ASSAM SEBA/SMEBA CLASS 9 BENGALI QUESTIONS & ANSWERS সেবা অসম নবম শ্রেনী বাংলা প্রশ্ন এবং উত্তর পাঠ : ধুলামন্দির

 

ASSAM SEBA/SMEBA CLASS 9 BENGALI QUESTIONS & ANSWERS

সেবা অসম নবম শ্রেনী বাংলা প্রশ্ন এবং উত্তর

পাঠ : ধুলামন্দির

কবি : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

 



 ধুলামন্দির

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

 

ভজন পূজন সাধন আরাধনা সমস্ত থাক্‌ পড়ে।

রুদ্ধদ্বারে দেবালয়ের কোণে কেন আছিস ওরে।

অন্ধকারে লুকিয়ে আপন মনে

কাহারে তুই পূজিস সংগোপনে,

নয়ন মেলে দেখ দেখি তুই চেয়ে দেবতা নাই ঘরে।

 

তিনি গেছেন যেথায় মাটি ভেঙে করছে চাষা চাষ--

পাথর ভেঙে কাটছে যেথায় পথ, খাটছে বারো মাস।

রৌদ্রে জলে আছেন সবার সাথে,

ধুলা তাঁহার লেগেছে দুই হাতে;

তাঁরি মতন শুচি বসন ছাড়ি আয় রে ধুলার 'পরে।।

 

মুক্তি?   ওরে মুক্তি কোথায় পাবি, মুক্তি কোথায় আছে?

আপনি প্রভু সৃষ্টিবাঁধন 'পরে বাঁধা সবার কাছে।

রাখো রে ধ্যান, থাক্‌ রে ফুলের ডালি,

ছিঁড়ুক বস্ত্র, লাগুক ধুলাবালি ---

কর্মযোগে তাঁর সাথে এক হয়ে ঘর্ম পড়ুক ঝরে।

 

 

কবি পরিচিতি

১৮৬১ খ্রিস্টাব্দে ৭মে (১২৬৮ বঙ্গাব্দের ২৫শে বৈশাখ) রবীন্দ্রনাথ জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর। রবীন্দ্রনাথের মা-এর নাম সারদা দেবী। পিতামহ প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর। বাড়িতে শিল্প সাহিত্য এবং ব্যাপক সাংস্কৃতিক আবহাওয়ায় লালিত হবার ফলে প্রায় শিশুকাল থেকেই তাঁর কাব্যপ্রতিভার উন্মেষ ঘটে এবং মাত্র ১৫ বছর বয়সেই তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ বনফুলপ্রকাশিত হয়। সুদীর্ঘ জীবনে তিনি অজস্র কবিতা, গান, নাটক, উপন্যাস, ছোটো গল্প, ভ্রমণকাহিনি রচনা করেছে। রবীন্দ্রনাথের কবিতায় বারবার ঋতু বদল ঘটেছে এবং রীতি বদল ঘটেছে। ৬৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি যে শিল্পলোক গড়ে তুলেছে বিশ্ব সাহিত্যে তার তুলনা নেই বলা চলে। ১৮৬৯-এ কবিতা রচনার সূচনা এবং সে। প্রবাহ এসে থেমেছে তার ৮১ বছর বয়সে মৃত্যুর প্রাগ সময়ে মুখে মুখে কবিতা রচনা করে। তোমার সৃষ্টির পথ রেখেছ আকীর্ণকবিতাটি তার শেষ লেখা। বাংলা গীতিকবিতার প্রাণপুরুষ তিনি। প্রকৃতির সঙ্গে ছিল তার আত্মিক যোগ। সেজন্য তার কাব্যে রূপ-অরূপের এক অপূর্ব লীলা রূপলাভ করেছে।

শুধু সাহিত্যচর্চা করে অলস জীবন কাটাননি তিনি। সমসাময়িককালে রাজনীতি, সমাজচিন্তা প্রভৃতির সঙ্গেও তার নিবিড় যোগ ছিল। কবি সর্বদা আত্মশক্তির উপর নির্ভরশীল ছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন বাঙালির সার্বিক প্রতিষ্ঠা। এই উদ্দেশ্য নিয়েই তিনি শান্তিনিকেতন, শ্রীনিকেতন প্রভৃতি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

প্রভাত সঙ্গীতেকবি-প্রতিভার উন্মেষ। তারপর পর্যায়ক্রমে তার কাব্য রূপ  অসাধারণ বৈচিত্র্য লাভ করেছে। রবীন্দ্রনাথের সমগ্র কাব্যস্রোতকে কয়েকটি পর্বে ভাগ করা যেতে পারে।

প্রথম পর্বে আছে : কবি কাহিনি, বনফুল, ভগ্নহৃদয়, ভানুসিংহ ঠাকুরের পদাবলী এবং সন্ধ্যাসংগীত।

দ্বিতীয় পর্বে আছেঃ সোনার তরী, চিত্রা, চৈতালী, কণিকা প্রভৃতি।

তৃতীয় পর্বে আছেঃ ক্ষণিকা, নৈবেদ্য, উৎসর্গ প্রভৃতি।

চতুর্থ পর্বে আছেঃ খেয়া, গীতাঞ্জলি, গীতিমালা, গীতালি, বলাকা প্রভৃতি।

পঞ্চম পর্বে আছেঃ পূরবী, মহুয়া, পরিশেষ।

শেষ পর্যায়ের কাব্যের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো : পুনশ্চ, পত্রপুট, শ্যামলী, আকাশ প্রদীপ, সানাই, আরোগ্য প্রভৃতি। উপন্যাস ও ছোটোগল্পেও তিনি নতুন যুগের স্রষ্টা। গোরাতার সর্বশ্রেষ্ঠ উপন্যাস। প্রায় শতাধিক ছোটোগল্প লিখেছেন তিনি। নাটক নিয়েও অভিনব পরীক্ষা-নিরিক্ষা করেছেন তিনি। রূপক এবং সাংকেতিক নাটক বাংলা নাট্য সাহিত্যকে অভিনবত্বে উজ্জ্বল করেছে।

জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে তিনি নাইট' উপাধি ত্যাগ করেন। ১৯১৩ সালে কবি নোবেল পুরস্কারে সম্মানিত হন। ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দে ৭ আগস্ট বিশ্বকবির দেহাবসান ঘটে।

 

ASSAM SEBA/SMEBA CLASS 9 BENGALI QUESTIONS & ANSWERS

সেবা অসম নবম শ্রেনী বাংলা প্রশ্ন এবং উত্তর

পাঠ : ধুলামন্দির, কবি : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

 

