ASSAM SEBA/SMEBA CLASS 10 BENGALI QUESTIONS & ANSWERS
সেবা দশম শ্রেনী বাংলা প্রশ্ন এবং উত্তর
পাঠ : বাংলার নবযুগ
বিপিনচন্দ্র
পাল (১৮৫৮-১৯৩২)
ASSAM SEBA/SMEBA CLASS 10 BENGALI QUESTIONS & ANSWERS
বাংলার নবযুগ
বিপিনচন্দ্র পাল
লেখক পরিচিতি :
বিপিনচন্দ্র পাল ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের
অন্যতম প্রভাবশালী নেতা। তিনি প্রথমে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের নরমপন্থী নেতা
হিসেবে পরিচিত ছিলেন। পরে তিনি কংগ্রেসের চরমপন্থী নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ
করেন। তিনি ছিলেন একজন খ্যাতনামা প্রতিভাশালী বাগ্মী এবং নতুন বাংলার অন্যতম
সুষ্টা। ১৮৫৮ সালের ৭ নভেম্বর শ্রীহট্ট জেলায় তার জন্ম হয়। জাতীয় কংগ্রেসের
প্রথম অধিবেশনেই তিনি কংগ্রেসে যোগদান করেন। রাজনীতিতে তার প্রথম দীক্ষাগুরু ছিলেন
সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। ১৯০১ সালে তিনি ‘নিউ ইণ্ডিয়া’ নামে
একটি সাপ্তাহিক ইংরেজি পত্রিকার প্রকাশন আরম্ভ করেন। বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন আরম্ভ হলে
তার রাজনৈতিক মতবাদের পরিবর্তন ঘটে এবং তিনি চরমপন্থী নেতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ
করেন। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের সময় তার অসাধারণ বাগ্মিতার জন্য তিনি জাতীয়
নেতা হিসেবে মর্যাদা লাভ করেন। ১৯০৬ সালে তার সম্পাদনায় ইংরেজি দৈনিক ‘বন্দে মাতরম্’
প্রকাশিত হয়। ১৯২১ সালে অসহযোগ আন্দোলনে মতভেদের জন্য যোগ না দেওয়ায় হঠাৎই তার
রাজনৈতিক জীবনের সমাপ্তি ঘটে। লালা লাজপত রায়, বালগঙ্গাধর তিলক এবং তিনি ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ‘লাল-বাল-পাল' হিসেবে বিখ্যাত ছিলেন। ১৯৩২ সালে এই বিপ্লবীর
দেহাবসান ঘটে।
সারাংশ :
আনন্দ মোহন বিলাত থেকে আসবার সময় দেখেন বোম্বাই
শহরে এক নতুন ছাত্ৰমণ্ডলী গড়ে উঠছিল। এই নতুন ছাত্র আন্দোলন থেকেই দাক্ষিণাত্য
শিক্ষা সমাজ (Deccan Education Society)এর
জন্ম হয়। এই সমাজই দাক্ষিণাত্যে আধুনির রাষ্ট্রীয় জীবনের সূচনা করে। লোকমান্য
তিলক, গোপালকৃষ্ণ গোখলে প্রভৃতি প্রসিদ্ধ লোকনায়কেরা
শিক্ষা সমাজ থেকেই দেশসেবাব্রতে দীক্ষালাভ করেন। রানাডে চিপঙ্কর, নামযোশী প্রভৃতি প্রসিদ্ধ ব্যক্তিগণ এই শিক্ষা সমাজের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্ত ছিলেন।
কলকাতায় এসেই সুরেন্দ্রনাথের সঙ্গে মিলিত হয়ে আনন্দমোহন এখানে একটা অপরূপ
প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে আগ্রহী হন। তার ফল স্বরূপ ১৮৭৫-৭৬ সালে ‘কলিকাতা
ছাএলীগ’ (Calcutta Students'
Association) এর প্রতিষ্ঠা হয়। এই ছত্রিমওলীকে আশ্রয়
কব্লেই সুরেন্দ্রনাথ ও আনন্দমোহন উভয়ে তাদের নতুন রাষ্ট্রকর্ম গড়ে তুলেন।
কলিকাতা ছাত্ৰমণ্ডলীর সভাপতি ছিলেন আনন্দমোহন।
সহকারী সভাপতি ছিলেন সুরেন্দ্রনাথ আর প্রথম সম্পাদক ছিলেন কৃষ্ণ বসু। নন্দকৃষ্ণ
