সেবা/অসম দশম শ্রেণী সমাজ
বিজ্ঞান
অর্থনৈতিক
ভূগোল ও সম্পদ সম্পর্কীয় প্রশ্নউত্তর
SEBA/ASSAM
CLASS 10 SOCIAL SCIENCES
Visit – www.smartlearningservice.com
অর্থনৈতিক ভূগোল ও সম্পদ
প্রশ্ন ১।
অর্থনৈতিক ভূগোল কাহাকে বলে? ইহার প্রধান বিষয়বস্তু কি? অর্থনৈতিক
ভূগোলের শাখাসমূহ উল্লেখ কর।
উত্তর - অর্থনৈতিক
ভূগোল :- ভূগোলের যে
শাখায় সম্পদের উৎপাদন, বিতরণ, উপভোগ ও বিনিময়ের সঙ্গে জড়িত
মানুষের কার্যকলাপ স্থান কাল সাপেক্ষে অধ্যয়ন করা হয়, তাহাকে অর্থনৈতিক ভূগোল বলে।
অর্থনৈতিক
ভূগোলের বিষয়বস্তু :- পৃথিবীতে
প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট পরিবেশের উপাদান সমূহের বিভিন্নতার জন্য মানুষের অর্থনৈতিক
কার্যকলাপ সকলস্থানে সমান হয় না। কোন কোন অঞ্চল কৃষিতে উন্নত আবার কোন কোন অঞ্চল
ব্যবসা, শিল্প বা
মৎস উৎপাদনে উন্নত হইতে পারে। ভূগোলের একটি প্রধান শাখা হিসাবে অর্থনৈতিক ভূগোলের
বিষয়বস্তুর ভিন্নতা ও প্রসার উল্লেখযোগ্য। ইহার প্রধান বিষয়বস্তু সমূহ হইল কৃষি, উদ্যোগ, সম্পদ, পরিবহন, বাজার, পর্যটন প্রভৃতি।
অর্থনৈতিক
ভূগোলের শাখা :- অর্থনৈতিক
ভূগোলের প্রধান শাখাসমূহ হইল—(ক) কৃষি
ভূগোল, (খ) ঔদ্যোগিক
ভূগোল, (গ) সম্পদ
ভূগোল, (ঘ) পরিবহন
ভূগোল, (ঙ) বাজার
ভূগোল ও (চ) পর্যটন ভূগোল।
প্রশ্ন ২।
সম্পদ ভূগোলকে কেন অর্থনৈতিক ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা বলা হয়?
উত্তর:- সম্পদ
ভূগোল অর্থনৈতিক ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা। সম্পদ ভূগোল পৃথিবীতে থাকা বায়ু, জল, সূর্যরশ্মি, মাটি, গাছপালা, ফলমূল, খনিজ পদার্থ প্রভৃতি আলোচনা করে।
এই সম্পদসমূহের প্রাচুর্যতার জন্যই মানুষের মৌলিক চাহিদা যথা—খাদ্য, বস্ত্র ও বাসস্থান এবং অন্যান্য
চাহিদা পূরণের সঙ্গে জীবনধারণের মান উন্নয়ন সম্ভব হইয়াছে। সম্পদ উৎপাদন, বিতরণ, উপভোগ ও বিনিময়-এর মাধ্যমেই
সুস্থ, সভ্য ও
সুশৃঙ্খল মানব জীবন সম্ভব। সম্পদের মাধ্যমেই মানুষের অর্থনৈতিক কার্যকলাপ সম্ভব।
সুতরাং সম্পদ ভূগোলকে অর্থনৈতিক ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা বলা হয়।
প্রশ্ন ৩।
সম্পদ বলিতে কি বুঝ? ইহার প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ উল্লেখ
কর।
উত্তর:- সম্পদের
অর্থ : মানুষের জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় সকল বস্তুকেই সম্পদ বলে। যেহেতু
পৃথিবীতে অবস্থিত বায়ু, জল, সূর্যরশ্মি, মাটি, গাছপালা, ফল-মূল, খনিজ পদার্থ প্রভৃতি মানুষের
জীবনধারণের জন্য অপরিহার্য, সেইজন্য
এইগুলিকে সম্পদ বলে।
সম্পদের
বৈশিষ্ট্য :- সম্পদের প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ হইল-(ক) উপকারিতা, (খ) কার্যকারিতা, ও
(গ) পরিবর্তনশীল।
প্রশ্ন ৪। ‘সম্পদ
পরিবর্তনশীল’ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর:- সম্পদ
পরিবর্তনশীল। বর্তমানে কোন একটি বস্তু মানুষ কর্তৃক। ব্যবহৃত না হইলেও বা মানুষের
জন্য অপকারী হইলেও ভবিষ্যতে এই একই বস্তুই মানুষের কল্যাণে ব্যবহৃত হইতে পারে। যে
সকল বস্তু মানুষের কোন উপকার বা অপকার করে না সেই সকল বস্তুকে নিরপেক্ষ বা
নিষ্ক্রিয় বস্তু বলে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় মানুষ যখন কয়লা ও খনিজ তেলের
ব্যবহার জানিত।
তখন এইসকল
বস্তু নিরপেক্ষ বস্তু ছিল। অন্যদিকে যে সকল বস্তু বা পরিঘটনা মানুষের অপকার সাধন
করে, সেইগুলিকে
প্রতিরোধক বলা হয়। উদাহরণ স্বরূপ অনুর্বর ভূমি, বন্যা জর্জরিত অঞ্চল প্রভৃতি এক একটি
প্রতিরোধক। উল্লেখ্য যে পশ্চিমবঙ্গে বার বার বন্যাসৃষ্টিকারী দামোদর নদীর উপর বাঁধ
নির্মাণ করিয়া জলবিদ্যুৎ শক্তি উৎপাদন ও জলসেচ ব্যবস্থা না থাকাকালীন দামোদর
নদীকে প্রতিরোধক হিসাবে গণ্য করা হইত। সুতরাং মানুষের জ্ঞান প্রসার ও
বিজ্ঞান-প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে পৃথিবীর বহু নিরপেক্ষ সামগ্রী ও প্রতিরোধক
মানুষের সুপ্রচেষ্টায় সম্পদে রূপান্তরিত হইয়াছে। সুতরাং সম্পদ পরিবর্তনশীল।
মানুষ সম্পদের পরিবর্তন করিতে পারে।
