নাতি
৮. বলাই কী ভালোবাসে?
ক. খাবার
খ. খেলাধুলা
গ. পড়ালেখা
ঘ. বৃক্ষ-উদ্ভিদ
৯. কোনদিকের আকাশে কালো কালো মেঘ স্তরে স্তরে স্তম্ভিত?
ক. পশ্চিমদিকের
খ. পূর্বদিকের
গ. দক্ষিণদিকের
ঘ. উত্তরদিকের
১০. আমের বোল দেখে কার আনন্দ জেগে ওঠে?
ক. কানাইয়ের
খ. বলাইয়ের
গ. লেখকের
ঘ. কাকিমার
১১. ‘ড্যাবা-ড্যাবা চোখ মেলে সর্বদা তাকিয়ে থাকা ছেলেটা বেশি কথা
কইতে পারে না।’- কে?
ক. কানাই
খ. নিতাই গ. বলাই ঘ. নিমাই
১২. কী দেখে বলাইয়ের মন খুশিতে ভরে ওঠে?
ক. সবুজ গাছ
খ. সবুজ মাঠ
গ. ঘন সবুজ ঘাস
ঘ. পাখি
১৩. বলাইয়ের বন্ধুরা তাকে ক্ষ্যাপানোর জন্য কোন গাছের ডাল ভেঙে
দেয়?
ক. বকুল
খ. শিউলি
গ. দেবদারু
ঘ. আমলকী
১৪. বলাই কার কোলে বসে গাছ না কাটার আবদার করে?
ক. কাকির
খ. কাকার
গ. লেখকের
ঘ. জ্যাঠাইমার
১৫. কাকি বলাইকে কী বলে সম্বোধন করে?
ক. বলাই
খ. নিতাই
গ. পাগল
ঘ. জ্যাঠাইমার
১৬. কী গাছের চারা দেখাতে বলাই লেখককে বাগানে নিয়ে গিয়েছিল?
ক. দেবদারু
খ. শিমুল
গ. আমলকী
ঘ. হরীতকী
১৭. শিমুল গাছ উপড়ে ফেলতে কে নিষেধ করে?
ক. বলাই
খ. মালী গ. লেখক ঘ. কাকি
১৮. ‘কী যে বলিস তার ঠিক নেই’ কথাটি কে বলেছিল?
ক. বলাই
খ. লেখক গ. কাকি ঘ. মালী
১৯. বলাই এর বাবা কোথায় গিয়েছিলেন?
ক. জাপান
খ. জার্মানি
গ. বাংলাদেশ
ঘ. বিলেত
২০. বলাইয়ের বাবা কেন বিলেত গিয়েছিলেন?
ক. ইঞ্জিনিয়ারিং শিখতে
খ. ব্যবসা করতে
গ. সংগীত শিখতে
ঘ. পড়াশোনা শিখতে
২১. কত বছর পর বলাইয়ের বাবা ফিরে আসে?
ক. বছর পাঁচেক
খ. বছর সাতেক
গ. বছর আটেক
ঘ. বছর দশেক
২২. বিলেতি কায়দায় শিক্ষিত করে তোলার জন্য প্রথমে বলাইকে কোথায়
নেওয়া হলো?
ক. কলকাতায়
খ. লন্ডনে
গ. সিমলায়
ঘ. দার্জিলিংএ
২৩. ‘বলাই’ গল্পে
একসময় কোন গাছটিকে কেটে ফেলা হলো?
ক. জারুল
খ. জামরুল গ. শিমুল ঘ. বরই
২৪. সিমলা থেকে বলাই কাকে চিঠি পাঠিয়েছিল?
ক. লেখককে
খ. কাকিকে
গ. কাকাকে
ঘ. ঘসিয়াড়ীকে
২৫. লেখকের সঙ্গে বলাইয়ের কাকি কতদিন পর্যন্ত কথা বলেননি?
ক. পাঁচ দিন
খ. সাত দিন
গ. দশ দিন
ঘ. অনেক দিন
২৬. রবীন্দ্রনাথের মতে মানুষের প্রকৃত বন্ধু কে?
ক. পাহাড়
খ. প্রকৃতি গ. সাগর ঘ. বৃক্ষ
২৭. এশীয়দের মধ্যে প্রথম কে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন?
ক. আব্দুস সালাম
খ. অমর্ত্য সেন
গ. মুহম্মদ ইউনূস
ঘ. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
২৮. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কোন শাখায় নোবেল লাভ
করেন?
ক. সাহিত্য
খ. শান্তি
গ. চিকিৎসায়
ঘ. অর্থনীতি
২৯. বলাইয়ের প্রতি কাকির ছিল-
i. সুগভীর মমত্ববোধ
ii. স্বাভাবিক উদাসীনতা
iii. সন্তানের
স্নেহ
কোনটি সঠিক?
ক. i
খ. ii গ. i ও ii ঘ. i ও iii
কবিতাংশটি পাঠ করে ৩০
ও ৩১ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও :
হঠাৎ আমি চমকে উঠি
হলদে পাখির ডাকে
ইচ্ছে করে ছুটে বেড়াই
মেঘনা নদীর বাঁকে।
৩০. কবিতাংশের ‘আমি’ ‘বলাই’ গল্পের কোন চরিত্রটির সঙ্গে তুলনীয়?
ক. কাকা
খ. খেলার সাথি
গ. বলাই
ঘ. ঘাসিয়াড়া
৩১. উক্ত চরিত্রটির মধ্যে প্রকাশিত হয়েছে-
i. প্রকৃতি প্রেম ii. অস্ফুট আবেগ
iii. কাণ্ডজ্ঞানহীনতা
কোনটি সঠিক?
ক. i খ. ii গ. i ও iiর ঘ. i ও iii
৩২. শিমুল গাছটি উপড়ে ফেলতে চেয়েছিল কে?
ক. মালী
খ. কাকা গ. সঙ্গীরা ঘ. কাকি
৩৩. কত বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথ বিলেত যান?
ক. ষোল
খ. সতেরো গ. আঠারো ঘ. উনিশ
৩৪. সতেরো বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কী পড়তে বিলেত যান?
ক. ব্যারিস্টারি
খ. ডাক্তারি
গ. ইঞ্জিনিয়ারিং
ঘ. সংগীত বিষয়ে
৩৫. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কোন প্রতিষ্ঠান গড়ে
তোলেন?
ক. শান্তি আশ্রম
খ. শান্তি নিকেতন
গ. মুকুল নিকেতন
ঘ. শান্তি ভারতী
৩৬. কোন কাব্য লিখে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নোবেল পুরস্কার লাভ করেন?
ক. বলাকা
খ. মানসী
গ. সোনারতরী
ঘ. গীতাঞ্জলি
৩৭. ‘বলাই’ গল্পের
প্রধান চরিত্র কোনটি?
ক. বলাই
খ. কানাই গ. লেখক ঘ. বটগাছ
৩৮. ‘বলাই’ গল্পের
আড়ালে কোন বিষয়টি স্পষ্টতা পেয়েছে?
ক. পরিবেশ
খ. পরিবেশ সংকট
গ. সৌন্দর্য
ঘ. অনেক বয়স
৩৯. ‘বলাই’ চরিত্রটিতে
যথেষ্ট পরিমাণে রয়েছে?
ক. মায়া
খ.
বৃক্ষপ্রেম
গ. প্রেম
ঘ. মোহ
৪০. বলাইয়ের প্রতি কাকির কোন হৃদয়বৃত্তি প্রাধান্য পেয়েছিল?
ক. স্নেহ
খ. মায়া গ. মমতা ঘ. মাতৃপ্রেম
৪১. ‘আমের বোল’ বলতে
কী বোঝানো হয়েছে?
ক. আমের ফুল
খ. মুকুল
গ. আম
ঘ. আমের গুঁটি
৪২. বলাইয়ের কাকা শিমুল গাছটি কেটে কীসের পরিচয় দিয়েছেন?
ক. নিষ্ঠুরতার
খ. দায়িত্ববোধের
গ. মূর্খতার
ঘ. জ্ঞানীর
৪৩. সাধারণত ‘বিশ্বপ্রাণ’ বলতে কোনটিকে বোঝানো হয়েছে?
ক. পাহাড়
খ. সূর্য গ. বৃক্ষ ঘ. সমুদ্র।
উত্তরমালা : ১.খ ২.খ ৩.গ ৪.ক ৫.ক ৬.ক ৭.ক ৮.ঘ
৯.খ ১০.খ ১১.গ ১২.গ ১৩.ক ১৪.ক ১৫.গ ১৬.খ ১৭.ক ১৮.খ ১৯.ঘ ২০.ক ২১.ঘ ২২.গ ২৩.গ ২৪.খ ২৫.ঘ ২৬.ঘ
২৭. ঘ ২৮.ক ২৯.ঘ ৩০.গ ৩১.গ
৩২.খ ৩৩.খ ৩৪.ক ৩৫.খ ৩৬.ঘ ৩৭.ক ৩৮.খ ৩৯.খ
৪০.ঘ ৪১.ঘ ৪২.ক ৪৩.ক।
ASSAM SEBA/SMEBA CLASS 10 BENGALI QUESTIONS & ANSWERS
সেবা দশম শ্রেনী বাংলা প্রশ্ন এবং উত্তর পাঠ : বলাই
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
Q.1 বলাই
পাঠটির লেখক কে?
ANS:- বলাই পাঠটির লেখক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
Q.2 বলাইয়ের
সঙ্গে লেখকের কী সম্পর্ক ছিল?
ANS:- বলাই সম্পর্কে লেখকের ভাইপো।
Q.3 অতি
পুরানো বটের কোটরে কারা বাসা বেঁধে আছে?
ANS:- ব্যাঙ্গামা-ব্যাঙ্গামী বাসা বেঁধে আছে।
Q.4 বলাইয়ের
মা কোথায় গিয়েছিল?
ANS:- বলাইয়ের মা বলাইয়ের জন্মের পর মারা গিয়েছিল।
Q.5 একদিন
সকালে বলাই ওর কাকাকে কী দেখাতে নিয়ে গিয়েছিল?
ANS:- একদিন সকালে বলাই ওর কাকাকে বাগানে গজিয়ে ওঠা একটি শিমুল চারা দেখাতে
নিয়ে গিয়েছিল।
Q.6 বলাইয়ের
সবচেয়ে বেশী স্নেহ কীসের উপর ছিল?
