ASSAM SEBA/SMEBA CLASS 10 BENGALI QUESTIONS
& ANSWERS
সেবা অসম দশম শ্রেনী বাংলা প্রশ্ন এবং উত্তর
পাঠ : কাণ্ডারী হুঁশিয়ার
কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৯-১৯৭৬)
ASSAM SEBA/SMEBA CLASS 10 BENGALI QUESTIONS & ANSWERS
পাঠ : কাণ্ডারী হুঁশিয়ার
কাজী নজরুল ইসলাম
১
দুর্গম গিরি কান্তার-মরু দুস্তর পারাবার
লঙ্ঘিতে হবে রাত্রি নিশীথে যাত্রীরা হুশিয়ার!
দুলিতেছে তরী, ফুলিতেছে
জল, ভূলিতেছে মাঝি পথ,
ছিঁড়িয়াছে পাল, কে ধরিবে
হাল, আছে কার হিম্মৎ?
কে আছ জোয়ান, হও আগুয়ান, হাঁকিছে ভবিষ্যত।
এ তুফান ভারী, দিতে হবে
পাড়ি, নিতে হবে তরী পার!!
২
তিমির রাত্রি, মাতৃমন্ত্রী
সান্ত্রীরা সাবধান!
যুগ-যুগান্ত সঞ্চিত ব্যথা ঘোষিয়াছে অভিযান!
ফেনাইয়া উঠে বঞ্চিত বুকে পুঞ্জিত অভিমান,
ইহাদের পথে, নিতে হবে
সাথে, দিতে হবে অধিকার!!
৩
অসহায় জাতি মরিছে ডুবিয়া, জানেনা সন্তরণ,
কান্ডারী! আজ দেখিব তোমার মাতৃমুক্তিপণ!
“হিন্দু না ওরা মুসলিম?” ওই জিজ্ঞাসে কোন জন?
কান্ডারী! বল ডুবিছে মানুষ, সন্তান মোর মা’র!
৪
গিরি-সংকট, ভীরু
যাত্রীরা, গুরু গরজায় বাজ,
পশ্চাৎ-পথ-যাত্রীর মনে সন্দেহ জাগে আজ
কান্ডারী! তুমি ভূলিবে কি পথ? ত্যজিবে কি পথ-মাঝ?
‘করে হানাহানি, তবু চল টানি’, নিয়াছ যে
মহাভার!
৫
কান্ডারী! তব সম্মুখে ঐ পলাশীর প্রান্তর,
বাঙ্গালীর খুনে লাল হ’ল যেথা ক্লাইভের খঞ্জর!
ঐ গঙ্গায় ডুবিয়াছে হায়, ভারতের দিবাকর
উদিবে সে রবি আমাদেরি খুনে রাঙিয়া পুনর্বার।
৬
ফাঁসির মঞ্চে যারা গেয়ে গেল জীবনের জয়গান,
আসি’ অলক্ষ্যে
দাঁড়ায়েছে তারা, দিবে কোন বলিদান?
আজি পরীক্ষা জাতির অথবা জাতের করিবে ত্রান?
দুলিতেছে তরী, ফুলিতেছে
জল, কান্ডারী হুঁশিয়ার!
কবি পরিচিতি:
বাংলার বিপ্লবী কবি ও
স্বাধীনতার পূজারী কাজী নজরুল ইসলাম ১৮৯৯ সালের ২৪ মে তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তার
জন্মস্থান বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রাম। তার পিতার নাম কাজী ফকির আহমেদ। কবি
নজরুলের বাল্যকালেই তার পিতা মারা যান। স্কুলের শিক্ষাগ্রহণ সমাপ্ত হওয়ার আগেই
নজরুল সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। ১৯২০ সালে করাচি থেকে ফিরে এসে কাব্যচর্চাতে মনোনিবেশ
করেন। অত্যাচার-উৎপীড়নের বিরুদ্ধে রচিত তাঁর কবিতা মানুষকে সংগ্রামে উদ্বুদ্ধ
করেছিল। তার কবিতায় শ্রমজীবী, নিরীহ সাধারণ মানুষের উপর নিপীড়নের
প্রতিবাদ, দেশের স্বাধীনতার দাবি ও বিদেশি শাসনের প্রতি
বিদ্রোহ তীব্র ভাষায় ব্যক্ত হয়েছে। তাই তিনি বাংলা সাহিত্যে বিদ্রোহী কবি নামে
বিখ্যাত হয়েছেন। ব্রিটিশ সরকারের বিরাগভাজন হয়ে তিনি কারাদণ্ডও ভোগ করেছিলেন। তাঁর
রচিত কাব্যগ্রন্থগুলির মধ্যে ‘অগ্নিবীণা’,‘বিষের বাঁশী’, ‘দোলনচাপা’, ‘সিন্ধহিন্দোল’,
‘সর্বহারা’, ‘ছায়ানট’, ‘বুলবুল’, ‘চন্দ্রবিন্দু’
বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তার ‘কাণ্ডারী হুঁশিয়ার’ কবিতাটি ‘সর্বহারা’ কাব্যের
অন্তর্গত। কবি নজরুল ‘ধূমকেতু' ও 'লাঙ্গল' নামে দুটি পত্রিকা প্রকাশ করে দেশ প্রেম ও
মানবতার আদর্শপ্রচার করেছিলেন। আলোচ্য ‘কাণ্ডারী হুশিয়ার’
কবিতায় কবি স্বাধীনতাকামী ভারতবাসীকে অতি সন্তর্পণে স্বাধীনতা
যুদ্ধকে চালিয়ে যেতে হুঁশিয়ারি ব্যক্ত করেছেন। ১৯৭৬ সালের ২৯ আগষ্ট এই বিদ্রোহী
কবির জীবনাবসান ঘটে।
শব্দার্থ
কবিতাটি কাজী নজরুল ইসলামের ‘সর্বহারা’ কাব্যগ্রন্থের
অন্তর্গত। এটি তিনি কৃষ্ণনগরে ; ৬ই
জ্যৈষ্ঠ, ১৩৩৩ তে রচনা করেন।
কবিতাটিতে ব্যবহৃত কিছু শব্দের সহজ অর্থ।
দুর্গম – যাওয়া কষ্টকর, গিরি – পাহার (গিরীশ – হিমালয়), কান্তার
– বনজঙ্গল, দুস্তর – পার হওয়া কঠিন এমন, পারাবার – সমুদ্র, হিম্মৎ-
সাহস
ভারী – বেশী ওজনের(ভারি=খুব), সান্ত্রী- প্রহরী/রক্ষী, মাতৃমন্ত্রী- সান্ত্রীদের
দেশ মাতৃকার মন্ত্রী হিসাবে কল্পনা করা হয়েছে।, সন্তরণ-
সাঁতার (যেমন- সন্তরণে উত্তরণ), গিরি-সংকট = পর্বতশ্রেণীর
মধ্যবর্তী পথরূপে ব্যবহৃত অল্পপরিসর নিম্নভূমি।, গরজায় – গর্জে ওঠে।, বাজ- মেঘের ডাক
ত্যজিবে – ত্যাগ করবে, খঞ্জর- তরবারি/তলোয়ার/কৃপাণ/অসি/খড়গ।
লঞ্জিতে - গুন করতে,
হিম্মৎ - সাহস, হাঁকিছে -
ডাবছে, মাতৃমন্ত্র - মায়ের
মন্ত্রে দীক্ষিত, সঞ্চিত - সঞ্চয় হয়ে
আছে যাহা, অসহায় - সহায়হীন, পণ - প্রতিজ্ঞ, কাণ্ডারি -
হাল রক্ষক, সংকট - দুঃসময়,
মহাভার - মহান দায়িত্ব, প্রান্তর - মাঠ, অলক্ষ্যে - অগোচরে,
হুশিয়ার - সাবধান, বলিদান - আত্মদান, ত্রাণ - মুক্তি, দিবাকর -
সূর্য, ভীরু - ভয়াতুর, কাপুরুয,
বাজ - বজ্রপাত, তিমির -
অন্ধকার, খঞ্জর - ছুরি, তরী - নৌকা, জোয়ান - সৈনিক, যুবক।
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
Q.1 ‘কাণ্ডারি
হুঁশিয়ার’ কবিতার কবি কে?