প্রশ্ন ৫।
সম্পদের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে উদাহ্বণসহ সংক্ষেপে আলোচনা কর।
উত্তর:- মানবজীবনে
সম্পদের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। সম্পদ ও ইহার ব্যবহার মানব সমাজের উন্নয়নের সঙ্গে
ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সম্পদ মানুষের জীবনধারণের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। সম্পদ
ব্যবহারের মাধ্যমেই মানুষের মৌলিক প্রয়োজন খাদ্য, বস্ত্র ও বাসস্থান এবং অন্যান্য বহু চাহিদা
পূরণের সঙ্গে জীবনধারণের মান উন্নয়ন সম্ভব হইয়াছে। সম্পদের কার্যকারিতা ও
উপকারিতা এই দুইটি গুণের জন্য সম্পদের ব্যবহারের দ্বারা মানব কল্যাণ ও আর্থসামাজিক
উৎকর্ষ সাধন সম্ভব হইয়াছে। মানুষের প্রয়োজনীয় বহু সম্পদ যদিও প্রকৃতি যোগান
দেয়, ইহার
অধিকাংশের ব্যবহারই মানুষ প্রয়োজন অনুসারে উপযোগী করিয়া তোলে। মানুষের জ্ঞান
বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে নূতন নূতন সম্পদ সৃষ্টি ও ইহার ব্যবহার হইতেছে। মানবজীবনে
প্রাকৃতিক সম্পদ যেমন গাছপালা,
খনিজসম্পদ, জল, ভূমি এবং মানবসৃষ্ট সম্পদ যেমন—প্রযুক্তি, ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, উদ্যোগ কারখানা, স্কুল কার্যালয়, যানবাহন, কৃষিকার্যের সামগ্রী প্রভৃতির
প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।
প্রশ্ন ৬।
সম্পদ এবং মানুষের মধ্যে সম্পর্ক বিষয়ে সংক্ষেপে আলোচনা
উত্তর:- (পূর্বের
৫ নং প্রশ্নোত্তর দেখ)
প্রশ্ন ৭৷
সম্পদ এবং বিজ্ঞান প্রযুক্তির মধ্যে সম্পর্ক সংক্ষেপে আলোচনা কর।
উত্তর:- বিজ্ঞান
প্রযুক্তির সঙ্গে সম্পদের অঙ্গাঙ্গী সম্পর্ক বিদ্যমান। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
প্রয়োগের মাধ্যমে সম্পদের সদ্ব্যবহার করা সম্ভব হয়। বন্যাসৃষ্টিকারী নদীর জল
হইতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হইয়াছে। প্রযুক্তির
মাধ্যমে অনুর্বর ভূমিকে উর্বর জমিতে পরিণত করিয়া কৃষিকার্য সম্ভব করা হইয়াছে।
বিজ্ঞানের মাধ্যমে নিষ্ক্রিয় সামগ্রীকে সক্রিয় সামগ্রীতে রূপান্তরিত করা সম্ভব।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রয়োগের মাধ্যমে নানাবিধ মানবসৃষ্ট সম্পদ যেমন—ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, শিল্পোদ্যোগ, যানবাহন, কৃষিসামগ্রী প্রভৃতি তৈরা।
সমাজ
বিজ্ঞান সহায়িকা সম্ভব হইয়াছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে পৃথিবীর
নিরপেক্ষ ও প্রতিরোধক সম্পদে রূপান্তরিত হইয়াছে।
প্রশ্ন ৮।
উদাহ্বণসহ সম্পদের শ্রেণিবিভাজন সম্পর্কে লিখ।
উত্তর:- সম্পদকে
প্রধানত তিন শ্রেণিতে বিভক্ত করা হয়। যথা—(ক)
প্রাকৃতিক সম্পদ, (খ) মানব
সৃষ্ট সম্পদ ও (গ) মানব সম্পদ।
(ক) প্রাকৃতিক সম্পদ : যে সকল
সম্পদ যেমন সূর্যরশ্মি, বায়ু, জল, গাছপালা, জীবজন্তু, খনিজ পদার্থ, নদনদী প্রভৃতি প্রাকৃতিকভাবে
সৃষ্টি হইয়া প্রকৃতির মধ্যেই বিরাজ করে, এই
সকল সম্পদকে প্রাকৃতিক সম্পদ বলে। প্রাকৃতিক সম্পদসমূহকে কঠিন, তরল, গ্যাসীয়, ধাতব ও অধাতব অবস্থায় পাওয়া
যায়। প্রাকৃতিক সম্পদের অধিকাংশকেই কাঁচামাল হিসাবে কলকারখানায় ব্যবহার করা হয়।
(খ) মানবসৃষ্ট সম্পদ ও মানুষের
প্রচেষ্টায় উৎপাদিত সামগ্ৰীসমূহকে মানব সৃষ্ট সম্পদ বলা হয়। প্রকৃতি হইতে আহরণ
করা অনেক সামগ্রীই প্রয়োজন সাপেক্ষে প্রযুক্তির দ্বারা রূপান্তর করিয়া মানুষের
ব্যবহারোপযোগী করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, বাঁশ
হইতে কাগজ, কার্পাস
তুলা হইতে কাপড়, খনিজ তেল
হইতে নানা প্রকার রং, নেপথালিন, রাসায়নিক সার, কীটনাশক দ্রব্য, সাবান, প্লাষ্টিক, কৃত্রিম রবার প্রভৃতি, গাছপালা হইতে নানাপ্রকার ঔষধ, কাঠ, গৃহনির্মাণ সামগ্রী প্রভৃতি
উল্লেখ করা যায়। মানুষের প্রচেষ্টায় উৎপাদিত এইপ্রকার সামগ্রীকে মানবসৃষ্ট সম্পদ
বলা হয়। | (গ)
মানবসম্পদ ও প্রাকৃতিক সম্পদসমূহকে মানুষের ব্যবহারোপযোগী করিতে হইলে মানুষের
কাৰ্যদক্ষতা, শিক্ষা, প্রযুক্তি এবং আগ্রহের প্রয়োজন