ANS:- বাগানের ছোট ছোট চারাগাছগুলির উপর বলাইয়ের সবচেয়ে বেশি স্নেহ ছিল।
Q.7 শিমলে/শিমলা থেকে বলাই ওর কাকিমাকে কী পাঠিয়ে দেবার জন্য চিঠি
পাঠিয়েছিল?
ANS:- শিমূল গাছের ফোটোগ্রাফ পাঠিয়ে দেবার জন্য বলাই শিমলে থেকে ওর কাকিমাকে
চিঠি পাঠিয়েছিল।
Q.8 বলাইয়ের
বাবা বলাইকে কোথায় নিয়ে গিয়েছিলেন?
ANS:- বলাইয়ের বাবা বলাইকে প্রথমে শিমলায় ও পরে বিলেতে নিয়ে গিয়েছিলেন।
Q.9 বিলাত
যাবার পূর্বে বলাই তার কোন বন্ধুর ছবি নিয়ে যেতে চেয়েছিল?
ANS:- বলাই তার বন্ধু শিমূল গাছটির ছবি নিয়ে যেতে চেয়েছিল।
Q.10 মা
মারা যাবার পর বলাইকে কে কোলে পিঠে করে মানুষ করেছে?
ANS:- কাকিমা অর্থাৎ লেখকের স্ত্রী বলাইকে কোলে পিঠে করে মানুষ করেছে।
Q.11 শুদ্ধ
ও অশুদ্ধ নির্ণয় করো:
(ক) বলাই একটি মেয়ের নাম।
ANS:- অশুদ্ধ।
(খ) বেশি কথা কইতে পারে না বলে বলাইকে অনেক বেশি
ভাবতে হয়।
ANS:- শুদ্ধ।
(গ) লেখকের ছোট ভাইয়ের নাম ছিল বলাই।
ANS:- অশুদ্ধ।
(ঘ) শিমূল গাছটি ছিল বলাইয়ের প্রাণের দোসর।
ANS:- শুদ্ধ।
(ঙ) ‘বলাই’ পাঠটির লেখক বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়।
ANS:- অশুদ্ধ।
Q.12 শূন্যস্থান
পূর্ণ করো:
(ক) মাঘের শেষে আমের ____ ধরে।
ANS:- বোল।
(খ) ফাল্গুনে ____ শালবনের মতোই ওর ____ প্রকৃতি চারদিকে বিস্তৃত হয়ে
উঠে।
ANS:- পুস্পিত, অন্তর।
(গ) ও কাউকে না বলে ____ গিয়ে সেই দেবদারু বনে ____ ____ একলা
অবাক হয়ে বসে থাকে।
ANS:- আস্তেআস্তে, নিস্তব্ধ, ছায়াতলে।
(ঘ) শিমূল গাছ বাড়েও দ্রুত, কিন্তু বলাইয়ের ____ ____ পাল্লা দিতে পারে না।
ANS:- আগ্রহের, সঙ্গে।
(ঙ) আমার সঙ্গে যখন পারলে না, এই ____ শিশুটি গেল কাকির কাছে।
ANS:- মাতৃহীন।
(চ) ওই গাছ যে ছিল তার বলাইয়ের ____ তারই প্রাণের ____ ।
ANS:- প্রতিরূপ, দোসর।
Q.13 বাক্য
রচনা করো:
(ক)ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে - শিশু বলাই ফুঁপিয়ে
ফুঁপিয়ে কেঁদে কাকিমার গলা জড়িয়ে ধরল।
(খ) আকুপাকু - বলাই দেবদারু বনে যাবার জন্য আঁকুপাঁকু করতে লাগল।
(গ) গড়াতে গড়াতে - পাহাড় বেয়ে কাচা সোনা রঙের রোদুর গড়াতে
গড়াতে নামছে।
(ঘ) সুড়সুড়ি - ঘাসের আগায় ঘাড়ের কাছে সুড়সুড়ি
লাগত।
(ঙ) খিলখিল - ঘাসের সুড়সুড়িতে বলাই খিলখিল
করে হেসে উঠত।
(চ) ছমছম - অন্ধকার রাস্তায় যেতে যেতে রীতার
গা ছমছম করতে লাগল।
(ছ) স্তরে স্তরে - মানুষের মনের স্তরে
স্তরে কতইনা গোপন ইচ্ছা থাকে।
(জ) দেখে দেখে - দার্জিলিং-এর প্রাকৃতিক
দৃশ্যগুলো দেখে দেখে মন ভরে ওঠে।
(ঝ) বসে বসে - রাম বাবু বসে বসে
শিশুদের মজার মজার গল্প বলছেন।
(ঞ) ড্যাবা-ড্যাবা - বলাই ড্যাবা-ড্যাবা
চোখ মেলে অবাক হয়ে সব দেখত!
(ট)ছোট ছোট - ছোটছোট শিশুগুলি কি
সুন্দর খেলছে।।
(ঠ) জোড়াতাড়া - শোনা গল্প জোড়াতাড়া
দিয়ে বসে থেকে আপন মনে বলতে ইচ্ছে করে।
(ড) ঝমঝম - জানালার ধারে দাড়িয়ে ঝমঝম
বৃষ্টি দেখতে ভাল লাগে।
Q.14 বলাইয়ের
কাকি দুদিন অন্ন গ্রহণ করেননি কেন?
ANS:- শিমূল গাছটা কাটা হয়েছিল বলে বলাইয়ের কাকি দুদিন অন্ন গ্রহণ করেন নি।
Q.15 বলাইকে
তার বাবা কোথায় নিয়ে গিয়েছিলেন?
ANS:- বলাইয়েরর বাবা তাকে সিমলেতে নিয়ে গিয়েছিলেন।
Q.16 বলাইয়ের
কাকি কদিন অন্ন গ্রহণ করেন নি?
ANS:- বলাইয়ের কাকি দুদিন অন্নগ্রহণ করেন নি।
Q.17 বলাইকে
কারা খেপিয়ে তুলত?
ANS:- বলাইয়ের বন্ধুরা।
Q.18 ‘তারা ওর চির অসমাপ্ত গল্প’ - ওর বলতে কার?
ANS:- ওর বলতে বলাইয়ের।
Q.19 গাছটা
কোথায় জন্মেছিল?
ANS:- গাছটা বাগানের খোওয়া দোওয়া রাস্তার মাঝখানে জন্মেছিল।
Q.20 ‘বলাই’ গল্পটি লেখকের কোন গ্রন্থের অন্তর্গত?
ANS:- গল্পগুচ্ছের অন্তর্গত|
Q.21 বলাই
গল্পটি গল্পগুচ্ছের কোন খণ্ডের অন্তর্গত?
ANS:- তৃতীয় খণ্ডের অন্তর্গত।
Q.22 বাংলা
ছোটগল্পের জনক কে?
ANS:- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
Q.23 ‘বলাই’ কোন বিষয়ক ছোট
গল্প?
ANS:- প্রকৃতি বিষয়ক ছোট গল্প।
Q.24 ‘গাছটাকে প্রতিদিনই দেখাচ্ছে নির্বোধের মতো’ - কোন গাছটাকে নির্বোধের মতো দেখাচ্ছে?
ANS:- শিমূল গাছটাকে।
সেবা দশম শ্রেনী বাংলা প্রশ্ন এবং উত্তর পাঠ : বলাই
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
Q.1 টীকা
লেখো -
(ক) বলাই
ANS:- ‘বলাই’ রবীন্দ্রনাথের শ্রেষ্ঠ বালক চরিত্র। মাতৃহীন
সংসারে কাকিমা তার সঙ্গী এবং আর এক সঙ্গী বিশ্ব প্রকৃতি। প্রকৃতি প্রেমে পাগল বলাই
কেউ গাছের ফুল তুললে বা শাখা ভাঙলে ওর বড়ো কষ্ট পেত। ঘাসিয়াড়ার যন্ত্রে যেদিন
ঘাস, ফুল, কালমেঘলতা, নিমের
চারা কাটা পড়ে সেদিন বলাইয়ের খুবই দুঃখের দিন। সে চারাগাছগুলিকে জল দিয়ে বড়ো
করে। প্রকৃতিপ্রীতি হেতু সে গাছ-গাছালির সঙ্গে নিবিড় আত্মীয়তা অনুভব করে।
(খ) শিমূল গাছ
ANS:- গাছের মধ্যে তাড়াতাড়ি বেড়ে ওঠা গাছ হলো শিমূল। বলাইয়ের কাকার বাগানে
গজিয়ে উঠেছিল একটি শিমূল গাছ। বলাই নিত্য পরিচর্যা করত সে গাছের। বাড়ন্ত গাছের
চিত্র দেখে বলাই আনন্দ প্রকাশ করতো, কিন্তু কাকা গাছটির
বৃদ্ধিতে খুশি ছিলেন না। তাই বলাইয়ের অনুপস্থিতিতে তিনি গাছটি কেটে দিলেন।
বলাইয়ের দোসর গাছটিকে কেটে ফেলায় কাকিমা দুঃখে দুদিন মুখে অন্ন তুলেন নি|
(গ) ব্যাঙ্গমা-ব্যাঙ্গমী
ANS:- ‘ব্যাঙ্গমা-ব্যাঙ্গমী’ বলাই গল্প থেকে গৃহিত। বাচ্চারা রূপকথার গল্প শুনতে খুব ভালোবাসে।
ব্যাঙ্গমা-ব্যাঙ্গমী প্রাচীন রূপকথার গল্পের বাচ্চাদের অবাক করা এক কাল্পনিক পাখি
দম্পতি। যারা অতীত ও ভবিষ্যতের কথা বলতে পারে। সাত সমুদ্র তের নদী পার হয়েও যখন
রাজকুমার রাজকুমারীকে উদ্ধারের পথ খুঁজে পায়না, তখন এই পাখি দম্পতি তাকে সঠিক পথের নির্দেশ দেয়। বলাই তার
কাকিমার কাছে এই রূপকথার গল্প শুনত।
(ঘ) খোয়াড়
ANS:- গৃহপালিত পশুদের আটক করে রাখার স্থান হলো খোয়াড়। খোয়াডে গরু, মহিষ, ছাগল
জমা পড়লে পশুর মালিককে এখান থেকে জরিমানা দিয়ে ছাড়িয়ে আনতে হয়। ‘বলাই’ গল্পে লেখক জীবজন্তুকে এক সঙ্গে মিলিয়ে রাখার কথায় এটি
বলেছেন। তাঁর মতে বাঘ গরুকে এক খোয়াড়ে পুরে দেওয়া হয়েছে মানুষের মধ্যে। মানুষ
এখানে খোঁয়াড়ের প্রতীক।
Q.2 ছেলেবেলা
থেকে বলাইয়ের কী অভ্যাস ছিল?