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (৭ মে, ১৮৬১ - ৭ আগস্ট, ১৯৪১) (২৫ বৈশাখ ১২৬৮ ২২ শ্রাবণ ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ) ছিলেন অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, সংগীতস্রষ্টা, নাট্যকার, চিত্রকর, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক, অভিনেতা, কণ্ঠশিল্পী ও দার্শনিক। তাঁকে বাংলা ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক মনে করা হয়। রবীন্দ্রনাথকে গুরুদেব, কবিগুরু ও বিশ্বকবি অভিধায় ভূষিত করা হয়। রবীন্দ্রনাথের ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক, ১৩টি উপন্যাস ও ৩৬টি প্রবন্ধ ও অন্যান্য গদ্যসংকলন তাঁর জীবদ্দশায় বা মৃত্যুর অব্যবহিত পরে প্রকাশিত হয়। তাঁর সর্বমোট ৯৫টি ছোটগল্প ও ১৯১৫টি গান যথাক্রমে গল্পগুচ্ছ ও গীতবিতান সংকলনের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় প্রকাশিত ও গ্রন্থাকারে অপ্রকাশিত রচনা ৩২ খণ্ডে রবীন্দ্র রচনাবলি নামে প্রকাশিত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় পত্রসাহিত্য উনিশ খণ্ডে চিঠিপত্র ও চারটি পৃথক গ্রন্থে প্রকাশিত। এ ছাড়া তিনি প্রায় দুহাজার ছবি এঁকেছিলেন। রবীন্দ্রনাথের রচনা বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় অনুদিত হয়েছে। ১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদের জন্য তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কলকাতার এক ধনাঢ্য ও সংস্কৃতিবান ব্রাহ্ম পিরালী ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বাল্যকালে প্রথাগত বিদ্যালয় শিক্ষা তিনি গ্রহণ করেননি। গৃহশিক্ষক রেখে বাড়িতেই তাঁর শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আট বছর বয়সে তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন। ১৮৭৪ সালে তত্ত্ববোধিনী পত্রিকায় তাঁর "অভিলাষ" কবিতাটি প্রকাশিত হয়। এটিই ছিল তাঁর প্রথম প্রকাশিত রচনা। ১৮৭৮ সালে মাত্র সতেরো বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথ প্রথম বার ইংল্যান্ডে যান। ১৮৮৩ সালে মৃণালিনী দেবীর সঙ্গে তাঁর বিবাহ হয়। ১৮৯০ সাল থেকে রবীন্দ্রনাথ পূর্ববঙ্গের শিলাইদহের জমিদারি এস্টেটে বসবাস শুরু করেন। ১৯০১ সালে তিনি পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে ব্রহ্মচর্যাশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন এবং সেখানেই পাকাপাকি ভাবে বসবাস শুরু করেন। ১৯০২ সালে তাঁর পত্নী বিয়োগ হয়। ১৯০৫ সালে তিনি বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনে তিনি জড়িয়ে পড়েন। ১৯১৫ সালে ব্রিটিশ সরকার তাঁকে নাইট উপাধিতে ভূষিত করেন। কিন্তু ১৯১৯ সালে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে তিনি সেই উপাধি ত্যাগ করেন। ১৯২১ সালে গ্রামোন্নয়নের জন্য তিনি শ্রীনিকেতন নামে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯২৩ সালে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠিত হয়। দীর্ঘ জীবনে তিনি বহু বার বিদেশ ভ্রমণ করেন এবং সমগ্র বিশ্বে বিশ্বভ্রাতৃত্বের বাণী প্রচার করেন। ১৯৪১ সালে দীর্ঘ রোগভোগের পর কলকাতার পৈত্রিক বাসভবনেই তাঁর মৃত্যু হয়।

রবীন্দ্রনাথের কাব্যসাহিত্যের বৈশিষ্ট্য ভাবগভীরতা, গীতিধর্মিতা চিত্ররূপময়তা, অধ্যাত্মচেতনা, ঐতিহ্যপ্রীতি, প্রকৃতিপ্রেম, মানবপ্রেম, স্বদেশপ্রেম, বিশ্বপ্রেম, রোম্যান্টিক সৌন্দর্যচেতনা, ভাব, ভাষা, ছন্দ ও আঙ্গিকের বৈচিত্র্য, বাস্তবচেতনা ও প্রগতিচেতনা। রবীন্দ্রনাথের গদ্যভাষাও কাব্যিক। ভারতের ধ্রুপদি ও লৌকিক সংস্কৃতি এবং পাশ্চাত্য বিজ্ঞানচেতনা ও শিল্পদর্শন তাঁর রচনায় গভীর প্রভাব বিস্তার করেছিল। কথাসাহিত্য ও প্রবন্ধের মাধ্যমে তিনি সমাজ, রাজনীতি ও রাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে নিজ মতামত প্রকাশ করেছিলেন। সমাজকল্যাণের উপায় হিসেবে তিনি গ্রামোন্নয়ন ও গ্রামের দরিদ্র জনসাধারণকে শিক্ষিত করে তোলার পক্ষে মত প্রকাশ করেন। এর পাশাপাশি সামাজিক ভেদাভেদ, অস্পৃশ্যতা, ধর্মীয় গোঁড়ামি ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধেও তিনি তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। রবীন্দ্রনাথের দর্শনচেতনায় ঈশ্বরের মূল হিসেবে মানবসংসারকেই নির্দিষ্ট করা হয়েছে; রবীন্দ্রনাথ দেববিগ্রহের পরিবর্তে কর্মী অর্থাৎ মানুষ ঈশ্বরের পূজার কথা বলেছিলেন। সংগীত ও নৃত্যকে তিনি শিক্ষার অপরিহার্য অঙ্গ মনে করতেন। রবীন্দ্রনাথের গান তাঁর অন্যতম শ্রেষ্ঠ কীর্তি। তাঁর রচিত জনগণ মন অধিনায়ক এবং আমার সোনার বাংলা গান দুটি যথাক্রমে ভারত ও বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত।

 

 

 

ASSAM SEBA/SMEBA CLASS 9 BENGALI QUESTIONS & ANSWERS

সেবা অসম নবম শ্রেনী বাংলা প্রশ্ন এবং উত্তর

পাঠ : ধুলামন্দির, কবি : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

 

সারাংশ

ভজন, পূজন এবং সাধনার মূল উদ্দেশ্য হলো ভগবানের সান্নিধ্য লাভ। অধ্যাত্ম পিপাসু মানুষের মনে এটাই বদ্ধমূল ধারণা যে দেবতা বা ঈশ্বর দেবালয় বা মন্দিরে বাস করেন। কিন্তু ঈশ্বর সর্বত্রই বিরাজমান। সব কিছুতেই বর্তমান। তিনি প্রকৃত অর্থে ক্ষুদ্র গণ্ডির মধ্যে, মন্দিরের চার দেয়ালের মধ্যে বদ্ধ হয়ে থাকেন না। তাঁর ব্যাপ্তি অনল-অনিলে, চিরনভোনীলে, জলদের গায়ে, শশী-তারকায় তপনে। তিনি আপামর খেটে খাওয়া মানুষের কর্মের মধ্যেও আছে। দুহাতে তাঁর কর্মের চিহ্ন বর্তমান। সেজন্য পূজারিদের রুদ্ধদ্বার দেবালয়ে ফুলমালা চন্দন দিয়ে ভগবানের পূজা করার কোনো যৌক্তিকতা নেই। কবির মতে দেবালয়ের অন্ধকার কোঠায় দেবতার সন্ধান করা নিষ্ফল।

মানস চক্ষু দিয়ে দেখলে ঈশ্বরের অস্তিত্ব মেলে। ঈশ্বর, খেটে খাওয়া মানুষ ও তাদের কাজের মধ্যে লীন হয়ে আছেন। রৌদ্রে জলে ধুলিকণায় ইট-কাঠ পাথরে গাড়া বাস্তব পৃথিবীতে শ্রমজীবী মানুষের সঙ্গে ঈশ্বরের বাস। তাই কবি ভক্তদের দেবালয়ে পরিহিত শুচি বসন ছেড়ে ধুলার পরে নেমে আসতে আহবান জানিয়েছেন। কবি অস্তদৃষ্টি দিয়ে অনুভব করে বলেছে যে মুক্তি কোথাও নেই, কারণ ঈশ্বর নিজেই তার সৃষ্টির নিকট বাধা আছেন। কর্মই ধর্ম। সেইহেতু কবি আলোচ্য কবিতায় বলেছেন ধুলিমাখা হাতে কর্মযোগে ঘর্ম ঝরানোর মাধ্যমে ঈশ্বর প্রাপ্তি সম্ভব। উৎস ও আলোচ্য কবিতাটি কবি রবীন্দ্রনাথের গীতাঞ্জলি কাব্য থেকে নেওয়া হয়েছে।  

 

