SEBA / SMEBA Class 9 History (Social Sciences) Chapter 1 in Bangla সেবা (আসাম) নবম শ্রেণী ইতিহাস (সমাজবিজ্ঞান) অধ্যায় এক: ভারতবর্ষে ইউরোপীয়দের আগমন



SEBA / SMEBA Class 9 History (Social Sciences)
Chapter 1  in Bangla
সেবা (আসাম) নবম শ্রেণী ইতিহাস (সমাজবিজ্ঞান)
অধ্যায় এক: ভারতবর্ষে ইউরোপীয়দের আগমন

1). 1453 সালে কনস্টান্টিনোপল তুর্কিদের দখলে যায় আরব দেশের মধ্য দিয়া দেশগুলি সরাসরি যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে ইউরোপীয় জাতিগুলি ভারতের সঙ্গে বিকল্প পথের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে
2). 1487 সালে পর্তুগিজ নাবিক বার্থোল মিউ দিয়াজ আফ্রিকা মহাদেশে অবস্থিত উত্তমাশা অন্তরীপে উপস্থিত হয়েছিলেন
3). 1498 খ্রিস্টাব্দে ভাস্কো-দা-গামা উত্তমাশা অন্তরীপ অতিক্রম করে ভারতের কালিকট উপস্থিত হয় তিনি এক নতুন পথের সূচনা করেন পর্তুগালের সাইনসে জন্ম লাভ করা ভাস্কোডাগামার মৃত্যু হয় ভারতের কচিতে 1524 খ্রিস্টাব্দের 24 ডিসেম্বর

4). ইংরেজ নাবিক ফ্রান্সিস ড্রেক 1580 খ্রিস্টাব্দে জাহাজে পৃথিবী প্রদক্ষিণ করতে সক্ষম হন
5). ইংরেজ নাবিক  RYALF FITS 1582 খ্রিস্টাব্দে ভারত ব্রহ্মদেশ ভ্রমণ  করতে সমর্থ হন
6). 1599 খ্রিস্টাব্দে জেমস মিলদেন হল ইংল্যান্ডের রানী এলিজাবেথের কাছ থেকে অনুরোধপত্র নিয়ে প্রথমবারের মতো ভারতে প্রবেশ করেন
7).    প্রাচ্যের সঙ্গে ব্যবসা বাণিজ্য করার জন্য 1600 খ্রিস্টাব্দে ইংরেজ সওদাগর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি নামে একটি প্রতিষ্ঠান গঠন করেন
8). 1660 সালে ইংল্যান্ডের রাজা জেমস ভারতের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য করার জন্য উইলিয়াম হকিংকে মোগল সম্রাট জাহাঙ্গীরের নিকট একটি পত্র প্রেরণ করেন হকিংস তাপ্তি নদীর মোহনা দিয়ে সুরাট বন্দরে উপস্থিত হয়েছিলেন 1609 সালের এপ্রিলে তিনি আগ্রায় সম্রাট জাহাঙ্গীরের সঙ্গে দেখা করে এই ছিল ইংরেজ এর প্রথম ভারতে পদার্পণ 1651 সালে স্যার টমাস রো দ্বিতীয়বার আবেদন নিয়ে আজমিরে জাহাঙ্গীরের সঙ্গে দেখা করেন কোন সম্মতি না পেলেও সুরাটে বাণিজ্য কুঠি স্থাপনের অনুমতি লাভ করেন 1715 সালে জন চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে সম্রাট ফারুকশিয়ার এর সঙ্গে দেখা হয় অসুস্থ ফারুকশিয়ারকে চিকিৎসা করে আরোগ্য লাভ  করান এই সুযোগে  সম্রাটের কাছ থেকে তিনটি ফরমান আদায় করে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ভারতবর্ষের ব্যবসা বাণিজ্য করার অনুমতি লাভ করে
9). ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির প্রথম প্রধান উদ্দেশ্য ছিল ভারতে ব্যবসা-বাণিজ্য করা কিন্তু পরে ইংরেজ শাসন প্রতিষ্ঠা করে রাজ্য শাসন করা স্বপ্ন দেখেছিল
10).1611 সালে মুসলিমের বাণিজ্য কেন্দ্র 1636 সালে আরমাগাওয়ে দ্বিতীয় বাণিজ্য কেন্দ্র স্থাপন করা হয়
