প্রত্যয় - সেবা অসম দশম শ্রেনী বাংলা ব্যাকরণ


ASSAM SEBA/SMEBA CLASS 10 BENGALI GRAMMAR
সেবা অসম দশম শ্রেনী বাংলা ব্যাকরণ
বিষয় : প্রত্যয়

প্রত্যয়
যে বর্ণ বা বর্ণসমষ্টি ধাতু-প্রকৃতি বা শব্দ প্রকৃতির সাথে যুক্ত হয়ে তু শব্দ বা ধাতু গঠন করে, সেই বর্ণ বা বর্ণসমষ্টিকে প্রত্যয় বলে যেমন - রাধ+উনী = রাধুনী, কান্ +আই = কানাই 
প্রত্যয়ের শ্রেণিবিভাগ :-
প্রত্যয় প্রধানত দুই প্রকার যথা
) কৃৎ প্রত্যয় ) তদ্ধিত প্রত্যয়
কৃৎ প্রত্যয় : ধাতু প্রকৃতির সাথে যে প্রত্যয় যোগ করে নতুন শব্দ গঠন করা হয় তাকে কৃৎ প্রত্যয় বলে যথা- চল + অন্ত = চলন্ত 
তদ্ধিত প্রত্যয় : শব্দ-প্রকৃতির সাথে যে প্রত্যয় যােগ করে নতুন শব্দ গঠন করা হয়, তাকে তদ্ধিত প্রত্যয় বলে যথা- সাপ + উড়ে = সাপুড়ে
মূলশব্দ বা মৌলিক শব্দের সঙ্গে যে অতিরিক্ত শব্দাংশ যুক্ত হয়ে নতুন নামপদ গঠন করে, তাকে প্রত্যয় বলে। অর্থাৎ, প্রাতিপদিক ও ধাতুর সঙ্গে যেই শব্দাংশ যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ গঠন করে, তাদেরকেই প্রত্যয় বলে। উপরের উদাহরণে, লাজুক শব্দের প্রকৃতি লাজ’-এর সঙ্গে প্রত্যয় উকযুক্ত হয়ে গঠিত হয়েছে লাজুকশব্দটি। বাংলা ব্যাকরণে ধাতু চিহ্নিত করার জন্য একটি আলাদা ব্যাকরণিক চিহ্ন () ব্যবহৃত হয়। একে বলা হয় ধাতু চিহ্ন। অর্থাৎ পড় মানে পড়ধাতু। এমনিভাবে-
প্রকৃতি + প্রত্যয় = প্রত্যয়সাধিত শব্দ
a)  বড়  + আই   = বড়াই
b)  ঘর  + আমি   = ঘরামি
c)  পড়  + উয়া   = পড়ুয়া
d)  নাচ  + উনে   = নাচুনে
e)  জিত  +    = জিতা
f)   চল্ (গমন করা) +ই =চলি
g)  অৎ (গমন করা) +ই =অতি (অধিক)
বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত প্রত্যয়গুলোকে ভাষাগত প্রকৃতি অনুসারে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়। এই ভাগগুলো হলো
1. সংস্কৃত প্রত্যয় :
এই প্রত্যয়কে মোট পাঁচটি ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। এ গুলি হলো
a)  কৃৎপ্রত্যয় (Primary suffix)
b)  তদ্ধিত প্রত্যয় (Secondary suffix)
c)  স্ত্রী-প্রত্যয় (faminine suffix)
d)  ধাত্ববয়ব (Parts of roots)
e)  বিভক্তি (Inflection)
2. বাংলা প্রত্যয় :
দেশী প্রত্যয়কেই বলা হয়, বাংলা প্রত্যয়।
3. বিদেশী প্রত্যয় :
সংস্কৃত ও বাংলা ব্যতীত অন্যান্য প্রত্যয়গুলো বিদেশী প্রত্যয় বলা হয়।
I. সংস্কৃত প্রত্যয়:
এই প্রত্যয়কে মোট পাঁচটি ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। প্রত্যয় প্রধানত পাঁচ প্রকার। এ গুলি হলো
a) কৃৎপ্রত্যয় (Primary suffix)
b) তদ্ধিত প্রত্যয় (Secondary suffix)
c)  স্ত্রী-প্রত্যয় (faminine suffix)
d) ধাত্ববয়ব (Parts of roots)
e) বিভক্তি (Inflection)

