SEBA/SMEBA CLASS 10 BENGALI QUESTIONS & ANSWERS সেবা দশম শ্রেনী বাংলা প্রশ্ন এবং উত্তর পাঠ : সাগর সঙ্গমে নবকুমার


SEBA/SMEBA CLASS 10 BENGALI QUESTIONS & ANSWERS

সেবা দশম শ্রেনী বাংলা প্রশ্ন এবং উত্তর
পাঠ : সাগর সঙ্গমে নবকুমার
বঙ্কিম চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

SEBA/SMEBA CLASS 10 BENGALI QUESTIONS & ANSWERS

সাগর সঙ্গমে নবকুমার
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

লেখক পরিচিতি:
পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগণা জেলার কাঠালাপাড়া গ্রামে ১৮৩৮ সালের ২৬ জুন সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিম চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম হয়। তার পিতার নাম যাদব চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। বঙ্কিম চন্দ্র বরাবরই মেধাবী ছাত্র ছিলেন। ১৮৫৮ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক পরীক্ষা চালু হয়। বঙ্কিম চন্দ্র ও যদুনাথ বসু সর্বপ্রথম স্নাতক হয়ে আজও স্মরণীয় হয়ে আছেন। আইন অধ্যয়ন শেষ হবার আগেই ব্রিটিশ সরকারের অধীনে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টর পদে নিযুক্ত হন। টানা ৩৩ বছর বিভিন্ন সরকারি পদে কর্মরত থেকে ১৮৯১ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর অবসর গ্রহণ করেন।
বঙ্কিম চন্দ্রের সাহিত্যচর্চা শুরু হয় কবি হিসেবে। ১৮৫৩ সালে ঈশ্বর গুপ্তের সংবাদ প্রভাকর পত্রিকার কবিতা প্রতিযোগিতায় তার রচিত কবিতা কামিনীর উক্তি র জন্য তিনি পুরস্কৃত হন। পরে তিনি নিজেই কবিতা রচনা থেকে সরে এসে উপন্যাস ও প্রবন্ধ সাহিত্যে মনোনিবেশ করেন। ১৮৬৫ সালে প্রকাশ পায় তার প্রথম বাংলা উপন্যাস দুর্গেশ নন্দিনী। ভারতীয় যে-কোনো ভাষায় লেখা এটিই প্রথম উপন্যাস। তার রচিত বিখ্যাত উপন্যাসগুলো হল – কপালকুণ্ডলা’, ‘বিষবৃক্ষ’, ‘কৃষ্ণকান্তের উইল, ‘আনন্দমঠ', ‘রাজসিংহ প্রভৃতি। তার বিখ্যাত গ্রন্থগুলো হল কমলাকান্তের দপ্তর, ‘বিবিধপ্রভৃতিএই সমস্ত রচনা বাংলা সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ। পরাধীন ভারতের বিপ্লবীদের তথা দেশপ্রেমিকদের সঞ্জীবনী মন্ত্র বন্দে মাতরম’ - বঙ্কিমচন্দ্রের রচিত উপন্যাস 'আনন্দমঠথেকে গৃহীত। আলোচ্য পাঠ্যাংশটি লেখকের কপালকুণ্ডলানামক উপন্যাস থেকে নেওয়া হয়েছে। ১৮৯৪ সালের ৮ এপ্রিল সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিম চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জীবনাবসান ঘটে।

বিশদ সারাংশ:
নবকুমার নৌকার যাত্রীদের সকলের ক্ষুধা মেটাবার জন্যে নির্জন নদীতীরে একাকী রান্নার শুকনো কাঠ সংগ্রহ করতে বনে প্রবেশ করল। গভীর জঙ্গলে বহু কষ্ট শুকনো কাঠ যোগাড় করে সাগর সৈকতে ফিরে এসে দেখতে পায় যে নৌকাটি নেই, কোথাও কোনো জনমানবও নেই। সে ভীত হয়ে পড়ল এবং তার মনে হল সে নির্জন সমদ্র তীরে পরিত্যক্ত ও সঙ্গীহীন হয়ে পড়েছে। তবুও সে আশা ছাড়ল না। তার মনে হল জোয়ারের শেষে তাকে নিয়ে যেতে হয়তো কেউ আসতে পারে। এই ভরসায় সে নদীতীরে বসে রইল। এদিকে সন্ধ্যা নেমে এলেও তাকে নিয়ে যেতে যখন কেউই এলো না, নবকুমার তখন চোখে অন্ধকার দেখা শুরু হলসেখানে কোনো লোকালয় নেই, আশ্রয় নেই, কোনো পানীয় ও খাদ্যদ্রব্য নেই; তীব্র শীত নিবারণের জন্য গায়ের কোনো বস্ত্রও নেই। তার ভয় হল সেখানে সে বাঁচবে কী করে? তার উপর বাঘ ভালুকের ভয়ও রয়েছে। অতএব প্রাণনাশ সুনিশ্চিত। নবকুমার ক্ষুধা তৃষ্ণায় পরিশমে অত্যন্ত কাতর হয়ে পড়ল। মনের চাঞ্চল্যের কারণে সে একস্থানে অধিক সময় বসে থাকতে পারল না। তীর ত্যাগ করে সমুদ্র সৈকতের চারিদিকে ঘুরে বেড়াতে লাগল। অবশেষে ক্লান্ত হয়ে একটি বালিয়াড়ির পাশে পিঠ দিয়ে অবসন্ন অবস্থায় ঘুমিয়ে পড়ল।
গভীর রাতে নবকুমারের ঘুম ভাঙল। নির্জন সমুদ্রতীরে যে নিঃসঙ্গ, অসহায় ও বাঘের ভয়ে আতঙ্কিত হল। হঠাৎ বহুদূরে এক আলোকবিন্দু দেখতে পেয়ে সে বুঝতে পারল, কাছে কোন লোকালয় রয়েছে। কিছু দূর এগিয়ে গিয়ে সে দেখতে পেল এক কাপালিক মরদেহের উপর বসে শব সাধনায় মগ্ন। ধ্যানভঙ্গের পর কাপালিক নবকুমারের দিকে তাকাল এবং তার পরিচয় জিজ্ঞেস করল। তারপর নবকুমারকে তার অনুসরণ করতে বলে এগিয়ে চললোঅল্প সময়ের মধ্যেই তারা এক পর্ণ কুটিরে প্রবেশ করল। সেখানে ক্ষুধা-তৃষ্ণায় কাতর নবকুমার কাপালিক প্রদত্ত কিছু ফলমূল খেয়ে এবং জল পান করে ঘুমিয়ে পড়লো
পরদিন সকালে উঠে নবকুমার কাপালিকের দেখা পায় না। সমস্ত দিন অপেক্ষা করার পর নিরাশ হয়ে অপরাহ্নে সে সমুদ্রতীরে পৌঁছায়। সমুদ্রের তীরে বসে সে কিছু সময় সমুদ্রের অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে থাকে। কিন্তু সেখান থেকে ফিরে আসার সময় অস্পষ্ট আলোকে সে পর্ণ কুটিরের পথ হারিয়ে ফেলে। পরে অন্ধকারে এক অপূর্ব সুন্দরী রমণীর সঙ্গে তার সাক্ষাৎ ঘটে। রমণী নবকুমারকে জিজ্ঞেস করে সে (নবকুমার) পথ হারিয়েছে কিনা এবং পর্ণ কুটিরে তাকে পৌঁছে দিয়ে নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। এই রমণীটি কপালকুণ্ডলা। পরদিন সন্ধ্যায় কাপালিক পৰ্ণ কুটিরে ফিরে এলে নবকুমার তাকে বন থেকে বেরোনোর পথ দেখিয়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করল। কাপালিক তাকে অনুসরণ করার কথা বলে পর্ণ কুটির থেকে বের হয়। নবকুমার কাপালিকের আদেশ মতো তার অনুসরণ করে। কিছুটা পথ অতিক্রম করতেই হঠাৎ বনের মধ্যে সেই রমণী কপালকুণ্ডলাকে নবকুমার প্রত্যক্ষ করে। কপালকুণ্ডলা মৃদুস্বরে নবকুমারকে কাপালিকের অনুসরণ করতে বারণ করে এবং তাকে পালিয়ে যেতে বলে। নবকুমার জানত, কাপালিকরা সব কিছুই করতে পারে; তাদের অসাধ্য কিছুই নেই। তাই সে একবার পালাবার কথা ভাবলোকিন্তু পরক্ষণেই সে আবার ভাবলো, কী কারণে সে পালাবে? কাপালিক তার কী ই বা ক্ষতি করতে পারে? তার মনে হল কাপালিক তো তারই মতো একজন মানুষ।
SEBA/SMEBA CLASS 10 BENGALI QUESTIONS & ANSWERS
সেবা দশম শ্রেনী বাংলা প্রশ্ন এবং উত্তর পাঠ : সাগর সঙ্গমে নবকুমার