11). 1650 সালে চন্দ্রগিরি রাজার সঙ্গে চুক্তি করে আরমা গাঁওয়ের বাণিজ্যকেন্দ্রকে মাদ্রাজে তুলে নিয়ে নতুন নামকরণ করা হলো ফর্ট  সেন্ট জর্জ
12). 1661 সালে ইংল্যান্ডের রাজা দ্বিতীয় চার্লস পর্তুগিজ রাজকন্যা ক্যাথারিনকে বিয়ে করে যৌতুক হিসেবে মুম্বাই শহর লাভ করে 1668 সালে 50 হাজার পাউন্ডের বিনিময়ে রাজা চার্লস বোম্বাই শহরকে ইংরেজ কোম্পানিকে হস্তান্তর করেন তখন থেকেই বোম্বাই কোম্পানির প্রধান কার্যালয়ে পরিণত হয়
13). 1690 সালে জব চার্নক বঙ্গের নবাবের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদনের মাধ্যমে বারোসো টাকার খাজনার বিনিময়ে কালীঘাট সুতানুটি এবং গোবিন্দপুর নামে তিনটি গ্রামের জমিদারী সত্ব কোম্পানিকে প্রদান করে এই তিন গ্রাম মিলিত হয়ে কলকাতা নগরীর পত্তন হয় ইংল্যান্ডের রাজা তিতীয় উইলিয়ামের সম্মানার্থে কলকাতার এই বাণিজ্য কেন্দ্রটির নাম রাখা হল ফোর্ট উইলিয়াম
14). রবার্ট ক্লাইভ:  ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সাধারণ কর্মচারী রবার্ট ক্লাইভ ভারতে ঔপনিবেশিক সাম্রাজ্য গড়ে তোলার স্বার্থে ভারত থেকে অন্যান্য বিদেশি ইউরোপীয় কোম্পানিগুলো কে বহিষ্কার করার কূটনৈতিক কৌশল অবলম্বন করেছিলেন যুদ্ধ অথবা মিত্রতার জালে ফেলে বঙ্গের নবাব, হায়দ্রাবাদের নিজাম, অযোধ্যার নবাব, রাজপুতনার রাজা প্রভৃতির  কর্তিত্ব দখল করেছিলেন  তিনি বঙ্গের নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে 1757 সালে পলাশীর যুদ্ধে পরাস্ত করে ভারতবর্ষে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন
15).পরাধীন ভারতের ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদকে বা শাসন কে দুই ভাগে ভাগ করা যায়
 )  মুঘল সাম্রাজ্যবাদের পতন থেকে 1857 সালের সিপাহী বিদ্রোহ পর্যন্ত ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসন
 ).  সিপাহী বিদ্রোহের পর থেকে 1947 সালের 15 আগস্ট পর্যন্ত ব্রিটিশ  গবর্ণমেন্টর শাসন
16).এলাহাবাদ চুক্তি:
 মুঘল সম্রাট বাহাদুর শাহ আলম লাইভ এর মধ্যে এলাহাবাদ চুক্তি সম্পাদিত হয় 1765 সালে
 চুক্তির ফল:
 )  বিহার উড়িষ্যার উপর রাজনৈতিক কর্তৃত্ব লাভ করে
 ).  রাজস্ব সংগ্রহ সামরিক প্রশাসনের দায়িত্ব প্রদানের মাধ্যমে 1765 সালে বঙ্গদেশে দ্বৈত শাসন প্রবর্তন হয়
17). দ্বৈত শাসনের ফল:
 ).  ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ক্ষমতা দ্বিগুণ হয়
 ).   সম্রাটের অধীন নবাব হয়ে পড়েন নামেমাত্র সামরিক প্রশাসক
18).. লর্ড ওয়ারেন হেস্টিংস এর কার্যকালে (1777-85) ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতের একমাত্র শক্তি রূপে প্রতিষ্ঠা লাভ করে তিনি সর্বপ্রথম নিজেকে মোঘল সম্রাটের সঙ্গে সমমর্যাদার দাবি তুলেছিলেন
19). 1773  সালের নিয়ন্ত্রনকারী আইন :
ব্রিটিশ সরকার 1773 সালে ভারতের জন্য নিয়ন্ত্রনকারী আইন প্রণয়ন করে এই আইন দ্বারা:-
 )   বঙ্গ প্রেসিডেন্সির গভর্নর কে  গভর্নর জেনারেল উপাধিতে ভূষিত করা হয়