হয়। এইরূপ গুণ বা বৈশিষ্ট্য থাকার জন্য মানুষকে মানবসম্পদ বলা হয়। মানুষই
সম্পদের সৃষ্টিকর্তা মানবসম্পদের দ্রুত বিকাশের জন্যই জাপান, সুইজারল্যান্ড, তাইওয়ান, সিঙ্গাপুর প্রভৃতি দেশ অনেক
প্রাকৃতিক সম্পদ তথা উদ্যোগের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামালের যোগানে পৃথিবীর এক একটি
অগ্রণী ও সমৃদ্ধ দেশ হিসাবে পরিগণিত হইয়াছে।
প্রশ্ন ৯।
প্রাকৃতিক সম্পদ বলিতে কি বুঝ? উদাহণসহ
সংক্ষেপে লিখ।
উত্তর:- প্রাকৃতিক
সম্পদ : যে সকল সম্পদ যেমন—সূর্যরশ্মি, বায়ু, জল, গাছপালা, জীবজন্তু, খনিজ পদার্থ, নদনদী প্রভৃতি প্রাকৃতিকভাবে
সৃষ্টি হইয়া প্রকতির মধ্যেই বিরাজ করে, এই
সকল সম্পদকে প্রাকৃতিক সম্পদ বলে। প্রাকৃতিক সম্পদসমূহকে কঠিন, তরল, গ্যাসীয়, ধাতব ও অধাতব অবস্থায় পাওয়া
যায়। প্রাকৃতিক সম্পদের অধিকাংশকেই কাঁচামাল হিসাবে কলকারখানায় ব্যবহার করা হয়।
প্রশ্ন ১০।
মানবসৃষ্ট সম্পদ বলিতে কি বুঝ? উদাহরণসহসংক্ষেপে লিখ।
উত্তর:- মানবসৃষ্ট
সম্পদ ও মানুষের প্রচেষ্টায় উৎপাদিত সামগ্ৰীসমূহকে মানবসৃষ্ট সম্পদ বলা হয়।
প্রকৃতি হইতে আহরণ করা অনেক সামগ্রীই প্রয়োজন সাপেক্ষে প্রযুক্তির দ্বারা
রূপান্তর করিয়া মানুষের ব্যবহারোপযোগী করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, বাঁশ হইতে কাগজ, কার্পাস তুলো হইতে কাপড়, খনিজ তেল হইতে নানাপ্রকার রং, নেপথালিন, রাসায়নিক সার, কীটনাশক দ্রব্য, সাবান, প্লাস্টিক, কৃত্রিম রবার প্রভৃতি, গাছপালা হইতে নানাপ্রকার ঔষধ, কাঠ, গৃহনির্মাণ সামগ্রী প্রভৃতি
উল্লেখ করা যায়। মানুষের প্রচেষ্টায় উৎপাদিত এইপ্রকার সামগ্রীকে মানবসৃষ্ট সম্পদ
বলা হয়।
প্রশ্ন ১১।
অনবীকরণযোগ্য সম্পদ বলিতে কি বুঝ? উদাত্মণসহ সংক্ষেপে উল্লেখ কর।
উত্তর:- যে
সকল সম্পদ ব্যবহারের পর নবীকরণ করা যায় না এবং একেবারে নিঃশেষ হইয়া যায়, এইরূপ সম্পদকে অনবীকরণযোগ্য বা
ক্ষয়শীল সম্পদ বলে। উদাহরণস্বরূপ কয়লা, খনিজ
তৈল, খনিজ
পদার্থ (যেমন—তামা, সোনা, চুনাপাথর, লোহা প্রভৃতি), প্রাকৃতিক গ্যাস প্রভৃতি অনবীকরণযোগ্য
সম্পদ।
প্রশ্ন ১২।
সংক্ষিপ্ত টীকা লিখ :
(ক) সম্পদ, (খ)
মানব-সম্পদ, (গ) সম্পত্তি, (ঘ) নবীকরণযোগ্য সম্পদ, (ঙ) ব্যক্তিগত সম্পদ, (চ) জাতীয় সম্পদ, (ছ) জৈবিক সম্পদ, (জ) সম্পদ সংরক্ষণ, (ঝ) সম্পদের পুনরাবর্তন।
উত্তর:- (ক)
সম্পদ - মানুষের
জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় সকল বস্তুকেই সম্পদ বলে। যেহেতু পৃথিবীতে অবস্থিত
বায়ু, জল, সূর্যরশ্মি, মাটি, গাছপালা, ফলমূল, জীবজন্তু, খনিজ পদার্থ প্রভৃতি মানুষের
জীবনধারণের জন্য অপরিহার্য সেইজন্য এইগুলিকে সম্পদ বলে।।
(খ) মানবসম্পদ :
প্রাকৃতিক সম্পদসমূহকে মানুষের ব্যবহারের উপযোগী করিতে হইলে মানুষের কাৰ্যদক্ষতা, শিক্ষা, প্রযুক্তি এবং আগ্রহের প্রয়োজন
হয়। এইরূপ গুণ বা বৈশিষ্ট্য থাকার জন্য মানুষকে মানব সম্পদ বলা হয়। মানুষই
সম্পদের সৃষ্টিকর্তা। (গ)
সম্পত্তি : যে সকল বস্তুর বিনিময়মূল্য আছে, সেইগুলিকে
সম্পত্তি বলা হয়। ব্যবহারোপযোগী সম্পত্তির যোগান তুলনামূলকভাবে সীমিত এবং মূল্যের
ভিত্তিতে ইহা একজন হইতে অন্যজনকে হস্তান্তরিত করা যায়। ভূমি, ঘরবাড়ি, যন্ত্রপাতি প্রভৃতি সবই
সম্পত্তি। এই সকল সামগ্রীর বাজারমূল্য আছে।
(ঘ) নবীণযোগ্য সম্পদ :
যে সকল সম্পদ ব্যবহারের পর নবীকরণ বা পুনঃপূর্ণীকৃত প্রক্রিয়ায় কখনও একেবারে
নিঃশেষ হইয়া যায় না এই সকল সম্পদকে নবীকরণযোগ্য সম্পদ বা পুনঃপূর্ণীকৃত সম্পদ
বলা হয়। সূর্যরশ্মি, বায়ু, জল, গাছপালা, জীবজন্তু, মানুষ, শস্য প্রভৃতি নবীকরণযোগ্য সম্পদ।
(ঙ) ব্যক্তিগত সম্পদ : মানুষের
নিজ নিজ দখলে বা অধিকারে থাকা ভূমি, বিষয়
সম্পত্তি এবং নিজের সৎগুণ, যেমন—সৎচরিত্র, শিক্ষা, কর্মদক্ষতা প্রভৃতিকে ব্যক্তিগত
সম্পদ বলা হয়।
(চ) জাতীয় সম্পদ : একটি
দেশের তত্ত্বাবধানে বা অধিকারে থাকা সকল সম্পদ, যেমন—রাস্তাঘাট, ভূমি, নদনদী, সেতু, অরণ্যের বৃক্ষাদি ও জীবজন্তু, শিক্ষানুষ্ঠান, প্রশাসনিক ব্যবস্থা, সরকার প্রভৃতিকে জাতীয় সম্পদ
বলে। উদাহরণস্বরূপ, কাজিরাঙ্গা