i. কৃৎপ্রত্যয়:-
সংস্কৃত কৃৎপ্রত্যয় > বাংলা কৃৎপ্রত্যয়।
বাংলা ব্যকরণে পাঁচটি প্রত্যয় -এর একটি।
যে প্রত্যয় ক্রিয়ামূলের শেষে যুক্ত হয়ে নূতন শব্দ তৈরি করে, তাকে কৃৎপ্রত্যয় বলে। বিদ্যাসাগর প্রণীত ব্যাকরণ কৌমুদী - তে এর ইংরেজি সমার্থ শব্দ হিসাবে বলা হয়েছে - primary suffixযেমন
চল্ (গমন করা) +ই = চলি
কৃৎপ্রত্যয়ের তালিকা:-
অ (অ)
অ (অঙ)
অ (অচ্)
অ (অণ্)
অ (অন্)
অ (অপ্)
অ (ক)
অ (কঞ্)
অ (খচ্)
অ (খল্)
অ (খশ্)
অ (ঘ)
অ (ঘঞ্)
অ (ট)
অ (টক্)
অ (টচ্)
অ (ড)
অ (ডট)
অ (ণ)
অ (শ)
অ (ষ)
অ (ষ্ণ)
অই
অক (কুন)
অক (ণ্বুল)
অঙ্গ (অঙ্গচ্)
অট্ (অটন)
অটি
অণ্ড (অণ্ডক)
অৎ (অতি)
অৎ (শতৃ)
অত (অতক)
অতি (অতিচ)
অতি (ডতি)
অত্র (অত্রন্)
অন
অন্ (অনট)
অন্ (ল্যুট)
অন (কনিন্)
অন (ক্যুন)
অন (যুচ্)
অন (ল্যু)
অনীয় (অনীয়রঃ)
অন্ত (ঋচ্)
অন্ত (ঝ)
অন্য
অভ (অভচ্)
অম
অম্ব (অম্বচ্)
অর্
অর (অরন্)
অরি
অরু
অল (অলচ্)
অল (কল)
অল (কলচ)
অলি (অলিচ)
অস্
অস্ (অসচ্)
অস (অসুন)

আতু
আন (আনক্)
আন (মান)
আর (আরন)
আলু (আলুচ)
ই (ই)
ই (ইচ্)
ই (ইন্)
ই (ইঞ্)
ই (কি)
ইৎ
ইত
ইন্
ইন্ (ইনচ্)
ইন (ইনি)
ইন্ (ঘিনুণ্)
ইন্ (ণিনি)
ইম (ইমচ)
ইর (ইরন)
ইর্ (কিরচ)
ইল (ইলচ)
ইষ্ (ইষচ্)
ইষ্ (টিষচ্)
ইষ্ণু (ইষ্ণুচ্)

ঈক (ঈকন)
ঈর (ঈরচ)

উ (উঙ্)
উ (উন)
উ (কু)
উ (কূ)
উ (ডু)
উক্ (উক্‌ঞ)
উক্ (উকন)
উৎ (উতি)
উত (ডুতচ)
উন (উনট্)
উন্ (উনন্)
উন্য
উম
উর্
উর্ (উরন্)
উর্চ (ডুর্চ)
উল
উল্ (উলচ্)
উল (ঘুল)
উলি
উশ্
উষ (উষচ্)
উষ (কুষন্)
উস (উসি)
ঊর
ঊষ্ (ঊষন্)
এণু
ওর (ওরন)
ওল্ (ওলচ্)
ওল (ওলট)

ক (কন)
ক্বিপ্ (০)

গ (গক্)

ত (ক্ত)
ত (তন্)
তব্য
তব্য (তব্যৎ)
তি
তি (ক্তিচ্)
তি (ক্তিন্)
তু
তু (তুন্)
তৃ (তৃচ্)
ত্যু (ত্যুক)
ত্র
ত্র (ত্রক)
ত্র (ত্রন্)
ত্র (ষ্ট্রন)
ত্রিম (ত্রিমক)
থ (কথন)
থ (থক)
থ (থন্)
থি (কথিন)