ASSAM SEBA/SMEBA CLASS 9 BENGALI QUESTIONS & ANSWERS

সেবা অসম নবম শ্রেনী বাংলা প্রশ্ন এবং উত্তর

পাঠ : ধুলামন্দির, কবি : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

 

শব্দার্থ

ভজন-ভজন করা। দেবালয়দেবতার মন্দির, আলয় বা গুহ, দেবগৃহ। সংগোপনেঅন্তরালে আড়ালে। শুচি - শুদ্ধ, কলুষমুক্ত ময়লাহীন। মুক্তি - উদ্ধার। বসন - কাপড়, পোশাক, বস্ত্র। নয়ন - চোখ, চক্ষু, আঁখি। দেবতা - ঈশ্বর, ঠাকুর। আরাধনা - উপাসনা। রুদ্ধদ্বারে - দ্বার বন্ধ করে, দরজা বন্ধ করে। প্রভু - ঈশ্বর, ভগবান। সাধন-সাধনা করা। ডালি - সাজি। কর্মযোগে - কর্মের সঙ্গে যুক্ত হয়ে। ঘর্ম - ঘাম। সৃষ্টিবাঁধন -সৃজনাত্মক বন্ধন। খাটছে পরিশ্রম করছে। বারো মাস - সারাবছর।

ফুলের ডালিঃ

ফুল লোকায়ত পূজার একটি বিশিষ্ট উপাদান। ফুল ছাড়া পূজা হয় না। ভজন-পূজন-সাধন আরাধনা যে আসনে বসে করা হয়। সেই আসনের নীচেও নির্দিষ্ট দেবতার উদ্দেশ্যে মন্ত্রজপ করে ফুল রেখে দিতে হয়। মন্ত্রে, তীর্থে, দেবে, দ্বিজে সর্বত্রই ফুল নিতান্তই ধর্মীয়ভাবে আবশ্যকীয় অর্ঘ্য ও উপপর বিশেষ। দেবতাভেদে, ঈশ্বরের প্রকাশভেদে ফুলও বিভিন্ন ধরনের হয়। অথচ কবি রবীন্দ্রনাথ এই পূজা পদ্ধতিতে বিশ্বাসীনন বলেই ফুলের প্রয়োজনীয়তার বিরোধিতা করেছেন। ফুলের ডালি কথাটির অন্তর্নিহিত তাৎপর্য এখানেই।

শুচিবসনঃ

শুচি' কথাটির আভিধানিক অর্থ শুদ্ধ, পবিত্র, পুত ইত্যাদি রবীন্দ্রনাথ বলেছে তথাকথিত ধর্ম প্রকৃতপক্ষে ধর্মতন্ত্র ; কাচা, গঙ্গাজল ছেটানো কাপড় বাহ্যিকভাবে শুদ্ধ হলেও আন্তরিকভাবে শুদ্ধ নাও হতে পারে। প্রকৃতপক্ষে অন্তরকে শুদ্ধ করা দরকার। কেননা দেবতার অবস্থান মানুষের অন্তরেই। শুচিকবিতায় রবীন্দ্রনাথ গুরু রামানন্দকে এই শিক্ষাই দিয়েছিলেন।

বস্ত্রঃ

বস্ত্র আভিধানিক অর্থ পরিধান। ভজন, পূজন, সাধন, আরাধনার সময়ে গঙ্গাজলের পূত বারিধারায় সিক্ত পরিচ্ছন্ন বস্ত্রের দরকারএইটিই সাধক ও ভক্তের ধারনা ও বিশ্বাস। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ মনে করেছে যে মনুষ্য অসম্পর্কিত ভজন, পূজন, সাধন আরাধনা নিতান্তই নিষ্ফল। যীশু মনে করতেন This poor body is the temple of living God’ রবীন্দ্রনাথও বলেছেন, মনুষ্যরহিতভজন, পূজন, সাধন, আরাধনা যেহেতু নিষ্ফলা, সেজন্য তা বন্ধ করে মানুষের সাথে রোদে পুড়ে জলে ভিজে কর্মযজ্ঞে নিজেকে আহুতি দিতে হবে। নইলে ঈশ্বর প্রাপ্তি হবে না। কেননা ঈশ্বরের দুটি হাতও মানুষের সাথে কাজ করতে নেমে ধলিধসরিত। কর্মে যজ্ঞের উপস্থিতি হয়তো বস্তুকে ধুলামলিন করে তুলতে পারে। কিন্তু ঈশ্বরের সংস্পর্শে সেই ধুলা যেহেতু পবিত্র, সেইহেতু ধুলিবসনও পবিত্র। কাজে নেমে বস্ত্র ছিড়বে, ধুলিমলিন হলে তা বরং প্রকৃত শুচিবসনহয়ে উঠবে। এখানেই বস্ত্রশব্দটির তাৎপর্য।

ধ্যানঃ

ধেয় বস্তুকে সমস্ত হৃদয় দিয়ে স্মরণ করার নামই ধ্যান। ধুলামন্দিরকবিতায় মনুষ্যরহিত ধ্যান নিস্ফল বলে মনে করেছে কবি। রবীন্দ্রনাথের জয়কালীগল্পে একটি তথাকথিত শূকরকেও ডোমদের হাত থেকে বাঁচিয়ে মন্দিরে ঠাই দিয়েছিলেন তিনি। একটি শূকর (যা লোকচক্ষে নিতান্তই হেয় জীব) তাও যদি ভক্তের কাছে পরম গ্রহণীয় হয়ে থাকে তবে ঈশ্বরের পুত্রের সংস্পর্শ বর্জনীয় হয় কী করে! মনে, বনে, কোণে থেকে, গণদেবতার দিকে পিঠ ফিরিয়ে যতই ধ্যান করা হোক ঈশ্বর লাভ হয় না। সেজন্য মনুষ্য রহিত, নির্জন ধ্যান অপ্রার্থনীয়।

 

ASSAM SEBA/SMEBA CLASS 9 BENGALI QUESTIONS & ANSWERS

সেবা অসম নবম শ্রেনী বাংলা প্রশ্ন এবং উত্তর

পাঠ : ধুলামন্দির, কবি : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

 

 

ক্রিয়াকলাপ

 

A. শুদ্ধ উত্তরটি বেছে বের করো।

Q.1.  প্রকৃতপক্ষে দেবতার আবাস কোথায়?

(১) দেবালয় (২) মন্দির (৩) সর্বত্র (৪) কর্মের মধ্যে। জঞ্জর।

ANS:- (৪) প্রকৃতপক্ষে দেবতার আবাস কর্মের মধ্যে।

Q.2.  ঈশ্বর কার কাছে বাঁধা থাকেন?

(১) জীবের কাছে (২) সৃষ্টির কাছে (৩) পূজারির কাছে (৪) পূজার কাছে।

ANS:- (২) ঈশ্বর সৃষ্টির কাছে বাঁধা থাকেন।

Q.3.  কবির মতে প্রকৃত ধর্ম কী?

(১) সাধনা (২) পূজার্চনা (৩) কর্ম (৪) মন্ত্রপাঠ।

ANS:- (৩) কবির মতে প্রকৃত ধর্ম হচ্ছে কর্ম।

Q.4.  ঈশ্বরের দুহাতে কী লেগে থাকে বলে কবি বলেছে?

(১) ধূলা (২) চন্দন (৩) ফুল (৪) মাটি।

ANS:- (১) ঈশ্বরের দুহাতে ধুলা লেগে থাকে বলে কবি বলেছে

Q.5.  কবি পূজারীকে কী ছেড়ে ধুলার পরে আসতে বলেছে?