ANS:- ছেলেবেলা থেকে বলাইয়ের অভ্যাস ছিল, প্রকৃতির বিচিত্র সৃষ্টির অসংখ্য নিবিড় সুন্দর সকল বস্তুকে চুপচাপ চেয়ে চেয়ে দেখা।
Q.3 কখন, কেমন করে বলাইয়ের অন্তর প্রকৃতিতে ঘন রং লাগে?
ANS:- মাঘ মাসের শেষে আমগাছে যখন বোল ধরে, তখন বলাইয়ের মনে এক নিবিড় আনন্দ জেগে ওঠে। ফাল্গুনে যখন
ছাদের উপর বিকেলের রোদুর পড়ে তখন বলাইয়ের অন্তরে ঘন রং লাগে।
Q.4 বস্তৃত আমরা কোন পদার্থকে মানুষ বলে থাকি?
ANS:- বস্তুত আমরা মানুষ বলি সেই পদার্থকে যা আমাদের ভিতরকার সব জীবজন্তুকে
মিলিয়ে এক করে নিয়েছে। আমাদের বাঘ গোরুকে এক খোয়াড়ে পুরে দিয়েছে, অহি নকুলকে এক খাঁচায় ধরে রেখেছে।
Q.5 ‘কেউ গাছের ফুল তোলে এইটে ওর বড়ো বাজে’ - এখানে ‘ওর’ বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে? কেউ গাছের ফুল তুললে ওর বাজে কেন? ওর প্রকৃতি কেমন?
ANS:- ‘ওর’ বলতে বলাইকে বোঝানো হয়েছে। বলাই অত্যন্ত
সংবেদনশীল মানসিকতার অধিকারী। কেউ গাছের ফুল তুললে ওর মনে ব্যথা লাগে।
Q.6 বলাইয়ের
সঙ্গীরা ওকে খ্যাপাবার জন্য কী কী করতো?
ANS:- বলাইয়ের সঙ্গীরা ওকে খ্যাপাবার জন্য বাগানের ভিতর দিয়ে চলতে চলতে ছড়ি
দিয়ে দুপাশের গাছগুলিকে মারতে মারতে চলত, কেউবা বকুল গাছের ডাল ভেঙে দিত।
Q.7 একদিন
বলাই ওর কাকিমার গলা জড়িয়ে ধরে কী বলেছিল?
ANS:- বলাই ওর কাকিমার গলা জড়িয়ে ধরে বলেছিল ঘাসিয়াড়া যেন বাগানের সদ্য বেরোনো
গাছগুলো কেঁটে না ফেলে।
Q.8 বলাই
তার রক্তের মধ্যে বিশ্বপ্রাণের কী বাণী শুনতে পেয়েছিল?
ANS:- বলাই তার রক্তের মধ্যে বিশ্বপ্রাণের ‘আমি থাকব’ বাণীটি
শুনতে পেয়েছিল।
Q.9 বলাই
কখন চমকে ওঠে কাকিমাকে কী অনুরোধ করেছিল?
ANS:- বলাই বাগানের রাস্তার মাঝখানে জন্মানো প্রিয় শিমুল গাছটিকে কাকা কেটে
ফেলবেন শুনে চমকে উঠে কাকিমার গলা জড়িয়ে ধরে অনুরোধ করেছিল কাকা যেন গাছটিকে
কেঁটে না ফেলেন।
Q.10 লেখক
তার ভাইপোকে কী বলে শিমূল গাছটা কেটে ফেলার জন্য প্রস্তাব দিয়েছিলেন?
ANS:- লেখক ভাইপো বলাইকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন যে কতকগুলি গোলাপ চারা এনে দেবেন
অথবা বেড়ার ধারে অন্য শিমূল চারা পুঁতে দেবেন তা সুন্দর লাগবে।
Q.11 সিমলা
থেকে বলাইয়ের চিঠি এলে কাকিমা কী করেছিলেন?
ANS:- সিমলা থেকে বলাইয়ের চিঠি এলে কাকিমা লেখককে শিমূল গাছের ছবি তুলে পাঠিয়ে
দেওয়ার কথা বলেছিলেন।
Q.12 ‘গাছটাকে প্রতিদিনই দেখাচ্ছে নির্বোধের মতো’- কোন গাছকে, কেন নির্বোধের মতো বলা হয়েছে?
ANS:- শিমুল গাছটিকে ‘নির্বোধের মতো’ বলা হয়েছে। বাগানের খোয়া-দেওয়া রাস্তার মাঝখানে অবাঞ্ছিতের মতো জন্ম
লাভ করে গাছটি ক্রমে ক্রমে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়। অস্থানে গাছটির এইরূপ অসংগত
উপস্থিতিতে বাগানের সৌন্দর্য নষ্ট করে দেওয়ায় বলাইয়ের কাকা গাছটিকে নির্বোধের মতো
বলেছেন।
Q.13 ‘বলাই’ গল্পটিতে কোন্
কোন্ স্বর ও রাগিণীর উল্লেখ আছে?
ANS:- ‘বলাই’ গল্পটিতে কোমলগান্ধার রাগিণীর ও পঞ্চম স্বরের
উল্লেখ আছে।
Q.14 ‘ও আমার বাগানে বেড়াচ্ছে মাটির দিকে কী খুঁজে খুঁজে।' মাটির দিকে কী খোঁজার কথা বলা হয়েছে?
ANS:- বলাই ছোট গল্পে বলাই বাগানের মাটির দিকে চেয়ে সদ্য অঙ্কুরিত চারাগুলির বৃদ্ধি
দেখত। আর খুঁজে বেড়াত, বীজ
থেকে সদ্য গজানো কোন নূতন চারা।
Q.15 ‘সে গাছ তো কাটা হয়ে গেছে’ - কে, কাকে একথা বলেছিলেন? ANS:- বলাইয়ের
কাকা বলাইয়ের কাকিমাকে একথা বলেছিলেন।
Q.16 ‘ওগো শুনছ, একজন ফোটোগ্রাফওয়ালা ডেকে আনো’ - কে, কাকে এই অনুরোধ করেছিলেন?
ANS:- বলাইয়ের কাকিমা বলাইয়ের কাকা অর্থাৎ লেখককে এই অনুরোধ করেছিলেন।
সেবা দশম শ্রেনী বাংলা প্রশ্ন এবং উত্তর পাঠ : বলাই
ছোট প্রশ্নোত্তর
Q.1 বলাইয়ের
কাকিমা দুদিন অনুগ্রহণ করেন নি কেন?
ANS:- ছোটবেলায় মাতৃহীন বলাই তাঁর কাকিমার কাছে মানুষ হচ্ছিল। এভাবে দশ বছর
কাকিমার কাছে থাকার পর হঠাৎ একদিন বলাইয়ের পিতা বিলেত থেকে ফিরে এসে বলাইকে
প্রথমে সিমলা ও পরে বিলেতে নিয়ে যান। বিলেতে রওয়ানা হবার পূর্বে সে তার দোসর
শিমূল গাছটির একটি ফোটো চেয়ে পাঠায়। এদিকে কাকিমা জানতে পারেন যে তার কাকা গাছটি
কেটে ফেলেছেন। তাই তিনি দুঃখে অভিমানে দুদিন অন্নগ্রহণ করেন নি।
Q.2 বিলেত
যাবার পূর্বে বলাই সিমলে থেকে কাকিকে চিঠিতে কী লিখে পাঠিয়েছিলেন?
ANS:- বিলেত যাওয়ার পূর্বে বলাই তার কাকিমার কাছে কাচা হাতের লেখায় একটি আবেদন
রেখেছিল। সে আবেদনটি হলো তার দোসর শিমূল গাছটির একটি ফোটো তার চাই। দোসরটি হলো
বাগানে যাবার রাস্তায় গজিয়ে ওঠা শিমুল গাছটি। প্রবাসে এই গাছটির প্রকৃতি তার মনে
আনন্দ জোগাবে। দূরে থেকেও ফটোর মাধ্যমে তার সান্নিধ্যের উত্তাপ অনুভব করবে।
Q.3 ‘বলাই’ কেন ছোটবেলা থেকেই কাকিমার কাছে লালিত পালিত হয়েছে?
ANS:- শিশুকালেই বলাইয়ের মার মৃত্যু হয়েছিল। লেখকের ভাই অর্থাৎ বলাইয়ের বাবা
তার কাকিমার হাতে অর্পণ করে বিলেতে ইঞ্জিনিয়ারিং শিখতে চলে গিয়েছিলেন। লেখক এবং
তার স্ত্রী ছিলেন নিঃসন্তান। তাই বলাই তার কাকিমার কাছেই মান হয়েছিল।
Q.4 ‘বলাই’ কখন চমকে
উঠেছিল এবং কেন?
ANS:- বাগানের রাস্তার পাশে গজিয়ে ওঠা শিমূল গাছটি প্রথমে বলাইয়ের চোখেই ধরা
দিয়েছিল। বলাই তার কাকাকেও একদিন খুব উৎসাহ ভরে গাছটি দেখিয়েছিল। কিন্তু গাছটির
দ্রুত বেড়ে ওঠা দেখে লেখক চিন্তিত হয়ে মালীকে গাছটি উপড়ে ফেলে দিতে বললেন। এই
কথায় বলাই চমকে উঠেছিল।
Q.5 একদিন
লেখককে তার ভাইপোটি কোথায়, কখন, কেন ডেকে নিয়েছিল?