ন (নক্)
ন (নঙ্)
ন (নন্)
নি

পাস
ব (ক্বন)
ব (বন্)
বন্ (ঙ্‌বনিপ্)
বর (বরচ্)
ভ (ভন্)
ম (মক্)
ম (মন্)

মন্ (মনিন্)
মল (ক্মলচ)
মান (শানচ্)
মি

য (ক্যপ)
য (ণ্যৎ)
য (যৎ)
যু (যুচ্)

র (ড্রট)
র (রক্)
র (রন)
রি (ক্রিন)



স (সন্)
সর
সর (সরন্)
সি (কসি)
স্রাবি
স্রু
হন্

কৃৎ প্রত্যয়ের কয়েকটি উদাহরণ : -
ছেদ + অনি = ছেদনী ঘুম + অন্ত = ঘুমন্ত  গম + অন = গমন  উঠ + অতি = উঠতি  জীয়া + অন্ত = জীয়ন্ত  ঢাল + আই = ঢালাই পড় + উয়া = পড়ুয়া  ঢাক + অন = ঢাকন এলা + = এলায়িত  বাচ + অন = বাচন কৃ + অনীয় = করণীয় উড়া + অন = উড়ন খা + ওন = খাওন জ্বল + অন্ত = জ্বলন্ত  ছাড় + = ছাড় কাদ + অন = কাদন ডুব + উরী = ডুবুরী  কর + = করিত বচ্ + তব্য = বক্তব্য 

ii. তদ্ধিত প্রত্যয়:-
আক্ষরিক অর্থ -তাহার জন্য হিতকর। কিন্তু ব্যাকরণে এটি একটি প্রত্যয় হিসাবে ব্যবহৃত হয়। এই কারণে, এর পূর্ণাঙ্গ নাম -তদ্ধিত প্রত্যয়।
বাংলা ব্যকরণে পাঁচটি প্রত্যয়ের একটি হলো তদ্ধিত প্রত্যয়। যে প্রত্যয় শব্দমূলের শেষে যুক্ত হয়ে নূতন শব্দ তৈরি করে, তাকে তদ্ধিত-প্রত্যয় বলে। বিদ্যাসাগর প্রণীত ব্যাকরণ কৌমুদী এর ইংরেজি সমার্থ শব্দ হিসাবে বলা হয়েছে-secondery suffix বাংলা শব্দে ব্যবহৃত তদ্ধিত প্রত্যয়ের তালিকা নিচে তুলে ধরা হলো-

অ (অচ)
অ (অঞ্)
অ (অণ্)
অ (ডট্)
অক (বুঞ্)
অক্ (ষ্কন্)
অঠ (অঠন্)
অয় (অয়চ্)
অয় (কয়ন)

আৎ

ই (ইঞ্)
ইক (ঠক্)
ইক (ঠঞ্)
ইক (ঠন্)
ইষ্ঠ (ইষ্ঠন)
ইত (ইতচ্)
ইন্ (ইনি)
ইম [ডিমচ]
ইমন্ (ইমনিচ্)
ইয় (ঘ)
ঈন (খ)
ঈয় (ছ)
ঈয়স্ (ঈয়সুন্)



ক্ (কন্)
ক (কপ্)
ণিচ্
ত (তপ)
তঃ (তস্)
তা (তল্)
তীয়
ত্ব
দার
দারি

বৎ (বতুপ)
মৎ (মতুপ)
মন্দ
ময় (ময়ট্)
য (যক)
য (যৎ)
য (ষ্যঞ্)
ল (লচ্)
লব
ষ (ণ্য)
সাৎ