নামকরণের সার্থকতা :
সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিম চন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত কপালকুণ্ডলা নামক উপন্যাস থেকে সাগর সঙ্গমে নবকুমার পাঠ্যাংশটি নেওয়া হয়েছে। আলোচ্য পাঠ্যাংশে উদ্ধৃত উপন্যাসের অংশটুকুকে মূল উপন্যাসের মুখবন্ধ হিসেবে ধরে নেওয়া যেতে পারে এই পাঠ্যাংশের নাম ঘটনার প্রতি লক্ষ্য রেখেই সাগর সঙ্গমে নবকুমার নামকরণ করা হয়েছে। নবকুমার নামক এক যুবক এবং তার সঙ্গীরা সাগরসঙ্গমে পৌষ সংক্রান্তির তীর্থ দর্শন করে ফিরে যাবার সময় সমুদ্র মোহনীর নিকটবর্তী স্থানে দিকভ্রষ্ট হয়ে তার এবং নৌকার সহযাত্রীদের যে অবস্থা হয়েছিল, এই আলোচ্য গদ্যাংশে তার বিবরণ দেওয়া হয়েছে। নবকুমারকে কেন্দ্র করেই এই পাঠ্যাংশের ঘটনা বর্ণিত হয়েছে। নবকুমারের ব্যক্তিত্ব, পুরুষাকার সাহস, মানুষের প্রতি আস্থা প্রভৃতি নায়কোচিত গুণাবলি আলোচ্য পাঠ্যাংশে সুন্দরভাবে ফুটে ওঠেছে। তাই পাঠ্যাংশের নামকরণ সাগর সঙ্গমে নবকুমারযথার্থ সার্থক হয়েছে।

শব্দার্থ:
অবাধে-বিনা বাধায়। বালিয়াড়ি-বালুর স্তুপ। অনুঘাতিনী-সমতল। প্রীতি-বিশ্বাস। অকস্মাৎ-হঠাৎ। হিমবর্ষী-হিম বা শিশির বর্ষণকারী। সৈকত-নদীর তীর ভূমি; প্রতীক্ষা-অপেক্ষা করা। প্রত্যাবর্তন-ফিরে আসা। পরিত্যাগ-ছেড়ে যাওয়া। ইতস্তত-এখানে সেখানে। আশঙ্কা-ভয়। তন্দ্রাভিভূত-ঘুমিয়ে পড়া। দাবানল-অরন্য়ের আগুন। তিষ্ঠিবেন-অপেক্ষা করবেন। কাপালিক-তান্ত্রিক (বামাচারী)।কস্তুম-কে তমি। মমানুসর-আমাকে অনুসরণ কর। রোমাঞ্চ–শিহরন, বাকশক্তি-কথা বলার শক্তি। অনিমেষ-নিমেষ হারা, অপলক। পথিক-পথচারী। শুশ্রু-দাড়ি। তিষ্ঠ-অপেক্ষা করোনরকপাল-মরা মাথার খুলি। পর্ণ পাত্র-পাতার তৈরি পাত্র। শ্বেতপক্ষ-সাদা পাখা। সমুদ্রতটে-সাগর তীরে। বিজনে-একাকী। নীলাম্বু মণ্ডল-গভীর নীল বর্ণ জলরাশি। উৎকটানন্দ-তীব্র আনন্দ। সিকতাময়-বালুকাময়। অম্বর-আকাশ। প্রদোষতিমির-সন্ধ্যার অন্ধকার। সংসর্পিত-কুঞ্চিত। অলকাবলী-কেশগুচ্ছ। নিরাভরণ-অলংকারহীন। চিকুরজাল-কেশপাশ। তন্ত্রী-তার। পুত্তলী-পুতুল। লয়হীন-সুরবিহীন। সিকতা-বালুকা। আগুলফুলম্বিত-গোড়ালি পর্যন্ত। তণ্ডল-চাল। অন্বেষণ-খোঁজ করা। অভিরুচি-ইচ্ছা। কদাপি-কখনও। অন্তরালে-আড়ালে। কটিদেশ--কোমর।

অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
SEBA/SMEBA CLASS 10 BENGALI QUESTIONS & ANSWERS
সেবা দশম শ্রেনী বাংলা প্রশ্ন এবং উত্তর পাঠ : সাগর সঙ্গমে নবকুমার