ANS:- কোনো একদিন লেখক সকালবেলা একমনে খবরের কাগজ পড়ছিলেন। এমনই সময় বুলাই এসে
তাকে তাড়াহুড়ো করে ধরে বাগানে নিয়ে যায়। বাগানে এক জায়গায় একটি ছোট চারাগাছ
দেখিয়ে জিজ্ঞাসা করে গাছটির নাম। ছোট্ট শিমুল গাছটি দেখে আর একটি ছোট শিশু
বলাইয়ের অন্তরে গাছটির প্রতি নেশা লেগে যায়।
Q.6 ‘এই সব প্রকাণ্ড গাছের ভিতরকার মানুষকেও যেন দেখতে পায়।’ গাছের ভিতরকার মানুষকে বলাই কীভাবে দেখতে পায়?
ANS:- রাতে বৃষ্টি ধোওয়া পাহাড়ের শিখরে সোনা রাঙা রোদ্র এসে পড়ে যে মায়াবী
সৌন্দর্য রচনা করেছিল তাকে উপভোগ করতে বলাই একা দেবদারু বনের ছায়ায় অবাক হয়ে
দাড়িয়ে থেকে সমস্ত পরিবেশের সঙ্গে একাত্মতা অনুভব করছিল। সেই অনুভবকালে এই গাছের অস্তিত্বের গভীরের মানুষকেও দেখতে
পেত। গাছ মানব সৃষ্টির বার্তাবাহী বলেই গাছের অস্তিত্বের গভীরে বলাই গভীর অনুভবে
মানুষকে খুঁজে পেয়েছিল। কাণ্ড গাছের ডিম গাছটির প্রতি না ছোট্ট শিমল।
Q.7 ‘তাই ওকে মনে মনে অনেক বেশি ভাবতে হয়’ - কার সম্বন্ধে, কেন, একথা বলা হয়েছে?
ANS:- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘বলাই’ নামক ছোটগল্পে বলাই চরিত্রটি সম্বন্ধে একথা বলা হয়েছে।
অন্তর্মুখী স্বভাবের বালক বলাই জগৎ ও জীবনের
রূপ-রস-গন্ধকে প্রাণভরে উপলব্ধি করতে পারলেও তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারে না। তাই
প্রকাশের অক্ষমতাকে পূরণ করে নেয় ভাবনার অতিশয্যে।
Q.8 ‘ওর কাদতে লজ্জা করে’ - ওর বলতে কার কথা
বলা হয়েছে? ওর কাদতে লজ্জা করে কেন?
ANS:- ‘বলাই’ গল্পে ওর বলতে বলাইয়ের কথা বলা হয়েছে।
গাছপালার সাথে গভীর একাত্মতার জন্যই বলাই
তাদের দুঃখ বেদনাকে শশুৰ করে মনে মনে কষ্ট পেত। তাই তার সঙ্গীরা যখন তাদের বাগানের
পাশের গাছগুলিকে ছড়ি দিয়ে মারতে মারতে হাঁটত কিম্বা গাছের ডাল ভেঙে দিত, তখন বলাই খুবই ব্যথা পেত। কিন্তু সঙ্গীরা পাছে তার আচরণকে
অস্বাভাবিক ভেৱে ব্যঙ্গ করে, তাই
দারুন কষ্টেও বলাইয়ের কাদতে লজ্জা করত।
Q.9 ‘ওর সবচেয়ে বিপদের দিন’ - কার বিপদের দিনের কথা বলা হয়েছে এবং কেন?
ANS:- বলাইয়ের বিপদের দিনের কথা বলা হয়েছে। প্রত্যহ বলাইয়ের দরদি সন্ধানী চোখ পড়ে ঘাসের মধ্যে ছোট্ট ছোট্ট
লতা, নাম না জানা বেগুনি, হলদে ফুল, মাঝে
মাঝে ফুলের বুকের মাঝখানে ছোট্ট সোনার ফোটা দেওয়া নীল নীল ফুল সহ কণ্টিকারি গাছ, বেড়ার কাছে কালমেঘের লতা কোথাও অনন্তমূল, নিমচারা। ঘাসিয়াড়ার নিড়ানির ঘায়ে এদের প্রত্যেকের
জীবনের ছেদ পড়বে। এই ভয় ভাবনা থেকেই সেই ঘাস কাটার দিনটিকে সে বিপদের দিন মনে
করত।
ASSAM SEBA/SMEBA CLASS 10 BENGALI QUESTIONS & ANSWERS
সেবা দশম শ্রেনী বাংলা প্রশ্ন এবং উত্তর পাঠ : বলাই
দীর্ঘ প্রশ্নোত্তর
Q.1 ‘এই ছেলের আসল বয়স সেই কোটি বছর আগেকার।’ তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।
ANS:- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘বলাই’ ছোটগল্পে বলাই অত্যন্ত সংবেদনশীল বালক। গল্পটিতে নির্দিষ্টভাবে তার বয়সের কোনো উল্লেখ নেই, কিন্তু প্রশ্নে উদ্ধৃত অংশে বলা হয়েছে যে তার আসল বয়স
কোটি কোটি বছর আগেকার দিনে। গাছপালার সাথে নিবিড় একাত্মতা ছিল বলাইয়ের। সেজন্য
যখনই কেউ গাছপালাকে নষ্ট করত, তখনই
বলাই ব্যথিত হয়ে উঠত।
কোটি বছর আগে এই পৃথিবী সৃষ্টি হয়েছিল, তখন পৃথিবীতে শুধু জল আর কাদামাটি ছিল। তারপর গাছপালার মধ্য দিয়েই সেদিন প্রথম বিশ্বপ্রাণ কথা বলে
উঠেছিল। প্রাণের অনন্ত যাত্রার অঙ্গীকার করেছিল সে। বলাই গাছের মধ্যে নিজেকে যে
ভাবে মিশিয়ে ফেলে তাতে মনে হয়ে যে তার সত্তা যেন বৃক্ষরূপ লাভ করেছে। সে যেন
মানুষ গাছ আর তার অনুভূতিতে উদ্ভিদরা গাছ মানুষ।
Q.2 ‘এতদিনে এইসব চিহ্নকে ছাড়িয়ে গিয়ে বলাই অনেক বড়ো হয়ে
উঠেছে।’ - তাৎপর্য নির্ণয় করো।
ANS:- ‘বলাই’ ছোটগল্পে বলাইয়ের যখন বয়স দশ বছর তখন নিঃসন্তান কাকিমার কোল
শূন্য করে তা বাবা বিলাতি কায়দায় শিক্ষা দেবেন বলে বলাইকে নিয়ে চলে যান। তারপর দুবছর
কেটে যায়। বলাইয়ের শুন্য
ঘরে গিয়ে কাকিমা মগোপনে চোখের জল মুছেন, আর তার চেড়া এক পাটি জুতো, রবারের ফাটা বল, গল্পওয়ালা ছবির বইগুলো নেড়েচেড়ে নানা স্মৃতি বুকে জড়িয়ে
রাখেন।
বলাইয়ের কাকিমা কোমল স্বভাবের নারী। তার
নিঃসন্তান মাতৃহৃদয়ের সকল মোহ বাৎসল্য মা-মরা বলাইকে ঘিরেই উৎসারিত। সুতরাং এই
উদ্ধৃতাংশের অবতারণার ফলে কাকিমা বলেন 'এতদিনে এইসব চিহ্নকে ছাড়িয়ে ছোট্ট শিশুটি নেই, তার শরীরে ও মনে অনেক পরিবর্তন ঘটে গেছে।
Q.3 ‘বছর খানেকের মধ্যে গাছটা নির্লজ্জের মতো মন্ত বেড়ে উঠল।' তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।
ANS:- বলাইয়ের যত্নে শিমুল গাছটা পথের মাঝখানে ‘নির্লজ্জের মতো মস্ত বেড়ে উঠেছে।' বলাইয়ের কাকা বাগানের রাস্তার জায়গায় শিমূলের গাছটাকে
রেখে দিতে বাধ্য হয়েছেন মাতৃহীন ভাইপোর আব্দার ও স্ত্রীর অনুরোধে। রাস্তার
মাঝখানেই কাউকে ব্যাঘাত না করে ওই গাছটির নির্লজ্জভাবে লম্বা হয়ে বেড়ে ওঠা দেখে
লেখকের মনে হয়েছে যে গাছটি নিতান্তই নির্বোধ, তাই চলাচলের পথের মাঝখানে বেমানান ভাবে বড়ো হয়ে উঠেছে।
Q.4 ‘তারা ওর চির-অসমাপ্ত গল্প’ তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।
ANS:- মাতৃহীন বালক বলাই তার কাকার বাগানে মাটির দিকে চেয়ে চেয়ে সীমাহীন
কৌতুকের সঙ্গে অঙ্কুরিত বীজের ক্রমবিকাশ লক্ষ্য করত। বীজ কীভাবে অঙ্কুরিত হচ্ছে, অঙ্কুরিত বীজ থেকে কীভাবে গজিয়ে উঠছে কচি কচি পাতা এবং
তারপরে কী হবে। অঙ্কর থেকে চারা, চারা
থেকে বৃক্ষ উদ্ভিদের এই বিকাশ পর্বের পরতে পরতে বলাই খুজে পায় গভীর রহস্য।
বিশ্বের আদি প্রাণ উদ্ভিদ এইভাবে অনন্তের দিকে এগিয়ে চলেছে ক্রমশ। নিত্য নতুন
রহস্যে নব নব বৈশিষ্ট্যে তারা ধরা দেয় বলাইয়ের অনুভূতিতে। তাই তারা বলাইয়ের
কাছে তারা ওর চির অসমাপ্ত গল্প।
Q.5 “আমি চিরপথিক, মৃত্যুর পর মৃত্যুর মধ্য দিয়ে অন্তহীন প্রাণের বিকাশ তীর্থে যাত্রা করব, রৌদ্র বদলে, দিনে রাত্রে।" - তাৎপর্য বিশ্লেষণ করা।
ANS:- সৃষ্টির ঊষালগ্নে পৃথিবীর বুকে সর্বপ্রথম জন্মেছিল উদ্ভিদ। সেজন্য প্রাণের
বিকাশের জয়যাত্রায় উদ্ভিদকে সমস্ত জীবের অগ্রগামী বলা হয়েছে।
