SEBA / SMEBA Class 9 Geography
(Social Sciences)
Chapter 3 Geography of India in Bangla
সেবা (আসাম) নবম শ্রেণী ভূগোল (সমাজবিজ্ঞান)
তৃতীয় অধ্যায় : ভারতবর্ষের ভূগোল
1. ভারতের বিচিত্রতা, ঐক্য এবং বৈশিষ্ট্য:
উত্তর গোলার্ধের এশিয়া মহাদেশে অবস্থিত গণতান্ত্রিক দেশ ভারতবর্ষ বৈচিত্রে ভরা। উত্তরে বরফাবৃত সু-উচ্চ হিমালয়, দক্ষিনে সাগর মহাসাগর, পূর্বে যেমন নাতিশীতোষ্ণ তেমন পশ্চিমে মরু অঞ্চল। কোন অঞ্চলে অতিবৃষ্টি, আবার কোন অঞ্চল শুষ্ক। উত্তর থেকে দক্ষিনে এবং পূর্ব থেকে পশ্চিমে ভুঅবয়ব, জলবায়ু, গাছপালা, জীবজন্তু ইত্যাদির বিচিত্রতা দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক ভিন্নতার সৃষ্টি করেছে। তৎসঙ্গে ভাষাগত, পোশাক, খাদ্যাভাস ও রীতিনীতিরও ভিন্নতা দেখা যায়। ফলে স্বকীয় মনোভাবাসম্পন্ন গোষ্ঠী এবং জনগোষ্ঠীরও সৃষ্টি হয়েছে। জীবন ধারণের প্রণালী থেকে স্থায়ী ও অস্থায়ী বহু ভিন্নতাদ্বারা ভারতবর্ষকে এক বৈচিত্রতাপূর্ণ দেশে পরিগণিত করেছে।
এমন ভিন্নতা সত্ত্বেও ভারত বর্ষ একটি অখণ্ড রাষ্ট্র। প্রাচীনকাল থেকেই ঐক্য ও সংহতির ভিত্তি স্থাপিত হয়েছে। এক সম-প্রাকৃতিক অবস্থা, প্রগতি ও উন্নয়ন ছাড়াও সবাই একক রাষ্ট্রনীতিতে বিশ্বাস করে, এক বলিষ্ঠ একতার মনোভাব প্রকাশ করে বিশ্বের দরবারে ভারতবর্ষকে “বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য” এই বৈশিষ্ট্যের পরিচয় দিতে সক্ষম হয়েছে।
2. ভারতের অবস্থান ও আকার:-
এশিয়া মহাদেশের দক্ষিণ অংশে ভারতবর্ষ অবস্থিত। এ দেশ 8°4 মিনিট উত্তর থেকে 37°17 মিনিট উত্তর অক্ষরেখা এবং 68°73 মিনিট পূর্ব থেকে 97°24 মিনিট পূর্ব দ্রাঘিমা রেখার মধ্যে অবস্থিত। 23½° উত্তর অক্ষরেখা বা কর্কটক্রান্তি ভারতের মধ্য দিয়ে পার হয়েছে। ভারতবর্ষ উত্তরে কাশ্মীর থেকে দক্ষিনে কন্যাকুমারী পর্যন্ত প্রায় 3214 কিলোমিটার এবং পূর্বে অরুনাচল থেকে পশ্চিমে গুজরাট পর্যন্ত প্রায় 2933 কিলোমিটার বিস্তৃত। ভারতের উপকূল প্রায় 6100 কিলোমিটার এবং স্থলসীমা প্রায় 15200 কিলোমিটার
দীর্ঘ। ভারতের মোট আয়তন
32,87,263 বর্গ কিলোমিটার। ভারতের মোট রাজ্য 29 টি এবং সাতটি কেন্দ্রীয় শাসিত অঞ্চল আছে। ভারতের উত্তরে হিমালয় ও চীন, দক্ষিণ ভারত মহাসাগর ও শ্রীলঙ্কা, পূর্বে বঙ্গোপসাগর ও মিয়ানমার, এবং পশ্চিমে আরব সাগর ও পাকিস্তান অবস্থিত।
3. ভারতের ভূপ্রকৃতি:-
ভারতের ভূপ্রকৃতি বৈচিত্র্যপূর্ণ। মোট আয়তনের 10.7 শতাংশ পর্বত পাহাড়, 18.6 শতাংশ সমভূমি ছাড়াও মালভূমি, নদনদী, উপকূল, দ্বীপ, হ্রদ ইত্যাদি দ্বারা সমৃদ্ধ। উত্তরে হিমালয়, আরাবলি, বৃন্দ, সাতপুরা, মহাদেব, পূর্বঘাট ও পশ্চিমঘাট ইত্যাদি পার্বত্য ও পাহাড় অঞ্চল; মধ্যভাগে গঙ্গা-সিন্ধু-ব্রম্মপুত্রের বিশাল সমভূমি অঞ্চল; দুই উপকূলে উপকূলীয় সমভূমি অঞ্চল; দক্ষিনে ত্রিভুজাকার মালভূমি, উলার, পুষ্কর, সম্বর, চিলকা, কুলার, লগটগ ইত্যাদি হ্রদ; গঙ্গা- ব্রম্মপুত্রের বিশাল সুন্দরবন, বদ্বীপ ও মাজুলি খ্যাত বিশ্বের সেরা নদী দ্বীপ অঞ্চল; আন্দামান ও লাক্ষাদ্বীপের সাগরীয় দ্বীপগুলো; রাজস্থানের থর মরুভূমি ইত্যাদি সকল প্রকারের ভূঅবয়ব দ্বারা ভারতের ভূপ্রকৃতি গঠিত।