ANS:- কাজী নজরুল
ইসলাম।
Q.2 ‘কাণ্ডারি
হুঁশিয়ার’ কবিতাটি কোন কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত?
ANS:- ‘সর্বহারা’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত।
Q.3 বাংলা
সাহিত্যের ‘বিদ্রোহী কবি' কাকে বলা হয়?
ANS:- কাজী নজরুল
ইসলামকে।
Q.4 পলাশির যুদ্ধ
কাদের মধ্যে সংঘটিত হয়েছিল ?
ANS:- বাংলার
নবাব সিরাজদৌল্লা ও রবার্ট ক্লাইভের মধ্যে সংঘটিত হয়েছিল।
Q.5 পলাশির যুদ্ধে
ব্রিটিশ বাহিনীর প্রধান কে ছিলেন?
ANS:- রবার্ট
ক্লাইভ।
Q.6 ‘মাতৃমন্ত্র’
শব্দের অর্থ কী?
ANS:- ‘মাতৃমন্ত্র’
শব্দের অর্থ হল দেশ মায়ের স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনার মন্ত্র। Q.7 কবি ‘কাণ্ডারী হুশিয়ার’ কবিতায় ‘মহাভার’
বলতে কী বুঝিয়েছেন?
ANS:- ‘মহাদায়িত্ব’
বা ‘মহাকর্তব্য’।
Q.8 কবির মতে
অসহায় জাতি কারা?
ANS:- পরাধীন
ভারতের নিপীড়িত মানুষেরা।
Q.9 'তিমির’
শব্দের অর্থ কী ?
ANS:- অন্ধকার।
Q.10 “ঐ গঙ্গায় ডুবিয়াছে
হায় ভারতের .........। (শূন্যস্থান পূর্ণ করো।
ANS:- দিবাকর।
Q.11 ‘কাণ্ডারী
হুশিয়ার’ কবিতায় কবি কাকে কান্ডারী বলেছেন?
ANS:- দেশের নেতাকে।
Q.12 কোন সালে পলাশির
যুদ্ধ হয়েছিল?
ANS:- ১৭৫৭ সালে।
Q.13 মাতৃমুক্তি পণ
কে করেছে?
ANS:- কাণ্ডারী।
Q.14 বাঙালির খুনে
কার খঞ্জর লাল হয়েছিল?
ANS:- বরার্ট
ক্লাইভের।
Q.15 ভারতের ‘দিবাকর’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
ANS:- ভারতের
মুক্তি সূর্যকে বুঝিয়েছেন।
Q.16 বিদ্রোহী কবি
কাজী নজরুল ইসলামের পিতার নাম কী?
ANS:- কাজী ফকির
আহমেদ।
Q.17 বিদ্রোহী কবি
কাজী নজরুল ইসলামের দুটি কাব্যগ্রন্থের নাম লেখো।
ANS:- ‘অগ্নিবীণা’
ও ‘বিষের বাঁশী’।
Q.18 বিদ্রোহী কবি
কাজী নজরুল ইসলামের প্রকাশিত পত্রিকা দুটির নাম লেখো।
ANS:- ‘ধূমকেতু’
ও ‘লাঙ্গল'।
Q.19 বিদ্রোহী কবি
কাজী নজরুল ইসলাম কখন কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?
ANS:- বিদ্রোহী
কবি কাজী নজরুল ইসলাম ১৮৯৯ সালের ২৪ মে তারিখে বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে
জন্মগ্রহণ করেন।
Q.20 অসহায় জাতি কী
জানে না? এর ফলে কী হয়েছে?
ANS:- অসহায়
জাতি সাঁতার জানে না। এর ফলে তারা ডুবে মরছে।
ছোট প্রশ্নোত্তর
Q.1 আজ দেখিব তোমার
মাতৃমুক্তিপণ’ —উক্তিটির প্রকৃত অর্থ কী?
ANS:- কবি বলতে
চেয়েছেন যে, প্রত্যেক স্বাধীনতাকামী দেশনেতাই মাতৃভূমিকে
অর্থাৎ পরাধীন দেশকে মুক্ত করার জন্যে শপথ গ্রহণ করে থাকেন। কিন্তু কেবল শপথ গ্রহণ
করলেই হবে না, সেই শপথ পালনে মানসিক দৃঢ়তা ও কর্মপদ্ধতির
বাস্তবায়ন কতটুকু হচ্ছে তাও দেখতে হবে। তাই আলোচ্য কবিতায় উক্ত উক্তিটির অবতারণা
করা হয়েছে।
Q.2 “ওই গঙ্গায়” বলতে কবি কোন গঙ্গার কথা বলেছেন। সেখানে কীভাবে ভারতের ববি পুনর্বার উদিত
হবে?
অথবা, 'ওই গঙ্গায়’
বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন। সেখানে কীসের রবি উদিত হবে?
ANS:- বিদ্রোহী
কবি কাজী নজরুল ইসলাম তার ‘কাণ্ডারী হুশিয়ার’ কবিতায় আলোচ্য শব্দ “ওই গঙ্গায়” ব্যবহার করেছেন। এখানে “ওই গঙ্গা” বলতে মুর্শিদাবাদের পলাশির পাশ দিয়ে যে গঙ্গা বয়ে চলেছে তার কথা বলা
হয়েছে। কবি মূলত পলাশির যুদ্ধকেই বুঝিয়েছেন। সেই যুদ্ধে ক্লাইভের খঞ্জরে প্রচুর
বাঙালির রক্ত ভেসেছে এবং সেদিন থেকেই তাদের রক্তে রঞ্জিত হয়ে ভারতের স্বাধীনতা
সূর্য অস্ত গিয়েছিল। অর্থাৎ দেশ পরাধীন হয়েছিল। আবার সূর্যোদয় হবে অর্থাৎ
স্বাধীনতা আসবে যখন বাঙালির সাহসের সঙ্গে স্বাধীনতা যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়ে রক্ত
ভাসাবে।
Q.3 পলাশির যুদ্ধে
নবাবের পক্ষে কোন কোন বীর প্রাণপণ যুদ্ধ করে শহীদ হয়েছিলেন?
ANS:- পলাশির
যুদ্ধে নবাবের পক্ষে যে সব বীর প্রাণপণ যুদ্ধ করে শহীদ হয়েছিলেন তাদের মধ্যে আছেন
- মোহনলাল, মীরমদন এবং ফরাসি বীর সিনফ্রে।
Q.4 কারা অলক্ষ্যে
দাড়িয়ে কাদের বলিদান লক্ষ্য করছেন?