বসু সে সময়ে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উজ্জলতম রত্ন ছিলেন। সুরেন্দ্রনাথ এবং
আনন্দমোহন তাদের নতুন কর্ম প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে নন্দকৃষ্ণকে এই ছত্রিমণ্ডলীর
সম্পাদক পদে বৱণ করেন। কারণ এই নন্দকৃষ্ণ তার সমসাময়িক শিক্ষার্থী যুবক মণ্ডলীর
নায়ক স্বরূপ ছিলেন।
এই কলিকাতা ছাত্ৰমণ্ডলীর রঙ্গমঞ্চেই
সর্বপ্রথম সুরেন্দ্রনাথের অসাধারণ বাগ্মী প্রতিভা প্রকাশিত এবং প্রতিষ্ঠিত হয়।
সুরেন্দ্রনাথই সর্বপ্রথম শিথ ইতিহাসের প্রাণোন্মাদিনী স্বাধীনতা সংগ্রামের কাহিনি আমাদের কাছে তোলে
ধরেন। তার বক্তৃতা কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রমণ্ডলীর অন্তরেও একটা অভূতপূর্ব
ভাবের বন্যা ছুটিয়েছিল।
সুরেন্দ্রনাথের এই প্রথম বক্তৃতা আমাদের
কল্পনাকে বাস্তব রাজ্যে এনে ফেলেছিল। বাঙ্গালির মনে ধারণা জন্মেছিল যে ইংরেজ শক্তি অপরাজেয়
কিন্তু শিখের শৌর্য বীর্যের নিকট ইংরেজের শৌর্য বীর্য যে বার বার পরাজয় স্বীকার
করেছে, তা আমরা ভালো করে জানতাম না। সুরেন্দ্রনাথের 'Rise
of the Sikh power in India' শীর্ষক
বক্তৃতা আমাদের জ্ঞান চক্ষু খুলে দেয় এবং স্বাজাত্যাভিমানকে ঐতিহাসিক ভিত্তির উপর
দৃঢ়তার সঙ্গে প্রতিষ্ঠা করে। সুরেন্দ্রনাথের এই বক্তৃতা বাংলার নবযুগের ইতিহাসে
এক স্মরণীয় ঘটনা। সেই স্মরণীয় দিন থেকেই বাংলার ইতিহাসে নতুন রাষ্ট্রকর্ম এবং
জাতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের জন্ম হয়।
শব্দার্থ :
সেবা দশম শ্রেনী বাংলা প্রশ্ন এবং উত্তর পাঠ : বাংলার নবযুগ
শব্দ
|
অর্থ
|
শব্দ
|
অর্থ
|
যুগপৎ
|
একই সঙ্গে।
|
লোকনায়ক
|
জননেতা।
|
অনন্য প্রতিদ্বন্দ্বী
|
অন্য প্রতিদ্বন্দ্বীহীন,
বিপক্ষ বিহীন।
|
প্রতিদ্বন্দ্বী
|
বিপক্ষ, প্রতিযোগী।
|
অলোকসামান্য
|
অসামান্য, লোকজগতে খ্যাত।
|
ইংরাজীনবীশ
|
ইংরাজি শিক্ষায় শিক্ষিত।
|
অন্তঃপুর
|
বাড়ির ভিতর মহল।
|
অপরিজ্ঞাত
|
অজানা, অজ্ঞাত।
|
লিপিবদ্ধ
|
লিখিতরূপে।
|
দুর্ধর্ষ
|
ভয়ানক।
|
প্রেরণা
|
সাহস, উৎসাহ।
|
অভূতপূর্ব
|
যা পূর্বে ঘটেনি এমন
|
ধর্মদ্রোহিতা
|
ধর্মকে অস্বীকার করা।
|
অভিনব
|
নতুন, একেবারে নতুন।
|
শিক্ষার্থী
|
শিক্ষালাভ করতে ইচ্ছুক,
ছাত্র।
|
স্বাজাত্যাভিমান
|
নিজের জাতির প্রতি থাকা অহংকার।
|
স্মরণাতীত
|
স্মরণের অতীত, স্মরণ করা সম্ভব নয় এমন।
|
শৌর্য্য
|
বীরত্ব।
|
প্রাণোন্মাদিনী
|
প্রাণের মধ্যে উন্মাদনা,
ব্যাকুলতার সঞ্চার করে এমন।
|
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
ASSAM SEBA/SMEBA CLASS 10 BENGALI QUESTIONS & ANSWERS
সেবা দশম শ্রেনী বাংলা প্রশ্ন এবং উত্তর পাঠ : বাংলার নবযুগ
Q.1 ‘ছাত্র আন্দোলন’ কোন্ শহরে গড়ে উঠেছিল?
Ans:- বোম্বাই শহরে।
Q.2 দাক্ষিণাত্যে
আধুনিক রাষ্ট্র জীবনের প্রতিষ্ঠাতা কে?
Ans:- দাক্ষিণাত্য শিক্ষা সমাজ।
Q.3 কলিকাতা
ছাত্ৰমণ্ডলীর প্রতিষ্ঠাতা কে?
Ans:- আনন্দমোহন বসু এবং সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়।
Q.4 কোথায়
প্রথম সুরেন্দ্রনাথের বাগ্মী প্রতিভার প্রকাশ ঘটে?