4. উত্তর ভারত ও দক্ষিণ ভারতের নদী গুলির মধ্যে পার্থক্য:-
Ø উত্তর ভারতের নদীগুলি সুউচ্চ পর্বত এর বরফ থেকে সৃষ্ট, ফলে নাব্য। কিন্তু দক্ষিণ ভারতের নদীগুলো কম উচ্চতা সম্পন্ন পাহাড় থেকে সৃষ্ট ফলে নাব্য নয়।
Ø উত্তর ভারতের নদী গুলোর উচ্চগতি, মধ্যবর্তী ও নিম্নগতি সুস্পষ্ট, কিন্তু দক্ষিণ ভারতের নদী গুলো সুস্পষ্ট নয়।
Ø উত্তর ভারতের নদী গুলোর উপত্যাকা চওড়া ও নদীর গতি ধীর, কিন্তু দক্ষিণ ভারতের নদী গুলোর উপত্যকা সংকীর্ণ ও গতি ক্ষিপ্র।
Ø উত্তর ভারতের নদীর সৃষ্টি নূতন, ঘন ঘন দিক বদল করে এবং প্লাবনভূমি বিস্তৃত, কিন্তু দক্ষিণ ভারতের নদীর সৃষ্টি পুরাণ, গতি বদল হয় না এবং প্লাবন ভূমিও সংকীর্ণ।
Ø উত্তর ভারতের নদীগুলো বেশি গাদ বহন করে কিন্তু দক্ষিণ ভারতের নদীগুলো কম গাদ বহন করে এবং জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য উপযোগী।
Ø উত্তর ভারতের নদী অববাহিকা পলিযুক্ত এবং উর্বর, কিন্তু দক্ষিণ ভারতের নদী অববাহিকা উর্বর নয় ফলে জনবসতির ঘনত্বও কম।
Ø উত্তর ভারতের নদী গুলোর দৈর্ঘ্য বেশি ও মোহনায় বদ্বীপ এর আয়তন বড়, কিন্তু দক্ষিণ ভারতের নদীগুলোর দরিদ্র কম ও মোহনায় বদ্বীপ এর আয়তন ছোট।
5. ভারতের ভূ-প্রাকৃতিক বিভাগ গুলো:-
ভারতবর্ষকে মোট ছয়টি ভূ-প্রাকৃতিক বিভাগে ভাগ করা যায়:-
Ø উত্তরের হিমালয় পার্বত্য অঞ্চল
Ø উত্তর ভারতের বিশাল সমভূমি অঞ্চল
Ø দাক্ষিণাত্য মালভূমি অঞ্চল
Ø উপকূলীয় সমভূমি অঞ্চল
Ø রাজস্থানের থর মরুভূমি অঞ্চল এবং
Ø দ্বীপপুঞ্জ সমূহ
6. উত্তরের হিমালয় পার্বত্য অঞ্চল ও তার বৈশিষ্ট্য:-
পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বত হিমালয় ভারতের উত্তরে অবস্থিত। ভারতে তাহা কাশ্মীরের নঙ্গপর্বত থেকে পূর্ব-পশ্চিম দিকে অরুণাচল প্রদেশের পূর্ব সীমা পর্যন্ত এই পার্বত্য অঞ্চল বিস্তৃত। প্রায় 2500 কিলোমিটার দীর্ঘ, 240 থেকে 500 কিলোমিটার প্রস্থ এই পার্বত্য অঞ্চলের আয়তন প্রায় 5 লাখ বর্গ কিলোমিটার। উচ্চতা সর্বাধিক 8000 মিটারেরও অধিক। এই অঞ্চল টারসিয়ারী যুগে সৃষ্ট এবং বহু বছর পূর্বে এই স্থানে ছিল টেথিস নামক একটি সাগর। সুউচ্চ শিখরগুলো বরফাবৃত এবং তুষার নদীর সৃষ্টি হয় যা জলের প্রধান উৎস।
এই পার্বত্য অঞ্চলকে উচ্চ হিমালয়, মধ্য হিমালয় বা নিম্ন হিমালয় এবং বহি: হিমালয়ে ভাগ করা যায়। উচ্চ হিমালয় অত্যন্ত খাড়া ও গড় উচ্চতা 6000 মিটার। এর দক্ষিনে অবস্থিত নিম্ন হিমালয়ের গড় উচ্চতা প্রায় 4000 মিটার এবং 60 থেকে 80 কিলোমিটার প্রশস্ত। নিম্ন হিমালয়ের দক্ষিনে অবস্থিত বহি: হিমালয়ের গড় উচ্চতা 1000 মিটার এবং 15 থেকে 50 কিলোমিটার প্রশস্ত এবং দক্ষিনে ক্রমশ: সমভূমিতে গিয়ে শেষ হয়েছে। বহি: হিমালয়কে শিবালিক ও উচ্চ হিমালয়কে হিমাদ্রিও বলা হয়। ভারতের সর্বাধিক নাব্য নদীর সৃষ্টি উত্তরে পার্বত্য অঞ্চলের হয়েছে। এই সমস্ত পার্বত্য অঞ্চল ভঙ্গিল এবং ভারতের উত্তরে বিশাল প্রাচীররূপে রয়েছে এবং ভৌগলিক সৌন্দর্যতা প্রদান করেছে।
7. উত্তর ভারতের সমভূমি অঞ্চল ও তার বৈশিষ্ট্য:-