Q.1. সাগর সঙ্গমে নবকুমারগল্পাংশ কোন গ্রন্থের অন্তর্গত?
Ans:- বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত কপালকণ্ডলা উপন্যাসের অন্তর্গত।
Q.2. বঙ্কিম চন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত প্রথম বাংলা উপন্যাসের নাম কী? Ans:- দুর্গেশ নন্দিনী
Q.3. ভারতীয় যে-কোনো ভাষায় লেখা প্রথম উপন্যাসটির নাম কী?
Ans:- দুর্গেশ নন্দিনী।
Q.4. নবকুমার কে?
Ans:- নবকুমার সপ্তগ্রামের অধিবাসী। এক কর্মক্ষম ব্রাহ্মণ যুবক। সাগর সঙ্গমে নবকুমার গল্পাংশের প্রধান চরিত্র।
Q.5 নবকুমার সঙ্গীগণ কর্তৃক পরিত্যক্ত হওয়ার প্রধান কারণ কী ছিল?
Ans:- শুকনো কাঠ যোগাড় করে ফিরতে দেরি হওয়ায় এবং নদীতে জোয়ার আসায় নবকুমার সঙ্গীগণ কর্তৃক পরিত্যক্ত হয়েছিল।
Q.6. নবকুমার নির্জন সমুদ্রতীরে বিজনে পরিত্যক্ত হল কেন?
Ans:- নৌকার সহযাত্রীদের ক্ষুধা-পিপাসা নিবারণার্থে রান্নার জন্য শুষ্ক কাঠ যোগাড় রতে যাবার জন্য নবকুমার নির্জন সমুদ্রতীরে বিজনে পরিত্যক্ত হল।
Q.7 ঘুম ভাঙার পর নবকুমার বহুদূরে কি দেখছিল?
Ans:- এক আলোক বিন্দু
Q.8. পথিক, তুমি পথ হারাইয়াছ?’ উক্তিটি কার?
Ans:- কপালকুণ্ডলার।
Q.9. কখন কাপালিকের সঙ্গে নবকুমারের সাক্ষাৎ/দেখা হয়েছিল?
Ans:- আলোক বিন্দুর নিকটবর্তী হওয়ার পর।
Q.10. কন্তম শব্দের অর্থ কী?
Ans:- কে তুমি।
Q.11. নবকুমার জাতিতে কী ছিল?
Ans:- হিন্দু ব্রাহ্মণ।।
Q.12. সাগর সঙ্গমে নবকুমার পাঠ্যাংশে কোন ইংরেজি কবির পংক্তি আছে?
Ans:- ডন জুয়ান।
Q.13. নবকুমার পর্ণকুটীরে কী খেয়ে ক্ষুধা নিবারণ করেছিল?
Ans:- কাপালিক প্রদত্ত কিছু ফল ও জল।
Q.14. অস্পষ্ট সন্ধ্যালোকে কে নবকুমারকে পর্ণ কুটীরের পথ দেখিয়ে যায়? Ans:- কপালকুণ্ডলা।
Q.15. কাপালিক মনুষ্য, আমিও মনুষ্যউক্তটি কার?
Ans:- উক্তিটি নবকুমারের।
Q.16. কাপালিকের পর্ণকুটিরে নবকুমার কী দেখেছিল?
Ans:- কাপালিকের পর্ণ কুটিরে নবকুমার দেখেছিল কুটিরটি কিয়াপাতা দিয়ে তৈরি এবং তার মধ্যে আছে কয়েকটি ব্যাঘ্র চর্ম, এক কলস জল ও কিছু ফলমূল।
Q.17. কাপালিকের বয়ঃক্রম কত ছিল?
Ans:- প্রায় পঞ্চাশ বৎসর।।
Q.18. প্ৰাতে উঠে নবকুমার কী করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল?
Ans:- বাড়ি ফিরে আসবার উপায় বের করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল।
Q.19. বালিয়াড়ি কাকে বলে?
Ans:- উচ্চ বালুকা স্তূপের শ্রেণিকে।
Q.20. রাত্রিবেলা নবকুমারের কীসের ভয় হয়েছিল?
Ans:- বাঘ ও ভালুকের ভয়।
Q.21. নবকুমার সমুদ্রের জল পান করতে পারেনি কেন?
Ans:- জল অধিক নোনতা থাকার জন্য
Q.22. কখন নবকুমারের নিদ্রাভঙ্গ হয়েছিল?
Ans:- গভীর রাতে।
Q.23. পথ অবগত নাহি পাথেয় নাই’- উক্তিটি কার?
Ans:- উক্তিটি নবকুমারের।
Q.24. সাগর সঙ্গমে নবকুমার পাঠের লেখক কে?
Ans:- বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
Q.25. কোথা যাইতেছ যাইও না কার উক্তি ?
Ans:- কপালকুণ্ডলার উক্তি।
Q.26. সাগর সঙ্গমে নবকুমারপাঠটি কার লিখিত? পাঠটি কোন গ্রন্থের অন্তর্গত?
Ans:- সাগর সঙ্গমে নবকুমার পাঠটি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা। পাঠটিকপালকুণ্ডলা গ্রন্থের অন্তর্গত।

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
 SEBA/SMEBA CLASS 10 BENGALI QUESTIONS & ANSWERS
সেবা দশম শ্রেনী বাংলা প্রশ্ন এবং উত্তর পাঠ : সাগর সঙ্গমে নবকুমার

Q.1. বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা দুটি উপন্যাসের নাম লেখো
Ans:-কপালকুণ্ডলাআনন্দমঠ
Q.2. কীরূপ পরিস্থিতিতে বিজন বনে কী কারণে নবকুমার পরিত্যক্ত হয়েছিল?
Ans:- নবকুমার তার নৌকার সহযাত্রীদের ক্ষুধা-পিপাসা নিবারণের জন্য নদীতীরে একাকী রান্নার জন্য শুকনো কাঠ সংগ্রহ করতে বনে প্রবেশ করেনকিন্তু শুকনো কাঠ কাছাকাছি না থাকায় সে আরও গভীর জঙ্গলে প্রবেশ করে। তার ফলে নবকুমারের ফিরে আসতে দেরি হয়। নবকুমারের আসতে দেরি দেখে সঙ্গীগণ তাকে পরিত্যাগ করে চলে যায়। এইভাবে নবকুমার একাকী, ক্ষুধার্ত ও তৃষ্ণার্ত অবস্থায় বিজন বনে সঙ্গীগণ কর্তৃক পরিত্যক্ত হয়েছিল।
Q.3. কাপালিকের পর্ণকুটিরের যথাযথ পরিচয় দাও।
Ans:- কাপালিকের পর্ণকুটির কিয়াপাতা দিয়ে তৈরি। তার মধ্যে রয়েছে কয়েকটি ব্যাঘ্রচর্ম, এক কলস জল ও কিছু ফলমূল। কুটিরের ভিতর জ্বলছে একটি কাঠের আগুন।
Q.4. সমুদ্রের জনহীন ধারে, এইরূপে বহুক্ষণ দুইজন চাহিয়া রহিলেন"-দুজন কে কে?
Ans:- নবকুমার ও দেবীমূর্তির ন্যায় রমণী কপালকুণ্ডলা।
Q.5. নবকুমার কোথায় নির্বাসিত হয়েছিলেন। সেখান থেকে তাঁকে কে উদ্ধার করেছিল?
Ans:- নবকুমার সমুদ্রতীরে বিজন বনে নির্বাসিত হয়েছিলেন। সেখান থেকে তাকে কপালকুণ্ডলা উদ্ধার করেছিলেন।
Q.6. নবকুমারকে সঙ্গীরা যে স্থানে পরিত্যাগ করে সেই স্থান অপ্রফুল্লকর ছিল কেন?
Ans:- নবকুমারকে সঙ্গীরা যে স্থানে পরিত্যাগ করে সে স্থান অপ্রফুল্লকর ছিল। কারণ সেখানে কোন লোকালয় ছিল না। চারিদিকে কেবল বন আর বন। বালুকা স্তুপের উপর কোন গাছপালা জন্মায় না। কেবল বালুকা স্তুপের  নিচে সামান্য কিছু ছোটো ছোটো গাছ জন্মায়। এগুলোর মধ্যে ঝাউ গাছ, বনফুল গাছই অধিক। উপরন্তু বন্য হিংস্র জীবজন্তর আধিক্য
Q.7. নবকুমার ক্ষুধা ও তৃষ্ণায় কাতর ছিলেন কেন?
Ans:- নবকুমারের সক্ষীগণ নবকুমারকে অপ্রফুল্লক স্থানে পরিত্যাগ করে চলে যায়। সেখানে কোন লোকালয়, আহার্য বা পানীয় জল ছিল না। দীর্ঘক্ষণ সেখানে ইতস্তত ঘুরে বেড়ানোর পর অবসন্ন হয়ে ক্ষুধা ও তৃষ্ণায় অত্যন্ত কাতর হয়ে পড়েছিলেন।