(১) ফুলের ডালি (২) বস্ত্র (3) ধ্যান (৪) শুচি।

ANS:- (৪) কবি পূজারীকে শুচি বসন ছেড়ে ধুলার পরে আসতে বলেছে।

 

B. বাক্য রচনা করো ?

[আরাধনা, সৃষ্টি বাঁধন, ফুলের ডালি, ধুলাবালি]

যেমনরুদ্ধদ্বার পূজারী রুদ্ধদ্বার মন্দিরে পূজা-আরাধনায় মগ্ন। কর্মযোগগীতায় বলা হয়েছে কর্মযোগই শ্রেষ্ঠ যোগ। সংগোপনে - ভক্তের ঈশ্বর আরাধনা সংগোপনে সমাধা হয়।

ANS:- আরাধনা - আরাধনা করে শুধু ঈশ্বর লাভ হয় না।

সৃষ্টিবাঁধন - ঈশ্বর নিজের সৃষ্টিবাঁধনে-ই নিজে বন্ধ।

ফুলের ডালি - মেয়েটি ফুলের ডালি নিয়ে মন্দিরে পুজো দিতে চলেছে।

ধুলাবালি - ছেলেরা ধুলাবালি মেখে খেলা করছে।

 

ASSAM SEBA/SMEBA CLASS 9 BENGALI QUESTIONS & ANSWERS

সেবা অসম নবম শ্রেনী বাংলা প্রশ্ন এবং উত্তর

পাঠ : ধুলামন্দির, কবি : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

 

 

C. শূন্যস্থান পূর্ণ করো ?

Q.1.  দেবালয়ের কোণে কেন আছিস ওরে।

ANS:- রুদ্ধদ্বারে দেবালয়ের কোণে কেন আছিস ওরে।

Q.2.  কাহারে তুই পৃজিস

ANS:- কাহারে তুই পূজিস সংগোপনে

Q.3.  তাঁর সাথে এক হয়ে ঘর্ম পড়ুক ঝরে।

ANS:- কর্মযোগে তার সাথে এক হয়ে ঘর্ম পড়ক ঝরে।

Q.4.  আপনি প্রভু পরে বাঁধা সবার কাছে।

ANS:- আপনি প্রভু সৃষ্টি বাঁধন পরে বাঁধা সবার কাছে।

 

D. অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন-উত্তর :

Q.1.  ধুলামন্দির কবিতার কবি কে?

ANS:- ধুলামন্দির কবিতার কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

Q.2.  কবিতাটি কবির কোন কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত?

ANS:- কবিতাটি কবির গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত।

Q.3.  প্রকৃতপক্ষে দেবতা বা ঈশ্বরের বাস কোথায়?

ANS:- প্রকৃতপক্ষে দেবতা বা ঈশ্বরের বাস কর্মযোগে যুক্ত মানুষের মাঝে।

Q.4.  ভক্তরা ভজনা বা পূজার্চনা করেন কেন?

ANS:- ভক্তরা ভজনা বা পূজার্চনা করেন ঈশ্বর লাভের উদ্দেশ্যে।

Q.5.  প্রকৃত ধর্ম কী?

ANS:- মানবিকতাকে সঙ্গে করে কর্মযোগে যুক্ত হওয়ার নামই প্রকৃত ধর্ম।

Q.6.  কবির মতে দেবতা আসলে কোথায় থাকেন?

ANS:- কবির মতে দেবতা আসলে শ্রমজীবী মানুষের মধ্যেই থাকেন।

Q.7.  ঈশ্বর বা প্রভু কার নিকট বাঁধা থাকেন?

ANS:- ঈশ্বর বা প্রভু নিজের সৃষ্টি বন্ধনেই বাঁধা থাকেন।

 

ASSAM SEBA/SMEBA CLASS 9 BENGALI QUESTIONS & ANSWERS

সেবা অসম নবম শ্রেনী বাংলা প্রশ্ন এবং উত্তর

পাঠ : ধুলামন্দির, কবি : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

 

 

E. সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন-উত্তর:

Q.1.  কবিতায় কবি ভগবান বা দেবতাকে কোথায় পাওয়া যেতে পারে বলে প্রকাশ করেছে?

ANS:- কবিতায় কবি ভগবান বা দেবতাকে মানুষের মধ্যে পাওয়া যেতে পারে বলে প্রকাশ করেছেন।

Q.2.  কবির মতে মুক্তির উপায় কী বর্ণনা করো।

ANS:- কবির মতে মুক্তির উপায় হলো নরেই নারায়ণের অন্বেষণ করা। শ্রমজীবীদের সঙ্গে যুক্ত হলেই মুক্তির উপায় মিলবে।

Q.3.  কর্মযোগ বলতে কী বুঝায়? কর্মের প্রকৃত অর্থ কী?

ANS:- কর্মযোগবলতে বুঝায় কর্মের সঙ্গে যুক্ত হয়ে জীবনযাপন করা। জ্ঞানযোগ’, ভক্তিযোগ, কর্মযোগছাড়া অসম্পূর্ণ থাকে।

কর্মের প্রকৃত অর্থ হলো কর্মফল শ্রীকৃষ্ণে সমর্পণ করে কিংবা ব্রহ্মে নিবেদন করে কাজ করাকেই প্রকৃত অর্থে কর্ম বলে।

Q.4.  রুদ্ধ দেবালয়ে ভগবান থাকেন কী? কেন?

ANS:- রুদ্ধ দেবালয়ে ভগবান থাকেন না। কেননা যত্র জীব তত্র শিব। নরেই নারায়ণ। আর তাই মানুষের থেকে বিচ্ছিন্ন হলে ঈশ্বর লাভ হয় না। রবীন্দ্রের মতে তাই ভগবান হীন পতিতের। মানুষের সংস্পর্শ পেতে হলে মানুষের কর্মযজ্ঞে আত্মনিয়োগ করতে হয়, যেহেতু সেখানেই ঈশ্বরের অবস্থান।

Q.5.  কবির মতে দেবতা প্রাপ্তির উপায় কী?

ANS:- রবীন্দ্রনাথ একস্থলে লিখছে—“দেবতারে প্রিয় কবি, প্রিয়েরে দেবতাঅর্থাৎ মানব শরীরই ঈশ্বরের মন্দির। মানুষের কর্মই মানুষের ধর্ম। কর্মই ধর্মের বর্ম। অতএব সংসারের অসংখ্য বন্ধনের মাঝেই লাভ করতে হবে মুক্তির স্বাদ।

 

ASSAM SEBA/SMEBA CLASS 9 BENGALI QUESTIONS & ANSWERS

সেবা অসম নবম শ্রেনী বাংলা প্রশ্ন এবং উত্তর

পাঠ : ধুলামন্দির, কবি : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

 

 

F. রচনাধর্মী প্রশ্ন-উত্তর:

Q.1.  ধুলামন্দির কবিতার সারাংশ লেখো।

ANS:- ভজন, পূজন এবং সাধনার মূল উদ্দেশ্য হলো ভগবানের সান্নিধ্য লাভ। অধ্যাত্ম পিপাসু মানুষের মনে এটাই বদ্ধমূল ধারণা যে দেবতা বা ঈশ্বর দেবালয় বা মন্দিরে বাস করেন। কিন্তু ঈশ্বর সর্বত্রই বিরাজমান। সব কিছুতেই বর্তমান। তিনি প্রকৃত অর্থে ক্ষুদ্র গণ্ডির মধ্যে, মন্দিরের চার দেয়ালের মধ্যে বদ্ধ হয়ে থাকেন না। তাঁর ব্যাপ্তি অনল-অনিলে, চিরনভোনীলে, জলদের গায়ে, শশী-তারকায় তপনে। তিনি আপামর খেটে খাওয়া মানুষের কর্মের মধ্যেও আছে। দুহাতে তাঁর কর্মের চিহ্ন বর্তমান। সেজন্য পূজারিদের রুদ্ধদ্বার দেবালয়ে ফুলমালা চন্দন দিয়ে ভগবানের পূজা করার কোনো যৌক্তিকতা নেই। কবির মতে দেবালয়ের অন্ধকার কোঠায় দেবতার সন্ধান করা নিষ্ফল।