উত্তরের হিমালয় পার্বত্য অঞ্চল এবং দক্ষিণের মালভূমি অঞ্চলের মধ্যে সিন্ধ-গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র নদী দ্বারা সৃষ্ট অসম থেকে পশ্চিমে পাকিস্তান সীমা পর্যন্ত 2400 কিলোমিটার বিস্তৃত সমভূমি অঞ্চলকে উত্তর ভারতের সমভূমি অঞ্চলে বলে। এই সমভূমি অঞ্চল 240 কিলোমিটার থেকে 320 কিলোমিটার প্রশস্ত যদিও ব্রহ্মপুত্র সমতল গড়ে মাত্র 80 কিলোমিটার প্রশস্ত। আয়তন প্রায় সাত লাখ বর্গ কিলোমিটার। সমভূমি অঞ্চলকে আবার পাঁচটি ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন:-
Ø পচ্চিম সমভূমি
Ø পাঞ্জাব হরিয়ানা সমভূমি
Ø গঙ্গা সমভূমি
Ø উত্তর বঙ্গ সমভূমি এবং
Ø ব্রহ্মপুত্র সমভূমি
সমস্ত সমভূমি অঞ্চল দক্ষিণ দিকে ঢালু এবং পলশ পড়ে মাটি উর্বর। মানুষের প্রধান জীবিকা কৃষি এবং জনবসতির ঘনত্বও বেশি। সমতল ভূমি থাকায় যাতায়াতের ব্যবহার ও ব্যবস্থাও উন্নত। তিনটি নদী ও উপনদী এবং শাখা নদীর দ্বারা সৃষ্ট এই ভূমির গঙ্গা সমভূমি সর্ববৃহৎ। প্রায় 3 লাখ 57 হাজার বর্গ কিলোমিটার। অসমে ব্রহ্মপুত্র সমতল প্রায় 700 কিলোমিটার দীর্ঘ।
8. সিন্ধু নদীর উপনদী গুলো হল:- শতদ্রু, বিপাশা, রবি ইত্যাদি।
9. গঙ্গা নদীর উৎপত্তি স্থান হল গঙ্গোত্রী।
10. গঙ্গা নদীর উপনদী গুলো হল:- যমুনা, অলকানন্দা, রামগঙ্গা, গোমতী, ঘাগড়া, গণ্ডক, সোন, কুশি ইত্যাদি।
11. ব্রহ্মপুত্র নদীর উৎপত্তি স্থান হল মানস সরোবর।
12.
ব্রহ্মপুত্র নদীর প্রধান উপনদী গুলো হল:-
Ø উত্তর পারে:- সুবর্ণসিরি, ধনশিরি, জিয়াভরলি, পুঠিমারী, পাগলাদিয়া, মানাহ চম্পাবতী ইত্যাদি।
Ø দক্ষিণ পারে:- বুড়িদিহিং,দিচাং, দিখো, ধনশ্রী, কপিলী এবং কৃষ্ণাই।
13. দাক্ষিণাত্যের মালভূমি অঞ্চল কে বিন্ধ, সাতপুরা, মহাদেব এবং মহাকাল পর্বত উত্তর ও দক্ষিণ এই দুই ভাগে ভাগ করেছে।
14. দাক্ষিণাত্যের মালভূমির প্রধান নদী:-
Ø বঙ্গোপসাগরের দিকে প্রবাহিত:- মহানদী, গোদাবরী, কৃষ্ণা, পেনার এবং কাবেরী
Ø আরব সাগরের দিকে প্রবাহিত:- নর্মদা এবং তাপ্তি
15. ভারতের পূর্ব উপকূল প্রায় 1100 কিলোমিটার দীর্ঘ এবং গড়ে 120 কিলোমিটার প্রস্থ। প্রধান হ্রদগুলি হল চিলকা, কুলার এবং পলিকট।
16. পূর্ব উপকূল গোদাবরী নদীর মোহনা থেকে গঙ্গা নদীর মোহনা পর্যন্ত “উত্তর সরকার উপকূল” এবং গোদাবরী নদীর মোহনা থেকে কুমারিকা পর্যন্ত “করমন্ডল উপকূল” নামেও জানা যায়।
17. পশ্চিম উপকূল প্রায় এক হাজার 500 কিলোমিটার দীর্ঘ এবং 10 থেকে 15 কিলোমিটার পর্যন্ত প্রস্থ। পশ্চিম উপকূলের উত্তর অংশকে “কঙ্কন উপকূল” এবং মাঙ্গালোর থেকে কুমারিকা পর্যন্ত “মালাবার” উপকূল নামেও জানা যায়।
18. ভারতের জলবায়ু:-
ভারতের বৃহৎ অঞ্চলে মৌসুমী জলবায়ু পরিলক্ষিত হইলেও বিভিন্ন উপাদান যেমন
উত্তাপ, বায়ুর চাপ, বাতাস, আর্দ্রতা, দেশটির বিশালতা, বিষুবরেখা থেকে দূরত্ব, মৌসুমী বায়ুর প্রভাব, কর্কট ক্রান্তির অবস্থিতি, ভূ প্রকৃতির ভিন্নতা, স্থানীয় বাতাসের প্রভাব ইত্যাদির তারতম্যের ফলে ভারতের জলবায়ু স্থান বিশেষে ভিন্ন। ভিন্ন
ভিন্ন অক্ষাংশ ভেদে উত্তাপের ভিন্নতা এবং কর্কটক্রান্তির উত্তর অংশের তুলনায় দক্ষিণ অংশের উত্তাপ বেশি। পার্বত্য অঞ্চলে যেমন স্বাস্থ্যকর শীতল জলবায়ু তেমনি সমতল অঞ্চলে অধিক আদ্রতা সম্পন্ন তৃক্ত জলবায়ু এবং দাক্ষিণাত্যে সাগরের সান্নিধ্য লাভ করে মৃদু ও সমভাবাপন্ন জলবায়ু পরিলক্ষিত হয়। বৃহৎভাবে মৌসুমী বাতাসের দুইটি গতি সমস্ত ভারতের জলবায়ুকে নিয়ন্ত্রণ করে। সেই জন্য ভারতের জলবায়ু কে গ্রীষ্মকালে গরম ও আদ্র এবং শীতকালে শীতল ও শুষ্ক মৌসুমী জলবায়ু এই দুই নামেও অভিহিত করা হয়।