Q.8. নবকুমার কোথায় কীভাবে পরিত্যক্ত হয়েছিল?
Ans:- নবকুমার সমুদ্রের বালিয়াড়ির মধ্যে তার সঙ্গীগণ কর্তৃক পরিত্যক্ত হয়েছিল। সেখানে কোন গ্রাম বা লোকালয় ছিল না। থাকার মধ্যে কেবল বন ও বন্য জীবজন্ত ছিল।
সাগর সঙ্গম থেকে ফেরার পথে দিকভ্রষ্ট হয়ে নৌকা মাঝ সমুদ্রে চলে আসে। পরে সমুদ্রের এক তটে এসে নৌকা লঙ্গর করা হয়। কিন্তু নৌকাতে রান্নার জন্য শুকনো কাঠ না থাকায় নবকুমার কাঠ সংগ্রহের জন্য একাকী বনে প্রবেশ করে। কাছাকাছি শুকনো কাঠ না থাকায় নবকুমার গভীর জঙ্গলে প্রবেশ করে এবং তার আসতে দেরি দেখে সঙ্গীগণ তাকে সে স্থানে ফেলে রেখে চলে যায়।
Q.9. কাপালিককে নবকুমার কোথায় কী অবস্থায় দেখতে পায় তা লেখো Ans:- গভীর রাতে নবকুমারের ঘুম ভাঙে। ঘুম ভাঙার পর হঠাৎ দৃরে সে একটি আলোক বিন্দু দেখতে পায়। গাছপালা, লতাপাতা, বালুকা স্তুপের বাধা অতিক্রম করে সে যত এগোতে থাকে, ততই আলোর পরিধি ক্রমে বর্ধিত ও উজ্জলতর হতে থাকে। আলোর কাছাকাছি এসে দেখতে পায় এক অতি উচ্চ বালুকা স্তুপের উপর আগুন জ্বলছে এবং তার সামনে ছিন্ন শীর্ষ-গলিত শবের উপর বসে এক কাপালিক ধ্যান করছেন। তার বয়স প্রায় পঞ্চাশ বছর। পরিধানে কোন কার্পাসবস্ত্র নেই। তার কোমর থেকে উরু পর্যন্ত বাঘ্র চর্মে আবৃত। গলায় রুদ্রাক্ষের মালা। সামনে পড়ে রয়েছে মরা মাথার খুলি, তার মধ্যে আছে রক্ত বর্ণ দ্রব পদার্থ। চারিদিকে স্থানে স্থানে অস্থি পড়ে রয়েছে। এরূপ অবস্থায় নবকুমার কাপালিককে দেখতে পায়।
Q.10. নবকুমার কার সহায়তায় কেমন করে পুনরায় পর্ণকুটিরে পৌছাতে পেরেছিল? নারীটি কে?
Ans:- নবকুমার দেবীমূর্তির ন্যায় এক সুন্দরী রমণীর সহায়তায় পুনরায় পর্ণকুটিরে পৌঁছাতে পেরেছিল। নবকুমার সমুদ্রের অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার পর পর্ণকুটির অভিমুখে যাত্রার সময় অস্পষ্ট আলোকে পথ হারিয়ে ফেলে। পরে এই সুন্দরী রমণী দেবীমূর্তির সঙ্গে নবকুমারের দেখা হয় এবং সে অতি মৃদু স্বরে নবকুমারকে জিজ্ঞাসা করেছিল, সে পথ হারিয়েছে কিনা। কিন্তু নবকুমারের কাছ থেকে কোনো উত্তর না পেয়ে রমণী তাকে অনুসরণ করতে বলে এগিয়ে চলে। নবকুমার তাকে অনুসরণ করে একটি  ক্ষুদ্র বন পেরিয়ে সামনেই পর্ণকুটির দেখতে পায়। কিন্তু সেই রমণীকে সে আর দেখতে পায় না
সেই নারীটি ছিল কপালকুণ্ডলা
Q.11. কাপালিকের পর্ণকুটিরে নবকুমার কী করে প্রাপ্ত তণ্ডুল আত্মসাৎ করেছিল?
Ans:- নবকুমার কাপালিকের পর্ণকুটিরে ফিরে এসে দেখে তার আসার কিছু সময় পূর্ব থেকে একটি কাঠের আগুন জলছিল। এদিকে সারাদিনের ক্ষুধা ও তৃষ্ণায় নবকুমার ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল। তখন তার চোখে পড়ে কেবল আলো নয়, তণ্ডুলাদি রান্নার উপযোগী কিছু কিছু সামগ্রীও কুটিরে আছে। এতে নবকুমার বিস্মিত হল না। কারণ নবকুমার জানত, এ কাপালিকেরই কাজ। তাই সন্ধ্যাকৰ্ম সেরে নবকুমার কুটিরে প্রাপ্ত একটি মাটির পাত্রে তণ্ডুলগুলি সিদ্ধ করে খেয়ে ফেলল।
Q.12. কোথা যাইতেছ? যাইও না। ফিরিয়া যাও, পলায়ন কর।” - উক্তিটি কার? কে, কখন, কাকে, কেন এ উক্তিটি করে? নবকুমার পরে কী করল?
Ans:- উক্তিটি বন্যদেবীর ন্যায় এক সুন্দরী রমণীর। এই রমণী কাপালিকের পালিত কন্যা কপালকুণ্ডলা। রমণীটি নবকুমারকে কাপালিকের পিছু পিছু যেতে দেখে উক্ত উক্তিটি করেছিল। কারণ কপালকুণ্ডলা জানত, কাপালিক নবকুমারকে পূজাস্থানে বধ করার উদ্দেশ্যে নিয়ে যাচ্ছে, তাই সে মুখে আঙুল চেপে নবকুমারকে শব্দ না করে কাপালিকের সঙ্গ পরিত্যাগ করার জন্য উক্ত উক্তিটি করে। উক্তিটি শুনে নবকুমার কিছুক্ষণের জন্য স্তব্ধ হয়ে দাড়িয়ে রইল। সে জানত, কাপালিক তান্ত্রিক মানুষ। তার সঙ্গ পরিত্যাগ না করলে বিপদ আসতেও পারে। কিন্তু কাপালিক তার কী-ই বা ক্ষতি করতে পারে। কারণ কাপালিক তো তারই মতো একজন মানুষ। অবশ্যে পরে কপালকুণ্ডলার সহায়তায় কাপালিকের হাত থেকে সে পালিয়ে গিয়েছিল।

দীর্ঘ প্রশ্নোত্তর
SEBA/SMEBA CLASS 10 BENGALI QUESTIONS & ANSWERS
সেবা দশম শ্রেনী বাংলা প্রশ্ন এবং উত্তর পাঠ : সাগর সঙ্গমে নবকুমার