ANS:- যাঁরা
ফাঁসির মঞ্চে জীবন দান করেছেন তাদের অতৃপ্ত আত্মা অলক্ষ্যে দাড়িয়ে তাদের পরবর্তী
কোন স্বাধীনতাকামী জাতীয় বীর দেশ ও জাতির জন্য নিজের জীবনদান করবেন বলে প্রস্তুত
হয়ে আছেন, তা লক্ষ্য করছেন।
Q.5 তাৎপর্য লেখো :
“হিন্দু না ওরা মুসলিম? ওই জিজ্ঞাসে কোন জন?
ANS:- ভারতের
স্বাধীনতা আন্দোলনে দেশের সর্বসাধারণের অবদান রয়েছে। দেশভক্তের কোন জাত নেই।
হিন্দু, মুসলিম সকল ধর্মের মানুষেরই স্বাধীনতা প্রাপ্তির
অধিকার রয়েছে। তাই সকল সম্প্রদায়ের মানুষকে সম্মিলিতভাবে স্বাধীনতা সংগ্রামে
লিপ্ত হওয় উচিত। এই ব্যাপারে ধর্মের বিচার করা অনুচিত। স্বাধীনতাকামী মানুষ কোনো
একটি ধর্মকে মান্যতা দেয় না। স্বাধীনতা সেনানীর মন স্বাধীনতা যুদ্ধে ধর্মের
ভেদাভেদ স্বীকার করে না। তাই স্বাধীনতা যুদ্ধে কে হিন্দু, কে
মুসলমান তার ভেদ স্বীকার করে না।
Q.6 তাৎপর্য লেখো :
আজি পরীক্ষা, জাতির অথবা জাতের করিবে ত্রাণ!
ANS:- আলোচ্য
উদ্ধৃতাংশটি বিদ্রোহীকবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘কাণ্ডারী
হুশিয়ার’ কবিতা থেকে গৃহীত। আলোচ্য উদ্ধৃতাংশে কবি দেশনেতার
কাছে উপরোক্ত বক্তব্য রেখেছেন। দেশের কর্ণধার বা কাণ্ডারীকে জাতি ধর্ম নিয়ে বিচার
করা যুক্তিযুক্ত নয়। তার সকল ধর্ম বর্ণ সম্প্রদায় নির্বিশেষে সকল মানুষকে সম্মান
করা উচিত। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সকলেই যােগদান করেছে,
যাদের একমাত্র উদ্দেশ্য হল স্বাধীনতা অর্জন করা। স্বাধীনতা সকল
মানুষকে একই অনুভূতি দেয়। সেই অনুভূতি হল মুক্তির স্বাদ। তাই জাতি বা জাতের কথা
এখানে মুখ্য নয়। মুখ্য হল স্বাধীনতা। তাই কাণ্ডারীর উচিত সকল দেশবাসীর কথা মনে
রেখে স্বাধীনতা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া। জাত বা জাতি এক ক্ষুদ্র স্বার্থ জনিত
উপলদ্ধি ছাড়া আর কিছুই নয়।
Q.7 তাৎপর্য লেখো
- “পশ্চাৎ পথ-যাত্রীর মনে সন্দেহ জাগে আজ"।
ANS:- আলোচ্য
উদ্ধৃতাংশটি কবি কাজী নওরুল ইসলাম রচিত 'কাণ্ডারী হুশিয়ার
কবিতা থেকে গৃহীত হয়েছে। আলোচ্য অংশে কবি ভারতের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ গহপকারী
দশবাসীর মনে যে নানাধরনের সন্দেহ দানা বেঁধে উঠছিল তার পরিচয় দিতে চেয়েছেন।
দেশবাসী যখন স্বাধীনতাকামী হয়ে উঠল তখন তাদের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টাতেই গড়ে উঠলো
সাধীনতা আন্দোলনের ঝড়। আন্দোলন শুরু হওয়ার সময় তাদের মনে কোনো দ্বিধা বা সময়
ছিল না। কিন্তু যতই সময় অতিবাহিত হতে লাগল আর স্বাধীনতা আসতে দেরি হলো ততই কিছু
কিছু আন্দোলনকারীদের মনে সন্দেহের বাতাবরণ সৃষ্টি হতে লাগল। তাই কবি স্বাধীনতা
আন্দোলনের কাণ্ডারীকে বলছেন, তাদের সামনে প্রবল বাধা-বিপত্তি
আছে। এসব বাধাগুলি হল - নেতার উপর সন্দেহ, আন্দোলনের
গতি-প্রকৃতির উপর সন্দেহ সভতি। তাই সকল সংগ্রামীকে সবধরনের সন্দেহকে উপেক্ষা করে
চলতে হবে তবেই আসবে কাঙিক্ষত জয়। Q.8 টীকা লেখো :- পলাশি।
ANS:- পলাশি : ভাগিরথী নদীর তীরে অবস্থিত একটি গ্রাম।
পশ্চিমবঙ্গের এই স্থানে ১৭৫৭ সালে রবার্ট ক্লাইভের নেতৃত্বাধীন ইংরেজ বাহিনী ও
নবাব সিরাজদৌল্লার সৈন্যদের মধ্যে যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। এই যুদ্ধে ইংরেজ বাহিনী
জয়লাভ করে।
Q.9 টীকা লেখো:-
ক্লাইভ
ANS:- রবার্ট
ক্লাইভ (১৭২৫-১৭৭৪)। তিনি ছিলেন একজন ব্রিটিশ কর্মকর্তা।
তিনি বাংলায় মিলিটারি ও রাজনৈতিক শাসনের গোড়াপত্তন করেন। ১৭৫৭ সালে তিনি
মুর্শিদাবাদের পলাশির আমবাগান প্রান্তরে বাংলার নবাব সিরাজদৌল্লার সঙ্গে এক ভয়ংকর
যুদ্ধে লিপ্ত হন। ক্লাইভ সিরাজের বিশ্বস্ত সেনাপতি মীরজাফরকে উৎকোচ ও লোভ দেখিয়ে
তার দলে টেনে নেন। যুদ্ধ ক্ষেত্রে মীরজাফরের বিশ্বাসঘাতকতায় নবাব সিরাজদৌলা
পরাজিত হন। এর ফলে বাংলা তথা ভারতে ইংরেজ শাসনের সূত্রপাত হয়।
দীর্ঘ প্রশ্নোত্তর
Q.1 কোন্ পটভূমিতে
কবি ‘কাণ্ডারী হুশিয়ার’ কবিতা রচনা
করেছিলেন তা বর্ণনা করো।
ANS:- ভারতের
স্বাধীনতা আন্দোলন যখন তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে হয়ে উঠছিল তখন কবি কাজী নজরুল
ইসলাম ‘কাণ্ডারী হুঁশিয়ার’ কবিতাটি
রচনা করেছিলেন।
ভারতবর্ষ সুদীর্ঘ একশত বছর
ব্রিটিশ শাসনের অধীনে ছিল। পরাধীন ভারতবর্ষের শ্রমজীবী নিরীহ সাধারণ মানুষের উপর