19. মৌসুমী বাতাস ও ভারতে ইহার প্রভাব:-
ঋতু পরিবর্তন, উষ্ণতা এবং চাপের তারতম্যের ফলে প্রবাহিত সাময়িক বায়ু প্রবাহকে মৌসুমী বাতাস বলে। ইহা এক প্রকার পৃষ্টিয় বায়ুপ্রবাহ। যার গ্রীষ্মকালের গতিপ্রবাহ শীতকালের সম্পূর্ণ বিপরীত। আরবি “মৌসম” শব্দ থেকে মৌসুমী শব্দের উৎপত্তি।
গৃষ্মকালে মহাসাগরীয় উচ্চচাপ অঞ্চল থেকে দ্রুতগতিতে কমবেশি সিক্ত ও শীতল বাতাস আরব সাগরের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ভারতে প্রবেশ করে। দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে প্রবাহিত এই বাতাসকে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বাতাস বলে। এই বাতাস প্রচুর পরিমাণ জলীয়বাষ্প বহন করে আনে এবং ভারতের ভূখণ্ডে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটায়। মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে বিশ্বের সর্বাধিক প্রায় 1250 সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত হয়।
শীতকালে উত্তর-পূর্ব দিক হয়ে মধ্য এশিয়া থেকে এই বাতাস ভারতে প্রবেশ করে। একে উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বাতাস বলে। সমগ্র ভারতে ঠান্ডা বাতাস প্রবাহিত হয়। আবার বঙ্গোপসাগরের উপর দিয়ে প্রবাহিত হবার সময় জলীয়বাষ্প সংগ্রহ করে করমন্ডল উপকূলে পুনরায় বৃষ্টিপাত ঘটায়। ভারতীয় অর্থনীতি, কৃষিক্ষেত্র এবং মানুষের জীবনযাত্রার প্রণালী এই বাতাসের উপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল।
20. ভারতের বৃষ্টিপাত:-
দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বাতাসের ফলে ভারতে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয় কিন্তু এই বৃষ্টিপাত সব স্থানে সমান নয় ফলে শস্যের উৎপাদন ও চাষাবাদ ভিন্ন হয়।
বৃষ্টিপাতের বিতরণ:-
Ø উত্তর-পূর্বাঞ্চলের হিমালয়ের পাদদেশ, মেঘালয় মালভূমির দক্ষিণ অংশ, পশ্চিমঘাট পর্বতের ঢালু অংশ ( গড় বৃষ্টি 300 সেন্টিমিটার এর অধিক)
Ø অরুণাচল প্রদেশের বহি: হিমালয় (গড় বৃষ্টি 400 সেন্টিমিটার)
Ø থর মরুভূমি অঞ্চল (গড় বৃষ্টি 50 সেন্টিমিটার এর কম)
Ø দাক্ষিণাত্য মালভূমি, গুজারাট অঞ্চল (গড় বৃষ্টি 50-100 সেন্টিমিটার)
Ø ব্রহ্মপুত্র এবং উত্তর ভারতের সমভূমি অঞ্চল (গড় বৃষ্টি 100-400 সেন্টিমিটার)
21. ভারতের ঋতু সমূহ:-
ঋতু হলো উত্তাপ, বৃষ্টি, বায়ুর চাপ, বাতাস, আদ্রতা, প্রভৃতি আবহাওয়ার উপাদানের ধর্ম এবং লক্ষণগুলির দ্বারা সৃষ্ট কোন এক বিশেষ স্থানের কোন এক বিশেষ সময়ের আবহাওয়ার অবস্থা। ভারতে চারটি ঋতু প্রধানত অনুভূত হয়:-
Ø শীতকাল =
15 ডিসেম্বর থেকে 15 ই মার্চ
Ø প্রাক বর্ষাকাল =
15 ই মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত
Ø বর্ষাকাল = জুন মাস থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত
Ø শীতকাল = অক্টোবর মাস থেকে 15 ই ডিসেম্বর পর্যন্ত