তদ্ধিত প্রত্যয়ের কয়েকটি উদাহরণ :-  
পাণ্ডু + ষ্ণ = পাণ্ডব রঘু + ষ্ণ = রাঘব  শিশু + ষ্ণ = শৈশব দশরথ + ষি = দাশরথি স্থান + নীয় = স্থানীয়  কুল + লীন = কুলীন  জজ + অতি = জজয়তি  ঘোষ + ণা = ঘোষণা  বাঁশ + অরি = বাঁশরী  ভিখ + আরী = ভিখারী  বাবু + আনি = বাবুয়ানি এক + লা = একলা  ভাড়া + আর = ভাড়ার  লাঠি + আল = লাঠিয়াল  কারি + গর = কারিগর  ধার + আল = ধারাল শান্তিপুর + = শান্তিপুরী মিঠা + আই = মিঠাই  মেয়ে + লি = মেয়েলি  তামা + টে = তামাটে  পাত + ড়া = পাতড়া দীঘ + = দীঘল বন্ধু + তা = বন্ধুতা  দুধ + আল = দুধাল ধ্রুপদ + = ধ্রুপদী 

iii. স্ত্রী-প্রত্যয়:-
বাংলা ব্যকরণে পাঁচটি প্রত্যয়ের একটি। ব্যাকরণে বর্ণিত স্ত্রীবাচক শব্দ উৎপন্ন হওয়ার ক্ষেত্রে যে সকল প্রত্যয় ক্রিয়ামূলের শেষে যুক্ত হয়, এদেরকে স্ত্রী-প্রত্যয় বলা হয়। বিদ্যাসাগর প্রণীত ব্যাকরণ কৌমুদী এর ইংরেজি সমার্থ শব্দ হিসাবে বলা হয়েছে- feminine Affixবাংলা ভাষায় স্ত্রীবাচক শব্দ সৃষ্টির ক্ষেত্রে ব্যবহৃত স্ত্রী-প্রত্যয়ের দুটি উৎস পাওয়া যায়। এই উৎস দুটি হলো- সংস্কৃত স্ত্রী-প্রত্যয় এবং বাংলা স্ত্রী-প্রত্যয়। নিচে বাংলাতে ব্যবহৃত স্ত্রী-প্রত্যয়ের তালিকা তুলে ধরা হলো-

আ (টাপ্)
ঈ (ঈপ্)
ঈ (ঙীপ্)
ঈ (ঙীষ)
নী

iv. বিদেশী প্রত্যয়:-
যে সকল সংস্কৃত ও দেশী প্রত্যয় ছাড়া সকল প্রত্যয়কে বিদেশী প্রত্যয় হিসাবে বিবেচনা করা হয়। নিচে এই জাতীয় প্রত্যয়ের তালিকা তুলে ধরা হলো।
দার
ফার্সি তদ্ধিত প্রত্যয়। ফার্সি দার (ফার্সি প্রত্যয়) > বাংলা দার।
বিভিন্ন ভাব বা অবস্থা প্রকাশে এই প্রত্যয় শব্দের সাথে যুক্ত হয়। যেমন-
a) অধিকারী অর্থে অংশী + দার=অংশীদার, পাওনাদার
b) মালিক অর্থে- জমি +দার=জমিদার, আড়ৎদার
c)  পরিচালক অর্থে- চৌকি + দার=চৌকিদার। দফাদার।
d) বৃত্তি অর্থে- দোকান + দার=দোকানদার, অজুরদার।
e) বিশিষ্ট বা যুক্ত অর্থে নকশা + দার=নকশাদার।

ধাত্ববয়ব:-
সংস্কৃত ব্যাকরণ থেকে গৃহীত পাঁচটি প্রত্যয়ের একটি। বিদ্যাসাগর প্রণীত ব্যাকরণ কৌমুদীতে বলা হয়েছে- ধাতুর উত্তর ই (ণিচ), স (সন্) প্রভৃতি এবং প্রাতিপাদিকের উত্তর য, কাম্য প্রভৃতি যে সমস্ত প্রত্যয় হয়, তাহাদিগকে ধাত্ববয়ব (Parts of roots) বলে। এই বিচারে যে সকল প্রত্যয়কে ধাত্বয়ব বলা হয়। মূলত এই প্রত্যয় কোন ক্রিয়ামূলের সাথে যুক্ত হয়ে নতুন ক্রিয়ামূল তৈরি করে। ফলে এই প্রত্যয় মূল ক্রিয়ামূলের অংশ (Parts of roots) অংশ হিসাবে বিবেচনা করা হয়।
যেমন- চল্ (গমন করা) + ই (ণিচ)= চালি।
চল্ (গমন করা) + য (যঙ্)= চঞ্চল।
শ্রু (শ্রবণ) +স (সন্) =শুশ্রুষ্
নিচে ধাত্ববয়বের তালিকা দেওয়া হলো