কুখ্যাত ব্রিটিশদের অত্যাচার উৎপীড়নের বিরুদ্ধে কবি প্রতিবাদমুখর হয়ে ওঠেন।
বিদ্রোহী কবি নওরুল পরাধীন ভারতবর্ষের কবি। পরাধীনতার স্বালা তিনি মনে মনে উপলদ্ধি
করেছিলেন। তাই তিনি তাঁর কবিতায় স্বাধীনতা লাভের জন্য বিদেশি শাসঢ়ের প্রতি শিদোহ, তীব্র
ভাষায় ব্যক্ত করছেন। সে সময় টিশ সরকার ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনকে স্তব্ধ করে
দেবার জান সর্বাত্বক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল। বীর বিপ্লবীদের বিনা বিচারে সির
মঞ্চে গিয়ে দিচ্ছিল। সে অবস্থায় দেশের নেতাদের মধ্যেও মানসিক ফারাক দেখা দেয়।
অহিংস ও সহিংস আন্দোলনের পক্ষে দেশের নেতারা দ্বিধা বিভক্ত হয়ে পড়ে। তাছাড়া
নেতাদের মধ্যে আত্ম প্রত্যয়ের অভাব দেখা দেয়। নিরীহ দেশবাসী পীড়নে কাতর ছিল।
তারা বুঝতে পারছিল না কীভাবে তাদের মুক্তি আসবে। এমতাবস্থায় কবি দেশ নেতাদেরকে
উদ্দীপ্ত করার জন্য রূপকাশ্রয়ে ‘কাণ্ডারী হুশিয়ার’ কবিতাটি রচনা করেছেন।
Q.2 কখন কোথায় কেন
পলাশির যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে তা বর্ণনা করো। ANS:- ভারতবর্ষে
ব্রিটিশরা বাণিজ্য করতে এসে তাদের শক্তি বৃদ্ধি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তারা- স্থানীয়
রাজা ও রাজন্যবর্গদের দুর্বলতার সুযােগ নিয়ে ভারতের শাসন কর্তৃত্ব নিজেদের হাতে তোলে
নিতে তৎপর হয়ে ওঠে। এমতাবস্থায় ব্রিটিশরা বাংলা, বিহার ও
উড়িষ্যার নবাব সিরাজদৌল্লার সঙ্গে অকারণে দ্বন্দ্ব বাধাবার চেষ্টা করে। সে সময়
বাংলার নবাব সিরাজদৌল্লার ঘরে বাইরে শক্র ছিল। তার মাসি ঘসেটি বেগম, রাজা বার বল্লভ, রায় দুর্লভ, উমিচাদ,
জগৎশেঠ এমনকী তার বিশ্বস্ত সেনাপতি মীরজাফরও ব্রিটিশ সেনাপতি রবার্ট
ক্লাইভের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেন। বাংলার স্বাধীন নবাব
সিরাজদৌল্লা ক্লাইভের সুবিধাবাদী নীতি মেনে নিতে পারলেন না। তাই উভয় পক্ষে যুদ্ধ
বেধে গেল। এই যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন ভাগিরথীর তীরে পলাশির
প্রান্তরে। সিরাজের পক্ষে আমৃত্যু যুদ্ধ করেছিলেন তাঁর বিশ্বস্ত সেনাপতি মোহন লাল,
মদনলাল ও ফরাসি সেনাপতি সিনফ্রে। কিন্তু নবাবের প্রধান সেনাপতি
মীরজাফরের বিশ্বাসঘাতকতায় ব্রিটিশরা এই যুদ্ধে জয়ী হয়। পলাশির যুদ্ধের পরেই
ভারতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সূচনা হয়েছিল। এই পরাধীনতার জ্বালা ভারতবাসীকে প্রায়
দেড়শত বছর ভোগ করতে হয়েছিল। ১৯৪৭ সালের ১৫ আগষ্ট ভারতবাসী সেই পরাধীনতার গ্লানি
থেকে মুক্ত হয়েছিল।
Q.3 কবি মুক্তিকামী
কাণ্ডারীকে কী কী সাবধানতা অবলম্বন করতে বলেছেন তা বর্ণনা করো।
ANS:- বিদ্রোহী
কবি কাজী নজরুল ইসলাম তার ‘কাণ্ডারী হুশিয়ার’ কবিতায় দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের কাণ্ডারীকে কতকগুলি সাবধানতা অবলম্বন
করতে পরামর্শ
আলোচ্য কবিতায় কবি
রূপকাশ্রয়ে কাণ্ডারীকে বলেছেন স্বাধীনতা আন্দোলন পরিচালনাকালে নানা বকন বাধা
বিপত্তি আসবে,
কাণ্ডারীকে সেই সব বাধা বিপত্তিক তাই জ্ঞান করে আন্দোলন এগিয়ে
নিয়ে যেতে হবে। মাঝপথে ঝড়, তুফানে মাঝি দিকভ্রষ্ট, পথভ্রষ্ট হতে পারে; মাঝি অর্থৎ কাণ্ডারীকে তা ঠিক
করে নিয়ে সঠিক পথে এগিয়ে যেতে হবে। চলার পথে কোনো যাত্রী অর্থাৎ আন্দোলনকারী
সংশয়ের সম্মুখীন হয়ে সন্দেহ থকাশ করতে পারে। এরকম পরিস্থিতিতে ওই সন্দিগ্ধ
ব্যক্তির সন্দেহের অবসান ঘটাতে হবে। কখনো কখনো 'হিন্দু ও
মুসলমানের পরিচিতির অবতারণা করে কাণ্ডারীর মনে সাম্প্রদায়িকতা জাগানো হতে পারে।
কাণ্ডারীকে ওই সব বিষয় থেকে দূরে অবস্থান করে নিজের কর্তব্যকর্ম সম্পাদন করে
এগিয়ে যেতে হবে। তাকে মনে রাখতে হবে সকল ধর্মের মানুষের একই পরিচয়। আর তা হল
সবাই একই দেশ মাতার সন্তান। কখনো কখনো কাণ্ডারীকে বীর শহীদের আত্ম বলিদানের কথা
মনে রাখতে হবে। ফাসির মঞ্চে যারা জীবনের গান গেয়ে গেছেন তাদের যোগ্য উত্তরসূরী
হওয়ার মানসিকতা নিয়ে স্বাধীনতা আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। প্রয়োজনে সাহসের
সঙ্গে সংগ্রামে রত হয়ে রক্ত ঝরাতে হবে।
Q.4 ব্যাখ্যা লেখো।
(ক) দুলিতেছে
তরী, ফুলিতেছে জল, ভুলিতেছে মাঝিপথ,
ছিড়িয়াছে পাল, কে ধরিবে হাল,আছে কার হিম্মৎ ?”
(খ) “কাণ্ডারী! তুমি ভুলিবে কি পথ? ত্যজিবে কি পথ-মাক?