22. ভারতীয় উদ্ভিদের শ্রেণীবিভাগ:-
উদ্ভিদের বৃদ্ধি ও প্রসার বা বিস্তার প্রধানত জলবায়ু, ভূ প্রকৃতি এবং মাটির গুণাগুণের ওপর নির্ভর করে। ভারতের উদ্ভিদ জগতকে 6 ভাগে ভাগ করা যায়:-
Ø চির সবুজ উদ্ভিদ
Ø মরসুমি উদ্ভিদ
Ø কাটাযুক্ত মরু উদ্ভিদ
Ø তৃণ জাতীয় উদ্ভিদ
Ø ব-দ্বীপিয় উদ্ভিদ এবং
Ø পার্বত্য উদ্ভিদ
23. চিরসবুজ উদ্ভিদ:-
ভারতের যেসব অঞ্চলে বার্ষিক 200 সেন্টিমিটার এর অধিক বৃষ্টি ও 25 থেকে 27 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেট উত্তাপ থাকে, সেই অঞ্চলে উঁচু ও গভীর চিরসবুজ উদ্ভিদ ও
অরন্যের সৃষ্টি হয়। বছরের কোন ঋতুতে পাতা ঝরে না। শিশু, চন্দন, রকর ও অন্যান্য উঁচু গাছ ছাড়াও বাঁশ, বেত, ঢেঁকি এবং লতা জাতীয় উদ্ভিদ প্রধান পশ্চিমঘাট, অরুণাচল হিমালয়, অসম, মনিপুর,ও মিজোরামে চিরসবুজ উদ্ভিদ দেখা যায়।
24. মরসুমী উদ্ভিদ:-
Ø বৃষ্টিপাত 100 থেকে 200 সেন্টিমিটার প্রয়োজন
Ø উত্তাপ গড়ে 27 ডিগ্রী সেন্টিগ্রেট প্রয়োজন
Ø শীতকালে কম বৃষ্টি ও শুকনোর জন্য পাতা ঝরে
Ø শাল, সেগুন, শিশু, অর্জুন, শিমুল, বাঁশ আদি উদাহরণ
Ø অসম, পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, উত্তরপ্রদেশ, হিমাচল প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, তামিলনাডু ও হারিয়ানায় উদ্ভিদ পাওয়া যায়।
25. কাটাযুক্ত মরু উদ্ভিদ:-
Ø বৃষ্টিপাত 50 সেন্টিমিটারের কম
Ø উত্তাপ সব সময়ই বেশি ও বেলে মাটিতে হয়
Ø জলের অভাব এবং উদ্ভিদ গুলো গোটা ও কাঁটাযুক্ত
Ø একশিয়া, ক্যাকটাস, খেজুর, কুল ইত্যাদি উদাহরণ
Ø রাজস্থানের থর মরুভূমি ও পাঞ্জাবের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে এই উদ্ভিদ পাওয়া যায়।
26. তৃণ জাতীয় উদ্ভিদ:-
Ø বৃষ্টিপাত 50 থেকে 100 সেন্টিমিটার হতে হবে
Ø উত্তাপ 20 ডিগ্রী থেকে 25 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেট থাকতে হবে
Ø ঘাস, ঝোপ-ঝাড় জাতীয় গাছ, কাটাযুক্ত গাছ, নলখাগরা, ইকরি, খয়ের, শিমুল ইত্যাদি উদাহরণ।
Ø হারিয়ানা, পাঞ্জাব, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্ণাটক, মহারাষ্ট্র ও হিমালয়ের তরাই অঞ্চলে এই উদ্ভিদ দেখা যায়।
27. ব-দ্বীপিয় উদ্ভিদ:-
Ø সমুদ্রের তীর ভূমি ব দ্বীপ অঞ্চলে উদ্ভিদ পাওয়া যায়
Ø এই উদ্ভিদ কে মেনগ্রুভ উদ্ভিদও বলে
Ø কচ্ছ উপসাগরের উপকূল অঞ্চল, সুন্দরবন, মহানদী, কৃষ্ণা, কাবেরী, গোদাবরী, নদীর বদ্বীপ অঞ্চলে এই উদ্ভিদ প্রচুর পরিমাণে পায়।
Ø সুন্দরী, তাল, নারিকেল ইত্যাদি এই উদ্ভিদের উদাহরণ
28. পার্বত্য উদ্ভিদ:-
Ø উচ্চতা অনুসারে ভিন্ন ভিন্ন উদ্ভিদ দেখা যায়
Ø 1000 মিটার উচ্চতায় মৌসুমী অরণ্য যেমন শাল, সেগুন, বাঁশ ইত্যাদি প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়।
Ø 1000 থেকে 2000 মিটার উচ্চতায় সরল জাতীয় চির সবুজ উদ্ভিদ দেখা যায়। এখানে গাছগুলো উচ্চ ও প্রশস্ত পাতার।
Ø 1600 থেকে 3000 মিটার উচ্চতায় সরল জাতীয় দেবদারু অরণ্য দেখা যায়।
Ø অধিক উচ্চতায় আল্পিয় উদ্ভিদ দেখা যায়।
Ø পার্বত্য উদ্ভিদ শিবালিক পার্বত্য অঞ্চল ও তার উত্তর অঞ্চল, উত্তর-পূর্ব পার্বত্য অঞ্চল, কাশ্মীর, হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাঞ্চল, দার্জিলিং ও সিকিম পার্বত্য অঞ্চলে দেখা যায়।