 )   বোম্বে মাদ্রাজের গভর্নর দুজনকে বঙ্গের গভর্নর জেনারেলের অধীনস্থ করা হয়
 )   সমগ্র ভারতে কেন্দ্রীয় শাসনের সূচনা হয়
20). পিটের ভারত আইন:  1784
 1784 সালের পিটের ভারত শাসন আইনের ফলে ভারতে দুই স্তরের সরকার সৃষ্টি হয়েছিল ভারতবর্ষ শাসন করেছিল কোম্পানি   কোম্পানি কে নিয়ন্ত্রন করেছিল ব্রিটিশ সরকার
21) লর্ড ক্যানিং এর গভর্নর জেনারেল হওয়ার পর 1857 সালের 29 মার্চ 34 নং দেশীয় পদাতিক বাহিনীর সিপাহি মঙ্গল পান্ডে ব্যারাকপুর সিপাহী চাউনিতে ইংরেজ অফিসার কে শরীরে গুলি বর্ষণ করে সিপাহী বিদ্রোহের সূচনা করেন মঙ্গল পান্ডে  সহ  প্রহরী ঈশ্বরী পান্ডেকে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণার সাথে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে সিপাহী বিদ্রোহের বিস্তৃতি লাভ করে

লর্ড ক্যানিং
22) 1835 সালে কোম্পানির মুদ্রা থেকে মুঘল সম্রাটের নাম সরিয়ে দেওয়া হয় রাজকীয় ফারসি ভাষা উচ্ছেদ করে ইংরেজি ভাষাকে শাসনযন্ত্রে ব্যবহার করা শুরু হয়
23)1833 এবং 1853 সালে ব্রিটিশ সংসদ বিধিবদ্ধ করা দুইটি সনদের মাধ্যমে ব্রিটিশ সরকার ভারতের কেন্দ্রীয় শাসন অধিক শক্তিশালী করে তুলেছিল
সিপাহী বিদ্রোহ
24) সিপাহী বিদ্রোহের ফলাফল:
 )  সাংবিধানিক পরিবর্তন:
i) 1858 সালের 2 আগস্টভারত সরকার আইন  প্রণয়ন করে ভারতের শাসন ক্ষমতা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি থেকে সরাসরি ব্রিটিশ সরকারের হাতে নেওয়া হয়
ii)  কোম্পানির আমলের  নিয়ন্ত্রণ পরিচালক সভার কর্তৃত্বের অবসান ঘটে
iii)  ব্রিটিশ সরকার ভারত সচিব পদ সৃষ্টি করে তাকে দায়িত্ব অর্পণ করা হয় তাকে সহায়তা করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়
iv)  পরিষদের সচিব কে পরিষদের  সভাপতিত্বের ক্ষমতা দেওয়া হয়
v) সর্বোচ্চ শাসনকর্তা গভর্নর জেনারেল কে ভাইসরয় খেতাব দেওয়া হয়
vi)  কোম্পানির সামরিক বাহিনী ব্রিটিশ সরকারের অধীনে নিয়ে আসা হয়
vii)  ভাইসরয় সচিব সহ সকল কর্মচারীর বেতন ভারত থেকে সংগৃহীত রাজস্ব থেকে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়
viii)  1858 সালের 1 নভেম্বর  লর্ড ক্যানিং এলাহাবাদে একটি সভায় মহারানী ভিক্টোরিয়ার প্রতিনিধিরূপে ভারত শাসনের প্রথম ঘোষণাপত্র পাঠ করেন
ix) ধর্মীয় উদারতার ঘোষণা শর্ত বিলোপ নীতি পরিহার করা হয়
x)  এলাহাবাদ দেশীয় রাজন্যবর্গ ব্রিটিশ  ভক্ত ভারতীয় নেতা কে পুরস্কৃত করা হয়
 )  সামাজিক পরিবর্তন:
i)  ভারতীয় সমাজে বিদ্যমান সামন্ত যুগের  স্থবিরতার অবসান ঘটে
ii ) পাশ্চাত্য সংস্কৃতির প্রতি রক্ষণশীল সমাজ আকৃষ্ট হয়
iii)  ভারতীয় সমাজে আধুনিকতার সূচনা হয় নব্য শিক্ষিত লোকদের সিপাহী বিদ্রোহের সাহসিকতা মনোবল অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল সঙ্গবদ্ধ আন্দোলনের গুরুত্ব উপলব্ধি হয়েছিল
 )  অর্থনৈতিক পরিবর্তন:
i)  বিদ্রোহ দমনে  প্রচুর টাকা ব্যয় হওয়াতে কম্পানি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল
ii)  পরীক্ষামূলক ভাবে বার্ষিক 500 টাকা বা তার অধিক উপার্জনকারী লোকের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়
iii)  আমদানিকৃত সামগ্রীর উপর 10% শুল্ক ধার্য করা হয়
iv) 1859 সালে বঙ্গ রাজস্ব নামে আইন প্রণয়ন করে চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের অবসান ঘটে
v) তামাক উৎপাদনের ওপর কর ধার্য করা হয়
25)  1861 সালের ভারত পরিষদ আইন:
কেন্দ্রীয় শাসন
 শিক্ষিত ভারতীয়রা অসন্তুষ্ট হওয়ার কারণ উপলব্ধি করে ভারত পরিষদ আইন 1861 সালে প্রণয়ন করা হয় ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ যুক্ত এই আইনে ছিল:
)  কেন্দ্রীয় প্রাদেশিক বিধানমণ্ডল গঠন করা
)  কেন্দ্রীয় বিধানমণ্ডল গুলির ক্ষমতা ভাগ করে দেওয়া হয়েছিল কার্যকাল ছিল দুই বছরের
)  ভাইসরয়কে কেন্দ্রীয় বিধান পরিষদের সদস্য সংখ্যা 6 থেকে 12 জন পর্যন্ত মনোনীত করার কর্তিত্ব দেওয়া হয়
)  মোট সদস্যের অর্ধেক ভারতীয় বেসরকারি হওয়া বাধ্যতামূলক ছিল
)   ভাইসরয় এর কর্তৃত্বে  পরিচালিত কেন্দ্রীয় বিধান পরিষদে গৃহীত কোন আইনে ভারত সচিবের অনুমোদন নেওয়া বাধ্যতামূলক ছিল
)ভারতের শাসন ব্যবস্থায় ক্যাবিনেট শাসন প্রণালীর সূচনা হয়
) ভারতীয়দের বিধান পরিষদের সদস্য পদ লাভের  ব্যবস্থায় ভারতে প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার গঠনের ভিত্তি স্থাপিত হয়
প্রাদেশিক শাসন:
 )   মাদ্রাজের গভর্নর দুজনকে 4 থেকে সর্বাধিক 8 জন মনোনীত সদস্য নিয়ে প্রাদেশিক বিধান পরিষদের অনুমতি দেওয়া হয়
 )  মনোনীত সদস্যদের অর্ধেক বেসরকারি তাদের কার্যকাল  দুই বছরের
 )  1862 সালে বঙ্গদেশে এবং 1898 সালে পাঞ্জাবে বিধান পরিষদ গঠন করা হয়
26) 1861 সালের ভারতীয় পরিষদ আইনের সমালোচনা
 1861 সালের ভারত পরিষদ আইনের দ্বারা ভারতে নতুন শাসন প্রণালী শুরু হয়
 ভালো দিকগুলো:
 )  ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় প্রাদেশিক  বিধানমন্ডলের  দ্বারা শাসন ব্যবস্থা শুরু হয়
 )  ভারতীয়দের অংশগ্রহণ প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার গঠনের ভিত্তি তৈরি করে
 )  বিধান মণ্ডল বিধান পরিষদের নিজস্ব  আইনি ক্ষমতা কিছু পরিমাণে ছিল
 )  পরিষদের সদস্যদের মধ্যে দপ্তর  বণ্টনের মাধ্যমে কেবিনেট শাসন প্রণালীর সূচনা হয়
) 1833 খ্রিস্টাব্দের সনদ আইন এর মাধ্যমে নিজস্ব আইন প্রণয়ন ক্ষমতা থেকে বঞ্চিত হওয়া মুম্বাই মাদ্রাজ পুনরায় আইন প্রণয়নের ক্ষমতা লাভ করে
ক্রুটিপূর্ণ দিক গুলো:
 )  প্রাদেশিক পরিষদের ক্ষমতা ছিল নামে মাত্র
 )  বঙ্গের গভর্নর জেনারেল অপরিসীম ক্ষমতার অধিকারী বলেন প্রাদেশিক পরিষদের ক্ষমতা সংকুচিত হয়
 )  প্রাদেশিক কেন্দ্রীয় বিধান পরিষদ তৈরি করা আইন গুলিতে বঙ্গের গভর্নর জেনারেল এর অনুমোদন বাধ্যতামূলক ছিল অর্থাৎ পরিষদগুলো স্বতন্ত্রতাহীন
)  গভর্নর জেনারেলের হাতে নিজস্বভাবে অধ্যাদেশ জারি করার ক্ষমতা ছিল