Q.1. পথিক, তুমি পথ হারাইয়াছ?” - উক্তিটির আলোকে ঘটনাটি আলোচনা করো
Ans:- সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে নবকুমার কাপালিককে দেখতে পেল না। ক্রমে বেলা বাড়তে লাগল কিন্তু কাপালিক পর্ণকুটিরে ফিরে এল না। পূর্ব দিনের উপবাস। আজও এ পর্যন্ত উপবাস, এর ফলে নবকুমারের ক্ষুধা প্রবল হয়ে উঠলোকুটিরে যে পরিমাণ ফল মূল ছিল, তা পূর্ব রাত্রেই খাওয়া হয়ে গিয়েছিল। এখন কুটির ত্যাগ করে ফলমূলের খোঁজ না করলে ক্ষুধায় হয়তো তার প্রাণ যাবে। তাই বেলা থাকতে নবকুমার ফলমূল খোজতে বের হল। কিছুক্ষণ বালিয়াড়ির মধ্যে ঘুরে বেড়ানোর পর সে বালুকাবিহীন নিবিড় বনে এসে পড়ল। পথহীন বনের মধ্যে সে পর্ণকুটিরে ফেরার পথ হারিয়ে ফেলল। বন থেকে বেরিয়ে সামনেই দেখতে পেল বিশাল সমুদ। কিছুক্ষণ সমুদ্রের তটে বসে নবকুমার নীল সমুদ্র, তার বিশাল ফেনারাশি ও ঢেউয়ের অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করল। এরপর পর্ণকটিরের খোঁজ করতে সমুদ তট হতে উঠে পেছন ফেরা মাত্রই সে সমুদ্র সৈকতে অস্পষ্ট আলোকে এক অপূর্ব রমণীকে প্রত্যক্ষ করল। তার মনে হল, রমণীর মধ্যে এক মোহিনী শক্তি রয়েছে। বহুক্ষণ একে অপরের দিকে তাকিয়ে থাকার পর রমণী মৃদস্বরে নবকুমারকে প্রশ্ন করল পথিক, তুমি পথ হারাইয়াছ’? রমণীর কণ্ঠস্বর শ্রবণ করে নবকুমারের হৃদয় বীণা বেজে উঠলরমণীর এই নিঃসৃত কেবল একটি বাক্যই বার বার তার কানে ধ্বনিত হচ্ছিল| রমণী নবকুমারের কোনো উত্তর না পেয়ে আইসবলে চলতে লাগলো। নবকুমার তাকে অনুসরণ করে একটি  ক্ষুদ্র বন পেরিয়ে সামনেই পর্ণকুটির দেখতে পেল। কিন্তু সেই রমণীকে আর দেখতে পেল নাআলোচ্য অংশে বর্ণিত রমণীটি কপালকুণ্ডলা।
Q.2. এ কি দেবী মানুষ……না……কাপালিকের মায়া মাত্র - এই উক্তিটির আধারে নবকুমারের মনোভাব ব্যক্ত করো
Ans:- পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে নবকুমার কাপালিককে দেখতে পেল না। সারাদিন অপেক্ষা করার পর সে ফলমূলের খোঁজে বের হল। কিছুক্ষণ ঘোরে বেড়ানোর পর সে বালুকাবিহীন বনে এসে পড়লঘুরতে ঘুরতে সে পর্ণকুটিরে ফেরার পথ হারিয়ে ফেলল এবং সমুদ্রের সামনে এসে উপস্থিত হল। সমুদ্রতটে বসে সমুদ্রের অপরূপ সৌন্দর্য দেখতে দেখতে সন্ধ্যা হয়ে এল এবং তার কুটিরে ফেরার কথাও মনে পড়লোতখন সে সমূদ্রতট হতে উঠে পেছন ফেরা মাত্র সন্ধ্যার অস্পষ্ট আলোতে এক অপূর্ব রমণী মূর্তি দেখতে পেল। রমণীর মধ্যে মোহিনী শক্তি রয়েছে বলে তার মনে হল। জনহীন সমুদ্রতীরে বহুক্ষণ একে অপরের দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকার পর রমণী মৃদুস্বরে নবকুমারকে বলল, “পথিক তুমি পথ হারাইয়াছ?” নবকুমারের কোন উত্তর না পেয়ে সেই রমণী আইসবলে চলতে লাগল। তাকে অনুসরণ করে নবকুমার পর্ণকুটিরের সামনে এসে উপস্থিত হল। কিন্তু সে সেই রমণীকে আর দেখতে পেল না। কুটিরে প্রবেশ করে নবকুমার দ্বার বন্ধ করে করতলে মস্তক রেখে অনেকক্ষণ ভাবল। নবকুমারের মনে হল, “এ কি দেবী - মানুষী না কাপালিকের মায়ামাত্র।কিন্তু কিছুই সে বুঝতে পারলো না। আলোচ্য অংশে অপূর্ব রমণীটি হল কপালকুণ্ডলা। কপালকুণ্ডলা কাপালিকের পালিত কন্যা।
Q.3. টীকা লেখো - নবকুমার
Ans:- নবকুমার : নবকুমার সপ্তগ্রামের অধিবাসী। এক কর্মক্ষম এবং বলিষ্ঠ ব্রাহ্মণ বক। একবার নবকুমার গঙ্গাসাগরে স্নানার্থী একদল নৌকাযাত্রীর সঙ্গে গঙ্গাসাগরে যায় গঙ্গাসাগরে স্নানপর্ব সেরে ফেরার পথে যাত্রীবাহী নৌকা একরাত্রি শেষে প্রবল স্রোতের টানে রসুলপুরে এসে পৌঁছে। চারিদিক কুয়াশায় আচ্ছন্ন থাকায় দিকভ্রষ্ট হয়ে স্রোতের টানে নৌকা মাঝ সমুদ্রে গিয়ে পড়ে। এরূপ অবস্থায় সাহসী যুবক নবকুমার সকলকে সাহস জোগায়। পরে স্নানাহারাদি সম্পন্ন করার জন্য নৌকা নদী তীরে নঙ্গর করা হয়। নৌকায় রান্নার জন্য শুকনো কাঠ না থাকায় নবকুমার শুকনো কাঠ সংগ্রহের জন্য জঙ্গলে প্রবেশ করে। এদিকে জোয়ার আসায় নৌকা ভেসে যায়। নবকুমার একাকী বিজন বনে নির্বাসিত হয়। সেখানে গভীর রাতে এক কাপালিকের সঙ্গে তার দেখা হয়। কাপালিক তার পর্ণকুটিরে তাকে নিয়ে যায় এবং ফলাহার দিয়ে তার প্রাণ বাঁচায়। সেই বনে পরে কাপালিকের পালিতা কন্যা কপালকুণ্ডলার সঙ্গে নবকুমারের সাক্ষাৎ হয়। কপালকুণ্ডলা নবকমারকে কাপালিকের হাত থেকে রক্ষা করে সঙ্গে নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে তাদের বিয়ে
হয় এবং তারা সপ্তগ্রামে ফিরে আসে।
Q.4. টীকা লেখো - কাপালিক
কাপালিক বামাচারী সন্ন্যাসী, তন্ত্রসাধক। নদী তীরে কাপালিক যখন শবসাধনা করেছিলেন তখন তার সঙ্গে নবকুমারের দেখা হয়। কাপালিক নবকুমারকে পর্ণকুটিরে নিয়ে গিয়ে ফলাহার দিয়ে বাঁচায়। নবকুমার জানত কাপালিকরা সাধনার দ্বারা অসাধ্য সাধন করতে পারে। কাপালিকের শব সাধনার জন্য মৃতদেহের প্রয়োজন হয়কাপালিকের পালিত কন্যা কপালকুণ্ডলা জানত কাপালিক কী উদ্দেশ্যে নবকুমারকে পূজা স্থানে নিয়ে যাচ্ছে। তাই কাপালিকের হাত থেকে সুকৌশলে বাঁচার জন্য কপালকুণ্ডলা কাপালিকের খড়্গ চুরি করে। পরে নবকুমারকে সঙ্গে করে সে পালিয়ে যায়। ভবানী দেবীর মন্দিরে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। তারপর তারা সপ্তগ্রামে চলে আসে। আলোচ্য গদ্যাংশে কাপালিক একটি বলিষ্ঠ চরিত্র। ঘটনা প্রবাহে এই চরিত্রটি গতি এনে দিয়েছে।
Q.5. কাপালিক মনুষ্য - আমিও মনুষ্য।” - উক্তিটির বক্তা কে? সে এরূপ বলার যথাযথ কারণ উল্লেখ করো
Ans:- উক্তিটির বক্তা নবকুমার। সন্ধ্যাবেলা সমুদ্রতীর হতে ফিরে এসে নবকুমার কুটিরের মধ্যে কাপালিককে দেখতে পেল! নবকুমার কাপালিকের কাছে বাড়ি ফিরে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করল এবং বাড়ি ফেরার পথ দেখিয়ে দেবার জন্য অনুরোধ করল। কাপালিক কেবলমাত্র বলল, “আমার সঙ্গে আগমন কর।নবকুমার তাকে অনুসরণ করল! তখনও সন্ধ্যার আলো অন্তর্হিত হয়নি। কাপালিক আগে আগে এবং নবকুমার তার পেছন পেছন যাচ্ছিল। হঠাৎ নবকুমারের পিঠে কে যেন কোমল হাত রাখলোপেছন ফিরে নবকুমার দেখতে পেল এক সুন্দরী রমণী, মুখে আঙুল দিয়ে তাকে কথা বলতে নিষেধ করছে। কাপালিক এসব কিছুই দেখতে পেল না। সে এগিয়ে গেল। রমণী মৃদুস্বরে নবকুমারকে উদ্দেশ্য করে বলল, “কোথা বাইতেছ? যাইও না। ফিরিয়া যাও পলায়ন কর।রমণীর এই নিষেধ বাক্য শুনে নবুকমারের মনে হল, সে যে কথা শুনেছে তা তো বিপদসূচক। তান্ত্রিকেরা সকল কিছুই করতে পারে। তবে কী সে পালাবে? পরক্ষণেই আবার সে ভাবলো, কেন সে পালাবে? এই কাপালিকই তো সেদিন তাকে বাঁচিয়েছিল, আজও সে বাঁচাবে। কাপালিক তো তার মতোই একজন মানুষ।
Q.6. সাগর সঙ্গমে নবকুমারপাঠটির সারাংশ লেখো
Ans:- গঙ্গাসাগরে স্নানপর্ব সেরে ফেরার পথে একটি যাত্রীবাহী নৌকা দিকভ্রষ্ট হয়ে সোতের টানে মাঝ সমূদ্রে গিয়ে পড়ে। উৎকণ্ঠিত ও ভীত যাত্রীদের সাহস যোগালো নবকুমার নামের এক যুবক। নিকটস্ত নদীতীরে স্নানহারাদি সম্পন্ন করার জন্য নৌকা নোঙ্গর করা হল। কাছাকাছি শুকনো কাঠ না থাকায় শুকনো কাঠ সংগ্রহের জন্য নবকুমার গভীর জঙ্গলে প্রবেশ করে এবং তার আসতে দেরি দেখে সঙ্গীগণ তাকে সে স্থানে ফেলে চলে গেলেন।
নবকুমার একাকী বিজন বনে নির্বাসিত হল। সেখানে গভীর রাতে কাপালিকের সঙ্গে তার দেখা হল। কাপালিক তার পর্ণকুটিরে তাকে নিয়ে গেল। ক্ষুধার্ত নবকুমার কাপালিক প্রদত্ত ফলমূল খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লো। পরদিন সকালে ওঠে নবকুমার কাপালিকের দেখা পেল না। সমস্ত দিন অপেক্ষা করার পর নিরাশ হয়ে সে সমূদীরে চলে গেল সেখান থেকে ফিরে আসার সময় অস্পষ্ট আলোকে সে পর্ণ কুটিরের পথ হারিয়ে ফেলে। পরে অন্ধকারে এক অপূর্ব সুন্দরী রমণী তাকে পর্ণ কুটিরে পৌঁছে দিয়ে নিরুদ্দেশ হয়ে যায়