ANS:- (ক) আলোচ্য
উদ্ধৃতাংশটি বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম রচিত ‘কাণ্ডারী
হশিয়ার’ কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে। আলােচ্য উদ্ধৃতাংশে কবি
ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের একটি বিশেষ পরিস্থিতির প্রতি রূপকের মাধ্যমে আলোকপাত
করেছেন।
নদীতে নৌকা পারাপারের সময়
যাত্রী বোঝাই নৌকা যদি হঠাৎ ঝড়-তুফানের কবলে পড়ে, ওই যাত্রী বোঝাই নৌকাটি
দুলতে থাকে, জল ফুলে ফেঁপে ওঠে, নৌকার
পাল ছিড়ে যায় তবে মাঝি পথভ্রষ্ট হয়ে পড়তে পারে। সেই অবস্থায় কাণ্ডারীর ভূমিকা
অপরিসীম। তাঁকে সাহসী হতে হবে এবং নৌকাকে তার নিয়ন্ত্রণাধীন রাখার জন্য শক্ত হাতে
হাল ধরতে হবে। তখন তার একটাই উদ্দেশ্য হবে যে যাত্রীদের সুষ্ঠুভাবে পার করে
দেওয়া। তেমনি দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনও নৌকা পারাপারের মতো। দেশের স্বাধীনতাকামী
মানুষ হল নৌকার যাত্রী। দেশের সর্বত্র স্বাধীনতা আন্দোলনের ঢেউ উঠেছে।
স্বাধীনতাকামী কাণ্ডারী ঘন ঘন পথভ্রষ্ট হয়ে পড়ছে। এইরূপ পরিস্থিতিতে আন্দোলন
চালানো মুশকিল হয়ে পড়ছে। এর ফলে প্রতিকূল পরিবেশের সৃষ্টি হচ্ছে। এ রকম পরিস্থিতিতে
স্বাধীনতা আন্দোলনের কাণ্ডারীকে সকল বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে সক্রিয় হয়ে
সুষ্ঠুভাবে স্বাধীনতা আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে।
(খ)আলোচ্য উদ্ধৃতাংশটি
বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম রচিত ‘কাণ্ডারী হুঁশিয়ার’ নামক কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে। উদ্ধৃতাংশে কবি কাণ্ডারীকে প্রতিকুল
পরিবেশে সঠিকভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাবার জন্য উদ্দীপ্ত করার চেষ্টা করেছেন।
কবি কাণ্ডারীর কাছে জানতে
চেয়েছেন যে মাতৃমন্ত্রে দীক্ষিত কাণ্ডারী স্বাধীনতা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার পথে
বাধা বিপত্তি দেখে মাঝপথেই আন্দোলন সমাপ্ত করে বণে ভঙ্গ দেবেন কি না। কবি
বলেছেন যে কাণ্ডারী মাতৃমুক্তিপণ করে আন্দোলনের পথে এগিয়ে এসেছেন। তার উপর মহান
দায়িত্ব রয়েছে। তাকে অন্দোলন চালিয়েই যেতে হবে। কাণ্ডারীকে তার কর্তব্যকর্ম
বিস্মৃত হলে চলবে না। তাকে সাহসের সঙ্গে আন্দোলন চালিয়ে দেশকে পরাধীনতার কবল থেকে
মুক্ত করতে হবে।
Q.5 কারা ফাঁসির
মঞ্চে জীবনের জয়গান গেয়ে গেছেন? তিনজন শহীদের নাম লেখো।
ANS:- ভারতের
স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় ব্রিটিশরা বহু বিপ্লবীকে অন্যায়ভাবে ফাসি কাষ্ঠে
ঝুলিয়েছেন। ওই বিপ্লবীরা ফাসির দড়ি গলায় পরার আগে ফাঁসির মঞ্চে জীবনের জয়গান
গেয়ে গেছেন। তিনজন শহীদের নাম হল - বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসু, মাস্টারদা
সূর্য সেন, ও ভগৎ সিং ।
Q.6 ব্যাখ্যা লেখো
:
‘যুগযুগান্ত
সঞ্চিত ব্যথা ঘঘাষিয়াছে অভিযান।
ফেনাইয়া উঠে বঞ্চিত বুকে
পুঞ্জিত অভিমান।”
ANS:- আলোচ্য
উদ্ধৃতাংশটি বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম রচিত কাণ্ডারী হুঁশিয়ার নাক কবিতা
থেকে গৃহীত হয়েছে। আলোচ্য উদ্ধৃতাংশের মাধ্যমে ভারতবাসীর। দীর্ঘদিনের
যন্ত্রণাদায়ক পরাধীনতার ঘোষণা ব্যক্ত করা হয়েছে।
এ ইংরেজরা বাণিজ্য করার
উদ্দেশ্যে ভারতে এসে কালক্রমে ভারতের অধিপতি হয়ে ওঠে! ভারতের আপামর জনসাধারণ
সুদীর্ঘ দেড়শত বছর তাদের অধীনে থেকে নানপ্রকার অত্যাচার, অবিচার,
অন্যায় আচরণ সহ্য করে ব্যথিত হয়ে পড়েছিল। বহুদিন ধরে তাদের
অন্যায় অত্যাচার, উৎপীড়ন ও বঞ্চনার শিকার হয়ে তারা
প্রতিবাদী হয়ে ওঠে। তাদের বুকে জমে থাকা পুঞ্জীভূত ব্যথা বিপ্লবের আকারে প্রকাশ
পায়। বহুদিন ধরে বঞ্চনা পেতে পেতে অত্যাচারিত নিপীড়িত শােষিত ভারতবাসী সংগ্রামী
হয়ে ওঠে। কবি বলতে চেয়েছেন বে এই ব্যথিত ভারতবাসীর শক্তিকে সুষ্ঠুভাবে কাজে
লাগাতে পারলেই দেশ পরাধীনতার কল থেকে মুক্তি পাবে। কবি কাণ্ডারী অর্থাৎ দেশনেতাকে
এই নিপীড়িত মানুষের ব্যথা ও অভিমানাকে কাজে লাগাতে বলেছেন।
Q.7 ব্যাখ্যা লেখো
:
(খ) “ঐ গঙ্গায় ডুবিয়াছে হায় ভারতের দিবাকর।
উদিবে সে রবি আমাদেরি খুনে
রাঙিয়া পুনৰ্ব্বার।”
ANS:- আলোচ্য উদ্ধৃতাংশটি
বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম রচিত কাণ্ডারী অগ্নি' শীর্ষক
কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে। আলােচ্য অংশে ভারতের স্বাধীনতা হারানো ও সেই স্বাধীনতা
পুনরুদ্ধার করার কথা ব্যক্ত করা হয়েছে।
১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশির
যুদ্ধে বাংলার নবাব সিরাজদৌল্লী ব্রিটিশ সেনাপতি রবার্ট ক্লাইদের কাছে পরাজিত হন।
এই পরাজয় বাংলা তথা ভারতের পরাধীনতার নামান্তর। সেজন্য মনে করা হয় যে সেদিন
পলাশি প্রান্তরের পাশ দিয়ে যে গঙ্গা বয়ে গেছে সেই গঙ্গাতেই ভারতের স্বাধীনতা
সূর্য অস্ত গেছে। এই সূর্যাস্ত অনেক বাঙালির রক্তে রাঙা হয়েছিল। কারণ ক্লাইভের
বাহিনী পলাশির প্রালৈ বহু বাঙালিকে হত্যা করে জয়লাভ করেছিল। কবির বিশ্বাস যে রক্তের
বিনিময়ে একদিন বাঙালি যে স্বাধীনতা হারিয়েছিল সেই রক্তের বিনিময়েই আবার দেশ
স্বাধীন হবে। কবি এখানে সশস্ত্র বিপ্লববাদের অবতারণা
Q.8 ‘কাণ্ডারী
হুশিয়ার’ কবিতার সারাংশ লেখো।
ANS:- সারাংশ:
কাজী নজরুল ইসলাম রচিত ‘সর্বহারা’