29. ভারতবর্ষে উদ্ভিদের ভূমিকা:-
Ø ভারত বর্ষ উদ্ভিদ ও অন্যান্য মূল্যবান বনজ সম্পদে ভরপুর
Ø বহু ঔষধি উদ্ভিদের সমাহার
Ø বহু প্রকারের জীবজন্তু ও প্রাণীর বসবাস স্থান
Ø প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে
Ø মাটিতে জল ধরে রাখে ও ভূমিক্ষয় রোধ করে
Ø উদ্ভিদের আস্তরন মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করে
Ø ভারতের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের সহায়ক
Ø বহু ছোট বড় উদ্যোগ উদ্ভিদের উপর নির্ভরশীল
Ø আর্থিক লাভ ও জীবন নির্বাহের উপাদান
Ø সুরক্ষিত পরিবেশের জন্য সংরক্ষণের প্রয়োজন
30. ভারতের জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও বিন্যাস:-
চীনের পর ভারত দ্বিতীয় জনবহুল দেশ। ভারতীয় জনগণ অস্ট্রো-এশীয়, মঙ্গোলীয়, আর্য এবং দ্রাবিড় জনগোষ্ঠীর সংমিশ্রণের ফলে নানা জাতি, উপজাতি, সম্প্রদায়, ভাষা ,সংস্কৃতি ও ধর্মের সমাহারে এক বৃহৎ ভারতীয় সমাজের সৃষ্টি হয়েছে।
2011 সালের লোকপিয়ল অনুসারে ভারতে পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার 17.5 শতাংশ লোক বসবাস করে। অর্থাৎ 1210193422 জন। 1901 সালে এই জনসংখ্যা ছিল 23.84 কোটি। 1901 থেকে 2011 পর্যন্ত প্রায় 98 কোটি লোক বৃদ্ধি হইয়াছে যাহা অতিশয় চিন্তনীয়। জনসংখ্যার ঘনত্বও তদ্রুপ 1901 সালে 77 জন প্রতি বর্গ কিলোমিটারে যাহা 2011 সালে হয়েছে 382 জন।
জনসংখ্যার এই অকল্পনীয় পরিবর্তন দেশের এক জ্বলন্ত এবং জটিল সমস্যা। ভারতের জনসংখ্যা বৃদ্ধির মূল কারণগুলো হলো:-
Ø জন্মের হার মৃত্যুর হার থেকে বেশি এবং
Ø জন প্রব্রজন
ভারতের সকল অঞ্চলে জনসংখ্যার ঘনত্ব সমান নয়। অঞ্চলভেদে জনসংখ্যার বিন্যাসও ভিন্ন। ভারতের উত্তরপ্রদেশ সর্বোচ্চ জনবহুল রাজ্য যেখানে জনসংখ্যা দেশের 16.49 শতাংশ অর্থাৎ 199581477 জন। লাক্ষাদ্বীপে সর্বনিম্ন 0.01 শতাংশ অর্থাৎ 68829 জন। দ্বাদশ স্থানে অবস্থিত অসমের মোট জনসংখ্যা হল 31169272 জন, অর্থাৎ ভারতের মোট জনসংখ্যার 2.58 শতাংশ লোক অসমে বসবাস করে।
31. জন প্রব্রজন:-
মানুষ স্থায়ী বা অস্থায়ী ভাবে বাসস্থান ছেড়ে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে গমন করাকে জনপ্রব্রজন বলে। সচরাচর সম্পদহিন অঞ্চল থেকে সম্পদপূর্ণ অঞ্চলের দিকে প্রব্রজন ঘটে। জনপ্রব্রজন আভ্যন্তরীণ অর্থাৎ দেশের ভিতরে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে গতি এবং বাহ্যিক অর্থাৎ দেশের ভেতর থেকে অন্য দেশে গতি করেও ঘটিতে পারে। বাহ্যিক প্রব্রজনকে আন্ত:রাষ্ট্রীয় জনপ্রব্রজন বলা হয়।
ভারতে আন্তঃরাজিক অর্থাৎ রাজ্যের মধ্যে আভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক প্রব্রজন দেখা পাওয়া যায়। ভারতের জন্মস্থানের ভিত্তিতে 1961 সালে প্রব্রজনকারীর সংখ্যা ছিল 144 নিযুত যা 2001 সালে 307 নিযুতে পৌঁছেছে। ভারতে আন্তঃরাজিক এবং আভ্যন্তরীণ প্রব্রজন গ্রাম থেকে গ্রামে, গ্রাম থেকে শহরে, শহর থেকে গ্রামে, ও শহর থেকে শহরে ঘটে। এই প্রব্রজনের মূল কারণগুলো হলো:-