মানস চক্ষু দিয়ে দেখলে ঈশ্বরের অস্তিত্ব মেলে। ঈশ্বর, খেটে খাওয়া মানুষ ও তাদের কাজের মধ্যে লীন হয়ে আছেন। রৌদ্রে জলে ধুলিকণায় ইট-কাঠ পাথরে গাড়া বাস্তব পৃথিবীতে শ্রমজীবী মানুষের সঙ্গে ঈশ্বরের বাস। তাই কবি ভক্তদের দেবালয়ে পরিহিত শুচি বসন ছেড়ে ধুলার পরে নেমে আসতে আহবান জানিয়েছেন। কবি অস্তদৃষ্টি দিয়ে অনুভব করে বলেছে যে মুক্তি কোথাও নেই, কারণ ঈশ্বর নিজেই তার সৃষ্টির নিকট বাধা আছেন। কর্মই ধর্ম। সেইহেতু কবি আলোচ্য কবিতায় বলেছেন ধুলিমাখা হাতে কর্মযোগে ঘর্ম ঝরানোর মাধ্যমে ঈশ্বর প্রাপ্তি সম্ভব। উৎস ও আলোচ্য কবিতাটি কবি রবীন্দ্রনাথের গীতাঞ্জলি কাব্য থেকে নেওয়া হয়েছে।  

 

Q.2.  কর্মের মধ্যে দিয়ে ঈশ্বরের সান্নিধ্য পাওয়া যায়কথাটির মূল বক্তব্য আলোচনা করো।

ANS:- ঈশ্বর আপামর খেটে খাওয়া মানুষের কর্মের মধ্যে আছেন। দুহাতে তার কর্মের চিহ্ন বর্তমান। সেইহেতু পূজারিদের রুদ্ধদ্বার পূজা ও আরাধনায় যুক্তি নেই।

ধুলামন্দির কতপক্ষে ঈশ্বর শ্রমজীবী মানুষ ও তাদের কাজের মধ্যে লীন হয়ে আছেন। বীদে-জলে ধুলিকণায় ইট-কাঠ পাথরে গড়া বাস্তব পৃথিবীতে কর্মরত মানষের মধাই ঈশ্বরের অধিষ্ঠান। সেইহেতু কবি ভক্তদের দেবালয়ে দিন তথাকথিত শুচিবসন পরিত্যাগ করে ধুলিশয্যায় নেমে আসতে উপদেশ দিয়েছে। কবি তার অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে অনুভব করেছেন “This poor body is the temple of living soul.” আর সেই living soul-কে উপেক্ষা করার অর্থ ঈশ্বরকে উপেক্ষা। বেদে বলছে সর্বং খল্লিদং ব্রহ্ম। স্রষ্টা তার সৃষ্টির মধ্যে। অবস্থান করেন। তাই বেশির ভাগ শ্রমজীবী মানুষের কঠোর পরিশ্রমে, কচ্ছ সাধনাই সাধনা। আর সেই সাধনায় সেই আরাধনায় ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভ করা যায় উপরোক্ত কথাটির এইটিই বক্তব্য।

Q.3.  ধুলামন্দির কবিতার মূলভাব ব্যক্ত করো।

ANS:- ধুলামন্দির কবিতায় কবি রবীন্দ্রনাথ নীরবে নির্জনে চিরাচরিত ঈশ্বরের অনুষ্ঠানে ঈশ্বর লাভ করা যায় না বলে ঘোষণা করেছে। বরং শ্রমজীবী মানুষের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে রোদে পুড়ে জলে ভিজে মাটি আর সংস্পর্শে যেতে বলেছে। ধুলিধূসা রিত বস্ত্রই কর্মক্ষেত্রের বস্তু। সেটাই পরিধান করে নিতে হবে, কেননা কবির ধারণায় সেই কর্মযুক্ত বস্তুই শুচিবস্ত্র।

মানুষ মুমুক্ষু। কিন্তু তার ধারণা নেই যে, ঈশ্বর স্বয়ং নিজের সৃজিত বন্ধনে, সৃষ্টি বাঁধনে বাঁধা পড়ে আছে। সেইহেতু প্রচলিত পূজা পদ্ধতি পরিহার করতে হবে। হয়তো তাতে পরিধেয় বস্ত্র ছিন্ন হবে, ধুলিধূসরিত হবে ; তাতে কোনো ক্ষতি নেই। কর্মযোগে যুক্ত হয়ে ঘাম ঝরিয়ে অক্লান্ত পরিশ্রম করেই ঈশ্বরের পদধুলি লাভ করতে হবে।

Q.4.  ধুলামন্দির কবিতার নামকরণের সার্থকতা বিচার করো।

ANS:- কবিতাটির প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত কবি পৃথিবীর ধুলিতেই ঈশ্বরের মন্দির রচিত হয়েছে বলে বর্ণনা করেছেন, ব্যাখ্যা করে দেখিয়েছেন, সেজন্য মূলভাব-নির্ভর উপরোক্ত কবিতার ধুলামন্দিরনামকরণ সার্থক হয়েছে।

 

ASSAM SEBA/SMEBA CLASS 9 BENGALI QUESTIONS & ANSWERS

সেবা অসম নবম শ্রেনী বাংলা প্রশ্ন এবং উত্তর

পাঠ : ধুলামন্দির, কবি : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

 

 

G. ব্যাখ্যা লেখো ?

Q.1.         রৌদ্রে জলে আছে সবার সাথে।

ধুলা তাঁহার লেগেছে দুই হাতে

ANS:- আনোচ্য অংশটি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ধুলামন্দির কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে।

আলোচ্যাংশে কবি বলতে চেয়েছেন যে পৃথিবীর ধুলিকণায় তিনি আছে। সেখানেই আছে শ্রমজীবীরা। তারা রোদে পুড়ে জলে ভিজে ধুলধুসরিত বস্ত্রে পৃথিবীর মাটিতে দাঁড়িয়ে কঠিন পরিশ্রম করে ঈশ্বরের সৃষ্টিকে যথার্থ সম্মান জানাহে। সেইসব কর্মরত নরেই নারায়ণের অধিষ্ঠান। কেবলমাত্র তাই নয় ঈশ্বর সেই যজ্ঞে নিজেকেও আহুতি দিয়েছেন। সেজন্য তাঁর দুই-হাতও ধুলিময়। তাই অন্যত্র রবীন্দ্রনাথ বলেছে

মধুময় পৃথিবীর ধুলি অন্তরে নিয়েছি আমি তুলিও এই মহামন্ত্রখানি চরিতার্থ জীবনের বাণী।

Q.2.         নয়ন মেলে দে দেখি তুই চেয়েদেবতা নাই ঘরে।

ANS:- আলোচ্য অংশ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচিত ধুলামন্দিরথেকে নেওয়া।

একটা প্রাসদিক ছোট্ট গল্প দিয়ে আরম্ভ করা যাক। ঈশ্বরের মহান ভক্ত আবু কেন আদন রাত্রিতে নিজের ঘরে নিদ্রা যাচ্ছে...। চাদের আলো ঘর ভরেছে। হঠাৎ কেন আদমের নিদ্রা ভঙ্গ হলো। দেখলেন একজন দেবদূত ঘরের মাছে দাঁড়িয়ে খখস্ করে একটি খাতায় কী যেন লিখে চলেছেন। শুদ্ধ আত্মা আদম ভয় না পেয়ে দেবদূতকে তার লেখার বিষয় জিজ্ঞাসা করলেন। দেবদূত আদমকে বললেন যে, তিনি তাদেরই নাম লিখছেন যাঁরা ঈশ্বরকে ভালোবাসেন। তার নাম সেই তালিকায় নেই জেনে আদম একটু দমে যান। পরের দিন রাতে পুনরায় সেই একই চিত্র। দেবদূত কী যেন লিখে চলেছেন। এবারও আদম লেখার বিষয় জিজ্ঞাসা করাতে দেবদূত উত্তরে বললেন যে তিনি তাদেরই নামের তালিকা প্রস্তুত করছে যাদের ঈশ্বর ভালোবাসেন। দেবদূত সেই আদমকে জানালেন যে, সেই তালিকায় আদমের নাম আছে সর্বোচ্চে।