পরদিন সন্ধ্যায় কাপালিকের সঙ্গে পর্ণকুটিরে নবকুমারের সাক্ষাৎ হয় এবং নবকুমার বাড়িতে ফিরে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলে কাপালিক নবকুমারকে তার অনুসরণ করতে আদেশ দেন। নবকুমার কাপালিকের আদেশ মতো তার অনুসরণ করল। হঠাৎ সেই সুন্দরী রমণীকে নবকুমার প্রত্যক্ষ করল। রমণীটি তাকে পালিয়ে যেতে বলল। তাই সে একবার পালাবার কথা ভাবলোকিন্তু পরক্ষণেই আবার সে ভাবলো কী কারণে সে পালাবে? কাপালিক তার কী-ই বা ক্ষতি করতে পারে? তার মনে হল কাপালিক তো তারই মতো একজন মানুষ।
Q.7. রাত্রি মধ্যে ব্যাঘ্র ভল্লুকের সাক্ষাৎ পাইবার সম্ভাবনা। প্রাণনাশই নিশ্চিত।ব্যাখ্যা করো।
Ans:- আলোচ্য অংশটুকু লেখক বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত 'কপালকুণ্ডলা' উপন্যাসের অন্তর্গত সাগর সঙ্গমে নবকুমার নামক পাঠ্যাংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। উদ্ধৃতাংশে নবকুমারের অসহায় অবস্থার কথা বর্ণিত হয়েছে।
নবকুমারকে তার নৌকার সহযাত্রীরা নির্জন সমুদ্র সৈকতে একাকী পরিত্যাগ করে চলে যায়। নবকুমার দেখলো যে, গ্রাম নেই, আশ্রয় নেই, লোক নেই, খাবার নেই, এমন কী পান করার মতো জল পর্যন্ত নেই। সমুদ্রের জল লবণাক্ত। অথচ ক্ষুধা-তৃষ্ণায় তার হৃদয় বিদীর্ণ হচ্ছে। তীব্র শীত নিবারণের জন্য কোন আশ্রয় নেই, গাত্রবস্ত্র পর্যন্ত নেই। নদীতীরে প্রবাহিত তুষার শীতল বায়ুতে, হিমবর্ষণকারী আকাশতলে, নিরাশ্রয়ে নিরাবরণে তাকে ঘুমিয়ে থাকতে হবে। রাতে বাঘ-ভল্লুকের মুখে পড়ার আশংকাও রয়েছে। এমতাবস্থায় প্রাণনাশ যে নিশ্চিত তা বুঝতে নবকুমারের আর অসুবিধা হল না। আলোচ্য অংশে নবকৃমারের প্রাণনাশের আশঙ্কার কথা ব্যক্ত হয়েছে।
Q.8. নবকুমারকে গল্পটির নায়ক বলা যায় কি? নবকুমারের চরিত্রের বর্ণনা দাও।
অথবা, নবকুমারকে কি সাগর সঙ্গমে নবকুমারপাঠ্যাংশের নায়ক বলা যায়? নবকুমারের চরিত্র বর্ণনা করো
Ans:- হ্যা, নবকুমারকে গল্পটির নায়ক বলা যায়।
নবকুমার আলোচ্য গল্পাংশের প্রধান কেন্দ্রীয় চরিত্র। এই গল্পাংশে নির্জন সমুদ্র সৈকতে নবকুমারকে কেন্দ্র করে যে সমস্ত ঘটনা ঘটেছিল, তার বর্ণনা রয়েছে।
গল্প বা উপন্যাসে নায়ক চরিত্রে কিছু বিশেষ সদগুণ পরিলক্ষিত হয়। নবকুমারের চরিত্রেও আমরা সেই বিশেষ কিছু সদগুণ দেখতে পাই। তিনি মানুষের ওপর আস্থাবান। সঙ্গীগণ কর্তৃক নির্জন সমুদ্র সৈকতে পরিত্যক্ত হওয়ার পরও তিনি তার সঙ্গীগণ কর্তৃক পরিত্যক্ত হয়েছেন বলে সন্দেহ প্রকাশ করেননি। কাপালিক নবকুমারকে আশ্রয় দিয়েছিলেন। তাই কাপালিকের প্রতি তার বিশ্বাস ছিল। নবকুমারকে আবার আমরা সাহসী হিসেবেও দেখতে পাই। তিনি সঙ্গীদের ক্ষুধা তৃষ্ণা মেটানোর জন্য একাকী নির্জন সমদ্রতটে রান্নার জন্য শুকনো কাঠ সংগ্রহ করতে বনে প্রবেশ করেছিলেন।
নবকুমার চরিত্রটির মধ্যে রোমান্টিকতাও দেখা যায়। তাই তো কপালকুণ্ডলার মোহিনী রূপ দেখে তার হৃদয় বীণা বেজে উঠেছিল। আলোচ্য গল্পাংশে নবকুমারের চরিত্র, ব্যক্তিত্ব, পুরুষাকার, সাহস, উপস্থিত বুদ্ধি প্রভৃতি নায়কোচিত বিশেষ সদগুণাবলির সমাবেশ দেখা যায়। তাই নবকুমারকে স্বাচ্ছন্দেই আলোচ্য পাঠ্যংশের নায়ক বলা যেতে পারে। তবে কপালকুণ্ডলা উপন্যাসটি নায়িকা প্রধান উপন্যাস।
Q.9. কোথা যাইতেছ? যাইও না। ফিরিয়া যাও - পলায়ন কর।- ব্যাখ্যা করো?  
Ans:- আলোচ্য উদ্ধৃতাংশটি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত কপালকুণ্ডলা উপন্যাসের অন্তর্গত সাগর সঙ্গমে নবকুমারপাঠ্যাংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। উদ্ধৃত অংশে কাপালিকের পালিতা কন্যা কপালকুণ্ডলা নবকুমারকে যে সাবধানবাণী উচ্চারণ করেছে তাই বর্ণিত হয়েছে।
উক্তিটি কাপালিকের পালিত কন্যা কপালকুণ্ডলার। রমণীটি নবকুমারকে কাপালিকের পিছু পিছু যেতে দেখে উক্ত উক্তিটি করেছিল। কারণ কপালকুণ্ডলা জানত, কাপালিক নবকুমারকে পূজাস্থানে বধ করার উদ্দেশ্যে নিয়ে যাচ্ছে, তাই সে মুখে আঙুল চেপে নবকুমারকে শব্দ না করে কাপালিকের সঙ্গ পরিত্যাগ করার জন্য উক্ত উক্তিটি করে। উক্তিটি শুনে নবকুমার কিছুক্ষণের জন্য স্তব্ধ হয়ে দাড়িয়ে রইল। সে জানত, কাপালিক তান্ত্রিক মানুষ। তার সঙ্গ পরিত্যাগ না করলে বিপদ আসতেও পারে। কিন্তু কাপালিক তার কী-ই বা ক্ষতি করতে পারে। কারণ কাপালিক তো তারই মতো একজন মানুষ। অবশ্যে পরে কপালকুণ্ডলার সহায়তায় কাপালিকের হাত থেকে সে পালিয়ে গিয়েছিল।
Q.10. কখনও স্তূপতলে, কখনও স্তূপ শিখরে ভ্রমণ করিতে লাগিলেন।- সপ্রসঙ্গ ব্যাখ্যা করো
Ans:- আলোচ্য উদ্ধৃতাংশটি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত কপালকুণ্ডলাউপন্যাসের অন্তর্গত সাগর সঙ্গমে নবকুমারনামক পাঠ্যাংশ হতে গৃহীত হয়েছে।
সঙ্গীগণ কর্তৃক নবকুমার সমুদ্র সৈকতে বিজন বনে পরিত্যক্ত হওয়ার পর প্রতিকূল পরিবেশে তার যে অবস্থা হয়েছিল তা-ই লেখক আলোচ্য অংশে বর্ণনা করেছেন।
নবকুমার সঙ্গীহীন অবস্থায় সমুদ্রের বালিয়াড়ির মধ্যে পরিত্যক্ত হয়েছিল। সেখানে কোনো গ্রাম বা লোকালয় ছিল না। মনের অস্থিরতার কারণে সে একস্থানে অধিক সময় বসে থাকতে পারল না। তীর ত্যাগ করে উপরে উঠল। এদিক ওদিক ঘুরে বেড়াতে লাগল। ক্রমে অন্ধকার হয়ে এলোআকাশে নক্ষত্র রাশি দেখা দিল। অন্ধকারে সর্বত্র জনহীন; আকাশ, প্রান্তর, সমুদ্র সকলই নীরব। কেবল সমুদ্রের গর্জন আর কখনো হয়তো বন্য পশুর চিৎকার ছাড়া আর কোনো ধরনের শব্দই ছিল না। তা সত্ত্বে নবকুমার সেই অন্ধকারে হিমবর্ষণকারী আকাশের নিচে বালিয়াড়ির চারপাশে ঘুরে বেড়াতে লাগল। কখনো উপত্যকায়, আবার কখনো বালুকা স্তূপের উপর ঘুরে বেড়াতে লাগল। পথ চলতে চলতে প্রতি পদক্ষেপেই হিংস্র পশু কর্তৃক আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। কিন্তু এক স্থানে বসে থাকলেও সেই আশঙ্কা রয়েছে।
Q.11. অকস্মাৎ এই রূপ দুর্গ মধ্যে দেবীমূর্তী দেখিয়া নিস্পন্দ শরীর হইয়া দাড়াইলেন। তাহার বাকশক্তি রহিত হইল। স্তব্ধ হইয়া চাহিয়া রহিলেন।” - সপ্রসঙ্গ ব্যাখ্যা লেখো।
Ans:- আলোচ্য উদ্ধৃতাংশটি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত কপালকুণ্ডলাউপন্যাসের অন্তর্গত সাগর সঙ্গমে নবকুমারনামক পাঠ্যাংশ হতে গৃহীত হয়েছে। অপূর্ব রমণীমূর্তীকপালকুণ্ডলাকে প্রত্যক্ষ করে নবকুমারের যে অবস্থা হয়েছিল তা এখানে বর্ণিত হয়েছে।
নবকুমার সমুদতটে বসে আপনমনে নীল সমুদ, তার বিশাল ফেনারাশি ও বিশাল ঢেউয়ের অপরূপ সৌন্দর্য অনুভব করতে লাগল। অনেক পরে অন্ধকার হয়ে এলে তার আশ্রমে ফেরার পথ সন্ধানের কথা মনে পড়ল। তাই সেখান থেকে উঠে পেছনে ফিরতেই দেখল, এক অপূর্ব রমণী মূর্তি দাড়িয়ে আছে। নবকুমার এই মোহিনী রমণী মূর্তি প্রত্যক্ষ করে নিস্পন্দ শরীর হয়ে দাড়িয়ে রইল। তার কথাবলার শক্তি লোপ পেল। নবকুমার স্তব্ধ হয়ে চেয়ে রইল। রমণীও একদৃষ্টে নবকুমারের দিকে চেয়ে রইল। বহুক্ষণ একে ওপরের দিকে একদৃষ্টে চেয়ে থাকার পর সেই রমণী নবকুমারকে জিজ্ঞাসা করলো, “পথিক তুমি পথ হারাইয়াছ?” আলোচ্য উদ্ধৃতাংশে নবকুমারের সঙ্গে কপালকুণ্ডলার এই প্রথম দেখাটা লেখক অত্যন্ত সুন্দরভাবে পরিস্ফুট করেছেন।