Ø সামাজিক এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের বৈষম্য
Ø ভূমির উপর বর্ধিত জনসংখ্যার চাপ
Ø কর্মসংস্থানের সুযোগ সুবিধা
Ø শিক্ষার প্রসার
Ø বিবাহ
Ø অন্য কারণ ইত্যাদি
ভারতের প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ প্রভৃতি রাষ্ট্রে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং শৈক্ষিক কারণে প্রব্রজন ঘটে। 2001 সালের গণনা অনুসারে প্রায় 5.1 নিযুত প্রব্রজনকারীর আন্তরাষ্ট্রীয় প্রব্রজন ঘটে ভারতে।
32. প্রব্রজনের
প্রভাব্:-
Ø জাতি, ধর্ম, ভাষা,সংস্কৃতির ভিন্নতায় বহুবর্ণী বৈচিত্র্যপূর্ণ সংস্কৃতি গড়ে উঠে।
Ø ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারে অর্থনীতির পরিবর্তন হয়।
Ø জনসংখ্যা বৃদ্ধি, ঘনত্ব, শিক্ষিতের হার পরিবর্তনের মাধ্যমে জনবিন্যাসের পরিবর্তন হয়। স্থায়ী-অস্থায়ী দের মধ্যে আর্থ সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধার্মিক সমস্যার সৃষ্টি হয়।
Ø জনসংখ্যা বৃদ্ধি হয় যাহা অন্যান্য আর্থ সামাজিক সমস্যার সৃষ্টি করে এবং প্রত্যক্ষ কারক।
Ø ভু-সম্পদ, কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খন্ডের উপর চাপ বাড়ে এবং পরিবেশতন্ত্র বিঘ্নিত হয়।
Ø ধর্মীয়, সামাজিক ও রাজনৈতিক সংঘাতের সৃষ্টি হতে পারে।
Ø মিলা-মেশায় অনীহা, সহনশীলতার অভাব ইত্যাদি মানসিক চাপ বৃদ্ধি করে।
Ø শহর অঞ্চলে অস্বাস্থ্যকর বস্তি গড়ে উঠে পারিপার্শ্বিকতার বিনষ্ট সাধন করে।
Ø দেশের বা রাজ্যের রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হয়।
Ø নতুন পরিকল্পনার মাধ্যমে সম্পদের ব্যবহার বৃদ্ধি হয় যা দেশের জন্য ভাবুকিস্বরূপ
33. জনসংখ্যা ও বহনক্ষম উন্নয়ন:-
জৈবিক উপাদান হিসাবে অন্যান্য জীবের তুলনায় মানুষের প্রভাব পরিবেশের উপর সর্বোচ্চ। অকল্পনীয় জনসংখ্যা বৃদ্ধি প্রাকৃতিক পরিবেশের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। বাসস্থানের সমস্যা, জনসংখ্যার প্রসার, ভূমির অত্যাধিক ব্যবহার, কৃষিকার্যেয় সম্প্রসারণ, অর্থনৈতিক কার্যকলাপ এর পরিসর বৃদ্ধি, প্রাকৃতিক সম্পদের অত্যাধিক মাত্রায় ব্যবহার, নগরায়ন ও শিল্পায়নের প্রসার ইত্যাদি কথাগুলোর গুরুত্বও বেড়েছে। পরিবেশ ধ্বংস প্রক্রিয়ার পরিণতিতে জনসমাজ ভয়াবহ বিপদের সম্মুখীন হয়েছে।
কিন্তু আধুনিক বিশ্বে মানুষের উন্নতিকল্পে নিত্য নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হইয়াছে। নতুন প্রযুক্তিতে উন্নয়ন প্রক্রিয়া বজায় রাখতে পরিবেশের ক্ষতি সাধন না করে সম্পদ আহরণ, জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার নিয়ন্ত্রণ, সম্পদের যথাযথ ব্যবহার এবং পরিবেশের পুনরুদ্ধার করে দেশে বহনক্ষম উন্নয়ন এর দিকে গুরুত্ব প্রদান করা হইয়াছে।
34. ভারতীয় অর্থনীতির বৈশিষ্ট্য:-
ভারতীয় অর্থনীতির বৈশিষ্ট্য গুলো:-
Ø নিম্ন মাথাপিছু আয়:- কোন ব্যক্তির জীবন নির্বাহের মানদণ্ডের প্রধান সূচক হলো তার আয়। মোট জাতীয় আয়কে মোট জনসংখ্যা দিয়ে ভাগ করলে মাথাপিছু আয় পাওয়া যায়। ভারতে 2009-10 সালে এই আয় মাসে মাত্র 2811 টাকা ছিল।