ই (ণিচ)
য (যঙ্)
স (সন্)


প্রত্যয় অতিরিক্ত আলোচনা

বাংলা কৃৎ প্রত্যয়:-
নিচে প্রচলিত কয়েকটি বাংলা কৃৎ প্রত্যয়ের উদাহরণ দেওয়া হল
() অন [বিকারে স্বরবর্ণেরওন'] : একাক্ষর ধাতুর উত্তর এই প্রত্যয়ের যোগে ক্রিয়াবাচক বস্তুবাচক বিশেষ্য পদ গঠিত হয় যেমন - ক্রিয়াবাচক :- 
নাচ + অন = নাচন বাঁধ + অন = বাঁধন কাঁদ + অন = কাঁদন দোল + অন = দোলন মর + অন = মরণ লিখ + অন = লিখন ভাঙ্গ + অন = ভাঙ্গন ঝুল + অন = ঝুলন মাজ + অন = মাজন ফল + অন = ফলন 
() অন্ত : একাক্ষর ধাতুতে যুক্ত হয়ে ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য পদ গঠন করে যেমন- 
জীব + অন্ত = জীবন্ত  বাড় + অন্ত = বাড়ন্ত  ঘুম + অন্ত = ঘুমন্ত  ডুব + অন্ত = ডুবন্ত পড় + অন্ত = পড়ন্ত উঠ + অন্ত = উঠন্ত ফুট + অন্ত = ফুটন্ত 
(3) অত, অতা, অতিঃ একাক্ষর ধাতুতে যুক্ত হয়ে বিশেষ্য বা বিশেষণ পদ গঠন করে যেমন -
ফের + = ফেরত ফির + অত = ফিরত মান + অত = মানত বস + অতি = বসতি ফির + অতি = ফিরতি ফের + = ফেরতা 
(8) আই : একাক্ষর ধাতুর উত্তর এই প্রত্যয় যােগে ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য পদ সাধিত হয় যেমন:- 
বাছ + আই = বাছাই -ঢাল + আই = ঢালাই খোদ + আই = খোদাই খুদ + আই = খুদাই যাচ + আই = যাচাই ঝড় + আই = ঝড়াই লড় + আই = লড়াই চড় + আই = চড়াই বাঁধ + আই = বাঁধাই
() আও: ধাতুর উত্তরে ভাবার্থে এই প্রত্যয় যুক্ত হয় যেমন ফল + আও = ফলাও চড় + = চড়াও ঢাল + = ঢালাও পিট + = পেটাও লাগ + আও = লাগাও 
() আন, আনো : ধাতুর উত্তর এই প্রত্যয় যোগে ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য হয় যেমন
জান + আন, আনো = জানান, জানানো মান + ,আন, আনো = মানান,মানানো ঠক + আন, আনো = ঠকান, ঠকানো যোগ + আন, আনো = যোগান, যোগানো 
() ইয়ে : কতকগুলি ধাতুর উত্তর এই প্রত্যয় যােগে কর্তৃবাচক নাম পদ গঠিত হয় যেমন -
নাচ + ইয়ে = নাচিয়ে গা + ইয়ে = গাইয়ে খেল + ইয়ে = খেলিয়ে বাজ + ইয়ে = বাজিয়ে খা + ইয়ে = খাইয়ে লিখ + ইয়ে = লিখিয়ে খাট + ইয়ে = খাটিয়ে
() উক প্রত্যয় স্বভাব নির্দেশ করে
যেমনলাজ + উক = লাজক মিশ + উক = মিশুক ভাব + = ভাবুক হিনস্ + = হিংস্ক
() আরী, উরী : সেই কর্মে দক্ষ এই অর্থে যুক্ত হয় যেমন-
ডব + উরী = ডুবরী কাট + আরী = কাটারী 
(১০) আনি, আনী, অনি, উনী, উনি : একাধিক অক্ষরবিশিষ্ট ধাতর উত্তরে এই প্রত্যয়ের যোগে বিশেষ্য পদ সাধিত হয় যেমন -
নাক + আনি = নাকানি নিড় + উনি = নিড়নি 