27)  কেন্দ্রীয়  বিধানমন্ডলে প্রথমবারের মতো স্থান লাভ করা ভারতীয় ব্যক্তিরা:-
 ) গোয়ালিয়রের প্রাক্তন মন্ত্রী রাজা বাহাদুর দিনাকর রাও
 )   পাতিয়ালার রাজা বাহাদুর নরেন্দ্র সিং  
 )  উত্তর-পূর্ব সীমান্ত প্রদেশের রাজা বাহাদুর দেউ নারায়ন
28) স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন:
 লর্ড মেয়র কার্যকালে 1870 সালের 14 ডিসেম্বর আর্থিক বিকেন্দ্রীকরণ প্রস্তাব কার্যকরী হয় এর মাধ্যমে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নিবন্ধন, জেল, পুলিশ ইত্যাদি বিভাগের দায়িত্ব প্রদেশ গুলিকে দেওয়া হয় লর্ড মেয়র এই প্রস্তাবের সূত্র ধরে লর্ড রিপন ভারতবর্ষের স্থানীয় স্বায়ত্তশাসনের ভিত নির্মাণ করেন 1882 সালে প্রতিটি মহকুমায় একটি লোকাল বোর্ড গঠন করার মাধ্যমে বোর্ডের অধীনে গ্রামাঞ্চলে প্রাথমিক বোর্ড গঠনের ব্যবস্থা করেন বোর্ডের সদস্যদের মধ্যে বেসরকারি ব্যক্তিকে সভাপতি নির্বাচিত করার ব্যবস্থা করেন জেলা মহকুমা পর্যায়ে বোর্ড গঠিত হয় নগর অঞ্চলে  নগর পালিকা পৌরসভা গঠিত হয় লোকাল বোর্ড গুলিতে সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি বেসরকারি সভাপতি বানানো প্রস্তাব ব্রিটিশ সরকার সমর্থন করে না 1885 সালে জেলা শাসকদের লোকাল বোর্ডের সভাপতি করার ক্ষমতা দিয়েছিল রিপনের বাস্তবধর্মী চিন্তা-ধারা ভারতীয় প্রশাসন একটি নতুন বার্তা বয়ে এনেছিল কারণ তিনি প্রথমবারের মতো স্থানীয় স্বায়ত্ত ব্যবস্থাকে গণতান্ত্রিক পদ্ধতির মধ্যে টেনে এনেছিলেন
29)অসামরিক পরিষেবার ভারতীয়করণ:
 )  ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসন কালে ভারতের প্রশাসনিক সেবার পদ গুলি কেবল ইংরেজলোক দিয়েই পূরণ করা হয়েছিল
 )  1858 সালে ভারত সরকার পরিচালনার দায়িত্ব ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির হাত থেকে ব্রিটিশ সরকারের অধীনে যায়
 )  1793 সালের নিয়ন্ত্রণকারী আইন অনুসারে ভারতীয় প্রশাসনের উঁচু পদ গুলি কোম্পানির অঙ্গীকারবদ্ধ কর্মচারীর জন্য সংরক্ষিত করে রাখার নিয়ম প্রবর্তন হয়
 )  1833 খ্রিস্টাব্দের সনদ ভারতীয় লোকদের প্রশাসনের উচ্চপদে আসীন করার ক্ষেত্রে  সম্মতি জানিয়েছিল
) 1833 সালের সনদে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট এবং 1843 সালের সনদে ডেপুটি কালেক্টর নামে দুটি পদ সৃষ্টির কথা উল্লেখ হয়
)  1853 সালের সনদ প্রশাসনিক সেবার জন্য প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা আয়োজনের নির্দেশ দেয় কিন্তু এই পরীক্ষা ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হওয়ায় অতি নগন্য সংখ্যক ভারতীয় অংশগ্রহণ করতে পারেন
 )  1858 সালের মহারানীর ঘোষণাপত্র দেশীয় লোকদের নিরপেক্ষভাবে প্রশাসনিক সেবার পদে নিয়োগ করার আশ্বাস দেয়
) 1862 সালে সিভিল সার্ভিস আইন প্রশাসনিক সেবার পদ সমূহ অঙ্গীকারবদ্ধ ব্যক্তিদের জন্য সংরক্ষিত করা হয়