সুর্যের কিরণই হল জীবনের মূল উৎস তথা সমস্ত
জীব জগতের প্রধান উপাদান। সূর্যকিরণের জন্যই জলে এবং মুলে উদ্ভিদ জগৎ ও প্রাণী
জগতের সৃষ্টি সম্ভব হয়েছে। সেজন্য গাছ তার প্রাণধারণ ও অস্তিত্ব রক্ষার জন্য
সূর্যের কৃপাপ্রার্থী। লেখক কল্পনা করেছেন যে, প্রাণদাতা সূর্যের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ এবং তার
কৃপাভিক্ষার জন্যই গাছেরা নমস্কারের ভঙ্গিতে হাত জোড় করে সূর্যের সাথে কথা বলে।
Q.6 “আমি থাকব, আমি বাঁচব, আমি চিরপথিক তাৎপর্য লেখো।
ANS:- ছিন্নপত্রের ১08 সংখ্যক
পত্রে রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন, 'সৃষ্টির
আদি লগ্নে বন্ধ্যা পৃথিবীর উষর ভুমিতে যখন প্রাণের আবির্ভাব ঘটে তখন কবির সমগ্র
সত্তা যেন গাছরুপে অঙ্কুরিত হয়ে উঠেছিল। লেখকের ভাইপো বলাইও তার কাকার এই বিশিষ্ট
নিসর্গ চেতনা উত্তরাধিকার সূত্রে লাভ করে। তাই সবার সাথে তার সম্বন্ধ তো
জন্মজন্মান্তরের আত্মীয়তা। এইভাৱেই রবীন্দ্রমননে গাছ বাবং বার কালের যাত্রায়
সমস্ত জীবের অগ্রগামী রূপে সম্মানিত হয়েছে। অতীত থেকে অনন্ত ভবিষ্যৎ অবধি
বিশ্বপ্রাণের বানী প্রবহমান গাছেরই মধ্য দিয়ে। মানষ মরে গেলেও মানব থেকে যায় হয়তো
একদিন মানুষের ধারাবাহিকতাও স্তদ্ধ হয়ে যাবে, সেদিনও গাছ বিশ্ব প্রাণের শেষ সাক্ষীরূপে নিজের অস্তিত্বকে
অক্ষত রাখবে।
Q.7 ‘বলাই’ পাঠকে অনুসরণ
করে প্রকৃতি প্রীতির প্রয়োজনীয়তা কী তা আলোচনা করো।
ANS:- মানব জীবন ও প্রকৃতি ওতঃপ্রোতভাবে জড়িত। প্রকৃতির সবুজ সমারোহ ছাড়া মানব
সভ্যতার বেঁচে থাকা অকল্পনীয়। প্রকৃতি থেকে লব্ধ ফলমূল, শাক-সজী আহার করে মানুষ বেঁচে থাকে। উদ্ভিদ জগৎ আমাদের
বেঁচে থাকার জন্য অক্সিজেন সরবরাহ করে চলছে আবার কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্রহণ করে
মানব জীবনকে নিরাপদ তথা সুরক্ষিত রাখছে। এককথায় জীবনকে নিরাপদ তথা সুরক্ষিত
রাখছে। উদ্ভিদ জগৎ জীবজগতের সঙ্গে ভারসাম্য রক্ষা করে চলছে। তাই প্রকৃতি-প্রীতির
প্রয়োজনীয়তা অবর্ণনীয়।
ASSAM SEBA/SMEBA CLASS 10 BENGALI QUESTIONS & ANSWERS
সেবা দশম শ্রেনী বাংলা প্রশ্ন এবং উত্তর পাঠ : বলাই
দীর্ঘ প্রশ্নোত্তর
Q.1 বলাইয়ের
চরিত্র আলোচনা করো।
ANS:- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ছোটগল্প ‘বলাই’ রচনাটির কেন্দ্রীয় চরিত্র হল কিশোর বালক ‘বলাই’। প্রকৃতি ও মানব প্রাণের যে অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক আদিমকাল
থেকেই বর্তমান, সে সত্য লেখক কিশোর বালক বলাইয়ের চরিত্রে
দেখিয়ে দিয়েছেন। বলাই প্রকৃতি প্রেমী। ছেলেবেলা থেকেই সে প্রকৃতির বিচিত্র
সৃষ্টির অসংখ্য নিবিড় সুন্দর সকল বকে এক প্রত্যক্ষ করতো। প্রকৃতির চারপাশেই বালকের জীবন সীমাবদ্ধ ছিল। সকাল ও
বিকেলের সূর্য ওঠা ও অস্ত যাওয়া, স্তরে
স্তরে সাজানো ঘন কালো মেঘ আমগাছে আমের বোল, পুষ্পিত শালবন, বাড়ির সামনে সবুজ ঘাসের আচরণ, এসব দেখে বলাইয়ের মন আনন্দে ভরে ওঠে এক রঙিন নেশায়। শৈশব
থেকেই মাতহীন ৰলাই কাকিমার কোলে পিঠে বড়ো হয়েছে বটে কিন্তু শৈশবের একাকীত্ব
বালককে যেন আরও প্রকৃতির সঙ্গে দৃঢ় বন্ধনে আবদ্ধ করে ফেলে।
বাগানে ছোট ছোট অঙ্কুরিত সীমাহীন গাছের চারার
প্রতি বলাই উৎসুক ভাবে তাকায়, যাদের
গায়ে সদ্য গজিয়ে উঠেছে কচিকচি পাতা। ওর সঙ্গে যেন গাছদের এক বয়স্যভাব রয়েছে যা
প্রকাশ করা দুরূহ। কেউ যদি গাছের ফুল তুলে নষ্ট করে, গাছের পাতা ছেড়ে, ডাল ভাঙে তা বলাইয়ের প্রাণে বড়ো ব্যথা দেয়। একথা সে
কাউকে প্রকাশ করে না। গাছপালাগুলো যেন অনন্তকাল ধরে তার সঙ্গেই আছে।
অন্তহীন প্রাণের বিকাশ তীর্থে বলাইদের
বাগানের রাস্তার মধ্যে শিমূল গাছের চারাটি বলাই অঙ্কুরোদগমের পর থেকে দেখে আসছে।
ওর সঙ্গে শিমূল চারাটির প্রাণের সম্পর্ক নিবিড়। হঠাৎ একদিন বলাইকে পড়ার জন্য ওর
বাবা সিমলায় নিয়ে যান। সিমলা থেকে বলাই কাকিমাকে চিঠি পাঠায় যে সে বিলেতে চলে
যাবে, তাই যাবার সময় তার প্রাণের শিমুল গাছটার
একটা ফটোগ্রাফ নিয়ে যেতে চায়। কেননা, গাছটা ছিল বলাইয়ের প্রাণের দোসর।
Q.2 ‘বলাই’ পাঠটি একটি
প্রকৃতি বিষয়ক গল্প - এই আলোকে আলোচনা করো। অথবা, বলাই’ ছোটগল্পটির
মাধ্যমে ওর প্রকৃতি প্রীতির পরিচয় দাও।
ANS:- ‘বলাই’ ছোট গল্পটিতে রবীন্দ্রনাথ কিশোর বলাইয়ের
সঙ্গে গাছপালার অন্তরঙ্গতার কথা বর্ণনা করেছেন। প্রকৃতির নানা ভাব, রূপ ও বৈচিত্র্য সে হৃদয় দিয়ে অনুভব করে পরম তৃপ্তি লাভ
করে। পাঠ্য রচনাটিতে এক কিশোর বালকের প্রাকৃতিক জগতের সঙ্গে একাত্মতার পরিচয়ই
শুধু প্রকাশ পায়নি, সেই সাথে প্রতিফলন ঘটেছে প্রাকৃতিক বর্ণনার।
রবীন্দ্রনাথ প্রকৃতিপ্রেমী ছিলেন, তার
অসংখ্য কাব্য, কবিতা, ছোট গল্পে প্রকৃতির প্রতি নারীর টানের পরিচয় পাওয়া যায়। ‘বলাই’ ছোটগল্পটিও এর ব্যতিক্রমি নয়। মানুষ ও প্রকৃতি আদিম যুগ
থেকেই পরস্পরের পরিপূরক। মানুষের যেভাবে সুখ-দুঃখ, ব্যথা-বেদনা, অনুভূতি, স্পর্শকাতরতা
আছে, গাছেরও সেইসব অনুভূতি রয়েছে, যা সে ভাষায় প্রকাশ করতে না পারলেও আকারে ইঙ্গিতে বুঝিয়ে
দেয়। গাছের ভাষা উপলব্ধি করার ক্ষমতা বলাইয়ের ছিল। তাইতো শৈশব থেকেই ঘাস, লতা, গুল্ম, উদ্ভিদ, মহীরুহ
সবকিছুর প্রতি তার এক দুর্দমনীয় আকর্ষণ ছিল।
বলাইয়ের কাকার বাগানের রাস্তার ধারে শিমুল
গাছের চারাটি বলাই অঙ্কুরোদগমের পর থেকে দেখে আসছে। ওর সঙ্গে শিমূল গাছের চারাটির
প্রাণের সম্পর্ক নিবিড়।
প্রকৃতির সঙ্গে ছিল তার এক অবিচ্ছেদ্য
সম্পর্ক, যে সম্পর্ক পরিণতি বয়সেও লোপ পায়নি। সুদূর
বিদেশে থেকেও বলাই তার শৈশবের শিমূল গাছটির কথা বিস্মৃত হয়নি। প্রকৃতির প্রতিটি
সত্তা যেন অহরহ তাকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে, এটাই সত্য ও বাস্তব, কারণ সবুজের সমারোহ নিয়ে আমাদের যে প্রাকৃতিক পরিবেশ, তা ব্যতীত মানুষ নিজেকে কল্পনা করতে পারে না। এই রূঢ় সত্যই
লেখক এখানে উন্মাোচন করেছেন। তাই ‘বলাই’ ছোট গল্পটি নিঃসন্দেহে একটি প্রকৃতি বিষয়ক
গল্প।
Q.3 ‘তাদের সঙ্গে ওর কী যে একটা বয়স্যভাব তাও কেমন করে প্রকাশ
করবে। এখানে তাদের বলতে কাদের বোঝানো হয়েছে? 'ওর’ কে? ‘তাদের’ এবং 'ওর' চিরকালের সম্পর্কটি ফী তা আলোচনা করো।