বাংলা তদ্ধিত প্রত্যয় 
অট () অটা () আটিয়া (আট, টে) - স্বার্থে বা সাদশ্যে, ভাবার্থে বা শীলার্ধে বিশেষ্য বা বিশেষণ নির্দেশে ব্যবহৃত হয় যেমন -
() সাপ + অট = সাপট ঝাপ + = ঝাপট দাপ + অট = দাপট ভরা + অট = ভরাট ভাড়া + আটিয়া = ভাড়াটিয়া/ ভাড়াটে
() : জলে + = জল এভাবে 
লুন + = লোনা বাঘ + = বাঘা চী + = চীনা পশ্চিম + = পশ্চিমা
() আই : ভাবার্থে বা সমন্ধে বা বিশেষণার্থে ব্যবহৃত হয় যেমন -
বল + আই = বলাই।। কান + আই = কানাই ঢাকা + আই = ঢাকাই চোর + আই = চোরাই নিম + আই = নিমাই বড় + আই = বড়াই মিঠা + আই = মিঠাই
() আমি (আমাে) (মি, ) - ভাব, কর্ম বা অনুকরণ অর্থে ব্যবহৃত হয় যেমন - 
ইতর + আমি = ইতরামি।। পাগল + আমি = পাগলামি বাঁদর + আমি = বাঁদরামি দুঃ + আমি = দুষ্টুমি পাকা + আনো = পাকানো পাকা + আমি = পাকামি
) আরি, আরী, আর ব্যবসায়, বৃত্তি, পেশা, প্রভৃতি অর্থে ব্যবহৃত হয় যেমন - 
শাঁখ + আরী = শাঁখারি মাঝ + আরি = মাঝারি।। রকম + আরি = রকমারি ভিখ + আরী = ভিখারী চাম + আর = চামার 
() () আল, আলো : গুণ, শীল বা সঙ্গী বা সুযােগ নির্দেশে ব্যবহৃত হয় যেমন - 
দুধ + আল = দুধাল রস + অলি = রসাল ধার + আলো = ধারালো  ঝাঝ + আলো = ঝাঝালো
() আলি ভাব অর্থে ব্যবহৃত হয় যেমন -
ঠাকুর + আলি = ঠাকরালি চতুর + আলি = চতুরালি  মিতা + আলি = মিতালি
() , : সম্বন্ধ, সংযোগ, শীল, জাতি, ব্যবসায় হ্রস্বতা প্রভৃতি অর্থে প্রয়োগ করা হয় যেম – 
রাখাল + = রাখালি চাকর + = চাকরি মঙ্গের + = মুঙ্গেরি নবাব + = নবাবী | দোকান + = দোকানী  গোলাপ + = গোলাপী, ঢাক + = ঢাকী রেশম + = রেশমী দেশ + = দেশী শান্তিপুর + = শান্তিপুরী  পশম + = পশমী
(১০) ইয়া : সম্বন্ধ, সদৃশ, বৃত্তি, স্বভাব ইত্যাদি অর্থে বিশেষ্য বিশেষণ রূপে ব্যবহৃত হয় যেমন সম্বন্ধ অর্থে বিশেষ্য
গোবর + ইয়া = গোবরিয়া  পাথর + ইয়া = পাথরিয়া বাদল + ইয়া = বাদলিয়া 
সদৃশ অর্থে বিশেষণঃ বেগুন + ইয়া = বেগুনিয়া  তেল + = তেলিয়া
বৃত্তি অর্থে বিশেষ্য
যোগাড় + ইয়া = আগাডিয়া মোট + = মুটিয়া  জাল + = জালিযা
স্বভাবে অর্থে বিশেষণ
অমোদ + ইয়া = আমোদিয়া  কাদন + ইয়া = কাদনিয়া  আদব + ইয়া = আদরিয়া
যার নাম করা অর্থে বিশেষণ
শহর + ইয়া = শহরিয়া  চীন + ইয়া = চীনিয়া  পাহাড় + ইয়া = পাহাড়িয়া
কালবাচক অর্থে বিশেষণ
সেকাল + ইয়া = সেকালিয়া  একাল + ইয়া = একালিয়া
দিক অর্থে : | উত্তর + ইয়া = উত্তরিয়া
(১১) ইন : রঙ্গ + ইন = রঙ্গিন
(১২) : আদরে, ছোট অর্থে এবং সেই কাজে দক্ষ অর্থে প্রয়োগ করা হয় যেম -
আদর অর্থে : চুম্বন + = চুমু
ছোট অর্থে: শিবনাথ + = শিবু, পঞ্চানন + = পাচ্
দক্ষ অর্থে : সাঁতার + উরু = সাতারু
সম্বন্ধ অর্থে : পিছ + = পিছু নীচ + = নীচু  উঁচ + = উচু  ঢাল + = ঢালু
১৩) উক বিশেষণ অর্থে এর প্রয়োগ করা হয় যেমন  -
পেট + = পেটুক | লাজ + = লাজুক
১৪) উয়া, : বিশেষণার্থে, সম্বন্ধে, সংযোগ নির্দেশে এর প্রয়োগ হয় যেমন -
মাঠ + = মাইয়া/মেঠো  মাছ + উয়া = মাছুয়া/মেছে বন + উয়া = বনুয়া/বুনো গাছ + উয়া = গাছয়া/গেছো  পড় + উয়া = পড়ুয়া
১৫) , তি: নাম + তা = নামতা | চাক + তি = চাকতি 