 )  1865 সাল  পর্যন্ত প্রশাসনিক পরীক্ষায় অবতীর্ণ পরীক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ সীমা ছিল 22 বছর
)  1866 সালে বয়সের সর্বোচ্চ সীমা 21 বছর করা হয়
 )  1871 সালে সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় রমেশচন্দ্র দত্ত বিহারীলাল গুপ্ত প্রশাসনিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন
 )  1872 সালে শ্রীপদ বাবাজি ঠাকুর এবং অসমের আনন্দরাম বরুয়াও প্রশাসনিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন
 ) ভাইসরয় লর্ড লিটনের কার্যকালে ভারতীয় প্রশাসনিক সেবার পরীক্ষার্থীদের বয়স 21 থেকে 19 বছরে কর্তন করা হয় বন্দ্যোপাধ্যায় এইনিয়ম এর বিরোধিতা করে লালমোহন ঘোষ নামে একজন আইনজীবী কে ইংল্যান্ডে পাঠান সরকার তার যুক্তি মেনে বয়সসীমা পুনরায় 21 বছর করতে বাধ্য হয়
) লর্ড লিটনের কার্যকালে ব্রিটিশ সরকার পদ আইনে  6 ভাগের 1 অংশ প্রশাসনিক পদ অঙ্গীকারবদ্ধ ইংরেজ ব্যক্তির জন্য সংরক্ষিত করা হয়
a) আনন্দরাম বরুয়া অসমের প্রথম সিভিলিয়ান( আই সি এস)  প্রথম ভারতীয় উপায়ুক্ত এবং অসমের প্রথম স্নাতক
b)  সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর ভারতের প্রথম প্রশাসনিক সেবায় উর্ত্তীন্ন ব্যক্তি
c)  লর্ড লিটন নিজস্বভাবে পদগুলির জন্য উচ্চবংশজাত ভারতীয় ব্যক্তিকে বাছাই করার নির্দেশ দিয়েছিলেন
d)  ভাইসরয় লর্ড ডাফরিন 1886 সালে পাবলিক সার্ভিস কমিশন গঠন করেন যার পৌরোহিত্য করে স্যার চার্লস আইসিসন
e) আইসিসন কমিশন প্রশাসনিক সেবার বিভাগটি তিনটি ভাগে ভাগ করার অনুমোদন দেন:
 )  ইম্পেরিয়াল - ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস
 )  প্রভিন্সিয়াল সিভিল সার্ভিস  এবং
 )  সাবঅর্ডিন্যান্ট সিভিল সার্ভিস
প্রথম টিটে ইংরেজ ব্যক্তি এবং বাকি দুটিতে দেশীয় লোকদের যুক্ত করার পরামর্শ ছিল
f) 1922 সালে ব্রিটিশ সরকার লর্ড ইসলিংটন এর নেতৃত্বে রয়াল কমিশন অফ পাবলিক সার্ভিস গঠন করে
g) মন্টেগু-চেমসফোর্ড প্রতিবেদন ইংল্যান্ড ভারতে একসঙ্গে প্রশাসনিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত করার কথা ঘোষিত হয় এবং ভারতের মোট এক-তৃতীয়াংশ ভাগ পদ দেশীয় লোকদের দ্বারা পূরণ করা হবে বলে ঘোষিত হয়
h) 1923 সালে ব্রিটিশ সরকার গঠিত লি কমিশনে 15 বছরের ভেতরে প্রশাসনিক সেবার পদগুলিতে ভারতীয়দের নিয়োগের পরিমাণ 50 শতাংশ বৃদ্ধির পরামর্শ দেয়
i) 1935 সালে ব্রিটিশ সংসদে গৃহীত ভারত সরকার আইন যুক্তরাষ্ট্রীয় প্রশাসনিক সেবা কমিশন এবং প্রাদেশিক প্রশাসনিক সেবা কমিশন গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিল
j) ভারত বর্ষ স্বাধীন হওয়ার পর সর্বভারতীয় প্রশাসনিক সেবা কমিশন এবং রাজ্য প্রশাসনিক সেবা কমিশন গঠন করা হয় বর্তমান পর্যন্ত চলিতেছে


****************************************

Post a Comment

1 Comments

HELLO VIEWERS, PLEASE SEND YOUR COMMENTS AND SUGGESTION ON THE POST AND SHARE THE POST TO YOUR FRIEND CIRCLE.