রাষ্ট্রীয় উদ্যান একটি জাতীয় সম্পদ।
(ছ) জৈবিক সম্পদ :
প্রাকৃতিক গঠন অনুসারে সম্পদসমূহের যেগুলিতে জীব বা প্রাণী থাকে সেইগুলিকে জৈবিক
সম্পদ বলে। উদ্ভিদ, প্রাণী, মাছ, শস্য প্রভৃতি জৈবিক সম্পদ।
(জ)সম্পদ
সংরক্ষণ : সম্পদের ব্যবহার এবং ইহার
সংরক্ষণ ওতঃপ্রোতভাবে জড়িত। সাধারণত কোনো প্রকার বিনাশ এবং অপব্যবহার না করিয়া
সম্পদের সম্ভাব্য পূর্ণ ব্যবহারকার্য বা ধারণাকে সম্পদ সংরক্ষণ বলে। সম্পদ
সংরক্ষণের মূল উদ্দেশ্য হইল আমরা প্রকৃতি হইতে আমাদের প্রয়োজনীয় সম্পদসমূহ
এইভাবে আহরণ করিয়া ব্যবহার করিব যাহাতে ইহার দ্বারা আমরা সকলেই বহুসময় ব্যাপিয়া
উপকৃত হইব।
(ঝ) সম্পদের পুনরাবর্তন :
সীমিত পরিমাণে থাকা কাঁচামালের ব্যবহার হাস করিবার জন্য ব্যবহার উপযোগী বর্জিত
দ্রব্য পুনরাবর্তন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পুনর্ব্যবহার করাকে সম্পদের পুনরাবর্তন বলা
হয়। উদাহরণস্বরূপ, ব্যবহৃত
পলিথিন ব্যাগ, প্লাস্টিক, বোতল, কাগজ, লোহার সামগ্রী প্রভৃতি
পুনরাবর্তনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সম্পদের কঁচামাল কিছু পরিমাণে সংরক্ষণ করিতে পারা
যায়।
সেবা/অসম দশম শ্রেণী সমাজ
বিজ্ঞান
অর্থনৈতিক
ভূগোল ও সম্পদ সম্পর্কীয় প্রশ্নউত্তর
SEBA/ASSAM
CLASS 10 SOCIAL SCIENCES
Visit – www.smartlearningservice.com
প্রশ্ন ১৩।
পার্থক্য লিখ ।
(ক) সম্পদ এবং সম্পত্তি, (খ) অর্থনৈতিক ভূগোল এবং সম্পদ ভূগোল, (গ) সম্পদ এবং নিষ্ক্রিয় সামগ্রী, (ঘ) জৈবিক এবং অজৈবিক সম্পদ, (ঙ) নবীকরণযোগ্য এবং অনবীকরণযোগ্য
সম্পদ, (চ) ব্যক্তিগত
সম্পদ এবং জাতীয় সম্পদ, (ছ) মানবসৃষ্ট
এবং মানবসম্পদ, (জ) সম্পদের
পুনরাবর্তন এবং অভিযোজন।
উত্তর:- (ক)
সম্পদ এবং সম্পত্তি : সম্পদ এবং
সম্পত্তিকে অনেক সময় একই বলিয়া গণ্য করা হয়। কিন্তু অর্থনীতির সূত্র অনুযায়ী
যে সকল বস্তুর বিনিময় মূল্য আছে সেই সকল বস্তুকে সম্পত্তি বলা হয়। ব্যবহারোপযোগী
হওয়ার উপরও সম্পত্তির যোগান তুলনামূলকভাবে সীমিত এবং ইহাকে বিনিময়ের মাধ্যমে
একজন হইতে অন্যজনে হস্তান্তরিত করিতে পারা যায়। ভূমি, ঘরবাড়ি, যন্ত্রপাতি ইত্যাদি সবই
সম্পত্তি। এইগুলির বাজার দর আছে। কিন্তু সূর্যরশ্মি, বায়ু, জল, মাটি, নদী হ্রদ, শিক্ষা, সামাজিক অনুষ্ঠান, জনস্বাস্থ্য প্রভৃতি সম্পত্তি
শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত করা হয় না। কারণ এইগুলি কিছুসংখ্যক অপর্যাপ্ত এবং অন্য
কিছুসংখ্যক হস্তান্তর করা যায় না এবং এইগুলির বাজার মূল্য নাই। সুতরাং সকল
সম্পত্তি সম্পদ, কিন্তু সকল
সম্পদ সম্পত্তি নাও হইতে পারে। তদুপরি সম্পদের জন্য মানবজাতির কল্যাণ হয়, কিন্তু সম্পত্তির দ্বারা মানুষের
উপকার বা অপকার দুইটিই হইতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, বাজার মূল্য থাকা বিষ, রাসায়নিক কীটনাশক দ্রব্য
প্রভৃতি সম্পত্তি। কিন্তু ইহার সেবন মানুষের জন্য অপকারী বা বিপদজনক সেইজন্য এইসকল
সামগ্রী সম্পদ নহে। মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় বস্তুকেই সম্পদ বলে।
(খ) অথনৈতিক ভূগোল এবং সম্পদ
ভূগোল : ভূগোলের যে শাখায় সম্পদের
উৎপাদন, বিতরণ, উপভোগ এবং বিনিময়ের সঙ্গে জড়িত
মানুষের কার্যকলাপ স্থান-কাল সাপেক্ষ অধ্যয়ন করা হয় তাহাকে অর্থনৈতিক ভূগোল বলে।
সম্পদ ভূগোল হইল অর্থনৈতিক ভূগোলের একটি উপশাখা। সম্পদ ভূগোলে সম্পদের উৎপাদন, বণ্টন, উপভোগ, বিনিময় এবং সম্পদ সংরক্ষণ
ব্যবস্থা আলোচনা করা হয়।
(গ) সম্পদ এবং নিষ্ক্রিয়
সামগ্রী : মানুষের জীবনধারণের জন্য
প্রয়োজনীয় সকল বকেই সম্পদ বলে। পৃথিবীতে অবস্থিত বায়ু, জল, মাটি, সূর্যরশ্মি, গাছপালা, ফলমূল, খনিজ পদার্থ প্রভৃতি মানুষের
জীবনধারণের জন্য অপরিহার্য, সেইজন্য
এইগুলিকে সম্পদ বলে। বর্তমানে কোন একটি সামগ্রী মানুষ দ্বারা ব্যবহৃত না হইলেও বা
মানুষের জন্য অপকারী হইলেও ভবিষ্যতে এই একই সামগ্রী মানব কল্যাণে ব্যবহৃত হইতে
পারে। পৃথিবীতে প্রাপ্ত সামগ্রীসমূহের মধ্যে যে সকল সামগ্রী মানুষের কোন প্রকার
উপকার বা অপকার সাধন করে
সেই সকল