পাঠনির্ভর ব্যাকরণ
SEBA/SMEBA CLASS 10 BENGALI QUESTIONS & ANSWERS
সেবা দশম শ্রেনী বাংলা প্রশ্ন এবং উত্তর পাঠ : সাগর সঙ্গমে নবকুমার

Q.1. সন্ধি-বিচ্ছেদ করো। (সমাধান)
প্রতীক্ষা - প্রতি +ইক্ষা (স্বরসন্ধি)
ইতস্তত - ইতঃ+তত।
শ্রেয়স্কর - শ্রেয়ঃ+কর (বিসর্গসন্ধি)
পর্যন্ত - পরি+অন্ত।
কিঞ্চিত - কিম+চিৎ (ব্যঞ্জনসন্ধি)
অত্যন্ত - অতি+অন্ত (স্বরসন্ধি)
নিরীক্ষণ - নিঃ+ঈক্ষণ।
পঞ্চাশ - পঞ্চ+আশ।
সদুপায় - সৎ+উপায়।
নীরব - নিঃ+রব।
পুনরুদীপ্ত- পূনঃ+উদ্দীপ্ত (বিসর্গসন্ধি)
দিগন্ত - দিগ+অন্ত (ব্যঞ্জন সন্ধি)
সন্ন্যাস - সম+ন্যাস (ব্যঞ্জনসন্ধি)
মৃন্ময় - মৃৎ+ময়।
নিরাশ্রয়- নিঃ+আশ্রয় (বিসর্গ স্বন্ধি)।
অত্যুচ্চ - অতি+উচ্চ (স্বরসন্ধি)
সময়ান্তরে - সময় + অন্তরে।
প্রত্যাগমন- প্রতি+আগমন (স্বরসন্ধি)