কাব্যগ্রন্থ থেকে ‘কাণ্ডারী হুশিয়ার’ কবিতাটি গৃহীত হয়েছে। আলোচ্য কবিতায় কবি স্বাধীনতা অর্জনের কঠিন পথে
একজোট হয়ে দেশবাসীকে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
ভারতবর্ষ সুদীর্ঘ একশত বছর
ইংরেজ শাসনাধীন ছিল। আলোচ্য কবিতার কবি কাজী নজরুল ইসলাম পরাধীন ভারতবর্ষে, পরাধীনতার
জ্বালা মর্মে মর্মে উপলদ্ধি করেছিলেন। তাই তিনি দেশের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য
ইংরেজ শাসনের প্রতি বিদ্রোহ ঠীর ভাষায় ব্যক্ত করেছেন। কবি প্রথমেই স্বাধীনতাকামী
মানুষকে সাবধান করে বলছেন য়ে, স্বাধীনতার পথ দৃমি, মরুময় ও দুস্তর পারাবার তুল্য। এ যেন রাতের ঘোর অন্ধকারের মধ্য দিয়ে পা
বাড়ানো। তাই কবির আহ্বান, সাবধান হয়ে অত্যন্ত সতর্কতার
সঙ্গে সেই পথে পা বাড়াতে হবে। পরাধীনতা থেকে স্বাধীনতার দিকে এগিয়ে যাওয়ার পথ সোজা
নয়। এ যেন মহাসমুদ্রের মহাকল্লোল প্রতিহত করে তরণী পার করিয়ে অপর তীরে নিয়ে
যাওয়া। দেশের মানুষের বুকে যুগ যুগান্তরের গতি শ্যথা, পুঞ্জিত
অতিমান প্রতিবাদী হয়ে উঠেছে, তাই সাবধানে কাণ্ডারীকে
আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে।
ইংরেজ শাসন থেকে
ভারতবাসীকে মুক্ত করার জন্য তাদের সবাইকে মাতৃমপ্লে দীক্ষিত করতে হবে। তাই কবি
জাতির মুক্তির পথে সবাইকে জাতি ভেদ তুচ্ছ করে এগিয়ে যেতে বলেছেন। কবি
স্বাধীনতাকামী সেনানীকে উদ্দীপ্ত করে তোলার জন্য মনে করিয়ে দিচ্ছেন,কীভাবে
ইংরেজ সেনাপতি পলাশির যুদ্ধে নবাব সিরাজদৌল্লাকে ষড়যন্ত্র করে হত্যা করেছিলেন।
কবি উদাত্ত স্বরে বলেছেন যে দেশের মানুুশেরর রক্তে রাঙা ক্লাইভের খঞ্জর ভারতের
মুক্তি সূর্যকে গঙ্গায় ডুবিয়ে দিয়ে পরাধীনতার অন্ধকারে নিমজ্জিত করেছে। এ বার
ভারতের মুক্তি সূর্য উদয়ের জন্য আবার দেশবাসীকে প্রাণ দিতে হবে। পরাধীনতার
রক্তাক্ত গ্লানি দিয়েই ধুয়ে স্বাধীনতার হৃত গৌরব ফেরাতে হবে। - যে সকল দেশবাসী
ফাঁসির মঞ্চে গেয়েছেন তাদের জীবনের জয়গান, তাদের অতৃপ্ত
আত্মা আজ অলক্ষ্যে দাড়িয়ে অপেক্ষা করে আছে, তাদের পরে আর
কারা দেশ ও জাতির জন্য আত্মবলিদান দিতে প্রস্তুত হয়ে আছেন। এই অভিযানে কাউকেই
দিভ্রান্ত পথভ্রান্ত হয়ে হিম্মৎ হারালে চলবে না বলে কবি হুশিয়ার করে দিয়েছেন।
Q.9 কবি নজরুল
সম্পর্ক যা-জান লেখো।
ANS:- কাজী নজরুল ইসলাম সংক্ষিপ্ত পরিচয়
কাজী নজরুল ইসলাম (মে ২৫, ১৮৯৯ – আগস্ট
২৯, ১৯৭৬) (জ্যৈষ্ঠ ১১, ১৩০৬ – ভাদ্র
১২, ১৩৮৩ বঙ্গাব্দ) অগ্রণী বাঙালি কবি, বিংশ শতাব্দীর অন্যতম জনপ্রিয় বাঙালি কবি, সঙ্গীতজ্ঞ, সংগীতস্রষ্টা, দার্শনিক, যিনি
বাংলা কাব্যে অগ্রগামী ভূমিকার সঙ্গে সঙ্গে প্রগতিশীল প্রণোদনার জন্য সর্বাধিক
পরিচিত। বাঙালী মণীষার এক তুঙ্গীয় নিদর্শন নজরুল। তিনি বাংলা ভাষার অন্যতম
সাহিত্যিক, দেশপ্রেমী এবং বাংলাদেশের জাতীয় কবি।
পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ, দুই বাংলাতেই তাঁর কবিতা ও গান সমানভাবে
সমাদৃত। তাঁর কবিতায় বিদ্রোহী দৃষ্টিভঙ্গির কারণে তাঁকে বিদ্রোহী কবি নামে
আখ্যায়িত করা হয়েছে। তাঁর কবিতার মূল বিষয়বস্তু ছিল মানুষের ওপর মানুষের
অত্যাচার এবং সামাজিক অনাচার ও শোষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার প্রতিবাদ। বিংশ শতাব্দীর
বাংলা মননে কাজী নজরুল ইসলামের মর্যাদা ও গুরুত্ব অপরিসীম। একাধারে কবি, সাহিত্যিক, সংগীতজ্ঞ, সাংবাদিক, সম্পাদক, রাজনীতিবিদ এবং সৈনিক হিসেবে অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে
নজরুল সর্বদাই ছিলেন সোচ্চার। তাঁর কবিতা ও গানে এই মনোভাবই প্রতিফলিত হয়েছে।
অগ্নিবীণা হাতে তাঁর প্রবেশ, ধূমকেতুর
মতো তাঁর প্রকাশ। যেমন লেখাতে বিদ্রোহী, তেমনই জীবনে- কাজেই “বিদ্রোহী কবি” তাঁর জন্ম ও মৃত্যু বার্ষিকী বিশেষ মর্যাদার সঙ্গে উভয়
বাংলাতে প্রতি বৎসর উদযাপিত হয়ে থাকে।
Q.10 কাণ্ডারী
হুঁশিয়ার কবিতার নামকরণের সার্থকতা বিচার করা।
ANS:- নামকরণ:
কবিতার নামকরণ কবিতা রচনা
কার্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। আলোচ্য কবিতাটি কাজী নজরুল ইসলামের সর্বহারা' কাব্যগ্রন্থের
অন্তর্গত। এই কবিতায় কবি একটি রূপকের মাধ্যমে তার বক্তব্য প্রকাশ করেছেন। একজন
অভিজ্ঞ মাঝি তার নৌকার যাত্রীদের সঠিকভাবে পারাপার করিয়ে দিতে পারে। মাঝি দক্ষতার
সঙ্গে নৌকাটিকে ঝড় তুফানের মধ্য দিয়েও লক্ষ্যে পৌছে দিতে পারে। কখনো কখনো ঘন
অন্ধকার, ঝড়, তুফান প্রভৃতি বিরুদ্ধ
পরিবেশে চলতে চলতে মাঝি তার দাড়, হাল প্রভৃতি হারায়,
এমনকী পালও ছিড়ে যায়। তখন নৌকার যাত্রীদের মধ্যে ভয় ও সন্দেহের
উদ্রেক হয় যে তারা পর পারে পৌঁছাতে পারবে কিনা। এমতাবস্থায় কাণ্ডারীকেই সাবধান
হতে হয়। কারণ নৌকার যাত্রীদের জীবন তার উপরই নির্ভরশীল। আলোচ্য কবিতায় কবি
পরাধীন ভারতবাসীকে নৌকাযাত্রী করেছেন এবং স্বাধীনতাকামী দেশনেতাকে কাণ্ডারী হিসাবে
ব্যক্ত করেছেন। স্বাধীনতা আন্দোলনকে সঠিক পথে নিয়ে চলার সময় নেতাদের বিভিন্ন
প্রকার বাধা বিপত্তির সসন্মুখিন হতে হয় এবং সেই বাধা বিঘ্নের সংগে লড়াইও করতে হয়।
কোন অবস্থায়ই তাদের দিক-ভ্রান্ত পথভ্রান্ত হয়ে হিম্মৎ হারালে চলবে না,সে কথাই আলোচ্য কবিতায় বর্ণিত হয়েছে। কবি দেশ-নেতাদের সাবধান হওয়ার
পরামর্শ দিয়েছেন। তাই কবিতার নাম ‘কারী হুঁশিয়ার’ যথার্থ সার্থক হয়েছে।
Q.11 ব্যাখ্যা করো:-
‘ফাসির মঞ্চে গেয়ে গেল যারা জীবনের জয়গান
আসি অলক্ষ্যে দাড়িয়েছে তারা, দিবে কোন
বলিদান?"