Ans:- কলিকাতা ছামগুলীর রঙ্গমঞ্চে।
Q.5 বোম্বাইয়ে
ছাত্র আন্দোলনের ফলে কীসের জন্ম হয়?
Ans:- দাক্ষিণাত্য শিক্ষা সমাজ।
Q.6 কলিকাতার
ছাত্রমণ্ডলীর সভাপতি কে ছিলেন?
Ans:- আনন্দমোহন বসু।
Q.7 কলিকাতা
ছাত্ৰমণ্ডলীর প্রথম সম্পাদক কে ছিলেন?
Ans:- নন্দকৃষ্ণ বসু মহাশয়।
Q.8 সুরেন্দ্রনাথের
প্রথম বক্তৃতার বিষয় কী ছিল?
Ans:- ‘Rise of the Sikh Power in India’
Q.9 ‘শির দিয়া শীর নেহি দিয়া’ - কে বলেন?
Ans:- নবম শিখ গুরু তেগ বাহাদুর।
Q.10 পঞ্জাব
কেশরী কাকে বলা হয়?
Ans:- রঞ্জিত সিংহ কে।
Q.11 শিখদের
দশম গুরু কে ছিলেন?
Ans:- শুরু গোবিন্দ সিংহ।
Q.12 বিপিন
চন্দ্র পালের প্রথম রাজনৈতিক গুরু কে?
Ans:- সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়।
Q.13 কেমব্রিজ
বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিষয়ক সর্বোচ্চ উপাধির নাম কী?
Ans:- ‘র্যাংলার'।
Q.14 ‘খালসা’ কে সৃষ্টি করেন?
Ans:- গুরু গোবিন্দ সিংহ।
Q.15 কলিকাতা
ছাত্ৰমণ্ডলীর একজন সদস্যের নাম বলো।
Ans:- নন্দকৃষ্ণ বসু।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
ASSAM SEBA/SMEBA CLASS 10 BENGALI QUESTIONS & ANSWERS
সেবা দশম শ্রেনী বাংলা প্রশ্ন এবং উত্তর পাঠ : বাংলার নবযুগ
Q.1 আনন্দমোহন
বোম্বাই শহরে কী দেখে আসেন?
Ans:- আনন্দমোহন বিলাত থেকে ফিরে আসার সময় বোম্বাই শহরের শিক্ষিত ও
শিক্ষার্থীরা মিলিত হয়ে কীভাবে দেশে একটা নতুন শক্তি জাগাবার চেষ্টা করছিল, তা দেখে
আসেন। তখন বোম্বাই শহরে একটা নতুন ছাত্ৰমণ্ডলী (Student Movement) গড়ে উঠে।
Q.2 বোম্বাইয়ের
ছাত্র আন্দোলন কী নামে পরিচিত ছিল? তার উদ্দেশ্য কী ছিল?
Ans:- বোম্বাইয়ের ছাত্র আন্দালন 'Student Movement' নামে
পরিচিত ছিল। তার উদ্দেশ্যে ছিল দেশে একটা নতুন শক্তি জাগিয়ে তোলা।
Q.3 কলিকাতা
ছাত্রমণ্ডলীর সভাপতি ও সম্পাদক কে ছিলেন?
Ans:- কলিকাতা ছাত্রমণ্ডলীর সভাপতি ছিলেন আনন্দমোহন বসু ও সম্পাদক ছিলেন নন্দকৃষ্ণ
বসু।
Q.4 সুরেন্দ্রনাথের
বক্তৃতার বিষয় কী ছিল? তিনি কোথায় প্রথম বক্তৃতা করেছিলেন?
Ans:- সুরেন্দ্রনাথের বক্তৃতার বিষয় ছিল 'Rise of the Sikh Power in India'। কলিকাতা ছাত্রমণ্ডলীর
(Calcutta Students'
Association) রঙ্গমঞ্চে তিনি প্রথম বক্তৃতা করেছিলেন।
Q.5 ভারতের
স্বাধীনতা আন্দোলনের উল্লেখযোগ্য দু’জন চরমপন্থী নেতার নাম লেখো।
Ans:- বালগঙ্গাধর তিলক এবং লালা লাজপত রায়।
Q.6 সত্যেন্দ্রনাথ
ঠাকুর রচিত দুটি গ্রন্থের নাম লেখো।
Ans:- ‘বাল্যকথা' এবং 'বৌদ্ধধর্ম’।
Q.7 ‘শির দিয়া শীর নেহি দিয়া' - কে বলেন ? কথাটির বাংলা
অনুবাদ লেখো।
Ans:- নবম শিখগুরু তেগবাহাদুর।। ‘শির দিয়া শীর নেহি দিয়া' কথাটির
বাংলা অনুবাদ হল - মাথা দিলাম বটে ধর্ম দিলাম না।
Q.8 চরম
পন্থী ও নরম পন্থীদের মধ্যে থাকা মূল দু’টি পার্থক্য লেখো। Ans:- চরমপন্থী ও নরমপন্থীদের মধ্যে থাকা মূল দু’টি
পার্থক্য হল :-
(ক) চরমপন্থীরা বিপ্লবমুখী প্রত্যক্ষ
আন্দালনের পক্ষপাতী। অপরদিকে নরমপন্থীরা নিয়মতান্ত্রিক আন্দালনে বিশ্বাসী।
(খ) নরমপন্থীরা ব্রিটিশ ডোমিনিয়নের মতো
দায়িত্বশীল সরকার ভারতে প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু চরমপন্থীরা পূর্ণ
স্বরাজ আদায় করতে প্রাণপন চেষ্টা করেছিলেন।
Q.9 দাক্ষিণাত্য
শিক্ষা সমাজের জন্ম কীভাবে হয়েছিল?