আসলে আদম ছিলেন জনহিব্রতী। যত্র জীব তত্র শিবসেজন্য জনসেবক হিসেবে ঈশ্বরের করুণা তিনি লাভ করেছে।

রবীন্দ্রনাথও ছিলেন না গতানুগতিক পূজা পদ্ধতিতে বিশ্বাসী। ঈশ্বর তাঁর মতে অনুভূতিবেদ্য। তিনি দুপ্রেক্ষ চর্মচক্ষুতে। তার জন্য প্রয়োজন Wordsorth কথিত “inuvard-eye”, এই অন্তদৃষ্টি থাকলে পূজারী অনুভব করতে পারনে তারা মানুষকে ত্যাগ করে কত বড় অন্যায় করেছে।

মানুষের পরশেরে প্রতিদিন ঠেকাইয়া দূরে

ঘৃণা করিয়াছ তুমি মানুষের প্রাণের ঠাকুরে। লোকাচারে পুজো না করে কর্মাচারেই মিলবে ঈশ্বরের পাদপদ্ম।

Q.3.         আপনি প্রভু সৃষ্টি বাঁধন পরে বাঁধা সবার কাছে।

ANS:- আলোচ্য অংশটি বাক্‌পতি রবীন্দ্রের ধুলামন্দির কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে।

বাইবেলে বলা হয়েছে, “So God Geated man in his our image, —অর্থাৎ মানুষ ঈশ্বরের প্রতিরূপ। রবীন্দ্রনাথ বলছে, “আমার মাঝে তোমার লীলা হবে। তাইত আমি এসেছি এই ভবে। সেজন্য যেখানে শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি নরদেবতা, সেখানেই দেবতা। কর্মের অসংখ্য বন্ধনে ঈশ্বর স্বয়ং বাঁধা পড়ে আছে। কেন না সেই জাগতিক কর্মবন্ধনে মানুষও বাঁধা পড়ে আছে। সেজন্য কর্মবন্ধন পবিত্রতম। সেই কর্মবন্ধন প্রকৃতপক্ষে মুক্তির মহাপ্রবেশ তোরণ। রবীন্দ্রনাথ সেজন্য সশ্রদ্ধ স্মরণ করেছে কর্মবন্ধনকে

অসংখ্য বন্ধন মাঝে মহানন্দময় লভিব মুক্তির স্বাদ

Q.4.         রাখো রে ধ্যান, থারে ফুলের ডালি,

ছিড়ক বস্ত্র লাগুক ধুলাবালি।

ANS:- আলোচ্য অংশটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিরচিত ধুলামন্দিরশীর্ষক কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে।

ধ্যান করে ভক্ত ধেয় বস্তুকে পাবার উদ্দেশ্যে। ভক্তের ধেয় বস্তু ভগবান। থায় বলে, ভক্তের ভগবানকিন্তু ভক্তিধর্ম লোকাচারে বদ্ধ থাকলে ধ্যানী ও আরাধ্য একীভূত হতে পারে না। জীবাত্মা পরমাত্মার পবিত্র অনুভূতি থেকে। বঞ্চিত হয়। মোহম' তত্ত্ব যাইই বলুক ভগবান হীনপতিতের। তিনি যে দীনেশ। গীতায় কর্মযোগের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে অর্জুনকে যুদ্ধকৰ্ম করতে নির্দেশ দিয়েছে। কলিতে কর্মই ধর্ম। কর্মই ধর্মের বর্ম। ফল অপ্রত্যাশী কর্ম করে যেতে হবে। চাষী-শ্রমিকেরা ফসল-ফলান। শ্রমিকেরা যাবতীয় অগ্রগতিমূলক নির্মাণ। কার্যের সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু তাদের কর্মফল তারা পান না। যারা দেন না, ঠকান শ্রমজীবীদের, তারা যতই ধ্যান করুক, পুষ্পে পুষ্পে ভরে তুলুক ঈশ্বরের বিগ্রহ, তারা জানেন না সেই বিগ্রহ মৃন্ময় রয়ে গেলো, চিন্ময় হলো না। বরং নমি নরদেবতারে উদার ছন্দে পরমানন্দে...তাদের বন্দনা করেন। কারণ জীবে প্রেম করে যেইজন সেইজন সেবিছে ঈশ্বরসুতরাং শ্রমজীবীদের সাথে একই কাজে হাত লাগাতে হবে। তাতে হয়তো পরিধেয় বস্ত্র ছিড়ে যেতে পারে। ধুলিজীর্ণ হতে পারে, তা হোক তবু ঈশ্বরের সংস্পর্শ তথাকথিত ভক্তের সেখানেই লাভ করবে বলে রবি কবি মনে করেন।

 

ASSAM SEBA/SMEBA CLASS 9 BENGALI QUESTIONS & ANSWERS

সেবা অসম নবম শ্রেনী বাংলা প্রশ্ন এবং উত্তর

পাঠ : ধুলামন্দির, কবি : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

 

 

H. তাৎপর্য লেখো।

Q.1.  ধুলা তাহার লেগেছে দুই হাতে।

ANS:- আলোচ্য অংশটি রবীন্দ্রনাথ বিরচিত ধুলামন্দির কবিতার অংশ। আলোচ্য ধুলাকর্মের প্রতীক। তাহার অর্থ স্বয়ং ঈশ্বরের। হাতকর্মদণ্ড। আর নররূপী নারায়ণ বলে দুই হাত'উপরোক্ত পঙক্তিটির তাৎপর্য হলো, কর্মযোগে যুক্ত হতে গেলেই মাটিতে পা রাখতে হয় সাধারণত, বিশেষ করে শ্রমজীবী দরিদ্রদের। ধুলা মাটি থেকে উড়ে শ্রমজীবীদের হাত ধুলিময় করে তোলে। স্বয়ং ঈশ্বর শ্রমজীবীদের সঙ্গে অবস্থান করে তাদের কাজে সাহায্য | করেন বলে তার হস্তদ্বয়ও ধুলিমলিন।

Q.2.  মুক্তি? ওরে মুক্তি কোথায় পাবি, মুক্তি কোথায় আছে?