সামগ্রীকে নিরপেক্ষ বা নিষ্ক্রিয় সামগ্রী বলে। উদাহরণস্বরূপ, মানুষ যখন শক্তি উৎপাদনে কয়লা
বা খনিজ তৈলের ব্যবহার জানিত না তখন এই সকল সামগ্রী কেবল নিষ্ক্রিয় সামগ্রীস্বরূপ
ছিল।
(ঘ) জৈবিক এবং অজৈবিক সম্পদ
: প্রাকৃতিক গঠন অনুসারে সম্পদ সমূহের যেগুলিতে
জীব থাকে সেইগুলিকে জৈবিক সম্পদ বলে। অন্যদিকে যে সম্পদসমূহ নির্জীব সেইগুলিকে
অজৈবিক সম্পদ বলে। উদ্ভিদ, প্রাণী, মৎস, শস্য, প্রভৃতি জৈবিক সম্পদ। অন্যদিকে
মাটি, শিলা, জল, বায়ু, খনিজ পদার্থ, কয়লা প্রভৃতি অজৈবিক সম্পদ।
কিন্তু ইহা মনে রাখা দরকার যে কয়লা, খনিজ
তৈল, প্রাকৃতিক
গ্যাস প্রভৃতি উৎপত্তির সময় মূলত জৈবিক সামগ্রী ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক অবস্থান
হইতে নির্জীব হওয়ার জন্য এইগুলিকে অজৈবিক সম্পদের
শ্রেণিতে
ধরা হয়।
(ঙ) নবীকরণযোগ্য
এবং অনবীকরণযোগ্য সম্পদ : পৃথিবীতে লভ্য প্রাকৃতিক সম্পদসমূহের মধ্যে কিছু
সম্পদ ব্যবহারের পর একেবারে নিঃশেষ হইয়া যায় না আবার কিছু সম্পদ ক্রমান্বয়ে
নিঃশেষ হইয়া যায়। যে সকল সম্পদ ব্যবহারের পর নবীকরণ বা পুনঃপূণীকৃত প্রক্রিয়ায়
কখনও একেবারে নিঃশেষ হইয়া যায় না, এইপ্রকার
সম্পদকে নবীকরণযোগ্য বা পুনঃপূর্ণীকৃত সম্পদ বলা হয়। সূর্যরশ্মি, বায়ু, জল, গাছপালা, জীবজন্তু, মানুষ, শস্য প্রভৃতি নবীকরণযোগ্য সম্পদ!
অন্যদিকে যে সকল সম্পদ ব্যবহারের পর নবীকরণ করা যায় না এবং একেবারে নিঃশেষ হইয়া
যায়, এইসকল
সম্পদকেঅনবীকরণযোগ্য সম্পদ বলে। উদাহরণস্বরূপ, কয়লা, খনিজ তেল, খনিজ পদার্থ (যেমন—তামা, সোনা, চুনাপাথর, লোহা প্রভৃতি), প্রাকৃতিক গ্যাস প্রভৃতি
অনবীকরণযোগ্য
(চ) ব্যক্তিগত সম্পদ এবং
জাতীয় সম্পদ : পৃথিবীতে লভ্য সকল প্রকার সম্পদকে মালিকীস্বত্বর ভিত্তিতে
ব্যক্তিগত এবং জাতীয় সম্পদ হিসাবে বিভক্ত করা যায়। মানুষের নিজ নিজ দখল বা
অধিকারে থাকা ভূমি, বিষয়সম্পত্তি
এবং নিজের সৎগুণ যেমন—সচ্চরিত্র, শিক্ষা, কর্মদক্ষতা প্রভৃতি ব্যক্তিগত
সম্পদ। অন্যদিকে একটি দেশের তত্ত্বাবধান বা দখলে থাকা সকল প্রকার সম্পদ যেমন
রাস্তাঘাট, ভূমি, নদনদী, সেতু, অরণ্যের বৃক্ষাদি ও জীব জন্তু, শিক্ষানুষ্ঠান, প্রশাসনিক ব্যবস্থা, সরকার প্রভৃতি হইল জাতীয় সম্পদ।
উদাহরণস্বরূপ কাজিরাঙ্গা রাষ্ট্রীয় উদ্যানখানি একটি জাতীয় সম্পদ।
(ছ) মানব সৃষ্ট এবং মানব সম্পদ
: প্রকৃতি হইতে আহরণ করা বহু সামগ্রীই প্রয়োজন সাপেক্ষে
বিভিন্ন প্রযুক্তির দ্বারা রূপান্তর করিয়া মানুষের ব্যবহারোপযোগী করা হয়।
উদাহরণস্বরূপ, বাঁশ হইতে
কাগজ, কাপাস হইতে
কাপড়, খনিজ তৈল
হইতে নানাপ্রকার রং, নেপথালিন, কৃত্রিম কাপড়, রাসায়নিক সার, কীটনাশক দ্রব্য, সাবান, প্লাস্টিক, কৃত্রিম রবার, মোম প্রভৃতি উদ্ভিদ হইতে
নানাপ্রকার ঔষধ, কাঠ, গৃহনির্মাণ সামগ্রী প্রভৃতি উল্লেখ
করা যায়। মানুষের প্রচেষ্টায় উৎপাদিত এই সকল সামগ্রীকে মানবসৃষ্ট সম্পদ বলে।
সম্পদ সমূহকে মানুষের ব্যবহারোপযোগী করিয়া তুলিতে মানুষের কর্মদক্ষতা, শিক্ষা, প্রযুক্তি এবং আগ্রহের প্রয়োজন
হয়। এই সকল গুণ থাকার জন্য মানুষকে মানব সম্পদ বলা হয়। মানুষই সম্পদের
সৃষ্টিকর্তা।
(জ) সম্পদের পুনরাবর্তন এবং
অভিযোজন : সীমিত পরিমাণে থাকা কাঁচামালের ব্যবহার হ্রাস করিবার জন্য ব্যবহার
উপযোগী বর্জিত দ্রব্য পুনরাবর্তন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পুনর্ব্যবহার করিতে পারা
যায়। ইহাকে সম্পদের পুনরাবর্তন বলে। উদাহরণস্বরূপ, পুরাতন পলিথিন ব্যাগ, প্ল্যাস্টিক বোতল, কাগজ, লোহার সামগ্রী প্রভৃতি
পুনরাবর্তনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সম্পদের কাঁচামালের অল্প পরিমাণে হইলেও সংরক্ষণ
করিতে পারা যায়। অধ্যয়ন এবং গবেষণার দ্বারা প্রকৃতি হইতে আহরণ করা সম্পদ
ব্যবহারোপযোগী অবস্থায় রূপান্তরিত করিবার জন্য অভিযোজন বা নবপ্রচলন প্রক্রিয়া
প্রয়োগ করিতে হয়। রাসায়নিক সার প্রয়োগের ফলে মাটির বিরূপ প্রভাব রোধ করিবার
জন্য জৈব সার প্রয়োগে অধিক গুরুত্ব প্রদান করিতে হয়।
প্রশ্ন ১৪।
সম্পদ সংরক্ষণ বলিতে কি বুঝ? ইহার
প্রয়োজনীয়তা কি?