Ans:- বোম্বাই শহরের শিক্ষিত ও শিক্ষার্থীরা মিলিত হয়ে কীভাবে দেশে একটি নতুন
শক্তি জাগানো যায় তার চেষ্টা করছিল। এর ফলে বোম্বাইয়ে সে সময় এক নতুন ছাত্রমণ্ডলী
বা Student Movement গড়ে উঠছিল।এই নতুন ছাত্র আন্দোলন থেকেই ক্রমে দাক্ষিণাত্য
শিক্ষা সমাজ (Deccan Education Society)
এর জন্ম হয়। এই শিক্ষা সমাজই আধুনিক
রাষ্ট্রীয় জীবনের প্রতিষ্ঠা করেন।
Q.10 টীকা লেখো ।
(ক) বিপিনচন্দ্র
পাল (খ) আনন্দমোহন বসু (গ) গুরু গোবিন্দ
(ঘ) গোপাল
কৃষ্ণ গোখলে (ঙ)
লোকমান্য তিলক। (চ) সংস্কৃত
কলেজ
(ছ) লালা
লাজপত রায় (জ) গোবিন্দ রানাডে।
Ans:- (ক) বিপিনচন্দ্র পাল :-
বিপিনচন্দ্র পাল ভারতের স্বাধীনতা আন্দালনের
অন্যতম নেতা। ১৮৫৮ সালের ৭ নভেম্বর শ্রীহট্ট জেলায় তার জন্ম হয়। ১৮৮৫ সালে
জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম অধিবেশনেই তিনি দলে যোগ দেন। তিনি ছিলেন চরমপন্থী নেতা।
১৯২১ সালের অসহযোগ আন্দোলনে মতভেদের জন্য যোগদান করেননি। এর ফলে তার বার্তানৈতিক
জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটে।
বিপিনচন্দ্র পাল প্রতিভাশালী বাগ্মীপুরুষ
ছিলেন। বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের সময় তার অসাধারণ বাগ্মীতা তাকে জাতীয় নেতার সম্মান
এনে দেয়। ১৯০১ সালে তিনি ‘নিউ ইণ্ডিয়া’ নামে একটি
সাপ্তাহিক ইংরেজি পত্রিকা প্রকাশ করেন। ১৯০৮ সালে তার সম্পাদনায় ইংরেজি দৈনিক ‘বন্দে মাতরম’ প্রকাশিত
হয়। ১৯৩১ সালে এই মহান বিপ্লবীর জীবনাবসান ঘটে।
(খ)
আনন্দমোহন বসু :-
আনন্দমোহন বসুর জন্ম হয় বাংলাদেশের
ময়মনসিংহ জেলার জয়সিদ্ধি গ্রামে। তিনি একজন পণ্ডিত, শিক্ষাবার্তা, সমাজসেবক
ও রাষ্ট্রনেতা ছিলেন। তিনি স্নাতকোত্তর (এমএ) পর্যায় পর্যন্ত সকল পরীক্ষায় প্রথম
স্থান অধিকার করেছিলেন। অংক শাস্ত্রে তার বিশেষ পারদর্শিতা ছিল। তিনি ১৮৭৪ সালে
কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিত বিষয়ক সর্বোচ্চ উপাধি ‘র্যাংলার' (Wrangler) লাভ করেন। তিনি জাতীয় কংগ্রেসের মাদ্রাজ অধিবেশনের (১৮৯৮)
সভাপতি নির্বাচিত হন।
(গ) গুরু
গোবিন্দ :
নবম গুরু তেগ বাহাদুরের মৃত্যুর পর শিখদের
দশম গুরু হন তার পুত্র গোবিন্দ সিংহ। তিনি মোগলদের অত্যাচার প্রতিরোধ করার জন্য ‘সংঘবদ্ধ সামরিক শক্তির’ প্রয়োজন অনুভব করেন। তার লক্ষ্য ছিল ধর্মীয় ও সামাজিক দুর্নীতিমুক্ত এক
নতুন জাতি ও রাষ্ট্র গঠন করা। সেই উদ্দেশ্য পূরণ করার লক্ষ্যে তিনি খালসার সৃষ্টি
করেন। তিনি শিখদের সংঘবদ্ধ করে এক শক্তিশালী সামরিক জাতিতে পরিণত করেন।
(ঘ) গোপাল
কৃষ্ণ গোখলে:-
গোপাল কৃষ্ণ গোখলে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের অন্যতম
নরমপন্থী নেতা। তিনি ১৮৬৬ সালের ৯ মে মহারাষ্ট্রের কোঠাপুরে জন্মগ্রহণ করেন। ১৮৮৬
সালে তিনি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সদস্য পদ গ্রহণ করেন। ১৯০৫ সালে জাতীয়