Ø মাথাপিছু আয়ের মন্থর গতি:- প্রতি বছরে মাথাপিছু আয় বৃষ্টি হচ্ছে যদিও এই হার সামান্য। 2008-09 সালে থেকে 2009-10 সালে এই বৃদ্ধি কেবল 1930 টাকা।
Ø জনবিস্ফোরণ:- ভারতের অর্থনীতি রোগাগ্রস্ত। 1947 সালের 350 নিযুত জনসংখ্যা 2011 সালে 1210 নিযুত হয়েছে। জনবিস্ফোরণ অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান ও শিক্ষার উপর প্রভাব বিস্তার করিতেছে এবং দারিদ্রতা, বেকারত্ব ইত্যাদি বৃদ্ধি করেছে।
Ø দারিদ্রতা:- পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ ভারতে বসবাস করে। 2011 সালের পিঅল অনুসারে ভারতের 27.5 শতাংশ অর্থাৎ 30 কোটিরও অধিক লোক ভারতে দরিদ্র।
Ø কৃষি নির্ভরশীলতা:- 2001 সালে ভারতের মোট জনসংখ্যার 60 শতাংশ কৃষির উপর নির্ভরশীল ছিল। এই নির্ভরশীলতা পরম্পরাগত এবং প্রযুক্তি বিহীন তথা অনুন্নত।
Ø বর্ধিত বেকারত্ব:- জনবিস্ফোরণ এবং বর্ধিত কর্মক্ষম লোকের সংস্থাপনের অভাব বেকারত্বের সংখ্যাকে ক্রমশ বৃদ্ধি করিতেছে।
Ø পরিকল্পনা ভিত্তিক উন্নয়ন:- ভারতীয় অর্থনীতির উন্নতি সাধনে 1951 সালে প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। বর্তমানে হস্ত্রকালীন ও দীর্ঘকালীন উভয় পরিকল্পনা গ্রহণ করা পরিলক্ষিত হয়।
35. ভারতীয় অর্থনীতিতে কৃষির গুরুত্ব:-
ভারতীয় অর্থনীতিতে কৃষির গুরুত্ব অসীম
Ø জনসাধারণ খাদ্য আহরণের জন্য উপর নির্ভর করতে হয়।
Ø দেশের কর্মক্ষম লোকের 60% র বেশি লোক কৃষি খন্ডে নিয়োজিত।
Ø রাষ্ট্রীয় আয়ের সর্বাধিক অংশ কৃষি খণ্ড থেকে আসে।
Ø কৃষিজাত দ্রব্য উপর ভিত্তি করে বহু সংখ্যক শিল্প উদ্যোগ প্রতিস্থিত হয়েছে।
Ø কৃষিখন্ডের উৎপাদিত সামগ্রী বৈদেশিক মুদ্রা আহরণের উৎস ইত্যাদি।
36. ভারতীয় অর্থনীতিতে শিল্প খন্ডের গুরুত্ব:-
ভারতীয় অর্থনীতিতে শিল্পের গুরুত্ব যথেষ্ট:
Ø জাতীয় উৎপাদনের 28% রও অধিক শিল্পখন্ড থেকে আসে।
Ø শিল্পখন্ডের সংখ্যা ও উৎপাদনের দ্রুত বৃদ্ধি।
Ø শিল্পখন্ড কর্মসংস্থাপন ও বেকারত্ব সমস্যা সমাধানের উপায়।
Ø বৃহৎ উদ্যোগগুলো দেশের অন্তর্গত ব্যবস্থার উন্নয়নে প্রভাবশালী।
Ø উদ্যোগখন্ডে বিদেশী সংস্থা দের লগ্নি।
Ø উদ্যোগখন্ড ভোগ্য সামগ্রীর চাহিদা মেটাতে সক্ষম।
37. ভারতের রাজনৈতিক বিভাগ:-
ভারতে মোট 29 টি রাজ্য ও 7 টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল আছে
রাজ্য গুলো হল:- অন্ধ্রপ্রদেশ অরুণাচল প্রদেশ, অসম, বিহার, গোয়া, ছত্রিশগড়, গুজরাট, হারিয়ানা, হিমাচল প্রদেশ, জম্মু ও কাশ্মীর, ঝাড়খন্ড, কর্ণাটক, কেরালা, মধ্যপ্রদেশ,, মহারাষ্ট্র, মনিপুর, মেঘালয়, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, উড়িষ্যা, পাঞ্জাব, রাজস্থান, সিকিম, উত্তর প্রদেশ, তামিলনাডু, তেলেঙ্গানা, ত্রিপুরা, উত্তরাখণ্ড, এবং পশ্চিমবঙ্গ।
কেন্দ্রীয় শাসিত অঞ্চল গুলো হল:- আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, চন্ডিগড়, দিল্লি, দাদরা ও নগর হাভেলি, দমন ও দিউ, লাক্ষাদ্বীপ এবং পন্ডিচেরি।
আয়তনে রাজস্থান সর্ববৃহৎ ও সিকিম সর্বনিম্ন। দিল্লি রাষ্ট্রীয় রাজধানী ক্ষেত্র।
**********************************
0 Comments
HELLO VIEWERS, PLEASE SEND YOUR COMMENTS AND SUGGESTION ON THE POST AND SHARE THE POST TO YOUR FRIEND CIRCLE.