উত্তর:- সম্পদ
সংরক্ষণ : সম্পদের ব্যবহার এবং ইহার
সংরক্ষণ ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সাধারণভাবে কোনপ্রকার বিনাশ এবং অপব্যবহার না করিয়া
সম্পদের সম্ভাব্য পূর্ণ ব্যবহার করা কার্য বা ধারণাকে সম্পদ সংরক্ষণ বলে।
সম্পদসংরক্ষণের মূল উদ্দেশ্য হইল আমরা প্রকৃতি হইতে আমাদের প্রয়োজনীয় সম্পদ সমূহ
এমনভাবে আহরণ করিয়া ব্যবহার করিব যাহাতে ইহার দ্বারা আমরা সকলে দীর্ঘসময়
ব্যাপিয়া উপকৃত হইব।
সম্পদ
সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা : সম্পদ
সংরক্ষণ যদিও অনবীকরণ যোগ্য সম্পদের সঙ্গে অধিক জড়িত কিন্তু সংরক্ষণের ধারণাটি
সকলপ্রকার সম্পদের জন্যই প্রযোজ্য। উল্লেখ্য যে অরণ্য ধবংসের ফলে জীবজন্তুর
বাসভূমি তথা জৈব-বৈচিত্র হ্রাস পায় এবং এক একটি অঞ্চলের পরিবেশিক ভারসাম্য।
ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেইজন্য সমগ্র বিশ্বব্যাপী কতিপয় জৈবিক সম্পদ, যেমন—বাঘ, হাতী, গণ্ডার, ডলফিন প্রভৃতির সংরক্ষণের জন্য
নানাবিধ প্রকল্প গ্রহণ করা হইয়াছে, তদুপরি
আসামের কিছু পরিমাণ মূল্যবান উদ্ভিদ, যেমন - সর্পগন্ধা, ছালমুগরা, কালমেঘ, অর্জুন, অগরু, চিরতা, জাইফল, শতমূল প্রভৃতি বিলুপ্ত হইবার
সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীর মধ্যে সোনালী বানর, হলো বানর, বনমানুষ, বুনোমহিষ, ধনেশপাখী প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।
ইহার সঙ্গে শক্তির উৎস হিসাবে খনিজ তৈল, কয়লা
প্রভৃতি এবং কৃষিকার্যের রাসায়নিক সার, কীট
নাশক দ্রব্য প্রভৃতির ব্যবহার দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে বায়ু, জল এবং মাটির প্রদূষণ ঘটিয়া এক
ভয়াবহ পরিবেশিক সমস্যার সৃষ্টি হইয়াছে। সুতরাং আমাদের উন্নয়ন প্রক্রিয়া যাহাতে
ক্ষণস্থায়ী না হয় ইহার জন্য আমরা সম্পদের মিতব্যয়ী ব্যবহারের সঙ্গে প্রয়োজনীয়
সংরক্ষণ কার্য গ্রহণ করিব। এই পরিস্থিতিতে সমগ্র বিশ্বে সম্পদ সংরক্ষণ এবং ইহার
যুক্তিপূর্ণ ব্যবহার অতি গুরুত্বপূর্ণ হইয়া পড়িয়াছে।
প্রশ্ন ১৫৷
সম্পদ সংরক্ষণ পদ্ধতি সম্পর্কে সংক্ষেপে লিখ।
উত্তর:- সম্পদ
সংরক্ষণ প্রক্রিয়াটি নিজে নিজে কার্যক্রম হইতে পারে না। ইহার সঠিক রূপায়ণের জন্য
সুবিবেচিত এবং সুপরিকল্পিত প্রকল্পের প্রয়োজন। এইজন্য সম্পদ সংরক্ষণ ফলপ্রসূ
করিবার জন্য নিম্নলিখিত পদ্ধতি সমূহ অবলম্বন করা প্রয়োজন।
(ক) বিকল্প সম্পদ সন্ধান :
কোন একটি বহুলভাবে ব্যবহৃত সম্পদ উৎপাদন চলাকালীন সময়ে ইহার বিকল্প সম্পদের
সম্ভাবনা উদঘাটনের জন্য প্রয়োজনীয় গবেষণা এবং অনুসন্ধান চালানো প্রয়োজন।
উদাহরণস্বরূপ, কার্পাস
সূততার পরিবর্তে কৃত্রিম সূতা,
প্রাকৃতিক
রবারের পরিবর্তে কৃত্রিম রবার প্রভৃতি এক একপ্রকার বিকল্প সম্পদ। অধিকন্তু
অনবীকরণযোগ্য সম্পদ যেমন— কয়লা, খনিজ তৈল প্রভৃতির ব্যবহার হ্রাস
করিয়া সৌরশক্তি, জলবিদ্যুৎ
শক্তি, বায়ুশক্তি, জৈবশক্তি প্রভৃতি নবীকরণযোগ্য
সম্পদের ব্যবহার বৃদ্ধি করিতে হইবে।
(খ) পুনরাবর্তন
: সীমিত পরিমাণে থাকা কাঁচামালের ব্যবহার হাস করিয়া হার
উপযোগী বর্জিত দ্রব্য পূনরাবর্তন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পুনর্ব্যবহার করিতে মা যায়।
উদাহরণস্বরূপ, পুরাতন
পলিথিন ব্যাগ, প্ল্যাস্টিকের
বোতল, কাগজ,
সামগ্রী
প্রভৃতি পুনরাবর্তনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সম্পদের কাঁচামাল কিছু পরিমাণে সংরক্ষণ
করা যায়।
(গ) অভিযোজন
বা নবপ্রচলন : অধ্যয়ন ও গবেষণার মাধ্যমে