কংগ্রেসের বারাণসী অধিবেশনে বয়কট আন্দালনকে সমর্থন করেন। ১৯১৫ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি
এই মহান নেতার জীবনাবসান ঘটে।
(ঙ) লোকমান্য
তিলক :-
১৮৫৬ সালের ২৩ জুলাই মহারাষ্ট্রের রত্নগিরিতে
বাল গংগাধর তিকের জন্ম হয়। তিনিই প্রথম সংগ্রামশীল জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের মূল
লক্ষ ও নিতী উথাপন করেন। তিনি ব্রিটিশের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ সংগ্রামের আহ্বান
জানান। তার সম্পাদিত মারাঠি পত্রিকার নাম ‘কেশরী’। জনগণের মধ্যে জাতীয় চেতনার উন্মেষ ঘটানোর জন্য তিনি ‘গণপতি’ ও ‘শিবাজী উৎসব’ এর প্রচলন করেন। ১৯২০ সালের ১ আগষ্ট এই মহান
বিপ্লবীর দেহাবসান ঘটে।
(চ) সংস্কৃত
কলেজ :-
১৮২০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় সংস্কৃত
কলেজের প্রতিষ্ঠা হয়। কলকাতার বউ বাজারের এক ভাড়াটে বাড়িতে এই কলেজের সূচনা
হয়। দু’বছর পরে বর্তমান কলেজ স্কোয়ারে কলেজ ভবনটি স্থানান্তরিত
হয়। সংস্কৃত ভাষায় নানান বিষয় শিক্ষা দেওয়ার উদ্দেশ্যে কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়।
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর এই কলেজের ছাত্র ছিলেন এবং পরে অধ্যক্ষপদে আসীন হন। ১৮৬০
সালে কলেজটি বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত হয়।
(ছ) লালা
লাজপত রায়ঃ-
ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের পাঞ্জাবের
শ্রেষ্ঠ নেতা। লাজপত রায় স্বদেশি আন্দোলনের সময় বাংলায় এসে বাংলার জাতীয়
শিক্ষা আন্দোলনে উৎসাহ দান করেন। ১৯০৫ সালে কংগ্রেসের প্রতিনিধি হিসাবে তিনি
ইংল্যাণ্ডে যান। ব্রিটিশ সরকারের ভারত বিরোধী মনোভাব তাকে হতাশ করে। এইজন্য তিনি
ব্রিটিশ সরকারের প্রতিশ্রুতির উপর নির্ভর না করে গণ আন্দোলনকে সম্পূর্ণরূপে সমর্থন
করেন। তিনি ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম চরমপন্থী নেতা ছিলেন। নরমপন্থী
নেতাদের ভাবধারাকে তিনি অগণতান্ত্রিক বলে মনে করতেন।
(জ) গোবিন্দ
রানাডে:-
১৮৪২ সালের ১৮ই জানুয়ারি মহাদেব গোবিন্দ রানাডের
জন্ম হয়। তিনি একজন বিশিষ্ট সমাজসেবী নেতা ছিলেন। রানাডে তার ‘ইণ্ডিয়ান ইকনমি’ গ্রন্থের
মাধ্যমে ইংরেজদের স্বৈরাচারী শোষণের প্রকৃত অবস্থা ভারতীয়দের সামনে তুলে ধরেন।
আত্মারাম নাতুরঙ্গের পরবর্তী সময়ে তিনি প্রার্থনা সমাজে যোগ দেন। ১৯০১ সালের ১৬
জানুয়ারি পুণাতে এই নেতার জীবনাবসান ঘটে।
সেবা দশম শ্রেনী বাংলা প্রশ্ন এবং উত্তর পাঠ : বাংলার নবযুগ
দীর্ঘ প্রশ্নোত্তর
Q.1 সংগ্রামশীল
জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের লক্ষ্যগুলি আলোচনা করো।
Ans:- সংগ্রামশীল জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের লক্ষ্যগুলি চরমপন্থী নেতাগণ উথাপন
করেন। সংগ্রামশীল জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের চারটি লক্ষ্য ছিল। এগুলি হল:-
(ক) ভারতের প্রাচীন গৌরব ও ঐতিহ্যকে শ্রদ্ধা