প্রত্যয় নির্ণয় :

কলীন = কল+ ঈন, (তদ্ধিত প্রত্যয়)
এখনকার = এখন + কার, (তদ্ধিত প্রত্যয়)
কাঁদন = কাঁদ + অন, (কৃৎ প্রত্যয়)
উঠতি = উঠ + তি, (কৃৎ প্রত্যয়)
কাণ্ডারী = কাণ্ডার + , (কৃৎ প্রত্যয়)
গরিষ্ঠ = গুরু + ইষ্ঠ, (তদ্ধিত প্রত্যয়)
গাড়োয়ান = গাড়ি + ওয়ান, (তদ্ধিত প্রত্যয়)
গুণবন্ত = গুণ + বন্ত, (তদ্ধিত প্রত্যয়)
গোয়ালা = গো + ওয়ালা, (তদ্ধিত প্রত্যয়)
১০ ঘরামি = ঘর + আমি, (তদ্ধিত প্রত্যয়)
১১ চলন্ত = + অন্ত, (কৃৎ প্রত্যয়)
১২ চালবাজ = চাল + বাজ, (তদ্ধিত প্রত্যয়)
১৩ চিন্ময় = চিৎ + ময় , (তদ্ধিত প্রত্যয়)
১৪ ঢাকাই = ঢাকা + আই, (তদ্ধিত প্রত্যয়)
১৫ জমকাল = জমক + আল, তদ্ধিত প্রত্যয়)
১৬ জীবন্ত = জীব + অন্ত, (কৃৎ প্রত্যয়)
১৭ জমিদারি = জমিদার + , (তদ্ধিত প্রত্যয়)
১৮ ঢালাই = ঢাল + আই, (কৃৎ প্রত্যয়)
১৯ জাতীয় = জাত + ইয়, (তদ্ধিত প্রত্যয়)
২০ দর্শনীয় = দৃশ + অনীয়, (কৃৎ প্রত্যয়)
২১ নিন্দুক = নিন্দা + উক, (তদ্ধিত প্রত্যয়)
২২ নীলিমা = নীল + ইমন, (তদ্ধিত প্রত্যয়)
২৩ ফাসুরে = ফাস + উরে, (তদ্ধিত প্রত্যয়)
২৪ লৌকিক = লোক + ইক, (ভদ্ধিত প্রত্যয়)
২৫ সমঝদার = সমঝ + দার, (তদ্ধিত প্রত্যয়)
২৬ হিসাবি = হিসাব + , (তদ্ধিত প্রত্যয়).
২৭ সাপড়ে = সাপ + উড়িয়া, (তদ্ধিত প্রত্যয়) 
২৮ মিশুক = মিশ + উক, (কৃৎ প্রত্যয়)
১১ মোগলাই = মোগল + আই, (তদ্ধিত প্রত্যয়)
৩০রাঁধুনি = রাধ + উনি (কৃৎ প্রত্যয়)
৩১ হিংসুক = হিস্ + উক (তদ্ধিত প্রত্যয়)
যোগান = যোগ + আন (তদ্ধিত প্রত্যয়)
৩৩ দর্শনীয় = দৃশ + অনীয় (কৃৎ প্রত্যয়),
৩৪ ঢালাই = ঢাল, + আই (কৃৎ প্রত্যয়)
৩৫ চালবাজ = চাল + বাজ (তদ্ধিত প্রত্যয়)
৩৬ চড়াই = চড় + আই (কৃৎ প্রত্যয়)