প্রকতি হইতে আহরণ করা সম্পদ ব্যবহারোপযোগী অবস্থায় রূপান্তরিত করিবার জন্য
অভিযোজন বা নবপ্রচলন প্রক্রিয়া প্রয়োগ করিতে হইবে। রাসায়নিক সার প্রয়োগের ফলে
মাটির বিরূপ প্রতিক্রিয়া রোধ করিবার জন্য জৈব সার পরে করা বাঞ্ছনীয়।
(ঘ) বর্জিত দ্রব্যের পরিমাণ
হ্রাস : কাঁচামাল হইতে প্রয়োজনীয়
সম্পদে রূপান্তরিত করিতে বর্জিত দ্রব্যের উৎপাদন সীমিত রাখার ব্যবস্থা করিলে
যছোট্ট
পরিমাণে
সম্পদ সংরক্ষণ হইতে পারে।
(ঙ) জ্ঞান ও শিক্ষার
সম্প্রসারণ : সম্পদের উৎপাদন এবং ব্যবহার
সুচারু রূপে পরিচালনা করিবার জন্য জ্ঞান ও শিক্ষার সম্প্রসারণ অত্যন্ত প্রয়োজন।
সম্পদের অযথা অপচয় রোধ করিবার জন্য জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করিতে হইবে।
(চ) সংরক্ষণ সম্পৰ্কীয় আইনের
কার্যকরীকরণ : সম্পদের সংরক্ষণ কার্যকরীকরণের
জন্য সংরক্ষণ সম্পর্কীয় আইনের ব্যবস্থা যথাযথ এবং সুনিশ্চিত হইতে হইবে এবং ইহার
সঠিক রূপায়ণ করিতে হইবে।
সেবা/অসম দশম শ্রেণী সমাজ
বিজ্ঞান
অর্থনৈতিক
ভূগোল ও সম্পদ সম্পর্কীয় প্রশ্নউত্তর
SEBA/ASSAM
CLASS 10 SOCIAL SCIENCES
Visit – www.smartlearningservice.com
অতিরিক্ত
প্রশ্নোত্তর
প্রশ্ন ১।
অর্থনৈতিক ভূগোলের দুইটি/তিনটি উপশাখা উল্লেখ কর।
উত্তর:- (ক)
কৃষি ভূগোল, (খ)
ঔদ্যোগিক ভূগোল ও (গ) সম্পদ ভূগোল।
প্রশ্ন ২।
সম্পদ বলিতে কি বুঝ?
উত্তর:- মানুষের
জীবন সমাজ বিজ্ঞান সহায়িকা ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় সকল প্রকার বস্তুকেই সম্পদ
বলে।
প্রশ্ন ৩।
সম্পদের দুইটি/তিনটি বৈশিষ্ট্য (গুণ) উল্লেখ কর।
উত্তর:- (ক)
উপকারিতা, (খ)
কার্যকারিতা ও (গ) পরিবর্তনশীলতা।
প্রশ্ন ৪।
সম্পদের প্রকারসমূহ উল্লেখ কর।
উত্তর:- সম্পদের
প্রধান প্রকারসমূহ হইল - (ক)
প্রাকৃতিক সম্পদ, (খ)
মানবসৃষ্ট সম্পদ ও (গ) মানব সম্পদ।
প্রশ্ন ৫। গঠন
অনুসারে সম্পদকে কয়ভাগে ভাগ করা যায় ও কি কি?
উত্তর:- গঠন
অনুসারে সম্পদকে দুইভাগে ভাগ করা যায়, যথা-(ক)
জৈবিক সম্পদ ও (খ) অজৈবিক সম্পদ।
প্রশ্ন ৬৷
স্থায়িত্ব অনুসারে সম্পদকে কয়ভাগে ভাগ করা যায় ও কি কি?
উত্তর:- স্থায়িত্ব
অনুসারে সম্পদকে দুইভাগে ভাগে ভাগ করা যায়, যথা— (ক)
নবীকরণযোগ্য সম্পদ ও (খ) অনবীকরণযোগ্য সম্পদ।
প্রশ্ন ৭।
মালিকীস্বত্ব হিসাবে সম্পদকে কয়ভাগে ভাগ করা যায় ও কি কি?
উত্তর:- মালিকীস্বত্ব
হিসাবে সম্পদকে তিনভাগে ভাগ করা যায়, যথা— (ক)
ব্যক্তিগত সম্পদ, (খ) জাতীয়
সম্পদ ও (গ) আন্তর্জাতিক সম্পদ।
প্রশ্ন ৮।
প্রাকৃতিক সম্পদের দুইটি/তিনটি উদাহ্বণ দাও।
উত্তর:- (ক)
বায়ু (খ) জল ও (গ) সূর্যরশ্মি।
প্রশ্ন ৯।
মানবসৃষ্ট সম্পদের দুইটি/তিনটি উদাহরণ দাও।
উত্তর:- (ক)
কৃত্রিম কাপড়, (খ) কৃত্রিম
রবার ও (গ) রাসায়নিক সার।
প্রশ্ন ১০।
জৈবিক সম্পদের দুইটি উদাত্মণ দাও।
উত্তর:- (ক)
উদ্ভিদ (খ) প্রাণী ও (গ) মৎস।
প্রশ্ন ১১।
অজৈবিক সম্পদের দুইটি উদাহরণ দাও।
উত্তর:- (ক)
জল, (খ) মাটি ও
(গ) পাথর।
প্রশ্ন ১২।
দুই/তিন প্রকার নবীকরণযোগ্য সম্পদের নাম লিখ।
উত্তর:- (ক)
জল, (খ) বায়ু ও
(গ) উদ্ভিদ।
প্রশ্ন ১৩।
যেকোন তিনপ্রকার অনবীকরণযোগ্য সম্পদের নাম লিখ।
উত্তর:- (ক)
কয়লা, (খ) খনিজ
তেল ও (গ) প্রাকৃতিক গ্যাস।
প্রশ্ন ১৪।
ব্যক্তিগত সম্পত্তির দুইটি/তিনটি উদাত্মণ দাও।
উত্তর:- (ক)
ভূমি, (খ) শিক্ষা
ও (গ) সচ্চরিত্র।
প্রশ্ন ১৫।
জাতীয় সম্পত্তির দুইটি/তিনটি উদাহরণ দাও।
উত্তর:- (ক)
রাস্তাঘাট, (খ) নদনদী ও
(গ) অরণ্য।
প্রশ্ন ১৬।
আন্তর্জাতিক সম্পদ বলিতে কি বুঝ?