ANS:- আলোচ্য অংশটি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের ধুলামন্দির কবিতা থেকে নেওয়া।

মুক্তিএকটি বিশেষ অর্থে সাধকরা ব্যবহার করে থাকেন। তা এককথায় পুনর্জন্ম থেকে মুক্তি। এই জীবনচক্রের থেকে মুক্তি, সংসারের কর্ম বন্ধন থেকে মুক্তি। সাধকদের কাছে এই মনুষ্যজন কুম্ভীপাকনরকের তুল্য। ঈশ্বরকে লাভ করতে সর্বপ্রধান বাধা। সেজন্য সংস্কারের থেকে সরে গিয়ে মনে, বনে, কোণে নির্জনে সাধকেরা ঈশ্বরের সাধনা করতে চান। মানুষের সংস্পর্শ সাধকের কাছে, ভক্তের কাছে বিষতুল্য।

কিন্তু তারা জানেন না

যারে তুমি নীচে ফেল

সে তোমারে বাঁধিবে যে নীচে

পশ্চাৎ এ রেখেছ যারে

সে তোমারে পশ্চাতে টানিছে।

প্রকৃতপকে পরমমুক্তি পরমেশ্বরেই যদি হয়, আর সেই পরমেশ্বরই যদি রৌর জলে সবার সাথে, মর্ত্যভূমির ধুলিধুসর মাটিতে শ্রমজীবীদের মাঝেই অবস্থান করেন তবে মুক্তি পেতে হলে কর্মবন্ধনেই যুক্ত হতে হবে। রবীন্দ্রনাথ বলেছে এককে অতিক্রম করার উদ্দেশ্যেই একের দিকে ধাবিত হওয়াসুতরাং মুক্তি পেতে কর্মবন্ধন, মনুষ্যের ভালোবাসার বন্ধন সব বন্ধনেই যুক্ত থাকতে হবে।

Q.3.  পাথর ভেঙে কাটছে যেথায় পথ, খাটছে বারোমাস।

ANS:- আলোচ্য অংশটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কৃত ধুলামন্দির কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে।

পাথর ভেঙে পথ তৈরি করেছে মানুষ। সভ্যতার অগ্রগতি না হলে হতো না। শরের সাধের সৃষ্টি স্থাবর হয়ে থাকত, জঙ্গম হতো না। কিন্তু চরৈবেতিমন্ত্র তাহলে অসার্থক হতো। লোকাচারের বন্ধনে আস্টেপৃষ্টে বাঁধা পড়ে যেন ঈশ্বরের সাধের জগৎ সংসার। জাতীয় জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠত। রবীন্দ্রনাথ বলেছেন,—

যে জাতি জীবন হারা অচল অসার।

পদে পদে বাঁধে তারে জীর্ণ লোকাচার।

সেই লোকাচার বদ্ধ ধর্মাচরণ না করে ঈশ্বর লাভের জন্য কর্মাচরণকে আশ্রয় করতে হবে। পরিশ্রম করে, মাথার ঘাম ফেলে শ্রমজীবীরা সভ্যতার যেন অগ্রগামী রথাশ্ব। পুরাণে বরুণ দেবতা বলেছে চলে বেড়াও, চলে বেড়াও। কর্মই সেই গতি আনয়ন করে। রবীন্দ্রনাথ বলেছেন

 ধর্ম আর ধর্মতন্ত্র এক জিনিস নহে। প্রথমটি হলো আগুন আর দ্বিতীয়টি হলো ছাই। মুক্তির মন্ত্র পড়ে ধর্ম, আর দাসত্বের মন্ত্র পড়ে ধর্মতন্ত্র

সুতরাং রোদে পুড়ে, জলে ভিজে, ঘাম ঝরিয়ে, সিক্তবস্ত্রেসব অবস্থাকেই সাগ্রহে মেনে ভগবানের অনুধ্যানে রত হতে হবে।

 

ASSAM SEBA/SMEBA CLASS 9 BENGALI QUESTIONS & ANSWERS

সেবা অসম নবম শ্রেনী বাংলা প্রশ্ন এবং উত্তর

পাঠ : ধুলামন্দির, কবি : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

 

 

I. টীকা লেখো।

মন্দির:-  আভিধানিক অর্থ দেবালয়। এই কবিতাতেও এই অর্থেই শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে। এখানে ভক্তরা ভজন-পূজনসাধন-আরাধনা করে থাকেন ভগবানের। মন + ইর = এইভাবে মন্দির শব্দটি তৈরি হয়েছে।

মুক্তি:-  আলোচ্য কবিতায় রাবীন্দ্রিক ব্যাখ্যা অনুযায়ী মোক্ষ। জীবলোক থেকে মুক্তি। জন্মচক্র থেকে মুক্তি।

কর্মযোগ:- কর্মযোগের ধর্মীয় ব্যাখ্যা নয় ; এর রাবীন্দ্রিক ব্যাখ্যা হলে শ্রমজীবী মানুষের কঠোর পরিশ্রম সাপেক্ষ কর্মের সাথে যুক্ত হওয়া।

 

ASSAM SEBA/SMEBA CLASS 9 BENGALI QUESTIONS & ANSWERS

সেবা অসম নবম শ্রেনী বাংলা প্রশ্ন এবং উত্তর

পাঠ : ধুলামন্দির, কবি : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

 

 

ভাষা ব্যাকরণ

J. বাক্যের অর্থমূলক শ্রেণিভেদ:

অর্থবোধই বাক্যের মূল বৈশিষ্ট্য। বিভিন্ন ধরনের বাক্য শ্রোতার কাছে বিভিন্ন অর্থ জ্ঞাপন করে। তাই অর্থানুসারে বাক্যকে বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত করা যায়।

অর্থানুসারে বাক্যকে সাতটি শ্রেণিতে বিভক্ত করা হয়েছে।

(১) নির্দেশক বাক্য (ক) অভ্যর্থক বাক্য (খ) নাস্ত্যর্থক বা নঞর্থক বাক্য

(২) প্রশ্নবোধক বাক্য

(৩) অনুজ্ঞাবাচক বাক্য

(৪) ইচ্ছাসূচক বা প্রার্থনাসূচক

(৫) কার্যকারণাত্মক বাক্য

(৬) সন্দেহদ্যোতক বাক্য

(৭) বিস্ময়াদিবোধক বাক্য।

১। নির্দেশক বাক্য:- নির্দেশক বাক্যকে আবার অভ্যর্থক বা সদর্থক (হাঁ-বাচক) এবং নাভ্যর্থক বা নঞর্থক (না বাচক) এই দুটি উপরিভাগে বিভক্ত করা হয়েছে।

(ক) অস্ত্যর্থক বাক্যঃ যে বাক্যে কোনো ঘটনা, ভাব, অবস্থাদি বিবৃতির দ্বারা আপন করা হয় তাকে অস্ত্যর্থক বা সদর্থক বাক্য বলে। যেমন

সৎ ব্যক্তিকে সকলে বিশ্বাস করে। সামান্য কারণেই গ্রামে একটা বিপর্যয় এটিয়া গেল। আজ সন্ধ্যেয় যে করেই হোক কাবুল পৌছবেন। রাত্রি বারোটার মধ্যেই ঝড়বৃষ্টির বেগ থামিয়া গেল।

(খ) নাস্ত্যৰ্থক বা নঞর্থক বাক্য: যে বাক্যে বক্তা বিবৃতির মাধ্যমে অস্বীকত, নিষেধ নার মনোভাব প্রকাশ করে তাকে নাস্ত্যর্থক বাক্য বলে। একে অপোহনাত্মক বাক্যও বলা হয়। যেমন

আমি অন্যায় যুদ্ধ করিনি। বিধিলিপি কেউ খণ্ডাতে পারে না। শুধু শব্দ নয়, . পিছনে অর্থও কম নেই। ভিক্ষার দিনে ভিক্ষায় বাহির হয়নি। লোক দেখি না। চৌকি শুনে কুকুর ডাকে না।

২। প্রশ্নবোধক বাক্য:- যে বাক্যে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা হয় অর্থাৎ কোনো কিছু জানার ইচ্ছা প্রকাশ পায় তাকে প্রশ্নবোধক বা প্রশ্নসূচক বাক্য বলে। যেমন : দাদা, আমাকে গাড়ি কিনে দেবে না? আমাকে চিনতে পারছ না। মহাশয়ের নিবাস কোথায় জানতে পারি ? তোর নাম কী রে? ব্ল্যাকমার্কেটের সুবিধে না নিয়ে উপায় কী? ‘হে রক্ষোরথি ভূলিলে কেমনে কে তুমি?