ANS:- এখানে তাদের বলতে সদ্য গজিয়ে ওঠা কচিকচি পাতাকে বোঝানো হয়েছে। ওর বলতে
বলাইকে বোঝানো হয়েছে। ওপরের আকাশে কালোমেঘ জমলে বলাইয়ের মনে বৃষ্টিভেজা নিবিড় অরণ্যের
শব্দ গন্ধময় অস্থিত্ব জেগে ওঠে। বিকেলের রােদুরকে সে আদুল গায়ে মেখে নিবিড়াবে
যেমন অভণ করে, ঠিক তেমনি বৃষ্টি ঝম ঝম শব্দ শুধু কান দিয়ে
নয়, সমস্ত দেহ দিয়ে সে শুনে। মাঘের শেষে গাছে
আমেৰ বোল ধরলে বলাইয়ের রক্তে জেগে ওঠে সৃষ্টি সুখের উল্লাস। ফাগুনের ফুলে ভরা
শালবনের মতো বিস্তৃত, রঙিন আর পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে তার সমগ্র সত্তা।
ঘাসের দেবদারু বনের নিস্তব্ধ ছায়াতলে একলা দাড়িয়ে সে সেই গাছগুলির ভিতরকার
মানুষকে দেখতে পায়। নবাঙ্কুর ও ছোটো চারাগাছগুলি দেখে বলাইয়ের বিস্ময় ও আনন্দের
সীমা থাকে না। তাদের সঙ্গে মেতে ওঠে নিঃশব্দে আলাপচারিতায়। তাই কেউ ফল তুললে, ফল পাড়লে, গাছের
ডাল ভাঙলে কান্নায় গুমরে গুমরে ওঠে বলাই, কিন্তু লোকে তাকে পাগল বলবে, এই ভয়ে সে কাদতেও পারত না। এই ছিল ‘তাদের’ এবং ‘ওর’ মধ্যে চিরকালের সম্পর্ক।
Q.4 ‘বলাই’ গল্পের
মাধ্যমে বলাইর প্রকৃতি প্রীতির পরিচয় দাও।
ANS:- ‘বলাই’ ছোট গল্পটিতে রবীন্দ্রনাথ কিশোর বলাইয়ের
সঙ্গে গাছপালার অন্তরঙ্গতার কথা বর্ণনা করেছেন। প্রকৃতির নানা ভাব, রূপ ও বৈচিত্র্য সে হৃদয় দিয়ে অনুভব করে পরম তৃপ্তি লাভ
করে। পাঠ্য রচনাটিতে এক কিশোর বালকের প্রাকৃতিক জগতের সঙ্গে একাত্মতার পরিচয়ই
শুধু প্রকাশ পায়নি, সেই সাথে প্রতিফলন ঘটেছে প্রাকৃতিক বর্ণনার।
রবীন্দ্রনাথ প্রকৃতিপ্রেমী ছিলেন, তার
অসংখ্য কাব্য, কবিতা, ছোট গল্পে প্রকৃতির প্রতি নারীর টানের পরিচয় পাওয়া যায়। ‘বলাই’ ছোটগল্পটিও এর ব্যতিক্রমি নয়। মানুষ ও প্রকৃতি আদিম যুগ
থেকেই পরস্পরের পরিপূরক। মানুষের যেভাবে সুখ-দুঃখ, ব্যথা-বেদনা, অনুভূতি, স্পর্শকাতরতা
আছে, গাছেরও সেইসব অনুভূতি রয়েছে, যা সে ভাষায় প্রকাশ করতে না পারলেও আকারে ইঙ্গিতে বুঝিয়ে
দেয়। গাছের ভাষা উপলব্ধি করার ক্ষমতা বলাইয়ের ছিল। তাইতো শৈশব থেকেই ঘাস, লতা, গুল্ম, উদ্ভিদ, মহীরুহ
সবকিছুর প্রতি তার এক দুর্দমনীয় আকর্ষণ ছিল।
বলাইয়ের কাকার বাগানের রাস্তার ধারে শিমুল
গাছের চারাটি বলাই অঙ্কুরোদগমের পর থেকে দেখে আসছে। ওর সঙ্গে শিমূল গাছের চারাটির
প্রাণের সম্পর্ক নিবিড়।
প্রকৃতির সঙ্গে ছিল তার এক অবিচ্ছেদ্য
সম্পর্ক, যে সম্পর্ক পরিণতি বয়সেও লোপ পায়নি। সুদূর
বিদেশে থেকেও বলাই তার শৈশবের শিমূল গাছটির কথা বিস্মৃত হয়নি। প্রকৃতির প্রতিটি
সত্তা যেন অহরহ তাকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে, এটাই সত্য ও বাস্তব, কারণ সবুজের সমারোহ নিয়ে আমাদের যে প্রাকৃতিক পরিবেশ, তা ব্যতীত মানুষ নিজেকে কল্পনা করতে পারে না। এই রূঢ় সত্যই
লেখক এখানে উন্মাোচন করেছেন। তাই ‘বলাই’ ছোট গল্পটি নিঃসন্দেহে একটি প্রকৃতি বিষয়ক
গল্প।
Q.5 ‘বলাই’ গল্পে
বলাইয়ের কাকিমার চরিত্র-বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তর। 'বলাই' গল্পে
বলাইয়ের কাকিমা মাতৃধর্মে উজ্জ্বল এক চরিত্র। বলাইয়ের কাকিমা বলাইকে নিজের
সন্তানের মতো বড়ো করেছেন। তার নিজের সন্তান নেই। তাই বলাইয়ের প্রতি তিনি তার
হৃদয়ের সব স্নেহ উজাড় করে ঢেলে দিয়েছেন।
বলাই তার যতকিছু আব্দার করে কাকিমার কাছে।
কাকিমাকেই সে মা বলে জানে। ওর কাকা বলাইয়ের দোসর শিমূল গাছটি কেটে ফেলতে চাইলে
কাকিমার হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত গাছটি রক্ষা পায়। বলাইয়ের বাবা বিলেত থেকে ফিরে
বলাইকে নিজের কাছে নিয়ে গেলে তার কাকিমার জীবন শূন্য হয়ে যায়। তিনি গোপনে চোখের
জল ফেলতেন। বলাইয়ের শূন্য শোবার ঘরে গিয়ে তার ছেঁড়া একপাটি জুতো, ফাটা বল আর ছবির বইগুলি নেড়ে চেড়ে দেখতেন। এগুলির মধ্য
দিয়েই তিনি যেন তার সেই ছোট্ট বলাইকে দেখতে পেতেন। বলাই যে তার মনের কতখানি জুড়ে
ছিল তা বোঝা গেল শিমুল গাছটি কেটে ফেলার ঘটনায়। বলাইয়ের কাকিমা এই শিমুল গাছটার
মধ্যেই। লাইকে খুঁজে পেতেন। শিমূল গাছটাকে ভাবতেন বলাইয়ের প্রতিরূপ - তার প্রাণের
শিমুল গাছটি বড়ো হয়ে উঠেছিল। তাই একদিন তার কাকা গাছটাকে কেটে দিলেন। বলাইয়ের
কাকিমা তা জানতেন না। পরে যখন জানলেন গাছটি কেটে ফেলা হয়েছে। তখন তিনি গভীর দুঃখ
পেলেন। স্বামীর প্রতি ক্ষোভে দুদিন অন্ন গ্রহণ করলেন না এবং অভিমানে বহুদিন তার
সঙ্গে কোনো কথা বললেন না। বলাইয়ের গাছটি না থাকায় তিনি যেন সবদিক দিয়ে নিঃস্ব
হয়ে পড়েছিলেন। আলোচ্য ছোটগলের স্বল্প পরিসরে বলাইয়ের কাকিমা চরিত্রটি
সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে।
Q.6 ‘বলাই’ গল্পের
নামকরণের সার্থকতা নিরূপণ করো।
ANS:- কাব্য, কবিতা, নাটক, উপন্যাস
প্রভৃতির নামকরণ এক বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ইংরাজ মহাকবি সেক্সপীয়র নামের উপর
তেমন গুরুত্ব দেন নি। তার মতে নামে কিছু আসে যায় না। কিন্তু আমাদের মহাকবি
রবীন্দ্রনাথ বলতেন, ‘নামকে যারা নামমাত্র
মনে করে আমি তাদের দলে নেই।' অর্থাৎ
কোন কিছুর সম্বন্ধে প্রাথমিক কিংবা সার্বিক জ্ঞান লাভের উপায় হলো তার নাম। নাম এমন
একটি বিষয় যার দ্বারা এক বাক্যে ব্যক্তি বা বিষয়টির সম্পূর্ণ না হলেও আংশিক পরিচয় জানতে পারা যায়।
সাহিত্যে নামকরণ তিনভাবে হয়ে থাকে। প্রথমতঃ কেন্দ্রীয় চরিত্র বা প্রধান চরিত্রের নামানুসারে।
দ্বিতীয়তঃ কাহিনির বিষয়বস্তুর উপর নির্ভর করে। তৃতীয়তঃ দেশ ও কাল ভিত্তিক।
আমাদের আলোচ্য ছোট গল্পটির নামকরণ হয়েছে
প্রধান চরিত্রের নামানুসারে। 'বলাই’ গল্পটিতে রবীন্দ্রনাথ প্রকৃতি প্রেমের
উজ্জ্বল নিদর্শন রেখে গেছেন। মাতৃহীন বলাই ছোটবেলা থেকেই প্রকৃতি প্রেমে উদ্বুদ্ধ।
বিশ্বপ্রাণের ধাত্রী যে গাছ তার সঙ্গে বলাই যেন একাত্ম। বলাই অল্প বয়স্ক বালক। সে তার কাকা কাকিমার কাছে থাকে। তার
মা মারা যাবার পর তার বাবা বিলেতে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে চলে গেছেন। কাকিমা তাকে
নিজের সন্তানের মতো মানুষ করেছেন। প্রকৃতি চেতনার সঙ্গে একেৰাৱে একাকার হয়ে যায়
বলাই। সে হয়ে ওঠে গাছের প্রতিরূপ। বলাইয়ের কাছে গাছ এবং মানুষের মধ্যে কোনো
পার্থক্য নেই।