ANS:- আলােচ্য
উদ্ধৃতাংশটি বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম রচিত কাণ্ডারী হশিয়ার’ শীর্ষক কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে। আলােচ্য অংশে ভারতের স্বাধীনতা
আন্দোলনের কারীদের করণীয় কিছু কর্তব্য সম্পর্কে আলােকপাত করা হয়েছে।
ভারতের স্বাধীনতা
আন্দোলনের বহু বীর সেনানী ইংরেজদের হাতে ধরা পড়ে বিনা বিচারে ফাঁসির দড়িতে প্রাণ
দিয়েছেন। তারা দেশবাসীর মঙ্গলার্থে হাসিমুখে তাদের প্রাণ দিয়েছেন। তাঁরা ব্রিটিশ
সাম্রাজ্যের ভিত কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন। পরবর্তী পর্যায়ে দেশে আন্দোলন এগিয়ে চললেও
দেশনেতারা কতদূর পর্যন্ত তা সুষ্ঠুভাবে নিয়ে যেতে পারবেন, সেই বিষয়
নিয়ে অনেকেরই সন্দেহ ছিল। এমতাবস্থায় কবি দেশনেতাকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন যে
যাঁরা ফাঁসিতে প্রাণ দিয়েছেন তাদের অতৃপ্ত আত্মা অলক্ষ্যে দাড়িয়েছে এই দেখতে যে,
তাদের পরবর্তী দেশনেতারা দেশ ও জাতির জন্য মৃত্যুবরণ কস্তুতে তৈরি
হয়ে আছেন কিনা। বর্তমান দেশনেতারা যেন দিকভ্রষ্ট, পথভ্রষ্ট,
না হয়ে সাহসের সঙ্গে স্বাধীনতা আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে চলেন। তার
জন্যে প্রাণ দিতে হলেও তারা যেন থেমে না যান বা পিছিয়ে না পড়েন।
Q.12 উদ্দীপকটি পড়ে নিচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও।
দুর্গম গিরি কান্তার মরু, দুস্তর পারাবার
লঙ্ঘিতে হবে রাত্রি নিশীথে, যাত্রীরা হুশিয়ার!
দুলিতেছে তরি, ফুলিতেছে জল ভুলিতেছে মাঝি পথ,
ছিঁড়িয়াছে পাল, কে ধরিবে হাল, আছে কার হিম্মৎ?
কে আছো জোয়ান হও আগুয়ান হাঁকিছে ভবিষ্যৎ
এ তুফান ভারি, দিতে হবে পাড়ি, নিতে হবে তরি পার।
ক. পাঞ্জেরি কবিতাটি কোন ছন্দে রচিত?
ANS:- ক. পাঞ্জেরি কবিতাটি মাত্রাবৃত্ত ছন্দে রচিত।
খ. ‘এখনো তোমার আসমান ভরা মেঘে?’ উক্তিটি দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?
ANS:- খ. ‘এখনো তোমার আসমান ভরা মেঘে?’—এ পঙিক্ততে মুসলিম জাতির পরাধীনতা ও দুর্যোগের বিষয়টি ফুটে
উঠেছে।
এখানে জাতির কর্ণধার অর্থাৎ পথপ্রদর্শককে
প্রতীকী রূপে ‘পাঞ্জেরি’ হিসেবে প্রকাশ করা হয়েছে। দুর্গম যাত্রাপথে উক্তিটিতে
পাঞ্জেরিকে প্রশ্ন করেছে যাত্রীরা। পথ চলতে চলতে আর শেষ না হওয়ায় যাত্রীরা শঙ্কিত।
তারা কোথাও কোনো কূল-কিনারা দেখতে পাচ্ছে না। এমনকি এতটুকু আশার আলো আকাশে চাঁদ, তা-ও মেঘে ঢাকা। তাই যাত্রীরা পাঞ্জেরিকে প্রশ্নটি করেছে।
মূলত প্রশ্নকারীরা হচ্ছে স্বাধীনতার জন্য অপেক্ষমাণ জনতা। যারা একটা শঙ্কা নিয়ে
জীবন অতিবাহিত করছে।
গ. অনুচ্ছেদের সঙ্গে ‘পাঞ্জেরি’ কবিতার মিল কোথায়, ব্যাখ্যা করো।
ANS:- গ. ‘পাঞ্জেরি’ কবিতায় জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষার কর্ণধার পাঞ্জেরিকে বন্দরে
অপেক্ষমাণ যাত্রীদের তীব্র বিক্ষোভের কথা ভেবে জেগে ওঠার ব্যাকুল আহ্বান থেকে
জানিয়েছেন কবি। আর উদ্দীপকে শত বিপদের মুখে যাত্রীদের মধ্যে থেকে কাউকে তরীর হাল
ধরার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। মুক্তির দিশারি পাঞ্জেরি ও নাবিকরূপী
নেতা-কর্মীদের অবহেলা আর ভুল সিদ্ধান্তের কারণে মুক্তির তরণি নির্দিষ্ট সময়ে
বন্দরে এসে পৌঁছাতে পারেনি। বন্দরে অপেক্ষমাণ যাত্রীরূপী মুক্তিপাগল জনতার ভিড়ে
তাই জমা হয়েছে হতাশার কালো মেঘ। আশাভঙ্গের বেদনায় তারা হয়েছে ম্রিয়মাণ। নিপীড়িত
জনতার ক্ষধাতুর পাঁজরায় বেজে উঠেছে মৃত্যুর জয়ভেরী। মজলুমের আর্তনাদে ছেয়ে গেছে
আকাশ-বাতাস। তাই বঞ্চিত, আশাহত ও অপেক্ষমাণ মানুষ আজ কৈফিয়ত দাবি
করেছে নেতৃত্বের কাছে। ধিক্কার জানাচ্ছে নেতৃত্বের ভুল সিদ্ধান্তকে। তীব্র
ভ্রুকুটিতে বিদ্ধ করতে উদ্যত হয়েছে নেতা-কর্মীদের।
এভাবে জাতিকে এই বিপন্নাবস্থা থেকে উদ্ধার
করার জন্য কবি জাতির কর্ণধার তথা রাজনৈতিক নেতাদের জেগে ওঠার উদাত্ত আহ্বান
জানিয়েছেন। উদ্দীপকে সংকটময় দিনে এভাবে জাতিকে এই বিপন্নাবস্থা থেকে উদ্ধার করার