 

K. বাক্য পরিবর্তন করো।

(১) তাহাকে সকলেই চিনে। (অস্ত্যর্থক)।

তাহাকে কে না চিনে? (প্রশ্নাত্মক)

(২) রবীন্দ্রনাথ ভারতের শ্রেষ্ঠ কবি। (অস্ত্যর্থক)

রবীন্দ্রনাথ ভারতের শ্রেষ্ঠ কবি কি? (প্রশ্নাত্মক)

(৩) সকলে ভুল করে। (অস্ত্যর্থক)

ভুল কার না হয় ? (প্রশ্নাত্মক)

(৪) তোমার নাম সকলেই জানে। (অস্ত্যর্থক)

তোমাকে নাম কে না জানে। (নঞর্থক)

 

 

ASSAM SEBA/SMEBA CLASS 9 BENGALI QUESTIONS & ANSWERS

সেবা অসম নবম শ্রেনী বাংলা প্রশ্ন এবং উত্তর

পাঠ : ধুলামন্দির, কবি : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

 

একনজরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

১৮৬১ সালের ৭ মে বাংলা ২৫শে বৈশাখ ১২৬৮ কলকাতার বিখ্যাত জোড়াসাকোর ঠাকুর পরিবারে জন্মগ্রহন করেন রবি ঠাকুর। বাংলা সাহিত্যর এমন কোন জায়গা নেই যেখানে তার স্পর্শ পড়েনি। তিনি একাধারে ঔপন্যাসিক, সংগীতস্রষ্টা, অগ্রণী বাঙালি কবি, নাট্যকার, চিত্রকর, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক, অভিনেতা, কণ্ঠশিল্পী ও দার্শনিক। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে বাংলা সাহিত্যর শ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক মনে করা হয়। রবীন্দ্রনাথকে কবিগুরু, গুরুদেব ও বিশ্বকবি অভিধায় ভূষিত করা হয়। ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক, ১৩টি উপন্যাস ও ৩৬টি প্রবন্ধ ও অন্যান্য গদ্যসংকলন রচনা করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। গল্পগুচ্ছ ও গীতবিতানে তার ১৯১৫টি গান, ৯৫টি ছোটগল্প অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। ৩২ খণ্ডে রবীন্দ্র রচনাবলী নামে রবীন্দ্রনাথের সমস্ত প্রকাশিত ও গ্রন্থাকারে অপ্রকাশিত রচনা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া প্রায় ২০০০ হাজার ছবি একেছিলেন কবিগুরু। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচনা পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে। ১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের জন্য সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোটগল্প

ছোটগল্প হলো বাংলা সাহিত্যের একটি বিশেষ ধারা। আধুনিক ধ্যানধারণা, পারিপার্শ্বিক ঘটনাবলি সম্পর্কে মতামত প্রকাশ করতেন তিনি। আর বাংলা সাহিত্যের একজন সার্থক ছোটগল্পাকার ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তার ছোটগল্পগুলো ছিল সাহিত্যের উচ্চচূড়ায়। তার রচিত কয়েকটি ছোটগল্পের নাম হলো;

১) মুসলমানীর গল্প

২) দেনাপাওনা

৩)হৈমন্তী

৪)কাবুলিওয়ালা

৫)নষ্টনীড়

৬)স্ত্রীর পত্র

৭) ক্ষুধিত পাষাণ

৬) মণিহারা

৭) নিশীথে

৮) কঙ্কাল

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপন্যাস

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মোট ১৩টি উপন্যাস রচনা করেছিলেন। তার রচিত উপন্যাসগুলো ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয় নবপর্যায় বঙ্গদর্শন, প্রবাসী, সবুজ পত্র, বিচিত্রা প্রভৃতি পত্রিকায়। উপন্যাসগুলো হলো-

১) বৌ-ঠাকুরাণীর হাট- ১৮৮৩ সাল
২) রাজর্ষি-১৮৮৭ সাল
৩) চোখের বালি-১৯০৩ সাল
৪) নৌকাডুবি-১৯০৬ সাল
৫) প্রজাপতির নির্বন্ধ-১৯০৮ সাল
৬) গোরা-১৯১০ সাল
৭) ঘরে বাইরে-১৯১৬
৮) চতুরঙ্গ-১৯১৬ সাল
৯) যোগাযোগ -১৯২৯ সাল
১০) শেষের কবিতা- ১৯২৯ সাল
১১) দুই বোন-১৯৩৩ সাল
১২) মালঞ্চ -১৯৩৪
১৩) চার অধ্যায় -১৯৩৪
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত উপন্যাসগুলোর মধ্যে ঐতিহাসিক উপন্যাস হলো রাজর্ষি ও বৌ-ঠাকুরাণীর হাট। সমসাময়িককালে বিধবাদের জীবনের নানা সমস্যা তুলে ধরা হয়েছে চোখের বালি উপন্যাসে। আর জটিল পারিবারিক সমস্যাগুলো নিয়ে রচিত নৌকাডুবি উপন্যাস।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রবন্ধ ও পত্রসাহিত্য

ইংরেজি ও বাংলা ভাষায় রবি ঠাকুর অসংখ্য প্রবন্ধ রচনা করেছিলেন। তিনি সংগীত, ছন্দ, ভাষাতত্ত্ব, রাষ্ট্রনীতি, ইতিহাস, ধর্ম, সাহিত্যতত্ত্ব বিষয়ে নিজস্ব মতামত প্রকাশ করেন। প্রবন্ধগুলি হলো-

১) সমাজ- ১৯০৮
২) ধর্ম-১৯০৯
৩) কালান্তর (১৯৩৭) সংকলন।
৪) শান্তিনিকেতন (১৯০৯-১৬) অভিভাষণমালা
৫) ভারতবর্ষ (১৯০৬)
৬) ইতিহাস (১৯৫৫)
৭) সাহিত্য (১৯০৭)
৮) সাহিত্যের পথে (১৯৩৬)
৯) সাহিত্যের স্বরূপ (১৯৪৩)
১০) প্রাচীন সাহিত্য (১৯০৭)
১১) শব্দতত্ত্ব (১৯০৯)
১২) বাংলা ভাষা পরিচয় (১৯৩৮)
১৩) ছন্দ (১৯৩৬)
১৪) সংগীতচিন্তা (১৯৬৬)
১৫) শিক্ষা (১৯০৮) প্রবন্ধমালা
১৬) ন্যাশনালিজম (ইংরেজি: Nationalism, ১৯১৭) গ্রন্থে রবীন্দ্রনাথ উগ্র জাতীয়তাবাদের বিশ্লেষণ করে তার বিরোধিতা করেছেন।
১৭) সভ্যতার সংকট (১৯৪১) সর্বশেষ প্রবন্ধগ্রন্থ
১৮) জীবনস্মৃতি (১৯১২)
১৯) ছেলেবেলা (১৯৪০)
২০) আত্মপরিচয় (১৯৪৩) আত্মকথামূলক গ্রন্থ
রবীন্দ্রনাথের পত্রসাহিত্য উনিশটি খণ্ডে রবীন্দ্রনাথের পত্রসাহিত্য প্রকাশিত হয়েছে।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাট্যসাহিত্য

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাধারে নাট্যকার ও ছিলেন। তার উল্লেখযোগ্য নাটকগুলো হলো;
১) কালমৃগয়া গীতিনাট্য (১৮৮২)
২) রাজা ও রাণী- কাব্যনাট্য (১৮৮৯)
৩) বিসর্জন
৪) চিত্রাঙ্গদা (১৮৯২)
৫) মালিনী (১৮৯৬)
৬) রক্তকরবী
৭) তাসের দেশ
৮) ডাকঘর
৯) বসন্ত
১০) চণ্ডালিকা
১১) চিরকুমার সভা
১২) বৈকুন্ঠের খাতা
১৩) অচলায়তন
১৪) বিসর্জন
১৫)প্রায়শ্চিত্ত

 

**************

Post a Comment

0 Comments