Q.2. ব্যাস বাক্যসহ সমাসের নাম লেখো।
পর্ণকুটির, দেহরত্ন, পথভ্রান্তি, অনুচিত, কণ্ঠাগত, কার্পাসবস্ত্র, শিখরাসীন, তন্দ্রাভিভূত, কাষ্ঠভার
Ans:-
কাষ্ঠভার - কাষ্ঠের ভার (ষষ্ঠী তৎপুরুষ)
কার্পাসবস্ত্র - কার্পাস দ্বারা তৈরি বস্ত্র (সপ্তমী তৎপুরুষ)।
কণ্ঠাগত- কঠ পর্যন্ত আগত (অপাদান তৎপুরুষ)।
পথভ্রান্তি- পথের ভ্রান্তি (ষষ্ঠী তৎপুরুষ সমাস)।
অনুচিত - নয় উচিত (নঞ তৎপুরুষ সমাস)।
পর্ণকুটির -পর্ণ (পাতা) দ্বারা তৈরি কুটির (তৃতীয়া তৎপুরুষ)
দেহরত্ন- দেহ রূপ রত্ন (রূপক কর্মধারয় সমাস)।
শিখরাসীন- শিখরে আসীন (অধিকরণ তৎপুরুষ)।
তন্দ্রাভিভূত - তন্দ্রার দ্বারা অভিভূত (করণ তৎপুরুষ)।


Q.3. বাক্যরচনা করো (বিশিষ্ট অর্থে)
আকাশকুসুম, আক্কেল সেলামি, আদাজল খেয়ে, আঁতে ঘা, কেঁচে গুন্ডুষ, কূপমণ্ডুক, চিনির বলদ, টনক নড়, ধর্মের ষাঁড়, পায়াভারি।
Ans:-
আকাশ কুসুম (অসম্ভব কল্পনা) - রামবাবুর আকাশ কুসুম কল্পনা প্রায়ই অভ্যাস।
আদাজল খেয়ে -(প্রতিজ্ঞা করে লাগা) - এবার রাজু আদাজল খেয়ে লেগেছে, পাশ করবেই।
চিনির বলদ - (ভারবাহি কিন্তু ফলভোগী নয়)- রামচরণ বাবু সংসারের জন্য সারা জীবন খেটেই গেলেন, যেন চিনির বলদ
কূপমণ্ডুক - (সংকীর্ণ জ্ঞান থাকা ব্যক্তি) - কূপমণ্ডুকের মতো বসে থাকলে হবে না, পৃথিবীটা ঘুরে দেখতে হবে।
টনক নড়া -(খেয়াল হওয়া)- যাক এতদিনে তোমার টনক নড়েছে, আপদটাকে বিয়ে করছো
আঁতে ঘা -(মনে আঘাত) - কাউকে আঁতে ঘা দিয়ে কথা বলা উচিত নয়।
আক্কেল সেলামি - (বোকামির দণ্ড) - বিনা টিকেটে ট্রেনে ওঠায় কমলকে ডবল ভাড়া গুনে আক্কেল সেলামি দিতে হল।
কেঁচে গুণ্ডুষ -(পুনরাবৃত্তি) - দীর্ঘ দিন চর্চা না থাকায় ছেলেকে অঙ্ক কষাতে গিয়ে বাবাকে কেঁচে গুণ্ডুষ করতেই হবে।
পায়াভারি -(অহংকার) - বেশি টাকা হয়েছে বলে রাইচরণ বাবুর পায়াভারি হয়েছে।
ধর্মের ষাড় -(ভবঘুরে) - কাজে মন দাও কত আর ধর্মের ষাড় হয়ে ঘুরবে।

Q.4. সন্ধি ও সমাসের মধ্যে পাঁচটি পার্থক্য নিরূপণ করো
সন্ধি
সমাস
ক) পরপর সন্নিহিত দুটি বর্ণের মিলনকে সন্ধি বলে|

ক) পরস্পর অর্থ সম্পর্কযুক্ত একাধিক পদের সংহতি লাভ করার নাম সমাস।
খ) সন্ধিতে বহু পদই থাকে।
খ) সমাসে বহুপদ একপদে পরিণত হয়।
গ) সন্ধিতে বর্ণের সঙ্গে বর্ণের মিলন।
গ) শব্দের সঙ্গে পদের মিলন।
ঘ)সন্ধিতে অর্থের কোন পরিবর্তন ঘটে না।
ঘ) সমাসে সমাসবদ্ধ পদের অর্থগত পরিবর্তন হয়।
ঙ) বর্ণের মিলনের ভিত্তি উচ্চারণ।
ঙ) পদের মিলনের ভিত্তি অর্থ।

Q.5. অর্থানুসারে বাক্যরচনা করো।
অস্ত্যর্থক - যে সকল বাক্য দ্বারা হ্যা সূচক অর্থ বোঝায়, তাদের অস্ত্যর্থক বাকা বলে, যেমন আমি আজ স্কুলে যাব।
নস্তার্থক - যে সকল বাক্য দ্বারা না সূচক অর্থ বোঝায়, তাদের নস্তার্থক বাক্য বলে। যেমন আমি আজ স্কুলে যাব না।
প্রশ্নাত্মক - যে বাক্য দ্বারা প্রশ্ন সূচক অর্থ প্রকাশ করা হয়, তাকে প্রশ্নাত্মক বাক্য বলে, যেমন তুমি কোথায় থাকো?

Q.6. অস্ত্যর্থক বাক্যে পরিবর্তন করো।
নস্ত্যর্থক - আমি কখনও মিথ্যা কথা বলি না।
অস্ত্যর্থক - আমি সর্বদা সত্য কথা বলি।
নস্ত্যর্থক - পৃথিবীতে কেহ অমর নয়।
অস্ত্যর্থক - পৃথিবীতে সকলেই মরণশীল।
নস্ত্যর্থক - এ কাজ করা সম্ভব নয়।
অস্ত্যর্থক - এ কাজ করা অসম্ভব।
নস্ত্যর্থক - কে না সন্তানকে ভালোবাসে ?
অস্ত্যর্থক - সকলেই সন্তানকে ভালোবাসে।
নস্ত্যর্থক - কে না জন্মভূমিকে ভালোবাসে?
অস্ত্যর্থক - সবাই জন্মভূমিকে ভালোবাসে।

Q.7. নস্ত্যর্থক বাক্যে পরিবর্তন করো।
অস্ত্যর্থক - কাপুরুষেরা মৃত্যুকে ভয় করে।
নস্ত্যর্থক - কাপুরুষ ছাড়া কেহই মৃত্যুকে ভয় করে না।
অস্ত্যর্থক - সে ছিল মূখ।
নস্ত্যর্থক - সে পণ্ডিত ছিল না।
অস্ত্যর্থক - পৃথিবীতে তুমি অতুলনীয়।  
নস্ত্যর্থক - পৃথিবীতে তোমার তুলনা নেই।

Q.8. প্রশ্নাত্মক বাক্যে পরিবর্তন করো।
অস্ত্যর্থক - টাকায় সবই পাওয়া যায়।
প্রশ্নাত্মক - টাকায় কী না পাওয়া যায়?
অস্ত্যর্থক - জননী ও জন্মভূমি স্বর্গ হতেও বড়।
প্রশ্নাত্মক - জননী ও জন্মভূমি স্বর্গ হতেও বড় নয় কি?
নস্ত্যর্থক - পরের অনিষ্ট করা উচিত নয়।
প্রশ্নাত্মক - পরের অনিষ্ট করা কি উচিত?
SEBA/SMEBA CLASS 10 BENGALI QUESTIONS & ANSWERS
সেবা দশম শ্রেনী বাংলা প্রশ্ন এবং উত্তর পাঠ : সাগর সঙ্গমে নবকুমার


*******************


Post a Comment

2 Comments

HELLO VIEWERS, PLEASE SEND YOUR COMMENTS AND SUGGESTION ON THE POST AND SHARE THE POST TO YOUR FRIEND CIRCLE.