করা এবং তার উপর ভিত্তি করে জাতীয় আন্দোলন গড়ে তোলা;
(খ) ব্রিটিশ সরকারের প্রতি আবেদন নিবেদন নীতি
পরিহার করে তাদের আত্মশক্তি প্রদর্শন ও আত্মবলিদানের মাধ্যমে জাতীয় স্বাধীনতা
অর্জন করা;
(গ) প্রকৃত স্বরাজ আদায়ের চেষ্টা করা এবং
(ঘ) ভারতীয় জনগণকে জাতীয়তাবাদের আদর্শে
অনুপ্রাণিত করে ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ সংগ্রামে লিপ্ত করা। চরমপন্থী
নেতারা খুব সক্রিয় ও সোচ্চার ছিলেন।
Q.2 বাংলার
নবযুগ প্রবর্তনে সুরেন্দ্রনাথের ভূমিকা বর্ণনা করো।
Ans:- বাংলায় নবযুগ প্রবর্তনে রাষ্ট্রগুরু সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের
অবদান অপরিসীম। বিপিনচন্দ্র পালের ‘বাংলার নবযুগ পাঠ্যাংশে’ সুরেন্দ্রনাথের
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা অত্যন্ত সুন্দরভাবে বর্ণিত হয়েছে। সুরেন্দ্রনাথ
বন্দ্যোপাধ্যায় এবং আনন্দমোহন বসু একসঙ্গে মিলিত হয়ে বোম্বাইয়ের এক নতুন
ছাত্ৰমণ্ডলীর আন্দোলনে অনুপ্রাণিত হয়ে কলিকাতা ছাত্ৰমণ্ডলীর (Calcutta Students' Union) প্রতিষ্ঠা করেন। এই ছাত্ৰমণ্ডলীকে আশ্রয় করে তারা যেই
দেশের মধ্যে নিজেদের রাষ্ট্রকে তুলে ধরেন। সুরেন্দ্রনাথই প্রথম কলিকাতা ছত্রিমওলীকে
অবলম্বন করে সে সময়ের শিক্ষানবীশ বাঙালিদের রাষ্ট্রীয় জীবন গড়ে তুলেন।
সুরেন্দ্রনাথের অসাধারণ বাগ্মী প্রতিভা ছিল। তার এই বাগ্মী প্রতিভার পরিচয় সর্বপ্রথম
পাওয়া যায় কলিকাতা ছাত্ৰমণ্ডলীর রঙ্গমঞ্চে। তার প্রথম বক্তৃতার বিষয় ছিল ‘Rise of the sikh power in
India’। এই
বক্তৃতার পূর্বে ইংরেজি নবিশ বাঙালিরা রাষ্ট্রীয় বিষয়ে এরুপ বক্তৃতা শুনেননি।
সুরেন্দ্রনাথই প্রথম শিখদের আত্মবলিদানের কাহিনি তুলে ধরে, দেশবাসীকে
স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। এর পূর্বে বাঙালিরা শিখ জাতির আত্ম- বলিদানের কথা ভালো করে জানতেন না। পাঞ্জাব
কেশরী রঞ্জিত সিংহের নাম জানা থাকলেও, তেগ বাহাদুর ও তাঁর ‘শির দিয়া
শীর নেহি দিয়া’ অর্থাৎ মাথা দিলাম বটে ধর্ম দিলাম না - এই অসাধারণ ত্যাগের কথা প্রায় কেউই জানত
না বললেই চলে। সুরেন্দ্রনাথ শিখ ইতিহাসের প্রাণোন্মাদিনী বক্তৃতা দিয়ে বাংলার
অন্তর পর্যন্ত আলোড়ন সৃষ্টি করতে সমর্থ হয়েছিলেন। সাহিত্যের মধ্য দিয়ে, নাট্যকলা
ও রঙ্গমঞ্চের মাধ্যমে ও ইংরেজের শিক্ষা-দীক্ষার ফলে ব্যক্তিগত স্বাধীনতার নামে
গতানুগতিক ধর্মদ্রোহিতা ও সমাজদ্রোহিতার ভেতর দিয়ে নব্য শিক্ষিত সম্প্রদায়ের মধ্যে
যে অভিনব স্বাধীনতার প্রেরণা ও স্বাজাত্যাভিমান জেগে উঠছিল, সুরেন্দ্রনাথ
সেই জেগে ওঠা প্রেরণা এবং স্বাজাত্যাভিমানকে রাষ্ট্রীয় কর্মক্ষেত্রে তুলে ধরেন।
সুরেন্দ্রনাথের বক্তৃতা বাঙালির কল্পনাকে বাস্তব জগতে ফিরিয়ে এনেছিল।
সুরেন্দ্রনাথের ‘Rise of the Sikh power in India’ বিষয়ক বক্তৃতা বাঙালিদের জ্ঞানচক্ষু খুলে দেয় এবং
স্বাজাত্যাভিমানকে ঐতিহাসিক ভিত্তির উপর দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠা করে। সুরেন্দ্রনাথের