লেখকের বাগানে একটি শিমূল চারাকে সে জল দিয়ে
বড়ো করে তুলেছিল। লেখক কয়েকবার গাছ কাটতে চেয়েছেন বলাই তার কাকিমাকে বলে গাছটিকে
কাটতে দেয়নি। এই গাছের ওপরই তার যত স্নেহ-মায়া-মমতা।
এর মধ্যে হঠাৎ একদিন বলাইয়ের বাবা ফিরে এসে তার কাকিমার কাছ থেকে তাকে নিয়ে আসেন
সিমলায় বিলেতি কায়দায় লেখাপড়া শেখাবার জন্য। সেখান থেকে পাঠাবেন বিলেতে। বলাই
বিলেত যাওয়ার আগে সিমলা থেকে কাকিমাকে চিঠি লিখল শিমুল গাছটির একটি ফটো পাঠিয়ে
দেবার জন্য। কিন্তু তার আগেই লেখক শিমূল গাছটি কাটিয়ে দিয়েছেন। কাকিমা দুঃখে দু-দিন আহার করলেন না। কারণ বলাই চলে গেছে। ওই গাছটি ছিল বলাই-এর প্রতিরূপ। আলোচ্য গল্পে লেখক ভাববস্তুর কথা না ভেবে
গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্রটিকেই প্রাধান্য দিয়েছেন। বলাই চরিত্রের আন্তঃপ্রেরণায়
প্রকৃতির প্রতি তার দুর্নিবার আকর্ষণ, প্রকৃতির সঙ্গে অভিন্নতা এবং স্বাভাবিক ও সঙ্গত জীবনবোধ
বিমূর্ত হয়ে উঠেছে। তাই চরিত্রানুগ ‘বলাই’ নামকরণটি সার্থক হয়েছে।
Q.7 ‘বলাই’ গল্পের সারমর্ম লেখো।
ANS:- ‘বলাই’ গল্পটি
মানুষ ও প্রকৃতির মধ্যে অচ্ছেদ্য বাতাবরণ তৈরির এক সংবেদনশীল কাহিনি। বলাই একটি
বালকের নাম। সে লেখকের ভাইপো। সে ছিল প্রকৃতি পাগল। তার প্রকৃতিতে আমাদের চারপাশের নানা
প্রকার গাছপালার মূল সুরগুলোই হয়েছে প্রবল। ছেলেবেলা থেকেই সে ঈশ্বরের বিচিত্র
সৃষ্টির অসংখ্য ও নিবিড় সুন্দর সকল বকে চুপচাপ চেয়ে চেয়ে দেখত। সে দেখত সকাল ও
বিকালের সূর্য উদয় ও অস্ত যাওয়া, সুরে সুরে সাজানো ঘন কালো মেঘ, আমগাছের আমের বোল, পল্পিত শালবন, বাড়ির সামনের সবুজ ঘাসের আস্তরণ। এসব দেখত তার মন আনন্দে
ভরে ওঠে, এক রঙিন নেশায়। সে তার রক্তের মধ্যে অনুভব
করে এক অব্যক্ত স্মৃতি। সে কাউকে না বলে আস্তে আস্তে গিয়ে দেবদারু বনের নিস্তব্ধ
হায়াতলে অবাক হয়ে পঁড়িয়ে থাকে। প্রকাণ্ড দেবদারু গাছের ভিতরকার মানুষকে যেন সে
দেখতে পায়। তারা কথা কয় না কিন্তু জানে সবই। বলাই মাটির দিকে মুখ রেখে খুঁজে চলে
সদ্য গজিয়ে ওঠা কচিপাতা। সে কথা বলে সেই সদ্য অঙ্কুরিত সবুজ পাতার সঙ্গে। ওর
সঙ্গে যেন গাছেদের এক বয়স্য ভাব রয়েছে যা প্রকাশ করা কঠিন। - মানষের শরীরে আঘাত করলে যেমন মানুষ ব্যথা পায়, বলাই জানে গাছের শরীরেও তেমনি যন্ত্রণার কাতরতা সৃষ্টি হয়।
তাই কেউ গাছের ডাল ভাঙলে, ফল ছিড়লে তা বলাইয়ের প্রাণে বড়ো বাজে। একথা
সে কাউকে প্রকাশ করে না। ঘাসিয়াড়া
আগাছা নিড়নি দিয়ে নানা ধরনের চারাগাছ নষ্ট করলে তার মনে বড় রাগ।
বাগানের খোয়া দেওয়া রাস্তার মাঝখানের
গজিয়ে ওঠা শিমূল গাছের চারাটি বলাই অঙ্কুরোদগমনের পর থেকে জল সেচে বড় করে তুলছে।
ওর সঙ্গে শিমুল চারাটির প্রাণের সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। দশ বছর পর হঠাৎই বলাইয়ের পিতা
বলাইকে পড়ার জন্য তার কর্মস্থল সিমলায় নিয়ে যান। সেখান থেকে পাঠাবেন বিলেতে।
বলাই কাকিমার কাছে বড়ো হয়েছে। কাকিমা তাকে প্রাণ দিয়ে ভালবাসেন। বলাই চলে যাবার
পর কাকিমার ঘর শূন্য হয়ে যায়, কাকিমা
গোপনে চোখের জল ফেলেন। আর বলাইয়ের প্রিয় শিমূল গাছটিকে স্নেহের আঁচলে বেঁধে
বলাইয়ের দুঃখ ভুলতে চান। কিছুদিন পর কাকিমাকে না জানিয়ে কাকা লক্ষ্মীছাড়া
শিমূলগাছটাকে দিলেন কেটে। কাকার নির্মমতায় কাকির দুঃখ আরও বেড়ে গেল। এদিকে সিমলা
থেকে বলাই কাকিমাকে চিঠি পাঠায় যে সে বিলেতে চলে যাবে, তাই যাবার সময় তার প্রাণের শিমূল গাছটার একটা ফটোগ্রাফ
নিয়ে যেতে চায়। কাকিমা যেন তা পাঠিয়ে দেন। কাকিমা যখন ফটোগ্রাফার ডাকার জন্য
কাকাকে বলতে গেলেন তখনই জানতে পারলেন গাছটি কাটা হয়ে গেছে। শোকস্তব্ধ কাকি দুদিন
অন্ন গ্রহণ করেন নি। বলাইয়ের প্রতিরূপ গাছটিকে চিরকালের মতো সরিয়ে দিয়ে কাকা যেন
নিজের অজান্তেই কাকিমার বুকে তৈরি করে দিলেন এক দীর্ঘ নিষ্ঠুর ক্ষত চিহ্ন। কারণ
বলাইকে ছেড়ে বলাইয়ের প্রতিরূপ গাছটিকে নিয়েই তিনি বাঁচতে চেয়েছিলেন। বলাই তার
শিমূল গাছটি গল্পের শেষে যেন একাত্ম হয়ে গেছে।
Q.8 ব্যাখ্যা
লেখো।
(ক) ‘কেউ গাছের ফুল তোলে এইটে ওর বড়ো বাজে। আর কারও কাছে ওর এই সংকোচের কোনো
মানে নেই, এটাও সে বুঝেছে। এইজন্যে ব্যথাটা লুকোতে চেষ্টা
করে।’
ANS:- আলোচ্য ব্যাখ্যানীয় অংশটুকু ছোটগল্পের জনক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত
গল্পগুচ্ছ এর তৃতীয় খণ্ডের অন্তর্গত ‘বলাই’ নামক ছোট গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে ।
এখানে বলাই নামক বালকের প্রকৃতি প্রেমের কথাই
আলোচিত হয়েছে। বলাই ছেলেবেলা থেকেই প্রকৃতি প্রেমী ছিল। কেউ প্রকৃতির সৃষ্ট গাছের
ফুল তুললে, গাছের ডাল ভাঙলে, গাছেরও যন্ত্রণা এবং বেদনা হয়, সেই অনুভূতি বলাই অনুভব করে কষ্ট পায়। তাই কেউ যদি গাছের
ফুল তুলে নষ্ট করত তবে তা বলাইয়ের প্রাণে বড়ো বাজত। সৃষ্টির অসংখ্য ও নিবিড়
সুন্দর সকল বস্তুকে চুপচাপ চেয়ে চেয়ে দেখাই ছিল তার প্রকৃতি। গাছপালা মূক ও
নির্বাক। তারা প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ করতে পারে না। পৃথিবীতে বেশ কিছু, হৃদয়হীন মানুষ আছে যারা এইসব গাছ-গাছালিদের ওপর অত্যাচার করে
এক বীভৎস আনন্দ পায়। বলাইয়ের সহানুভূতিশীল মন গাছের ওপর এই নির্যাতনের জন্য
ব্যথা পায়। এ গাছেরও প্রাণ আছে এটা অনেকেই বোঝে না। তাই বলাইয়ের গাছের প্রতি
দুর্বলতার অর্থ খুঁজে পাবার মতো অনুভব ক্ষমতা যাদের নেই তাদের কাছে কেঁদে হৃদয়ের
দুর্বলতা প্রকাশ করা অর্থহীন। সেজন্যই বলাই বুকের কান্নাকে বােবা কবে রাখতে চায়।
(খ) এই ছেলের
আসল বয়স সেই কোটি বৎসর আগেকার দিনে।
ANS:- আলোচ্য ব্যাখ্যানীয় অংশটুকু ছোটগল্পের জনক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘বলাই’ নামক ছোটগল্প
থেকে নেওয়া হয়েছে।
এখানে গাছের স্বভাব পাওয়া বলাইয়ের বয়সের
কথা আলোচিত হয়েছে।
বাল্যকাল থেকেই বলাইয়ের প্রকৃতির প্রতি ছিল
নাড়ীর টান। মানুষের সঙ্গে মেলামেশা করার চেয়ে সে প্রকৃতির লতা, পাতা, তৃণ, গুল্ম, গাছপালার
বড়ো হয়ে ওঠা প্রত্যক্ষ করতে ও তাদের অনুভূতি উপলব্ধি করতে ভালবাসত। চারপাশের
গাছপালার প্রতি বালকের সখ্যতা, তা
সে কাউকে বলে বোঝাতে পারত না। এ প্রসঙ্গে লেখক বলেছেন যে বলাই সাধারণ ছেলের মতো