জন্য কবি যে কাউকে নেতৃত্ব দানের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।
ঘ. ‘কে আছ জোয়ান হও আগুয়ান’ পঙিক্তর সঙ্গে ‘পাঞ্জেরি’ কবিতার ভাববস্তুর তুলনামূলক বিচার-বিশ্লেষণ করো।
ANS:- ঘ. ‘পাঞ্জেরি’ কবিতার ভাববস্তুর সঙ্গে উদ্দীপকের লাইনটির ভাববস্তুর যথার্থ
মিল রয়েছে। ‘পাঞ্জেরি’ কবিতা ও উদ্দীপকের আলোকে এ জাতি ছিল হাজার বছরের ঐতিহ্যে
লালিত। মরুভূমির বুকে সাইমুম ঝড়ের মতো দুর্বার গতিতে এ জাতি ছুটে চলত দিক-দিগন্তে, যশ, প্রতিপত্তি ও খ্যাতিতে ভাস্বর ছিল এ জাতি।
কিন্তু শুধু গাফিলতে, শুধু খেয়ালের ভুলে, ঐতিহ্যবাহী এ জাতি আজ পরাস্ত, হতাশাগ্রস্ত। সঠিক নেতৃত্বের অভাবে তারা দিশাহারা। এ জাতি
যেন তার হারানো সম্মান ফিরে পায়, সে
জন্য কবি ‘পাঞ্জেরি’ কবিতায় ও উদ্দীপকে সঠিক পথপ্রদর্শকের সন্ধান করেছেন।
সীমাহীন দুর্যোগে পথভ্রান্ত জাতির বিভ্রান্তির ও বিপথে
গমনের কারণে যে ঘোর অন্ধকার তাদের জীবনকে অচল, রুদ্ধ ও পরাধীন করেছে, তাকে সঠিক স্বাধীন মানবিক পথে উন্নীত করার অনুপ্রেরণা ‘পাঞ্জেরি’র
প্রতি ছত্রে এবং উদ্দীপকের পঙিক্ত ‘কে আছ জোয়ান হও আগুয়ান’। অন্ধকার রাত্রিতে দিশাহীন নৌকার দাঁড়ীরা যেমন শুধু অনুমান
করে দাঁড় টেনে সঠিক পথের সন্ধান পায় না। তেমনি সঠিক নেতৃত্বের অভাবে এ জাতিও আজ
অন্ধকারে নিমজ্জিত এবং বন্দরে প্রতীক্ষারত যাত্রীদের মতো দেশের আপামর জনগণ
হতাশাগ্রস্ত। তাই কবি আশা করেছেন, সীমাহীন
দুর্যোগের পথভ্রান্ত জনতা আলোকবর্তিকারূপী নেতৃত্বের সাড়া পেয়ে সঠিক পথ ধরে আলোর
দিকে অগ্রসর হতে পারবে। কবি সেই পথ খুঁজছেন, যেই পথে নতুন সম্ভাবনা ও স্বপ্ন নিয়ে তাদের জীবন পূর্ব গৌরব
ফিরিয়ে আনবে।
কবি দৃঢ়চিত্তে জানিয়ে দিয়েছেন যে যদি নবজাগরণের প্রদীপ তারা
জ্বালাতে পারে এবং সব ভয়ভীতি ও বিপদের প্রতি উপেক্ষা প্রদর্শন করে সঠিক লক্ষ্যের
পথে এগোতে পারে, তবে জাতীয় জীবনে বিরাজমান সংকট উত্তরণে কোনো
সমস্যা হবে না। নিমজ্জিত জাতিকে সঠিক পথের সন্ধান দেবে পাঞ্জেরি।
উদ্দীপকের সব সংকট থেকে জাতিকে রক্ষা করার
জন্য কোনো জওয়ান অর্থাৎ কোনো নেতৃত্ব দানকারীকে আহ্বান জানানো হয়েছে—কারণ, সঠিক
নেতৃত্ব ছাড়া কোনো জাতি সঠিক পথ পায় না। যেমনটি পাঞ্জেরি কবিতায় খুঁজে পাওয়া যায়।
পাঠনির্ভর ব্যাকরণ:
Q.1 (ক)
ব্যাসবাক্যসহ সমাসের নাম লেখো।
ANS:-
যুগান্তর – যুগের
অন্তর (ষষ্ঠী তৎপুরুষ)
মহাভার = মহান যে ভার
(কর্মধারয় সমাস)
অসহায় - ন সহায় (tg তৎপুরুষ
সমাস)
Q.2 (খ) বিপরীত
শব্দ লেখো।
ANS:-
অধিকার – অনধিকার, দুর্গম – সুগম, পশ্চাৎ - অগ্র, সন্দেহ – নিঃসন্দেহ, অলক্ষ্যে - সম্মুখে।
Q.3 (গ) নিচে
প্রদত্ত শব্দগুলো বাক্যে ব্যবহার করো।
হুঁশিয়ার, হিম্মৎ
সান্ত্রী, অভিযান, সন্তরণ, মাতৃ-মুক্তি, হানাহানি, মহাভার,
পুনর্বার, বলিদান, ত্রাণ,
অলক্ষ্যে, বঞ্চিত।
ANS:- হুশিয়ার -
নদীর জল ফুলে ফেঁপে উঠছে দেখে মাঝি নৌকার যাত্রীদের হুশিয়ার করল।
হিম্মৎ – লড়াই
করার জন্য হিম্মৎ থাকতে হবে।
সাঞ্জ - তিমির রাত্রি, সান্ত্রীরা
সাবধান।
অভিষান - পর্বত
অভিযান বড়োই কষ্টকর।।
দারুণ - হাঁসগুলো পুকরের
নির্মল জলে সন্তরণ করছে।
মাতৃমুক্তি - বিপ্লবীরা
মাতৃমুক্তি পণ করেছে।
মহাভার - দেশ
নেতাদের আন্দোলন চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য মহাভার নিতে হয়।
হানাহানি - চারিদিকে
হানাহানি চলছে।
পুনর্বাসন - বিষয়টি
বিবেচনার জন্য পুনর্বার অনুরোধ করা হল। বলিদান • বলিদান
- দেশের স্বার্থে দেশ প্রেমিকা আত্মা বলিদান দিয়েছে।
ত্রাণ – বন্যা দুর্গতদের ত্রাণ
বণ্টন করা হচ্ছে।
অলক্ষ্যে - সর্বশক্তিমান
অলক্ষ্যে থেকে করে থাকেন।
বঞ্চিত - আজকাল
উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করার পরও অনেকে চাকুরি থেকে বঞ্চিত থাকেন।
**********
0 Comments
HELLO VIEWERS, PLEASE SEND YOUR COMMENTS AND SUGGESTION ON THE POST AND SHARE THE POST TO YOUR FRIEND CIRCLE.