উত্তর:- সকল
দেশের জাতীয় সম্পদ এবং সমগ্র বিশ্বের অধীনে থাকা সম্পদ, যেমন—সাগর-মহাসাগর ও ইহার খনিজ পদার্থ
ও জীবজন্তু, বায়ুমণ্ডল
প্রভৃতিকে একসঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্পদ বলে।
প্রশ্ন ১৭।
দুইপ্রকার আন্তর্জাতিক সম্পদের উদাহরণ দাও।
উত্তর:- (ক)
সাগর-মহাসাগর ও (খ) বায়ুমণ্ডল।
প্রশ্ন ১৮।
সম্পদ সংরক্ষণের যে কোন দুইটি/তিনটি পদ্ধতি বা উপায় উল্লেখ কর।
উত্তর:- (ক)
বিকল্প সম্পদের সন্ধান, (খ) সম্পদের
পুনরাবর্তন ও (গ) সম্পদ অভিযোজন বা নবপ্রচলন।
প্রশ্ন ১৯।
মানুষের মৌলিক প্রয়োজন কি কি ?
উত্তর:- (ক)
খাদ্য, (খ) বস্ত্র
ও (গ) বাসস্থান।
প্রশ্ন ২০।
সম্পদের সঙ্গে মানুষ কি কি ভাবে জড়িত?
উত্তর:- সম্পদের
সঙ্গে মানুষ দুইভাবে জড়িত—
(ক) সম্পদের উৎপাদক হিসাবে ও (খ)
সম্পদের উপভোক্তা হিসাবে।
প্রশ্ন ২১।
আসামের দুই/তিনপ্রকার বিরল উদ্ভিদের নাম লিখ।
উত্তর:- (ক)
সর্পগন্ধা, (খ) কালমেঘ
ও (গ) অগরু।
প্রশ্ন ২২।
আসামের তিনপ্রকার বিরল/প্রায়বিলুপ্ত প্রাণীর নাম লিখ।
উত্তর:- (ক)
সোনালী বানর, (খ) হলুক গিবন
(ণ) বুনো মহিষ।
সেবা/অসম দশম শ্রেণী সমাজ
বিজ্ঞান
অর্থনৈতিক
ভূগোল ও সম্পদ সম্পর্কীয় প্রশ্নউত্তর
SEBA/ASSAM
CLASS 10 SOCIAL SCIENCES
Visit – www.smartlearningservice.com
অতিসংক্ষিপ্ত
প্রশ্নোত্তর
প্রশ্ন ১।
অর্থনৈতিক ভূগোলের একটি শাখা উল্লেখ কর।
উত্তর:- কৃষি-ভূগোল।
প্রশ্ন ২।
সম্পদের একটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ কর।
উত্তর:- কার্যকারিতা।
প্রশ্ন ৩।
মানবসৃষ্ট সম্পদের একটি উদাহ্রণ দাও।
উত্তর:- ঘরবাড়ি।
প্রশ্ন ৪। প্রতিরোধকের
একটি উদাত্মণ দাও।
উত্তর:- অনুর্বর
মাটি।
প্রশ্ন ৫৷ কি
প্রকার বস্তুকে সম্পত্তি বলে?
উত্তর:-
যে বস্তুর বিনিময়মূল্য আছে।
সঠিক উত্তর বেছে
বের কর:
প্রশ্ন ১।
সূর্যরশ্মি হইল সম্পদ।
(ক) প্রাকৃতিক (খ) মানবসৃষ্ট (গ) ব্যক্তিগত
উত্তর:- (ক)
প্রাকৃতিক
প্রশ্ন ২।
উদ্ভিদ একপ্রকার – সম্পদ।
(ক)
ব্যক্তিগত (খ) জৈবিক (গ) অজৈবিক
উত্তর:- (খ) জৈবিক
প্রশ্ন ৩ জল
একটি – সম্পদ।
(ক) জৈবিক (খ) অজৈবিক (গ) অনবীণযোগ্য
উত্তর:- (খ) অজৈবিক
প্রশ্ন ৪।
নিম্নলিখিত কোনটি ব্যক্তিগত সম্পত্তি ?
(ক) সাগর (খ) অরণ্য (গ) শিক্ষা
উত্তর:- (গ)
শিক্ষা
প্রশ্ন ৫৷
নিম্নলিখিত কোনটি জাতীয় সম্পত্তি?
(ক) রাস্তাঘাট (খ) শিক্ষা (গ) সাগর
মহাসাগর
উত্তর:- (ক)
রাস্তাঘাট
প্রশ্ন ৬।
নিম্নলিখিত কোনটি আন্তর্জাতিক সম্পত্তি?
(ক) রাস্তাঘাট (খ) অরণ্য (গ)
সাগর-মহাসাগর
উত্তর:- (গ)
সাগর-মহাসাগর
প্রশ্ন ৭।
নিম্নলিখিত কোনটি বিপন্ন প্রাণী?
(ক) বাঘ (খ) সোনালী বানর (গ) হাতী
উত্তর:- (খ)
সোনালী বানর
সেবা/অসম দশম শ্রেণী সমাজ
বিজ্ঞান
অর্থনৈতিক
ভূগোল ও সম্পদ সম্পর্কীয় প্রশ্নউত্তর
SEBA/ASSAM
CLASS 10 SOCIAL SCIENCES
Visit – www.smartlearningservice.com
******
0 Comments
HELLO VIEWERS, PLEASE SEND YOUR COMMENTS AND SUGGESTION ON THE POST AND SHARE THE POST TO YOUR FRIEND CIRCLE.