এই বক্তৃতা বাংলার নবযুগের ইতিহাসে এক স্মরণীয় ঘটনা। সেদিন থেকেই নবযুগের বাংলার
ইতিহাসে নতুন রাষ্ট্রকর্ম এবং রাষ্ট্রীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের জন্ম হয়।
Q.3 বাংলার
জাতীয় চেতনার বিকাশে আনন্দমোহন বসুর অবদান কতখানি আলালোনা করো।
Ans:- ‘বাংলার নবযুগ’ পাঠ্যাংশে লেখক বিপিনচন্দ্র পাল বিশিষ্ট পন্ডিত, শিক্ষাব্রতী, সমাজসেবক
ও রাষ্ট্রনেতা আনন্দমোহন বসুর পরিচয় প্রদান করেছেন।
বাংলার জাতীয় চেতনার বিকাশে আনন্দমোহন বসুর
যথেষ্ট অবদান রয়েছে। আনন্দমোহন বিলেত থেকে দেশে ফেরবার সময় বোম্বাই শহরের
শিক্ষিত এবং শিক্ষার্থীরা মিলিত হয়ে এক নতুন শক্তি জাগাবার চেষ্টা করছিল; তা দেখে
আসেন। সে সময় বোম্বাইয়ে ছাত্র আন্দোলন গড়ে উঠছিল। বোম্বাইয়ের ছাত্র আন্দোলনে
অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি সুরেন্দ্রনাথের সঙ্গে মিলিত হয়ে কলকাতায় অনুরূপ এক
ছাত্ৰমণ্ডলী প্রতিষ্ঠা করেন। এই ছাএমওলী ‘কলিকাতা ছাত্রমণ্ডলী’ বা Calcutta Students' Association নামে পরিচিত। আনন্দমোহন বসু এই ছাত্রমণ্ডলীর সভাপতি ছিলেন।
এই ছাএমওলীকে আশ্রয় করেই আনন্দমোহন ও সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের
নিজেদের নতুন রাষ্ট্রকর্ম দেশের মধ্যে গড়ে তোলেন। সে সময় এই ছাত্ৰমণ্ডলী বাংলার শিক্ষানবিশদের মনে এক
অভূতপূর্ব জাতীয় চেতনার উম্মেষ ঘটিয়েছিল। এই সংগঠনের মথে সুরেন্দ্রনাথের বক্তিতা
বাঙালির অন্তরে স্বাজাত্যাভিনার জন্ম দিয়েছিল। আনন্দমোহন বসু সর্বপ্রথম এই
ছাত্রমণ্ডলীকে রাষ্ট্রীয় জীবন গড়ার জন্য পথ দেখিয়েছেন। তাই বলা যায় যে বাংলার
জাতীয় চেতনার বিকাশে আনন্দমোহন বসুর গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে।
Q.4 ‘Rise of the Sikh power in
India’ শীর্ষক বক্তৃতাটি কে পেশ করেছিলেন? ভারতের স্বাধনীতা আন্দোলনে এই বক্তৃতার প্রভাব ব্যাখ্যা করো।
Ans:- ‘Rise of the Sikh power in India’ শীর্ষক বক্তৃতাটি রাষ্ট্রগুরু সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়
পেশ করেছিলেন।
সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ভারতের
স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেতা ছিলেন। তিনি আনন্দমোহন
বসুর সাথে মিলিত হয়ে ‘কলিকাতা ছাত্রমণ্ডলী’ র প্রতিষ্ঠা করেন। এই ছাত্রমণ্ডলীকে আশ্রয় করেই তার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের
সূচনা হয়। কলিকাতা ছাত্রমণ্ডলীর রঙ্গমঞ্চে সর্বপ্রথম সুরেন্দ্রনাথের অসাধারণ
বাগ্মী প্রতিভা প্রকাশ পায়। তার এই প্রথম বক্তৃতার বিষয় ছিল – ‘Rise of the Sikh power in India’ অর্থাৎ ভারতবর্ষে শিখ শক্তির অভ্যুত্থান। সুরেন্দ্রনাথের
বক্তৃতায় মহারাজা পাঞ্জাব কেশরী রঞ্জিত সিংহ, তেগবাহাদর, গুরু গোবিন্দ সিংহ প্রমুখ শিখ বীরগণের
বীরত্বের কথা শুনে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ৰমণ্ডলীর অন্তরে এক অভূতপূর্ব