জীবন কাটালেও তার আসল বয়স সেই কোটি বছর আগেকার দিনের। সেদিন ছিল না পশু, পাখীর কলরব, ছিল শুধু চারদিকে পাথর পাঁক ও জল। কালের পথে সমগ্র জীবের
অগ্রগ্রামি গাছ যেন সূর্যের দিকে জোড় হাত তুলে বলেছে, আমি থাকব, আমি
বাচব, আমি চিরপথিক, মৃত্যর পর মুত্যর মধ্য দিয়ে অন্তহীন প্রাণের বিকাশ তীথে
যাত্রা করবো রৌদ্রে, বাদলে, দিনে রাত্রে। বলাই যেন গাছের সেই চিরন্তন অন্তরের ডাক শুনতে পেয়েছিল।
তাই তো তার চিন্তা ও কল্পনায় আদিম পৃথিবীর প্রতিফলন দেখা যায়।
(গ) ঐ গাছ যে
ছিল তার বলাইয়ের প্রতিরূপ, তারই প্রাণের দোসর।
ANS:- আলোচ্য অংশটুকু ছােটগল্পের জনক রবীন্দ্রনাথ ঠাকরের 'বলাই' শীর্ষক
ছোটগল্প থেকে গৃহীত।
এখানে প্রকৃতি পাগল বলাইয়ের একটি শিমূল
গাছের সঙ্গে যে সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল সে বিষয়েই আলোচনা করা হয়েছে।
বাগানের রাস্তার মাঝখানে অঙ্কুরিত একটি শিমূল
চার বলাইয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। তারপর থেকেই অবোধ বালকটি পরম স্নেহে ও মমতায়
গাছটির পরিচর্যা করতে আরম্ভ করে। বস্তৃত এই শিমূল গাছটি বলাইয়ের সত্তারই যেন আর
একটি প্রতীক। রাস্তার মধ্যিখানে যেমন গাছটি অবাঞ্ছিত, তেমনি সভ্যতার গর্ভে অন্ধ আমাদের সামাজিক কৃত্রিমতার আবর্তে
বলাইও যৎপরোনাস্তি অদ্ভুত এবং বেমানান। এই শিমুলগাছটিকে বলাইয়ের শত অনুরোধ
সত্ত্বেও কেটে ফেলা হয়েছিল, ঠিক
যেভাবে বলাইকে বিলাত ফেরত ইঞ্জিনিয়ার করতে তাকে প্রকৃতির সান্নিধ্য থেকে বিচ্যুত
করা হয়। বলাইয়ের মর্মব্যথা অনুধাবন করতে আর কেউ না পারলেও মাতৃস্থানীয় কাকিমা
তা পেরেছিলেন। সেই কারণে বলাই গাছের ফটোগ্রাফ চেয়ে পাঠালে কাকি যখন জানতে পারলেন
গাছটি কেটে ফেলা হয়েছে, তখন সন্তান বিয়োগের যন্ত্রণায় জর্জরিত হয়েছিল
তার মন। বলাইয়ের
অন্তরাত্মার প্রতিফলন ওই গাছটিতে - গাছটি তাঁর, ‘বলাই’য়ের প্রতিরূপ, তারই
প্রাণের দোসর।
ASSAM SEBA/SMEBA CLASS 10 BENGALI QUESTIONS & ANSWERS
সেবা দশম শ্রেনী বাংলা প্রশ্ন এবং উত্তর পাঠ : বলাই
পাঠনির্ভর ব্যাকরণ
Q.1 নিচের শব্দগুলোর বিপরীত শব্দ লেখো।
বিস্তৃত, প্রচ্ছন্ন, অব্যক্ত, অন্তর, প্রকাণ্ড, অসমাপ্ত, নিষ্ঠুর, অমৃত, নির্লজ্জ, নির্বোধ, বন্ধুর, ক্ষত, প্রতিরূপ, নিবিড়।
ANS:- বিস্তৃত - সংকীর্ণ।
প্রচ্ছন্ন - উন্মুক্ত। অব্যক্ত -
ব্যক্ত। অন্তর - বাহির। প্রকাণ্ড -
ক্ষুদ্র। অসমাপ্ত - সমাপ্ত। নিষ্ঠুর - দয়ালু। অমৃত - গরল। নির্লজ্জ - লজ্জাশীল। নির্বোধ
- বুদ্ধিমান। বন্ধুর - মসৃণ, সমতল। ক্ষত - অক্ষত। প্রতিরুপ - রুপ। নিবিড় - নিসঙ্গ।
Q.2 রেখাঙ্কিত পদগুলোর কারক ও বিভক্তি নির্ণয় করো।
(A) বলাইয়ের
কাচা হাতের লেখা চিঠি আমাকে দেখতে দিলেন।
ANS:- করণকারকে ‘এর’ বিভক্তি; কর্মকারকে ‘শূন্য’ বিভক্তি।
(B) মাঘের শেষে আমের বোল ধরে।
ANS:- অধিকরণ কারকে ‘এর’ বিভক্তি কর্মকারকে ‘এর’
বিভক্তি।
(C) বলাইয়ের কাকি দুদিন অন্ন গ্রহণ করলেন না।
ANS:- কর্তৃকারকে ‘এর’ বিভক্তি কর্মকারকে ‘শূন্য’
বিভক্তি।
(D) বলাই সেই
দেবদারু বনের নিস্তব্ধ ছায়াতলে একলা অবাক হয়ে দাড়িয়ে থাকে।
ANS:- অধিকরণ কারকে ‘এ’ বিভক্তি।
(E) একদিন সকালে
একমনে খবরের কাগজ পড়ছি।
ANS:- অপাদান
কারকে
‘এ’ বিভক্তি, কর্মকারকে ‘শূন্য’ বিভক্তি।
Q.3 পদ পরিবর্তন করো।
সুন্দর, বিলেত, চিন্তা, গোপন, লোভ, চমৎকৃত, প্রত্যহ, বিস্তৃত, অন্তর, পুষ্প, উৎসুক, প্রস্তাব, গ্রহণ, গভীর, বন্ধুর, অসংগত।
ANS:- সুন্দর - সৌন্দর্য।
বিলেত - বিলেতি। চিন্তা - চিন্তনীয়। গোপন - গোপনীয়। লোভ - লোভনীয়! চমৎকৃত -
চমৎকার। প্রত্যহ - প্রাত্যহিক। বিস্তৃত - বিস্তার! অন্তর - আন্তরিক। পূষ্প - পূষ্পিত। উৎসুক
- ঔৎসুক্য। প্রস্তাব - প্রস্তাবিত।
গ্রহণ - গ্রহণীয়। গম্ভীর - গাম্ভীর্য। বন্ধুর - বন্ধুরতা।
অসংহত - অসংগতি।
Q.4 যোগ্যতা বিচার করো।
(ক) প্রকৃতি প্রীতির প্রয়োজনীয়তা
কী?
ANS:- অরণ্য থেকে অরণি (প্রকৃতিক
সম্পদ) সংগ্রহ করে আমরা অনেক রকম প্রয়োজন মেটাই। কিন্তু
সংগ্রহ সীমাহীন হলে বৃক্ষশূন্য মরুভূমি তৈরী হয়! আগ্রাসী যন্ত্রসভ্যতার প্রসারে
বাতাস ও জল দূষিত হয়। জলাভূমি ভরাট করে আমরা পরিবেশকে বিনষ্ট করি। সবুজ বিপ্লবের
প্রয়োজনে বনভূমি কমে যায়,
রাসায়নিক
সারের ব্যবহারে বিভিন্ন প্রজাতির জীব বিনষ্ট হয়, শেষ
পর্যন্ত আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হই। প্রকৃতিকে ধ্বংস করলে সমগ্র দেশ সহ পৃথিবীকে বাঁচানোর
সমস্যা হবে। তাই বিজ্ঞানভিত্তিক চিন্তা
ও কর্মপন্থা মাথায় রেখে পরিকল্পনা করা দরকার। আগামীদিনে মানুষের কাছে কোন বড়
ধরনের ধ্বংসের পরিবেশ গড়ে না উঠে, তার
জন্য প্রকৃতির প্রতি যত্নশীল হওয়া উচিত।
(খ) মানুষ জীবজন্তুর সঙ্গে
প্রকৃতির সম্পর্ক আলোচনা করো।
ANS:- মানুষের জীবনধারণের জন্য
প্রয়োতান আহর। অৱশ্যে ফলমূল সর্বপ্রথমে
মানুষের আহার যুগিয়েছে। শুধু মানুষ নয় অন্যান্য প্রাণীরও আহার যুগিয়েছে এই অরণ্য।
অরণ্যের গাছের ডাল দিয়েই মানুষ হিংস্র প্রাণীর আক্রমন থেকে আত্মরক্ষা করেছে।
গাছপালা কার্বন-ডাই-অক্সাইডের মতো বিষাক্ত গ্যাস গ্রহণ করে শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য
অক্সিজেন উৎপন্ন করেছে। সভ্য মানুষের কাগজ, কাঠ, ভেষজ ও অন্যান্য বহু শিল্পের সম্ভার অরণ্যেরই
উপহার। অরণ্যই প্রাণের সূতিকাগার। অরণ্য পশুপাখী সবার অভয় আশ্রয়। অরণ্যের কাছেই
মানুষের জন্ম জন্মান্তরের অপরিশোধনীয় ঋণ।
(গ) বলাইয়ের সঙ্গীরা কী কী
উপায়ে বলাইকে খ্যাপাবার চেষ্টা করতো?
ANS:- বলাইয়ের সঙ্গীদের মধ্যে
কেউ কেউ ওকে খ্যাপাবার জন্য বাগানের ভিতর দিয়ে চলতে চলতে ছড়ি দিয়ে দুপাশের
গাছগুলিকে আঘাত করতে করতে চলত,
হঠাৎ
বকুল গাছের ডাল ভেঙে ফেলত। কেউ গাছের ফুল তুললে বলাইয়ের খারাপ লাগে। ওর বয়সের
ছেলেরা গাছে ঢিল মেরে আমলকী পাড়ে, বলাই
কিছু বলতে পারে না। গাছগাছালি বাঁচাবার সংকল্প ওর জীবনের ব্রত। তাই বলাইয়ের
সঙ্গীরা এসব কবে বলাইকে খ্যাপাবার চেষ্টা করতো।
******************
1 Comments
Very good
ReplyDeleteHELLO VIEWERS, PLEASE SEND YOUR COMMENTS AND SUGGESTION ON THE POST AND SHARE THE POST TO YOUR FRIEND CIRCLE.