৩৭ ঘটকালি = ঘটক + আলি (তদ্ধিত প্রত্যয়)
৩৮ ঘরামি = ঘর + আমি (তদ্ধিত প্রত্যয়)
৩৯ বাবগিরি = বাবু + গিরি (তদ্ধিত প্রত্যয়)
৪০ মিতালি = মিতা + আলি (তদ্ধিত প্রত্যয়)
৪১ জাতীয় = জাত + নীয় (তদ্ধিত প্রত্যয়)
৪২ বাবয়ানা = বাবু + আনা (তদ্ধিত প্রত্যয়) |
৪৩ হিসাব = হিসাব + (তদ্ধিত প্রত্যয়)
৪৪ মোড়ক = মুড় + অক (কৃৎ প্রত্যয়)
৪৫ ফাসুরে = ফাস + উরে (তদ্ধিত প্রত্যয়)
৪৬ কাণ্ডারী = কাণ্ডার + (তদ্ধিত প্রত্যয়)
৪৭ এখনকার = এখন + কার (তদ্ধিত প্রত্যয়)
৪৮ রঙীন = রঙ + ঈন (তদ্ধিত প্রত্যয়)
৪৯ রকমারি = রকম + আরি (তদ্ধিত প্রত্যয়)
৫০ পাকামি = পাকা + আমি (তদ্ধিত প্রত্যয়),
৫১ নিমাই = নিম + আই (তদ্ধিত প্রত্যয়)
৫২ বলাই = বল + আই (তদ্ধিত প্রত্যয়)
৫৩ ঘোলাটে = ঘোলা +টে (তদ্ধিত প্রত্যয়)
৫৪ ভিখারী = ভিখ + আরী (তদ্ধিত প্রত্যয়)
৫৫ চতুরালি = চতুর + আলি (তদ্ধিত প্রত্যয়)
৫৬ দোকানী = দোকান + (তদ্ধিত প্রত্যয়)
৫৭ গোলাপী = গোলাপ + (তদ্ধিত প্রত্যয়)
৫৮ বসাল = রস + আল (তদ্ধিত প্রত্যয়) ,
৫৯ ছেলেমি = ছেলে + মি (তদ্ধিত প্রত্যয়)
৬০ পশ্চিমা = পশ্চিম + (তদ্ধিত প্রত্যয়)
৬১ মধুরতা = মধুর + তা তদ্ধিত প্রত্যয়)
৬২ মুটেগিরি = মুটে + গিরি (তদ্ধিত প্রত্যয়)
৬৩ হাসি = হাস + (কৃৎ প্রত্যয়)
৬৪ জমিদারি = জমিদার + (তদ্ধিত প্রত্যয়
৬৩ রাখাল = রাখ + আল (কৃৎ প্রত্যয়)
৬৪ মুন্সীয়ানা = মুন্সী + আনা (তদ্ধিত প্রত্যয়)
৬৫ দোকানদার = দোকান + দার (তদ্ধিত প্রত্যয়)
৬৬ পাগলা = পাগল + (তদ্ধিত প্রত্যয়)
৬৭ জ্বলন্ত = জ্বল + অন্ত (কৃৎ প্রত্যয়)
৬৮ বসতি = বস + তি (দ্ধি প্রত্যয়)
৬৯ বাবুগিরি = বাবু + গিরি (তদ্ধিত প্রত্যয়)
৭০যাচাই = যাচ + আই (কৃৎ প্রত্যয়)




************

Post a Comment

0 Comments