ভাবের বন্যা ছুটেছিল। সে যুগে ইংরেজি শিক্ষাদীক্ষার ফলে প্রথাগত ধর্ম বিরোধিতা ও
সমাজদ্রোহিতার ভেতর দিয়ে নব্য শিক্ষিত সম্পদারের মধ্যে এক অভিনব স্বাধীনতার
প্রেরণা ও স্বাজাত্যাভিমান জেগে উঠছিল। সুরেন্দ্রনাথ এই ভাবধারাকে রাষ্ট্রীয়
কর্মক্ষেত্রে তুলে ধরেন। প্রাচীনের প্রেরণাকে অধুনাতন রাষ্ট্রীয় জীবনে জাগিয়ে
তুলেন। তার বক্তৃতা শুনে বাঙালিরা জানতে পারল শিখদের শৌর্য-বীর্যের কাছে ইংরেজদের
শৌর্য-বীর্যের পরাজয়ের কথা। তাই বাঙালিরা উপলব্ধি করল প্রবল পরাক্রম ইংরেজ
শক্তিকে পরাভূত করা সম্ভব। এই জন্য সুরেন্দ্রনাথের ‘Rise of the Sikh power in India’ শীর্ষক বক্তৃতা বাঙালিদের জ্ঞানচক্ষু খুলে দেয় এবং
স্বাজাত্যাভিমানকে ঐতিহাসিক ভিত্তির উপর দৃঢ় প্রতিষ্ঠিত করে। যার ফলে নবধারায় এক
রাষ্ট্রীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের সূচনা হয়।
Q.5 স্বাধীনতা
আন্দোলনের সময় গঠিত কলিকাতা ছাত্রমওলী সম্পর্কে লেখো।
Ans:- ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম নেতা বিপিনচন্দ্র পাল রচিত ‘বাংলার নবযুগ’ প্রবন্ধে “কলিকাতা
ছাত্রমণ্ডলী” বা Calcutta Students'
Association সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। আনন্দমোহন বসু
বিলেত থেকে ফেরার সময় বোম্বাই শহর শিক্ষিত ও শিক্ষার্থীরা মিলিত হয়ে দেশে একটা
নতুন শক্তি জাগাবার চেষ্টা করছিল, তা দেখে আসেন। বোম্বাইয়ে সে সময় এক নতুন ছাত্র আন্দোলন
গড়ে উঠছিল।তিনি এই ছাত্রসমাজের কিছু কিছু পরিচয় লাভ করেন। তিনি কলকাতায় ফিরে
এসেই অনুরূপ একটি ছাত্র সমাজ গড়ে তুলতে আগ্রহী হন। ১৮৭৫-৭৬ সালে ‘কলিকাতা
ছাত্ৰমণ্ডলী’ প্রতিষ্ঠিত হয়। এর সভাপতি ছিলেন আনন্দমোহন
বসু। সহকারী সভাপতির দায়িত্ব নিয়েছিলেন রাষ্ট্রগুরু সুরেন্দ্রনাথ
বন্দ্যোপাধ্যায়। কলিকাতা ছামণ্ডলীর প্রথম সম্পাদক ছিলেন নন্দকৃষ্ণ বসু। এই ছাত্রমণ্ডলীকে অবলম্বন করে সুরেন্দ্রনাথ সেকালের
শিক্ষানবিশ বাঙালিদের রাষ্ট্রীয় জীবন গড়ে দিয়েছিলেন। কলিকাতা ছাত্ৰমণ্ডলীর
রঙ্গমঞ্চে সর্বপ্রথম সুরেন্দ্রনাথ তাঁর অসামান্য বাগ্মী প্রতিভার পরিচয়
দিয়েছিলেন। তার বক্তৃতার বিষয় ছিল ‘Rise of the Sikh power in India’। তিনি তার বক্তৃতায় শিখ জাতির বীরত্বের কথা তুলে ধরেছিলেন।
তার এই বক্তৃতার প্রভাবে নব্যশিক্ষিত বাঙালির স্বাজাত্যাভিমান জেগে উঠেছিল।
নবযুগের বাংলার ইতিহাসে নতুন রাষ্ট্রকর্মের এবং রাষ্ট্রীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের
জন্ম হয়। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে কলিকাতা ছাত্ৰমণ্ডলীর অবদান অপরিসীম।
ASSAM SEBA/SMEBA CLASS 10 BENGALI QUESTIONS & ANSWERS
সেবা দশম শ্রেনী বাংলা প্রশ্ন এবং উত্তর পাঠ : বাংলার নবযুগ
DOWNLOAD PDF
**********************
0 Comments
HELLO VIEWERS, PLEASE SEND YOUR COMMENTS AND SUGGESTION ON THE POST AND SHARE THE POST TO YOUR FRIEND CIRCLE.